somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিয়ে করে বৌ রেখে বিদেশে চলে যেতে চাচ্ছেন জিবীকার খোঁজে?? তাহলে নিচের স্ট্যাটাস টা পড়ুন ।

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমি তখন ক্লাশ ওয়ান অথবা টু তে পড়ি । সারাদিন হাসনা আপুদের বাড়ির উঠোনে খেলা করতাম । কারন খেলা করার জন্য পাড়ার সব ছোট ছোট বাচ্চারা জড়ো হতো সেখানে ।আমাদের বাসা থেকে দুই তিনটা বাড়ি পরেই ছিল হাসনা আপুদের বাসা । হাসনা আপুর স্বামী বিদেশে থাকতো । কুয়েতে । বিয়ের দুই মাস পরেই উনি বিদেশে চলে যান । যা হোক, একদিন বিকেল বেলা আমরা সবাই মিলে ক্রিকেট খেলছিলাম। প্রায় সন্ধা হয়ে এসেছে । এমন সময় খেলার এক পর্যায়ে বলটা জানালা দিয়ে হাসনা আপার রুমে চলে যায় । আমি বলটা আনার জন্য হাসনা আপার রুমে গেলাম । এদিক ওদিক খুজে না পেয়ে শেষে খাটের নিচে উকি দিলাম।
উকি দিয়েই দেখলাম কে যেন খাটের নিচে শুয়ে আছে । খাটের তলার অন্ধকারের জন্য মানুষটাকে চিনতে পারলাম না । বলটা খাটের পায়ার কাছেই ছিল । আমি বলটা নিয়ে চলে এলাম ।
এসে হাসনা আপুকে পাগলের মত খুঁজতে লাগলাম সারা বাড়ি । শেষে ওনাকে পেলাম ,টয়লেটে গিয়ে ছিলেন উনি । দেখি এদিকেই আসছেন উনি । দৌড়ে গেলাম উনার কাছে । গিয়ে বললাম, হাসনা আপু আপনার ঘরে চোর ঢুকেছে, খাটের তলায় লুকিয়ে আছে । আমার কথা শুনে চমকে উঠলেন উনি । তারপর জিজ্ঞেস করলেন ,চোরের কথা আমি আরও কাউকে বলেছি কি না?
আমি বললাম ,শুধু আপনাকেই বলেছি । এখন সবাইকে ডাকতে যাব । চোরটাকে ধরতে হবে । বলেই যেই না দৌড় দিতে যাব, অমনি উনি আমাকে ধরে ফেললেন । বললেন, ধুর পাগল ওটা চোর না । আর শোন, তুই যা দেখেছিস কাউকে বলিস না । ঠিক আছে?? আমি বললাম ,কেন?
উনি বললেন ,সেটা তুই বুঝবি না ।
একথা বলেই উনি বললেন, তুই আম গাছটার তলে একটু দাড়া ,আমি আসছি ।
উনি তখনই তার ঘরে গিয়ে , একটা কাগজে করে কিছু নিমটি, নারকেলের নারু , আর কয়েকটা বিস্কিট নিয়ে এসে আমাকে দিলেন । তারপর আমার হাতে দশটাকার একটা নোট দিয়ে বললেন, লক্ষী সোনা কাউকে বলিস না কিন্তু ! তাহলে প্রতিদিন তোকে মজা খাওয়াবো !
দশ টাকা পেয়ে তো তখন আমি খুব খুশি! আম্মুর কাছে পাচ টাকা চাইলেও দিতে চাইতো না! আর এখানে না চাইতেই দশ টাকা ! আমি তাকে বললাম, আমি কাউকে বলবো না । তখন উনি বললেন, যা বাসায় চলে যা সন্ধা হয়ে গেছে ।
আমি চলে আসতে আসতে সারাটা পথ ভাবছিলাম চোর এসেছে ঘরে ,এটা কাউকে না জানানোর জন্য এত পিড়াপিড়ি কেন করলেন উনি? কিন্তু শিশু মনে কিছুতেই জবাব খুজে পাচ্ছিলাম না ।
তার পর দিন থেকে উনি প্রায়ই আমাকে জিজ্ঞেস করতেন যে , ঘটনাটা আমি কাউকে বলেছি কি না । আমি জবাব দিতাম ,না বলিনি । ঘটনাটার পর থেকে উনি প্রায়ই আমাকে অনেক কিছু কিনে দিতেন, অনেক কিছু খেতে দিতেন । আমি আনন্দের সাথেই তা গ্রহন করতাম । কিছুদিন পর খাটের নিচে কে লুকিয়ে ছিল তাও জানতে পারি । অনেক দিন তাকে লুকিয়ে ঘরে ঢুকতে দেখেছি । কিন্তু কাউকে কিছু বলিনি। কারন, কিছুই বুঝতে পারিনি তখন । কিন্তু এখন বড় হওয়ার পর বুঝতে পেরেছি, চোর ঘরে ঢোকার পরও কেন তাকে এভাবে শেল্টার দিয়েছিলেন হাসনা আপু!
এখন , অনেক বছর হলো হাসনা আপুর স্বামী বিদেশ থেকে এসেছেন । তিনি এখন বড় ব্যবসায়ী ! তার ছেলেটাও অনেক বড় হয়ে গেছে । সুন্দর সংসার তাদের । কিন্তু বাবা বা ছেলে কেউই জানতে পারেনি বিদেশে থাকার সময় হাসনা আপুর রুমে প্রায় রাতেই চোর ঢুকতো ! এখন হয়তো ছয় মাসে একবার তার সাথে দেখা হয়, কিন্তু যতবারই দেখা হয় তত বারই তাকে দেখলে প্রচন্ড ঘৃনা হয় ।
যারা বিয়ে করে বৌ রেখে বিদেশে যেতে ইচ্ছুক, তাদেরকে বলছি, যদি বিয়ে করতেই চান, তবে বিদেশ থেকে এসে তারপর বিয়ে করুন । বিয়ে করে কিছুদিন বৌয়ের সাথে রাত কাটিয়ে বৌয়ের শরীরে আগুন ধরিয়ে বছরের পর বছর বিদেশে পরে থাকবেন , আর এদিকে বৌ উপোষ থাকবে?
কক্ষনো না । আপনার ধরিয়ে দেয়া আগুন নেভানোর জন্য চোর ঢুকবেই । এতে মেয়েটার দোষ দেয়াটা অন্যায় হবে । বিয়ের আগে একটি মেয়ে বছরের পর বছর একা কাটিয়ে দিতে পারলেও বিয়ে ,বাসর হবার পর মেয়েরা ছেলে সঙ্গ ছাড়া থাকতে পারেনা ।

--Akash Hossain
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×