মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি সুন্দরী রুমি আলকাহতানি। প্রগতিশীল সমাজ বিষয়টি সহজ ভাবে নিলেও রাসুল স: এর দেশে যেখানে পবিত্র মক্ষা শরীফ ও মদীনা শরীফ, যেগুলো তওয়াফ করার মাধ্যমে মানুষ পাপ মুক্ত হয় , যে দেশ থেকে ইসলাম ধর্মের সূচনা, যে দেশে নারীদের বোরখা ছাড়া হাটাচলা পর্যন্ত করতে দেখা যায়না সে দেশের একজন মুসলিম নারী সুন্দরী প্রতিযোগিতায় লড়বেন এটা অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না।
অন্যান্য দেশের কথা বাদ। বাংলাদেশের মত মৌলবাদী আধিক্যের দেশের মানুষের হৃদয়ে যে রক্তক্ষরণ হইতাসে উহা নিশ্চিত রূপে বলা যায়। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ এর মাধ্যমগুলোতে বিষয়টি বেশ আলোচিত। ব্লগে এই বিষয়টি নিয়ে আমার এই পোস্টটিই প্রথম।অধিকাংশ গণমাধ্যম বিষয়টি নিউজ করেছে।সে সব নিউজ পোর্টালে পোস্টটির কমেন্ট সেকশানে নেটিজেনদের মন্তব্য দেখে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে এদেশের সংখ্যাগরুরা খুবই বেজার হয়েছে।এমন একটা ভাব যেন এর চেয়ে বড় কোন অপরাধ নেই।যেহেতু সুন্দরী প্রতিযোগিতার সাথে যৌনতা জড়িত, তাই স্বাভাবিক ভাবে এদেশীয় মুসলিমরা সৌদি নারীর সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করাতে বেশি চেতছে।কারণ ইসলামে যৌনাচার জঘন্যতম পাপ। কেউ ফিজিকাল রিলেশন করলে তাকে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করার নির্দেশে দিয়েছে ইসলাম।
তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় যদি অপরাধেরে একটা তালিকা করা হয় তবে ১ নাম্বারে শিরক ২ নাম্বারে সম্ভবত যারা সেক্স টেক্স করে তাদের রাখবেন মুসলিমরা।কিন্তু আমি মনে করি এই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অপরাধী তারা, যারা স্রষ্টার নিরিহ সৃষ্টিকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে। সেটা হোক কুকুর অথবা মানুষ। জঙ্গিরা যখন মসজিদের ভেতর বোমা মেরে নামাজরত মুসল্লী দের হত্যা করে তখন কোন কথিত মুসলিম, বা মুসলিম দল গুলোকে তেমন ঘৃণা প্রকাশ করতে দেখা যায়ন্স, যতটা ঘৃণা ওরা প্রকাশ করছে মিস ইউনিভার্সে অংশ নেয়া রুমি আলকাহতানি এর প্রতি। ভেবে দেখুন মানুষ বা প্রাণী হত্যার পাপের তুলনায় সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার পাপ কিছুই না। সৌদি কোন নারীকে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় উম্মুক্ত অবস্থায় দেখতে যাদের বুক ফেটে যাচ্ছে তারাই কিন্তু বোরখা পরা পর্নস্টার মিয়া খলিফার ভিডিও দেখে পরম সুখ অনুভব করে।
আসুন জেনে নেই মিস ইউনিভার্স সম্পর্কে সামান্য তথ্য। আমরা যখন বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য পাকি জারদের হাতে প্রাণ দিচ্ছলাম অর্থাৎ ১৯৫২ সালে সর্বপ্রথম এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এবং প্রথম মিস ইউনিভার্স হয় ফিনল্যান্ডের - Armi Kuusela। এর পর ২০২২ সাল পর্যন্ত এই প্রতিযোগিতা চলে। আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র যাদের কাছে স্বাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার জন্য আমৃত্যু ঋণী সে পাশ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে ১৯৯৪ সালে সুস্মিতা সেন, - ২০০০ সালে লারা দত্ত, এবং ২০২১ সর্বশেষ মিস ইউনিভার্স বিজয়ী হারনায সান্ধু একজন ইন্ডিয়ান। পৃথিবীর সভ্য দেশ গুলো বিজয়ীদের দেশীয় ফ্ল্যাগ এর মতো সম্মান দিলেও মুসলিম বিশ্ব চরমভাবে নিরুৎসাহিত করে এই প্রতিযোগিদের। আমি নিশ্চিত মুসলিমরা সুযোগ পেলে এসব প্রতিযোগিতার আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীদের পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করবে - অথচ তারা যেসব পাপাচার করে যেমন - মানুষ হত্যা, প্রাণী হত্যা, ঘৃণা, হিংসা, জুলুম, বলৎকার, গীবত এগুলোর তুলনায় সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা কোন পাপই না।
ছবি - রুমি আলকাহতানীর ইনস্টাগ্রাম আই ডি থেকে।
শিরোনাম - আর্টসেল অনিকেত প্রান্তর গান থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১:১১