somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নৌ-ভ্রমণ:পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়া

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ট্যুরটা আসলে ছিল আমার জন্মদিনের গিফট। ছোটভাইর পক্ষ থেকে। ভোর বেলা উঠে একটা ছোট ব্যাগে অল্প কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। দুদিন আগে মোবাইলটা চুরি হয়ে যাওয়ায় ট্যাবটা ইউজ করতে হচ্ছিল ফোনের বিকল্প হিসেবে। সাথে নিলাম নতুন কেনা একশন ক্যামেরাটা। পিচ্চি একটা ক্যামেরা। অনেকটা ম্যাচ বক্সের মত। বিশাল একটা মোবাইল(ট্যাব) কানে, হাতে পিচ্চি একটা ক্যামেরা । সে এক দৃশ্য বটে ।

তো হাটছিলাম বাসা থেকে বের হয়ে । এত ভোরে কোন রিক্সা ও পাচ্ছিনা । কিছুদুর হাটার পর ভাগ্য সহায় হলো। একটা রিক্সা যেন উড়ে আসল কোথা থেকে। তাতেই উঠে বসলাম । তার পর বাস। সদরঘাট নেমে ছুটলাম ঘাটে। ভিতরে খুঁজে বের করলাম আমাদের জন্য ঢাকা ট্যুরিস্ট ক্লাব থেকে নির্ধারিত লঞ্চ সোনার তরী ।


উপরে উঠে ফজরের সালাত আদায় করলাম ।


আমি আসলে বেশ আগেই এসে পরেছিলাম । তাই বেশ খানিকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় । তারপর একটা সময় ঢাকা ট্যুরিস্ট ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মোস্তাফিজ ভাই আসেন । উনি আমাকে আমাদের কেবিন দেখিয়ে দেন। তিন তলার ভিআইপি চেয়ার কেবিন। সেখানে গিয়ে অপেক্ষা করছিলাম । একজন দুজন করে মানুষ আসতে থাকে।


লঞ্চ ছাড়ে ৭:২০ মিনিটে । নদীর উপর ভেসে বেড়াচ্ছে ঘন কুয়াশা । সেই কুয়াশার চাদর ভেদ করে নদীর পারের ঘর বাড়ি গুলো কেমন অদ্ভুত দেখাচ্ছিল। মাঝে মাঝেই দেখা যাচ্ছিল দু একটা লঞ্চ । কিছু ছবিও তুলে নিলাম।


আমার প্রথম লঞ্চ ভ্রমন । অসাধারন অভিজ্ঞতা । মোক্তারপুর ব্রিজ পার হলাম । জিনিসটা আজব । ব্রিজ হিসেবে খুবই সরু। সে যাই হোক ও নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নাই। খিদে পেয়েছে, নাস্তা খেতে হবে।


নাস্তা আসতে দেরী হচ্ছে দেখে মাজেদ ভাই আর থাকতে পারলেন না। ব্যাগ থেকে চকলেট আর ওয়েফার বের করে খেতে থাকলেন । আমাকেও একটা চকলেট কোটেড ওয়েফার দিলেন। গপ করে খেয়ে নিলাম(দেরী করলে যদি আবার কেউ ভাগ বসায় !) :P

কিছুক্ষণ পর নাস্তা আসল। খেতে আলসেমি করলাম না । লঞ্চ চলছে , আমরাও চলছি...। জলের উপর ভেসে ভেসে । গান হল , জোকস হল। পরিবেশটা ফুরফুরে ।


কিছুক্ষণ ছাদে গিয়ে নদী দেখলাম । দেখলাম আশপাশে ভেসে বেড়ানো জেলে নৌকা আর ছুটতে থাকা লঞ্চ গুলো। লঞ্চের সামনে গিয়ে দাড়ালাম কিছুক্ষন, একা হওয়ার কারনে টাইটানিকের সিনটা আর করা হল না।


লঞ্চ চাঁদপুর ঘাটের কাছে আসে। লঞ্চ থেকে এবার নামতে হবে আমাদের। দুটো আগে থেকে ঠিক করে রাখা সামিয়ানা টানানো ট্রলার এসে ভিড়ল লঞ্চের পাশে। আমরা দুভাগ দুই ট্রলারে উঠলাম।


লঞ্চ কিছুদুর ট্রলার দুটোকে টেনে নিয়ে ছেড়ে দেয় । জল কেটে এগিয়ে যেতে থাকে ট্রলার। জেলেরা মাছ ধরছে ছোট ছোট নৌকায় করে । ধরছে ইলিশ, পাচ্ছে ঝাটকা। আহা ! তার পরও তো টাটকা ।


আমরা যাচ্ছি শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে অবস্থিত নলখাগড়ায় ভরা একটি দ্বীপে। । নলখাগড়ার দ্বীপ।


মাঝি আমাদের নামতে দিল না সাপের ভয় দেখিয়ে। আমরা নামলাম পাশের আরেকটা দ্বীপে। সেখানে আছে একটা মাছের আড়ত। নদীর জলে গোসল সারলেন কেউ। আমি ছবি তুলছি । অনেক কিছুর ছবি। যা পাচ্ছি সব। পেরেক গাঁথা একটা ছোট কাঠের টুকরা পেলাম ইচ্ছে হলো শুন্যে ভাসমান অবস্থায় সেটার একটা ছবিই তুলি। ডান পা দিয়ে কিক দিয়ে সেটাকে শুন্যে পাঠাচ্ছি , সেই সাথে বাম হাতে থাকা ক্যামেরাটা এই দৃশ্যটা বন্ধি করার জন্য চেষ্টা করতে থাকল । কিক ক্লিক কিক ক্লিক ট্রাই ট্রাই ।। একটা চমত্কার ছবি পেয়ে গেলাম । বেশ ভাল লাগল।


জেলেদের ঘরে বানানো ভাসমান লন্ঠন । অসাধারণ !


ছবি তোলা ছবি তোলা, এবার ফেরার পালা । ফেরার পথে মাঝির বাধা উপেক্ষা করে আমরা নামলাম সেই দ্বীপে , যেখানে এসে মিশেছে দুই নদীর মোহনা । আরো ছবি। ক্লিক ক্লিক ।


ঘড়ি টিক টিক , আর তো দেরী করা যায় না । লঞ্চ ধরতে হবে । আসার পথে দেখলাম ডাকাতিয়ার মোহনা , যা একটা বিপজ্জনক যায়গা এমনকি বড় লঞ্চের জন্যও । ডুবেছে অনেক লঞ্চ । সর্বশেষ ডুবেছে লঞ্চ নাসরিন ।


লঞ্চে এসে লাঞ্চ করলাম। ইলিশ ভাজা, মুরগির মাংশ, পোলাউ... লঞ্চ ছেড়ে দিয়েছ । চমত্কার সব জোকস আর গান , সময়টা বেশ কেটে যাচ্ছে । একটা বাজে গন্ধ(বুড়িগঙ্গার) এসে নাকে ধাক্কা দিলো। বুঝলাম ঢাকায় এসে পড়েছি। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই লঞ্চ ঘাটে ভিড়ল ।


এবার বাসায় ফিরতে হবে । ধন্যবাদ ডিটিসি । ধন্যবাদ সবাইকে। অত্যন্ত চমত্কার একটা দিন গেল।
যদিও মাজেদ ভাই বেশ কয়বার জিগ্যেস করছে "ভাই আপনার কি মন খারাপ?" বললাম কই নাতো !!!


মনের হদিস
-শুভমিতা

মনের হদিস কে বা জানে
কি যে থাকে মনের ঘরে
কেউ জানে না কেউ জানে না
সেও জানে না যে ধারন করে , ধারন করে ...
খাঁচার পাখি আকাশ খোজে
বোঝে না সে বোকা
আকাশ ধরতে গোটা জীবন খাবে সময় পোকা
তবু পাখির মন তো আকাশ পরে
কেন যে মন এমন করে
কেউ জানে না ...
খুজতে গিয়ে ভালোবাসা ঘুড়ি পথে পথে
হাজার নিন্দার চাদর পরে
চরি ফুলের রথে
জানি ভালোবাসা আছে ঘরে
তবুকি মন খুজেই মরে ...কেউ জানে না ... .।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:২২
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×