somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উবুন্টুর সাথে খুন্টুমুন্টু

১৫ ই জুন, ২০০৯ দুপুর ২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উবুন্টু ৭.০৪ সংস্করণ ইনস্টল করে তারপর কীভাবে যেনো সব ডাটা হারিয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, এই জীবনে আর উবুন্টু না। কিন্তু চোখের সামনে দিয়ে ফেরিওয়ালা 'কাঁচা আম' 'কাঁচা আম' ডাকতে ডাকতে গেলে জিহ্বার রস কতোক্ষণ আর ধরে রাখা যায়! তাও যদি ফেরিওয়ালা আবার বলে দেয়- কাঁচা আম কিনলে রেসিপি ফ্রি!

বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক বা বিডিওএসএন প্রায়ই উবুন্টু নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করে। ইন্টারনেটে ও পত্রিকায় ফেরিওয়ালার মতো তাদের অব্যাহত ডাকাডাকিতে একদিন হাজির হয়ে পেছনের সারিতে বসে বসে উবুন্টু নিয়ে কথাবার্তা শুনলাম। আবার অনেক কিছুই শুনলাম না। পাশে এক 'আপা' বসেছিলেন, তাঁর সাথেই মূলত গল্পগুজব করলাম। উদ্দেশ্য আর কিছুই না- বিডিওএসএন-ই যদি সবকিছু শিখিয়ে দেয়, তাহলে আমি নিজে নিজে কী নিয়ে গুতোগুতি করবো? এক ফাঁকে আপাকে জানিয়ে দিলাম- উবুন্টুতে কাজ করা উইন্ডোজের চাইতেও সহজ!

রাতে এসেই ল্যাপটপে চালিয়ে দিলাম উবুন্টু ৮.০৪ সিডি। এটি অবশ্য ইন্টারনেটে অর্ডার দিয়ে আগেই আনিয়ে রেখেছিলাম। এবার আর কোনো ভুলচুক হলো না। দেখলাম ঠিকমতোই সব হয়ে গেলো। রাতে অবশ্য একবার উইন্ডোজে লগইন করে আবার হায় হায় শুরু করলাম- আমার চার গিগাবাইট স্পেস গেলো কই?

তার পরের কাহিনীগুলো হচ্ছে ইতিহাস।

প্রথমেই ঝাড়ি দিলাম আমার এক পরিচিতকে যে আবার উবুন্টুর মহা হাফেজ- ওই মিয়া, আমার ল্যাপটপের চার গিগা বাইর কইরা দাও। তোমাদের কথা শুইন্যা আমার খালি ক্ষতিই হইতাছে!

সে হাসি হাসি মুখ করে ল্যাপটপের, উইন্ডোজের আর উবুন্টুর ইতিহাস জানতে চাইলো। আমি ইতিহাস বললাম। এবার সে মুখ গম্ভীর করে বললো- এইটা কোনো সমস্যা না। চার গিগাবাইট আছে। ওইটা উবুন্টু সোয়াপ ফাইল.... আরো কী যেনো হ্যান...ত্যান...। যাওয়ার আগে টিপিক্যাল বাঙালীর মতো উপদেশ দিয়ে গেলো- গুগলে সার্চ দিয়ে একটু পড়াশুনা করো। কাজে লাগবে।

আমি মোটামুটি এক সেমিস্টারের পড়া পরবর্তী দশ দিনে পড়লাম।

ল্যাপটপে উবুন্টু ইনস্টল করেছিলাম বৃহস্পতিবার রাতে। শুক্র ও শনিবার পুরোপুরি বিনোদনহীন জীবন কাটল আমার। যে ফাইলই চালাতে যাই না কেনো, ভিএলসি বা টোটেম বা রিদমবক্স বলে- কোডেক (এটার বাংলা নাম কোদক দেওয়া যায় না?) দাও। তাছাড়া আরো ছোটখাটো কিছু সমস্যা তো আছেই।

রবিবারে অফিসে এসেই প্রথম কাজটি করলাম ইন্টারনেটে কানেকশন দিয়ে সব আপডেট করে নিলাম। মোটামুটি সারাদিন লাগলো। এবার কিছুটা নিশ্চিন্ত। সুডকো খেলি, বড়দের (!) সিনেমা দেখি, ছোটদের টম অ্যান্ড জেরি দেখি, পাওয়ারপয়েন্ট স্লাইড তৈরি করি ইত্যাদি ইত্যাদি। আর প্রতিদিন এসেই একবার করে আপডেট করি।

এর মধ্যেই এলো ইন্ট্রেপিড। আবার মানুষজনের অব্যাহত প্রচারণার শিকার হয়ে মোটামুটি দিনদুয়েক লাগিয়ে পুরোপুরি আপগ্রেড করে ফেললাম। দেখলাম অনেক সমস্যারই সমাধান হয়ে গেছে।

একইভাবে গুতোগুতি করতে করতে উবুন্টুটাকে সাজিয়ে নিলাম নিজের মতো। এখন আর বড় কোনো সমস্যা হয় না। ছোটখাটো কিছু সমস্যা আছে। যেমন- আমি এসপিএসএস এবং স্ট্যাটা নামক দুটো সফটওয়্যার ব্যবহার করি। উবুন্টুতে আসার পর সেগুলো দিয়ে কাজ করা যায় না। সার্চ দিয়ে দেখলাম সেখানে পিএসপিপি এবং আর নামক দুটো সফটওয়্যার আছে। সিন্যাপটিক প্যাকেজ ম্যানেজার থেকে সেগুলো ইনস্টল করলাম ঠিকমতো। কিন্তু সেগুলো কোথায় ইনস্টল হলো আর খুঁজে পাচ্ছি না। অ্যাপ্লিকেশন, অ্যাড/রিমুভ ইত্যাদিতে খোঁজাখুজি করেও লাভ হয় নি। অথচ আমি নিশ্চিত যে সেগুলো যথাযথভাবেই ইনস্টল হয়েছে।

একই সমস্যা গুগল আর্থেও। যথাযথভাবে ইনস্টল করার পরও কাজ করছে না। সার্চ দিলে কোনো ইমেজই আসে না। ইন্টারনেটে সার্চ দিয়েও এগুলোর কোনো সমাধান পাচ্ছি না।

আরেকটি বিষয় বুঝতে পারছি না। অনেকে বলেন উবুন্টুতে ভাইরাস নেই। কিন্তু কী কারণে নেই? মানুষজন তো ইচ্ছে করলেই ভাইরাস তৈরি করতে পারে! এই বিষয়টি পরিষ্কার না।

যাই হোক, সম্প্রতি নতুন ভার্সন উবুন্টু ৯.০৪-এও আপগ্রেড করেছি। উবুন্টু নামক এই নতুন বউ নিয়ে আমি খুশি। অন্যের সম্পত্তি চুরির দায়ে এতোদিন নিজের কাছেই অভিযুক্ত ছিলাম। এখনো অবশ্য আছি- কোনো কারণে বিজয় ব্যবহার করতে হলে উইন্ডোজে যেতেই হয়। কিন্তু সেটা তো নিরূপায় হয়ে! জান বাঁচানো যে ফরজ! তবে গত দশ দিনে আমি কোনো কারণেই উইন্ডোজে যাই নি। যেতে হয় নি। পাইরেটেড কপি ব্যবহারের কারণে যে মনোকষ্টে ভুগি, সেটার উপশম হয়েছে অনেকটাই। এই আনন্দেই আমার দিনগুলো এখন কেটে যায় উবুন্টুর সাথে খুন্টুমুন্টু করতে করতে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুন, ২০০৯ রাত ১০:৪২
১৭টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×