somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে কথা বলিনি কাউকে - ৩ (স্বপ্ন)

৩০ শে জুলাই, ২০১২ রাত ৮:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইদানিং একটা ব্যাপার খেয়াল করেছি - আমি ঘুমুলে খুব বেশি যে স্বপ্ন দেখি তা না। আমার অধিকাংশ ঘুম হয় একেবারে সাদামাটা। ঘুম থেকে উঠে মনে হয় কিছুক্ষন আগে না ঘুমালাম!! এজন্য মাঝে মাঝে ঘুমের আগে শুয়ে শুয়ে কিছু নিয়ে খুব কল্পনা করে নেই। ঘুমুলে তো আর কিছু দেখব না। তাই। অধিকাংশই রোমান্টিক। কিছু কল্পনায় থাকে আমি যদি সুপারম্যান হতাম তাহলে কি কি করতাম - এই যেমন, ঘুষখোর সবগুলোকে রাস্তায় দাড় করিয়ে সবার সামনে অপমান করতাম। এর চাইতে বেশি শাস্তি দেয়ার কথা আর ভাবতে পারি না। ডান্ডা দিয়ে পাছায় ১০ বার করে বারি দেয়ার কথাও ভাবতে পারি না। ঘুরে ফিরে একই কল্পনাই করতে থাকি। অজান্তেই রাগে দু:খে কপাল কুচকে যায়। এরপর ঘুমিয়ে যাই। ঘুম থেকে উঠে ভাবি, কোন স্বপ্ন কি দেখেছি? দেখিনি।

আর রোমান্টিক ভাবনা গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো প্রিয় মানুষটার হাত ধরে বসে থাকা। কোন কথা হয় না। কখনও কখনও পরিচিত কোন রাস্তায় হেটে বেড়াই। খুব পছন্দের কল্পনা এটি আমার। মিনিটের পর মিনিট এই একই ছবি আমার চোখের সামনে স্থির হয়ে থাকে। এরপর কখন ঘুমিয়ে যাই - বুঝতে পারি না।

ঘুমের মধ্যে আমার স্বপ্ন না দেখার ব্যাপারে কিছু গবেষনা করেছিলাম। একবার মনে হল প্রচন্ড ক্লান্তি ছাড়া আমি বিছানায় যাই না। তাই বোধ হয় আমি স্বপ্ন দেখি না। কিন্তু কিছুদিন পরে আমি আবিষ্কার করলাম আমি বিছানায় গেলেই ঘুমিয়ে পড়ি। ক্লান্তি নিয়ে হোক আর না হোক। কিন্তু স্বপ্ন দেখি না।

আমার বাসার সাথেই একটি মসজিদ আছে। আজানের শব্দ খুব জোড়েই শোনা যায়। আমি ঘুমালে সেই শব্দেও আমার ঘুম ভাঙ্গে না। ঘুম ভাঙ্বে কখন? যখন তার মনে হবে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ষোল কলা পূর্ন হয়েছে তখন।

আমি যে খুব ঘুম কাতুরে তাও না। মাঝে মাঝে মনে হয় ঘুমুলেই তো এত চমৎকার সময়টা আমি হারিয়ে ফেলব। কত কিছু করার বাকি এখনও। একটু গল্পের বই পড়তে হবে। একটু ক্লাশের পড়াশুনা করতে হবে। একটু কম্পিউটার গেম খেলতে হবে। একটু আড্ডা দিতে হবে। প্রিয়জনকে একটু সময় দিতে হবে। কত কিছুই বাকী। ঘুমালে কি হবে? জানি না, ঘুমের উপর এই অত্যাচারের জন্যই কিনা - ঘুমুলে আমি কোন স্বপ্ন দেখি না।

আমার সবচেয়ে বেশি সময় ঘুমের রেকর্ড হল ১৬ ঘন্টা। টানা ঘুম না অবশ্য। মাঝে একবার উঠেছিলাম প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে। খুব বেশি দিন আগের কথা না এটা। তখন কলেজে পড়তাম। টানা ৪৮ ঘন্টা না ঘুমানোর রেকর্ডও করেছি। তখন ভার্সিটিতে পড়তাম। তখন না ঘুমানোটাই ছিল কাজ। রাত এগারোটায় বাসায় ফিরেছি। কিছু খেয়ে কিছু পড়াশুনা করেছি কি করিনি - রাত ২ টার আগে ঘুমুতে যাই নি। সকাল ৬ টায় ঘুম থেকে উঠে আবার ভৌ দৌড়। ঐ সময়টায় কোন ক্লান্তি বোধ করিনি। ঘুমুই নি। তাই বলে ক্লান্তি কি?

কিন্তু এখন? টানা আট ঘন্টা না ঘুমুলে মনে হয় সেদিন আর কাজ করতে পারছি না। সব ক্লান্তি আর অবসন্নতায় আমি শেষ। চোখের পাতার উপর আমার আর নিয়ন্ত্রন নেই। অফিসের রিসিপশন রুমের সোফায় গিয়ে আমি ঘুমের সাগরে ডুবে যেতে থাকি।

ছোটবেলায় মনে পড়ে, বাবার সাথে তারাবিহ-র নামাজ পড়তে গিয়ে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ঘুমাতাম। আর কেউ যদি ঘুমে একটু ঢলে পড়ত তাহলে হেসে দিতাম।
আর সারাদিন, সারাবিকেল দৌড় ঝাপ শেষে একটু পড়াশুনা করে ঘুমে ঢলে পরাতো রুটিন কাজ ছিল। তখন কিন্তু স্বপ্ন দেখতাম। কিছু কিছু স্বপ্ন মনে পড়ে - সেগুলো ভয়ংকর ছিল। ঘুমের মধ্যেই কাঁদতাম। ঘুম থেকে জেগেও দেখতাম কাঁদছি। কেউ এসে কি হয়েছে জিজ্ঞেস না করা পর্যন্ত থামতাম না।

যেবার নানা বাড়িতে যেতাম, যেতে যেতে অনেক রাত হত। আমিতো ঘুমে কাদা। হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে দেখতাম কে যেন আমাকে কোলে করে নিয়ে হেটে যাচ্ছে। মা আর মামারা কথা বলছে। চারিপাশে ঘুটঘুটে অন্ধকার। কি যেন একটা পোকা কিড় কিড় করে অবিরাম ডেকে যাচ্ছে। আর ছিল জোনাকি পোকা। অসংখ্য জোনাকি পোকা। কিন্তু একটিও আমার গায়ে এসে বসছে না। দেখতে দেখতে আবার ঘুমিয়ে যেতাম। তখন কি স্বপ্ন দেখতাম তা আজ আর মনে নেই।




যে কথা বলিনি কাউকে - সিরিজ লিন্ক।




সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:০৯
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×