somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাজিমউদ্দিন রোড, পুরান ঢাকার এই রাস্তাটির নাম পরিবর্তন জরুরী নয় কি?

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোট্ট বন্ধুরা কেমন পালন করলে তোমরা অমর একুশে? শহীদ মিনারে গিয়েছিলে কি? সেলফি তুলতে পেরেছিলে? ফেসবুকে বাংলায় সুন্দর স্টাটাস দিয়েছো নিশ্চয়!

তোমরা কি জানো
"নাজিমউদ্দিন রোড"
কোথায় অবস্থিত?!

খাজা নাজিমুদ্দিন ১৯ জুলাই ১৮৯৪ সালে ঢাকার নবাব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ১৫ আগস্ট ১৯৪৭ হতে ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৪৮ পর্যন্ত। পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর জেনারেল ছিলেন ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৪৮ হতে ১১ নভেম্বর ১৯৪৮ পর্যন্ত এবং গভর্নর জেনারেল ১৭ অক্টোবর ১৯৫১ পর্যন্ত। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ১৭ অক্টোবর ১৯৫১ হতে ১৭ এপ্রিল ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত।

পাকিস্তানের গণ পরিষদে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি ১ম উত্থাপন করেন কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন ১৯৪৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি করাচিতে অনুষ্ঠিত পাকিস্তান গণপরিষদের সভায় দেওয়া ভাষণে বলেন, "পূর্ব পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের অনুভূতি হচ্ছে, উর্দুই হবে একমাত্র ভাষা।" পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই মিথ্যা ভাষণে ক্ষুব্ধ হন পূর্ব পাকিস্তানে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে আন্দোলনরত বাঙালি ছাত্র জনতা।

তৎকালীন ব্রিগেডিয়ার আইয়ুব খানের নির্দেশে মেজর পীরজাদা একদল সৈন্য নিয়ে ছাত্র দ্বারা ঘেরাও "পরিষদ ভবন" থেকে প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দীনকে বাবুর্চিখানার মধ্য দিয়ে বের করে নিয়ে যায়।

শেষ পর্যন্ত খাজা নাজিমউদ্দীন আন্দোলনের কাছে নতি স্বীকার করেন। ১৯৪৮ সালের ১৫ই মার্চ প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দীন এবং রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে পূর্ব বাংলা সরকার ভাষা আন্দোলনের জন্য যাদের গ্রেপ্তার করে তাদের মুক্তি দিতে এবং পুলিশী জুলুমের তদন্ত করার সম্মতি দেন। পূর্ব বাংলার আইন সভায় বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাজে উর্দুর সঙ্গে সমান মর্যাদা দেওয়ার সুপারিশ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

পূর্ব বাংলার সরকারি ভাষা হিসাবে বাংলাভাষাকে চালু করার কথাও বলা হয়। এছাড়া সংবাদপত্রের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা এবং ১৪৪ ধারা প্রত্যাহারের দাবিও স্বীকৃত হয়। পূর্ব বাংলার প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দীন এবং রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের কামরুদ্দীন আহমদের মধ্যে চুক্তিপত্রটি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু তার আগে সংগ্রাম পরিষদের নেতারা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে বন্দী ছাত্রনেতা শামসুল হক, শওকত আলি, অলি আহাদ, কাজী গোলাম মাহবুব ও শেখ মুজিবুর রহমান এর সম্মতি নিয়ে আসেন। ১৫ মার্চ বন্দী সব ছাত্রনেতাকে মুক্তি দেওয়া হয় কিন্তু ১৬ই মার্চের আন্দোলন অব্যাহত থাকে। ১৬ মার্চ তারিখেও বাংলাভাষার দাবিতে ছাত্ররা সভা, শোভাযাত্রা ও পরিষদ ভবন ঘেরাও করে এবং তাদের ওপর পুনরায় পুলিশী হামলা চলে।

রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দীনের চুক্তিমত কথা ছিল বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার সুপারিশ করা হবে। খাজা নাজিমউদ্দীন সে চুক্তি ভঙ্গ করেন। নাজিমউদ্দিন আরবী হরফে বাংলা লেখার অদ্ভুত এক পরিকল্পনা পেশ করেন। জিন্নাহ ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রাম সফরের সময় এর প্রতি সমর্থন ব্যাক্ত করেন। মওলানা ভাসানী উর্দু রাষ্ট্রভাষা করার বিরোধিতা করলে নাজিমউদ্দিন মওলানা ভাসানীকে রাষ্ট্রদ্রোহী আখ্যা দিয়ে ভারতের চর বলে সম্বোধন করেন।

শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবীতে কারাগারে অনশন করেন - ১৬ ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ থেকে ১৭ দিন ।

দাবি, প্রতিবাদ এবং আন্দোলনে ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সর্বাত্মক ধর্মঘটের কর্মসূচি ঘোষিত হয়। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে সরকার ২০ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে এক মাসের জন্য সব মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করেছিল। তীব্র উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে ৯৪ নবাবপুরে অবস্থিত আওয়ামী মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় অফিসে অনুষ্ঠিত হয়েছিল সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের জরুরি সভা। এতে দীর্ঘ বিতর্কের পর ১৪৪ ধারা ভঙ্গ না করার পক্ষে বেশি ভোট পড়লেও পরদিন ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেই বিক্ষোভ মিছিল বের হয়েছিল। সে মিছিলের ওপরই গুলি চালিয়েছিল পুলিশ।

আজ ২০১৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারীতেও নাজিমউদ্দিন রোড পুরান ঢাকার রাস্তার নাম, যার পূর্ব নাম ছিলো মনোয়ার খান রোড।

তো ছোট্ট বন্ধুরা, তোমাদের কি মনে হয় এই রাস্তাটির নাম পরিবর্তন করা প্রয়োজন?!!!

**** খাজা নাজিমউদ্দিন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে গুগল করে জেনে নিন সহজেই।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:০৫
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×