somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গাধা উপন্যাসের এপর্যন্ত যতটুকু লিখেছি সব একসাথে

০৬ ই মে, ২০১১ রাত ৮:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১.
পিঁপড়ারও ইদানীং রুচিবদল ঘটেছে। মশার চেয়ে পিঁপড়ার যন্ত্রণা এখন বেশি মনে হচ্ছে রেশমার কাছে। মশা রাতে জ্বালায়; পিঁপড়ার যন্ত্রণা চব্বিশ ঘণ্টা। মশা সবখানে যায় না। কিন্তু পিঁপড়া এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে হানা দেয় না। সাবান থেকে শুরু করে লবণ পর্যন্ত পিঁপড়ার আসা-যাওয়া।
সেদিন তো গোসল করতে গিয়ে ভয়ঙ্কর বিপদে পড়তে গিয়েছিলো রেশমা। শরীর মোছার জন্য যখনই তোয়ালেটা হাতে নিয়েছে, দেখলো গোলাপী তোয়ালেটা কালো হয়ে গেছে পিঁপড়ার গাদাগাদিতে। ভয় পেয়ে সাথে চিৎকার করে শ্বাশুড়ীকে ডাক দিলো।
হেলেনা বেগম এসে বললেন, ‘ভিজিও না ভিজিও না। পানিতে ভেজালে পিঁপড়াগুলো আরো শক্ত করে তোয়ালে কামড়ে ধরবে। আমি আমার গামছা এনে দিচ্ছি। কেউ হয়তো তোমার তোয়ালে দিয়ে খাওয়ার পরে মুখ ধুয়েছিলো।’
গামছা এনে হাতে তুলে দিতে দিতে তিনি জানালেন, ‘তোমার শ্বশুরের বিয়ের পাঞ্জাবিটাও পিঁপড়া নষ্ট করে ফেলেছে। ওনার তো আবার খাওয়ার সময় তাল থাকে না। খেতে গিয়ে ঝোল ফেলেছে পাঞ্জাবিতে; খেয়াল না করেই সেই পাঞ্জাবি রেখে দিয়েছে। ধুতে গিয়ে দেখি পাঞ্জাবি আর পাঞ্জাবি নেই; মশারির মতো ছিদ্র দেখা যাচ্ছে সারাবাড়ি।’
মশা মারার জন্য এখন ব্যাট বেরিয়েছে। চাউল ভাজার আওয়াজের মতো ব্যাটের সাথে মশা লেগে ফুটতে থাকে। কিন্তু পিঁপড়া মারার জন্য ওরকম কোনো যন্ত্র বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। পিঁপড়ার ওষুধ আবার খাবারের আশেপাশে দিলে ভয় থাকে। বিষচক দিয়ে দেয়ালে দাগ দিলে সেই দাগের ওপর দিয়েই পিঁপড়ার লাইন চলতে থাকে।
এ এক বিশাল বিপদ। খাবারের মধ্যে পিঁপড়া দেখলে কার খেতে ইচ্ছে করে? স্বামীরা না হয় ভাতের মধ্যে বৌয়ের চুল পেলে মুচকি হেসে সেটা সরিয়ে ফেলে খেয়ে উঠবে। কিন্তু পিঁপড়ার বিষয়টা কী করা যায়?
কাজলকে ডাক দিলো রেশমা।
হাতে একটা পটল নিয়েই রান্নাঘর থেকে ছুটে এলো কাজল। ‘আফা, কী কন?’ হাতে পটলটা ও ইচ্ছে করেই নিয়ে এসেছে। ও যে কাজ করছে, সেটা বুঝিয়ে দিতে চাইছে।
‘পিঁপড়া দূর করা যায় কীভাবে বল তো কাজল।’
‘আফা, ফিরিজের ভিতরে পিঁপড়া ঢুকতে পারে না। সব খাওন ফিরিজে ঢুকাইয়া রাখলে মনে হয় বাঁচন যাইবো।’
রেশমা এতক্ষণ খাওয়ার টেবিল মুছতে মুছতে কথা বলছিলো। এবার কাজলের দিকে ফিরে বললো, ‘আর খাবার ছাড়া অন্য যেসব জিনিসে পিঁপড়া যায়, সেগুলো কোথায় রাখবো?’
‘তাও তো ঠিক আফা।’ টেনে টেনে বললো কাজল। ওর কথা শেষ না করতে দিয়েই রেশমা বললো, ‘আমাদের ঘরে কাগজের বাক্সের মধ্যে দেখবি একটা ফাইল আছে পেপার কাটিংয়ের। সেটা নিয়ে আয়।’
পেপার কাটিং মানে গেরস্থালী বিষয় নিয়ে পত্রিকার যে সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন বের হয়, সেটা। রেশমা ওগুলো যত্ন করে রেখে দেয় মূলত রান্না শেখার জন্য। ওগুলোতে অনেক গেরস্থালী তথ্যকণা দেয়া থাকে। Tip-এর বাংলা তথ্যকণা হবে না কি তথ্যাণু হবে? বাংলা পত্রিকাগুলোতে অবশ্য টিপস লিখছে। যেমন বাংলায় গার্মেন্ট লেখা হয় না; গার্মেন্টসই লেখা হয়।
খাওয়ার টেবিলে বসেই রেশমা একটার পর একটা পৃষ্ঠা ওল্টাতে লাগলো। পিঁপড়া-সমস্যার সমাধানে একটা লেখা দেখা যাচ্ছে : নিমপাতা সমাধান।
‘হুঁ, এটা চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে। কাজল!’
‘কাজল তো নেই।’
‘আরে আপা, এই সময় কী মনে করে?’ রেশমা ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলো পাশের বাসার সুরাইয়া আপা।
‘আজ আমাদের খিচুড়ি খাওয়ার দিন। খিচুড়ি রান্না করতে তো আর সময় লাগে না, তাই চলে এলাম আপনার রান্না এগিয়ে দিতে। বলতে পারেন আপনাকে জ্বালাতেও এসেছি।’
‘আসেন ভেতরে আসেন। আম্মা দেখেন কে এসেছে।’

হেলেনা বেগম তার রুম থেকে আসতে আসতে ঝকঝকে দাঁতগুলো বের করে বললেন, ‘কী বৌ, কেমন আছো?’ সুরাইয়ার সাথে আসা তিন বছর বয়সী মেয়ের চিবুক ধরে বললেন, ‘আমার দাদুমণি কেমন আছে?’
মেয়ে সাথে সাথে জবাব দিলো, ‘ভালো নেই।’
‘কেন, কী হয়েছে?’
‘রেশমা আপা আম্মুকে বসতে বলেছে, কিন্তু আমাকে বসতে বলেনি।’
পুরো ঘরে হাসি বয়ে গেলো। সুরাইয়া সম্ভবত মেয়ের ভুল শুধরাতে গিয়েছিলেন। তার আগেই হেলেনা বেগম বললেন, ‘ও মা, রেশমা আবার তোমারও আপা হলো কবে? সে যেহেতু বলেনি, চলো তুমি আমার সাথে। আমার ঘরে গিয়ে বসে আমার সাথে গল্প করবা। বৌ, তোমরা তাহলে কথা বলো।’
মেয়েদের পক্ষেই সম্ভব একসাথে মা-মেয়ে-নানী বসে একসাথে মেয়েলী-গেরস্থালী গল্প-গুজব করা। কিন্তু কোনো ছেলে কোনোদিন তার বাপের সাথে বসে চা খাওয়ার সময়ও দুজনের মধ্যে একটা গাম্ভীর্যের দেয়াল থেকে যায়। অন্যদিকে ডক্টরেট ডিগ্রি নেয়া শিক্ষিকারাও পরীক্ষার হলে গার্ড দিতে গিয়ে খাজুরে আলাপ জুড়ে দেন। হেলেনা বেগমও যে এর বাইরে, এমনটা নয়। কিন্তু যেহেতু একজন সঙ্গী পাওয়া গেছে, সেজন্যই সম্ভবত তিনি একটা সুযোগ করে দিয়ে নিজের জন্য সুযোগ করে নিলেন।
হেলেনা বেগম যেতে যেতে সুরাইয়া রেশমাদের ঘরের চারদেয়ালে চোখ ঘুরিয়ে আনলো। ওদের দেয়ালে একটা দেয়ালঘড়ি, একটা ক্যালেন্ডার আর রেশমার তৈরি একটা ওয়ালম্যাট ছাড়া তেমন দামী কিছু নেই। তারপরও এঘরে এলেই তার দেয়ালে চোখ ঘোরানো চাই। ধরা পড়ার ভয়ে হয়তো কোনো একটা নির্দিষ্ট জিনিসের দিকে তাকায় না। রেশমার ধারণা—মহিলা এখনো পর্যন্ত ওয়ালম্যাটে যেরকমের ফোঁড় আছে, তা রপ্ত করতে পারেনি। জিজ্ঞেস করলেও লজ্জায় পড়তে হবে। একজন মহিলা কী করে আরেকজনের কাছে হার মানবে?
সুরাইয়াই শুরু করলেন, আপার আজকের মেনু কী?
বলবেন না আর ভাই। পটল ভর্তা আর রুই মাছের ডিম ভুনা। কী সব জিনিস যে কিনে আনে! কোনো একটা ভালো তরতাজা তরকারি না; ভালো কোনো মাছ না। জিজ্ঞেস করলেই বলে রাতের বেলা যা পাবো, তাই তো আনবো। দুনিয়ায় যেন উনি একাই চাকরি করেন।
আমাদেরও তো একই অবস্থা। আমি আবার দিনের বেলা ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে অনেক জিনিস রাখি। আজকাল সবকিছুরই ফেরিওয়ালা আছে। ছোট পোশাক পর্যন্ত ফেরিওয়ালারা নিয়ে আসে।
আপনার যে রাস্তার পাশে ঘর, এজন্য আপনি সব রাখতে পারেন। আমাদের এদিক থেকে ফেরিওয়ালাদের ডাক শোনা যায় না। এখন থেকে কোনো ফেরিওয়ালা এলে আমাকেও খবর দিয়েন তো।
আপনাকে যে ডাক দেবো, আমিই তো জিনিসপাতি রাখি লুকিয়ে লুকিয়ে।
কেন?
বাড়িওলী সবসময় খেয়াল করেন আমি কী কিনি। আর সেটার রেশ ধরে উনি জানিয়ে দেবেন ওনার কেনা জিনিসটা এর চেয়ে বেশি দামী অথবা কম দাম হলেও ভালো কোয়ালিটির।
রেশমা ততক্ষণে টিন থেকে বিস্কুট বের করে পিরিচে সাজিয়ে ফেলেছে। খাটের ওপর জগ-গ্লাশ আর বিস্কুট রেখে বললো, খেতে খেতে বলেন আপা। চা একটু পরেই আসবে।
তো সেই মহিলা যদি কোনোদিন আমাকে দেখে গুঁড়া মাছ রাখতে তাহলে বলবে আমাদের উনি কোনোদিনও গুঁড়া মাছ কেনেন না। ওনাদের বাড়িতেও পুকুর থেকে মাছ ধরতে গেলে তিন কেজি ওজনের নিচে কোনো মাছ থাকলে সেটা আবার জাল থেকে ফেলে দেয়া হয়।
হুঁ উনি যে কতটা বড়লোক তা ত্রিশ তারিখেই ওনার বাসাভাড়া চাওয়া দেখে বোঝা যায়। আমরা তো ইচ্ছা করলে পঁচিশ তারিখে ভাড়া দিয়ে দিতে পারি। ব্যাংকে বেতন হয় পঁচিশ তারিখে। কিন্তু এই মহিলা যাতে তার ভিক্ষুকেপনা দেখাতে পারে সেই সুযোগ করে দিতেই কয়েকদিন দেরি করি।
কারেন্ট বিলের ব্যাপারে কি কিছু বললেন আপা?
কী আর বলবো ভাই! পঞ্চাশ-একশো টাকা দিয়ে যদি ওনারা দালান আরেকটা গড়তে পারেন গড়ুন না।
কিন্তু প্রতিমাসে একদম শয়ের ঘরে বিল হবে এটা কেমন কথা? ছয়শো, সাতশো, আটশো। ছয়শো আটাশ টাকা কেন হয় না?
বলেছিলাম তো মিটার আলাদা করে দিতে। কিন্তু আমার কী ধারণা জানেন? পুরো বাড়ির যা বিল আসে সেটা ভাড়াটিয়াদের মধ্যে ভাগ করে দেয়। নিজেরা এক টাকাও দেয় না।
আরে এদিকে আবার বিশিষ্ট লেখক দুলাল আছে না? আমার ছেলে বলে বিল লেখক দুলালচন্দ্র বর্মণ। সেই দুলাল করে এই কাজ।
ঐ ছেলের কোনো আত্মসম্মানবোধ আছে? তুই লেখাপড়া শেষ করেছিস, এখন নিজে কিছু একটা করবি। তা না, আরেক লোকের ফরমাশ খাটা। ছি!

২.
আজকে স্কুলে কী শিখলে দাদুমণি?
আজকে কিছুই শিখিনি।
কেন?
ঐ যে একটা কালো ম্যাডাম আছে না, ঐ ম্যাডাম আমাকে ধমক দিয়েছে, সেজন্য। এখন থেকে আর কালো ম্যাডামের কাছে পড়বো না। সুন্দর ম্যাডামের কাছে পড়বো।
কালো ম্যাডাম তোমাকে কীভাবে ধমক দিলো?
এই মেয়ে বই ছিঁড়েছো কেন? একদম বেঞ্চের ওপর দাঁড় করিয়ে রাখবো।
তারপর তুমি কী করলে?
তারপর আর আমি ঐ ম্যাডামের পড়া পড়িনি। তাকে বলেছি তোমার কাছে আর পড়বো না। আব্বু এলে আব্বুকে বলবো কালো ম্যাডামকে যেন একটা ধমক দিয়ে দেয়।
সুরাইয়া বেগম তার ছোটবেলার উঠোনে ফিরে গেলেন। উঠোনে দাঁড়ালে বাড়ি ঘিরে রাখা গাছের সারির ফাঁকা দিয়ে মাটির রাস্তা এবং রাস্তার পরে ক্ষেত পার হয়ে বিশ্বাসবাড়ি পর্যন্ত দেখা যায়। মজিবর ছিলেন সম্পর্কে সুরাইয়ার চাচা। অর্থাৎ সুরাইয়া বেগমের দাদা আর মজিবরের আব্বা ছিলেন চাচাতো ভাই। মজিবর চাচা তার একমাত্র শার্টটা ঘামে ভিজে গেলে রাতের বেলা ধুয়ে কাঠের ঘরের দোতলায় ঝুলবারান্দায় এমনভাবে শুকাতে দিতেন যাতে রাতে পানি ঝরতে ঝরতে যেটুকু শুকানো বাকি থাকে তা সকালে স্কুলে যাওয়ার আগে রোদ পেয়ে শুকিয়ে যায়। উঠোনে শুকাতে দিলে কি না আবার তার আব্বা দেখে চেঁচামেচি শুরু করে দেবেন, নবাবজাদায় যাইবো কুনহানো? বিয়ানবেলাই কুর্তা ধুইয়া দিছে! রাগে আবার শার্ট ছিঁড়েও ফেলতে পারেন।
ফজরের নামাজের সময় মজিবর চাচা বই নিয়ে মসজিদে চলে যেতেন। নামাজের পর সেখানে বসেই পড়া শেষ করার চেষ্টা চালাতেন। এদিকে ভেতরবাড়িতে ততক্ষণে চা খাওয়া, হাটের সওদা, গ্রামে বা বাড়িতে ঘটে যাওয়া ঘটনার মূল্যায়নশেষে সকালের খাবারপর্ব চলতে থাকতো।
সেদিন মজিবর চাচা ঐ কায়দায় শুকানো শার্ট পরে বই বগলদাবা করে স্কুলে যাচ্ছিলেন। ততক্ষণে তার আব্বা ক্ষেতে হাজির হয়ে গেছেন। রাস্তা ধরে মজিবর চাচাকে যেতে দেখে তার আব্বা চেঁচিয়ে উঠলেন : নবাবজাদায় ইস্কুলো যায়? পড়াল্যাহা কইরা বেরিস্টার ওইবো? তাইলে এই ক্ষ্যাত নিড়াইবো ক্যাডায়?
মজিবর চাচা শান্তকণ্ঠে বললেন : আব্বা, আমি অঙ্ক পিরিয়ড কইরাই আইয়া পড়–ম। আপনে যট্টুক পারেন, কইরা জিরাইয়েন। আমি আইয়া বাকিডা ধরুমনে।
কী কইলি তুই? চোখমুখ থেকে আগুন ছুটিয়ে মজিবর চাচার আব্বা কাস্তে হাতে দৌড়ে তে থেকে রাস্তায় উঠে এলেন। চাচার বগল থেকে বইগুলো ছিনিয়ে নিয়েই ক্ষেতের কাদায় ছুঁড়ে ফেলে দিলেন। সেটাও একটা রক্ষার ব্যাপার ছিলো। কিন্তু তিনি আবার নেমে গিয়ে পা দিয়ে দাবড়ে বইগুলো কাদার ভেতর ঢুকিয়ে ক্ষান্ত হলেন। মজিবর চাচা চুপচাপ শার্টটা খুলে রাস্তার পাশে ঘাসের ওপর একটা শুকনো মাটির চাকার নিচে চাপা দিয়ে রেখে ক্ষেতে নেমে গেলেন।
সুরাইয়া বেগম যাচ্ছিলেন গোবরের ঘুঁটে রোদে মেলে দিতে। উঠোনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তিনি পুরো দৃশ্যটাই দেখলেন। মজিবর চাচা বিকেলে আবার কাদা থেকে বইগুলো উঠিয়ে এনেছিলেন। রোদে শুকানোর পর কাদা চেঁছে তুলে ফেললেও কাদার ছাপ থেকে গিয়েছিলো। সেবছর অনেক কষ্টে মজিবর চাচা এইট পাশ করেছিলেন। যে-পৃষ্ঠার লেখা পড়া যেতো না, সেখানকার লেখা অন্যের বই দেখে লিখে আনতেন। আড়িয়াবো গ্রাম থেকে বছর পাঁচেক পরে মজিবর চাচাই প্রথম কোনো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হয়েছিলেন।
সুরাইয়া বেগম একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। তখনকার লোকেরা গুরুজনের সামনে ছিলো কেমন অসহায় আর এখন বাচ্চারা কি না শিক্ষিকাকে বলে তোমার কাছে পড়বো না।
সুরাইয়া বেগমের দীর্ঘশ্বাস শুনে তার দুই রানের মাঝখানে খাটের সাথে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা রুয়াইনা ঘুরে প্রশ্ন করলো : দাদুমণি, তুমি কি কাঁদছো?
এ আরেক সমস্যা। এদের সামনে অস্বাভাবিক কিছুই করা যাবে না। জায়নামাজে মাকে কাঁদতে দেখে সুরাইয়া বেগমরাও সাথে সাথে কাঁদতেন। শুধু জায়নামাজে কেন, গ্রামের কোনো মহিলা অথবা আত্মীয়স্বজন মারা গেলে কিংবা বহুদিন পর কোনো খালা বেড়াতে এলে তার সাথে মা যখন কাঁদতেন সুরাইয়া বেগমরা তখন না কেঁদে পারতেন না। আর এখন এরা প্রশ্ন করে : কেন কাঁদছো তুমি?
সুরাইয়া বেগম বললেন : না দাদু, কাঁদছি না। ছোটবেলার কথা মনে পড়লো। আমরা ছোটবেলায় কেমন ছিলাম!
আমি যখন ছোট ছিলাম তখন কিন্তু তোমার মতো কাঁদতাম না। আমি তখন খেলতাম। বুঝেছো দাদু? কিন্তু ঐ যে নিচতলায় জুয়েনা আছে না, ও শুধু কাঁদে।
তোমাকে যে আমি কাল বিকেলে শুনলাম তোমার আম্মুর সাথে ঘুরতে যাবে বলে কাঁদছিলে।
না তো আমি কাঁদিনি। কাঁদলে তো চোখ দিয়ে পানি পড়ে। কিন্তু দেখো, আমার চোখে কি পানি আছে?
সুরাইয়া বেগমদের সময় কিশোরবয়স ছিলো চালাকির বয়স। এখন শিশুরাই চালাকি দেখায়। কিশোর-কিশোরীরা তো পুরোমাত্রায় বোধজ্ঞানসম্পন্ন। তারা এখন ক্যারিয়ার নিয়ে আলোচনা করে; বাসের কন্ডাক্টরদের সাথে মারামারি করে; খেলা, রাজনীতি, যুদ্ধ ইত্যাদিতে কোন দলকে সাপোর্ট করবে সে-ব্যাপারে গ্রুপ ডিসিশন নেয়। সেজন্য বড়দের আচরণেও এখন পরিবর্তন এসেছে। বড়দের কাছে ছোটদের চালাকি প্রায় সবসময়ই ধরা পড়ে। কিন্তু তখন বড়রা এক থাপ্পড়ে দাঁত ফেলে দিতে চাইতো, এখন তারা চালাকি শেয়ার করার ভান ধরে অন্যদিকে মন ফেরানোর চেষ্টা করে।
রুয়াইনাকে কোলে নিয়ে সুরাইয়া বেগম বললেন : দাদুমণি, আমরা তো অনেক কথা বললাম। অনেক পরিশ্রম হলো। আসো, এখন বিস্কুট খেয়ে নিই। বক্সখাটের ড্রয়ার থেকে তিনি বিস্কুটের টিন বের করলেন।
রুয়াইনা টিন খোলার আগেই বলে ফেললো : দাদু, তোমার বিস্কুটে চিনি নেই। কিন্তু আন্টিমণির বিস্কুটে চিনি আছে। তারপর আবার ঐ বিস্কুট বড়, তোমার বিস্কুট ছোট।
আমার দাঁতে ব্যথা তো দাদুমণি, আমি ঐ শক্ত বিস্কুট খেতে পারি না। সেজন্য আমার বিস্কুট ছোট আর নরম।
তোমার দাঁতে ব্যথা কেন? তুমি কি বেশি বেশি চকোলেট খাও?
না দাদুমণি। বুড়ো হয়ে গেলে মানুষের দাঁতে ব্যথা হয়।
কিন্তু তুমি তো বুড়ো হওনি। তুমি লাঠি হাতে নিয়ে হাঁটো না। তোমার চুল পাকেনি। ঐ যে আমাদের দাদুমণি আছে না, আব্বু যাকে মা বলে ডাকে, তার চুল সাদা। আবার লাঠি ধরে ধরে হাঁটে। সে হলো বুড়ো।
কথাটা শুনে সুরাইয়া বেগমের কি একটু অন্যরকম লাগলো? ভালো লাগলো না কি আতঙ্ক বাড়লো? তিনি কি নিজের নাতির জন্য উতলা হবেন না? চিন্তাটা চালিয়ে নিতে নিতেই বললেন : আচ্ছা ঠিক আছে, আমি বুড়ো না। তাহলে কি বিস্কুট বাদ দিয়ে আপেল খাবে? আপেল তো জোয়ান মানুষেরা খায়।
হুঁ।
তাহলে তুমি বসো। আমি আপেল নিয়ে আসি।
না, আমিও যাবো। আপেল কাটার আগে ধুয়ে নিতে হয়, জানো? আমি সুন্দর করে আপেল ধুতে পারি।
এটা হলো এই পিচ্চির পানি ছানার একটা বাহানা। বাচ্চা মানেই পানির মধ্যে মজা পাবে। ঠাণ্ডা লাগার ভয়ে সুরাইয়া বেগমের বড় ভাইপো জাহিদের ছেলেটা যাতে পানি না ধরতে পারে সেজন্য জাহিদ আর তার বৌয়ের সারাদিন কত প্রচেষ্টা! কোনো একটা ভাণ্ড হাতের কাছে রাখে না। সব তুলে রাখে। ফ্রিজ রাখে তালা দিয়ে আটকে। সেই ছেলে ওর বাপ খেয়ে ওঠার পর প্লেটধোয়া পানিতে কোন এক ফাঁকে এসে জামার হাতা চুবিয়ে সেই হাতার পানি চুষে চুষে খেয়েছে। এরপর যখন তার মায়ের সামনে গিয়ে হাত নাচিয়ে সে হি হি করতে করতে লাফানো শুরু করলো, তার মা নিশ্চয়ই কিছু একটা ঘটেছে বুঝতে পেরে জিজ্ঞেস করলো : কী করেছো মুনাওয়ার?
তোমরা আমাকে পানি ধরতে দাও না, এখন আমি ময়লা পানি খেয়েছি। এবার আমার অসুখ করবে। হি হি।
সুরাইয়া বেগম রুয়াইনার হাত নিজের হাতে নিয়ে আপেল ধুয়ে এনে কাটতে বসলেন।
রুয়াইনা পাশে বসে এমন একটা কথা বললো, যা শুনে সুরাইয়া বেগম স্তব্ধ হয়ে গেলেন। রুয়াইনার কথাটা ছিলো : দাদু, তুমি আর আমি এই বটি নিয়ে পুলিশের হাত কেটে দেবো।
কেন?
পুলিশরা দেখো না কীভাবে মানুষকে মারে?
সুরাইয়া বেগম একইসাথে বিস্মিত এবং পুলকিত হলেন। ব্রিটিশদের গোলামি আর জমিদারদের নিষ্পেষণ মেনে নিয়ে আমাদের পূর্বপুরুষরা তাদের দ্বিতীয় প্রজন্মের মাথাও হেঁট করা শিখিয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে জন্ম নেয়া স্বাধীন চিন্তার এই প্রজন্ম মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই।

৩.
বিকেল পাঁচটা। চারটায় লেনদেন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সাড়ে চারটা এমনিতেই বাজে। এরপর সব পোস্টিং শেষ করতে করতে এমন সময় হয়ে যায়। এসময়টায় সবাই একটু আড়মোড়া দিয়ে ওঠে। পোস্টিং শেষ আর চেকিং শুরুর মাঝখানের সময় এটুকু। আসরের আজান যদিও হয়ে গেছে, নামাজে দাঁড়াতে আরো মিনিটদশেক লাগবে। যাদের বাথরুম-ওজু লাগবে তারা উঠে গেছে। এখন যারা বসে আছে, তাদের ওজুভঙ্গের কোনো কারণ ঘটেনি। সাইফুল এক হাতের পাঁচ আঙ্গুল আরেক হাতের পাঁচ আঙ্গুলের ফাঁকে ঢুকিয়ে মাথার ওপরের দিকে নিয়ে ফোটালো। চেয়ারের পেছনদিকে হেলান দিয়ে পাশের আনোয়ারের দিকে ফিরে বললো : কী ছারকি যে নিলাম! কামলারাও বিড়ি ফোঁকার সময় পায়। কিন্তু আমাদের দম ফেলার সময় নেই।
জামাল বললেন : কামলারা মাটি কাটার তালে তালে কথা বলতে পারে। কিন্তু আমরা কাজের তালে কোনো কথা বলতে পারি না।
আরে ভাই, এই কথাটাই তো বৌকে বোঝাতে পারি না। পাশের বাসার ভাবীকে তার স্বামী একটু পরপর ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করে, এখন তরকারিতে মরিচ দিচ্ছো না লবণ দিচ্ছো? আজকে গোসলের পর কোন শাড়িটা পরেছো? টিভিতে কোন সিরিয়াল চলছে? কিন্তু তার জ্বর হলেও একটু জানতে চাই না কমেছে কি না। আমি যতই বলি কথা বলতে বলতে কারো অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করতে গিয়ে ত্রিশ হাজারের জায়গায় শূন্য একটা বেশি টিপে ফেললে দুই লাখ সত্তুর আর তিন লাখের জায়গায় একটা শূন্য বেশি টিপলে সাত লাখ টাকা বেশি জমা হয়ে যাবে আর সেই লোক টাকা উঠিয়ে ফেললে বাড়তি টাকা ভিটে-বাড়ি বেচে আমাকেই দিতে হবে, সে আমার কথা মানতে নারাজ।
আমার মতো তো আর বলে না যে, সুন্দরী মেয়েরা সামনে এলে আর বৌয়ের কথা মনে করে লাভ কী?
আনোয়ার যোগ করলো : আমেরিকার মেয়েরা একজন আরেকজনের ওপর ক্ষেপে গেলে কী বলে অভিশাপ দেয় জানেন? তোর কপালে যেন ব্যাংকার জামাই জোটে। কারণ ব্যাংকারদের ওফিশ টাইমের শুরু আছে; শেষ নেই।
এই কথা তো আমি আইটি ট্রেনিং করার সময়ও ইনস্ট্রাক্টরের কাছে শুনেছি। ওরা না কি এই বলে অভিশাপ দেয়, তোর জামাই যেন প্রোগ্রামার হয়।
আমাদের দেশে এরকম একই কথা অনেক ক্ষেত্রে শুনবেন। যার নাই কোনো গতি সে করে পণ্ডিতি; যার নাই কোনো গতি সে করে ইমামতি; যার নাই কোনো গতি সে ধরে হোমিওপ্যাথি।
কিন্তু কোনোটাই তো মিথ্যা না। আনোয়ার আবার তার পে একটা যুক্তি পেয়ে কথাটা মাঝখানে ঢুকিয়ে দিলেন।
জামাল একটু চাপাস্বরে বললেন, একটা সত্য কথা কী জানেন? একসময় দালালি ছিলো খারাপ পেশা; এখন দালালরা ল্যান্ড ডেভেলপার নামের আধুনিক পেশায় জড়িয়ে অর্থ আর পেশীর জোরে এগিয়ে যাচ্ছে। ব্রোকার মানেই দালাল। অথচ দেখেন অনুৎপাদনশীল খাত শেয়ার বাজারকে কেন্দ্র করে কত ব্রোকারেজ হাউজ এখন গজিয়ে উঠছে। ব্যাংকিং পেশাটা একসময় সম্মানের ছিলো। এখন পয়সাঅলারা মনে করে আমাদের টাকায় ওদের বেতন হয়। সেজন্য আমাদের সাথে তারা যাচ্ছেতাই ব্যবহার করে। সম্মানের পেশা শিকতা যেমন এখন হীনপদের চাকরিতে পরিণত হয়েছে, ব্যাংকিং পেশাও ধীরে ধীরে সেদিকে যাচ্ছে। কারণ ঐসব অনুৎপাদনশীল অথচ নিশ্চিত লাভের খাতগুলো ছেড়ে ব্যাংকে টাকা রাখতে কে আসবে বলেন? এজন্য ব্যাংক টিকিয়ে রাখতে হলে গ্রাহকের পেছনে দালালের মতো ঘুরতে হবে।
সাইফুল যোগ করলো : আচ্ছা, ব্যাংকের কাজ কি লাভ দেয়া? ব্যাংক মূলত হেফাজতখানা। মানুষের টাকাপয়সা নিরাপদে রাখার জন্য ব্যাংক। ব্যাংকের আরেকটা কাজ মানুষের প্রয়োজন মেটানো। যদি জমার বিপরীতে লাভ দেয়া না লাগতো তাহলে বিনিয়োগের বিপরীতেও ব্যাংক কেবল সার্ভিস চার্জ নিতো নিজেদের খরচ মেটানোর জন্য। ব্যবসায়ীদেরকে ব্যাংকের মুনাফা না গুনতে হলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের আরো উন্নতি ঘটতো। কিন্তু এখন তুমুল প্রতিযোগিতার কারণে এই দালালিপনা শুরু হয়েছে।
হুঁ, অনেক জেয়াঁনের কথা হচ্ছে। আনোয়ার আরেকটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
জেঁয়ানের কথা মানে? জামাল হেসে বললেন।
মিনাী যদি মিসাক্ষী হতে পারে, লক্ষ্মী যদি লাক্স্মী হতে পারে, জ্ঞান কেন জেয়াঁন হবে না?
আপনি তো একদম রাইঘ্ট কথা বলেছেন।
রাইঘ্ট না বলে উপায় নেই। ব্যাংকে এসে যে কত নতুন বানান শিখলাম! বিশ হাজারকে বিষ হাজার, দুবাইকে দুভাই।
শুধু বানান শিখেছেন? হিসাব শেখেননি?
শিখেছি মানে? বিশ হাজার তিনশো একুশ লিখতে দুইয়ের পরে চারটা শূন্য, তিনের পরে দুইটা শূন্য, তারপরে দুইয়ের পিঠে এক দিতে হয়।
জামাল আবার মাঝখান দিয়ে বলে ফেললো : আপনারা এত কথা বলছেন, ম্যানেজার স্যার আবার কল দেয় কি না দেখেন।
কল দেয়া লাগে ভাই? সিসিটিভিতেই তো দেখা যাচ্ছে আমরা কী করছি। একটা মিনিট যদি শান্তি পাওয়া যেতো! খাওয়ার সময় খেয়াল করেছেন কি না, লোকেরা আমাদের দিকে কেমন করে তাকিয়ে থাকে?
আমি ভাই নিচের দিকে তাকিয়ে খাই।
আপনি তাহলে খাওয়ার সুযোগ পান? আমি তো গিলি। খাওয়ার সময় আছে না কি আবার?
অক্সিজেন ব্রাঞ্চে আমি যখন ছিলাম, ম্যানেজার স্যারের নির্দেশনা ছিলো যার যার টেবিলে বসে খেতে হবে। তো কাউন্টারে বসে খাচ্ছি, এর মধ্যে কি না একজন ওপাশ থেকে এসে ভাউচার আর টাকা ছেড়ে দিলো। গিয়ে পড়লো প্লেটের মধ্যে।
ঐদিন এক লোক যে কথা বললো, কবে জানি আবার শুনি, প্রাইভেট ব্যাংকের লোকেরা আবার খায়—এমন তো শুনিনি কখনো।
কী বললো সে লোক?
দারোয়ান তাকে বলেছিলো, দশ মিনিট নামাজের বিরতি। তার বক্তব্য হলো প্রাইভেট ব্যাংকে আবার বিরতি থাকে এমন তো শুনিনি।
তাহলে এই লোক নিশ্চিত হাগতে এসেছিলো। আমাদের নিয়মিত কায়েন্টরা এরকম কথা বলবে না। তারা জানে কখন আমরা কী করি।
এজন্য অনেক ব্যাংকে আলাদা টয়লেট থাকে না। ক্যাশের জন্য ক্যাশের সাথে টয়লেট; ম্যানেজারেরটা ম্যানেজারের চেম্বারের সাথে; অন্যদের জন্যও এভাবে তালা দেয়া টয়লেটের ব্যবস্থা। ঐরকম একটা ব্যাংকে গেলে পরে লোকটা শুনবে, প্রাইভেট ব্যাংকে হাগুখানা থাকে না, এটা আপনি জানেন?
বলে পার পাবেন না। আমার মতো হলে টয়লেটে যাবেন আর পেছন পেছন যেতে যেতে বলবে, স্যার, আমার চেকটা একটু রাখেন। ফিরে এলে আমারটা আগে দিয়েন।
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×