এেকআর এবং তার হবু স্ত্রীকে উৎসর্গ করে এই পোস্ট দেয়ার কথা ছিলো ২ তারিখ। কিন্তু মেয়ের অসুখের জন্য পারিনি। পরেরদিন পেনড্রাইভে এনে দেখি সম্পূর্ণটা নেই। দুঃখিত এেকআর। আপনাদের জন্য উৎসর্গ করা হলো। সুখী হোন আপনারা।
টিউশনি করাতে কোনো কালেই ভালো লাগেনি খালেদের। তারপরও এই টিউশনিটা নিতে হয়েছিলো। এছাড়া আর কোনো গতি ছিলো না। যার নাই কোনো গতি, সে করে পণ্ডিতি। এটা আসলে কথার কথা। গতি আর পণ্ডিতির ‘তি’ মিলে গেছে বলে মানুষ ঐ কথা বলে। ওদের গ্রামের আউয়াল ফকির বলতো, য্যায় যায় পানাম, হ্যায় ফিরে না আনাম। ও জানতে চাইলো, কেন আস্ত ফেরে না? ওখানে কি কোনো দানবগাছ আছে যে, কেউ গেলেই তাকে পেঁচিয়ে ধরে রক্ত শুষে খেয়ে ফেলবে? আউয়াল ফকির এর কোনো জবাব দিতে পারেনি।
একটা সময় ঠিকই মেধাবীরা শিক্ষক হতো। এখন যারা অন্য কোনো উপায় খুঁজে পায় না, তারা কম বেতনের এই পেশায় বাধ্য হয়ে কিংবা ঘুষ দিয়ে আসে। প্রাইভেট-কোচিং থেকে আবার তা উশুল করে নেয়। সেজন্য এখন বাচ্চাদেরকে সব অক্ষর শিখিয়ে তারপর স্কুলে ভর্তি করাতে হয়।
তবে পণ্ডিতির পেশা হলেও স্কুলে শিক্ষকতার চাকরির সাথে টিউশনির তফাত আছে বেশ। স্কুলের শিক্ষকরা বিয়ে করতে গেলে কম বেতনের কারণে পয়সাওয়ালার মেয়েকে বিয়ে করতে পারে না। টিউশনি-মাস্টাররা ভালো জায়গায় ভুজুম-ভাজুম দিয়ে বিয়ে করতে পারে ভবিষ্যতে বিশাল একটা কিছু হবে বলে। অন্য বেকাররা এটা পারে না। তারা সারাদিন চাকরি খোঁজার ধান্ধায় পড়ালেখার সাথে সম্পর্ক কমই রাখতে পারে। কিন্তু টিউশনি-মাস্টাররা ছাত্র-ছাত্রী পড়ানোর কারণে লেখাপড়ার একটা চর্চার মধ্যে থাকে। এজন্য সত্যিই তারা চাকরির পরীক্ষায় ভালো করে।
খালেদের এই টিউশনিটাও ওর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেবে বলে ওর বিশ্বাস। কারণ ওর ছাত্র পড়ে ক্লাশ টেনে। চাকরির পরীক্ষায় এইট-নাইন-টেনের বিষয়গুলোই বেশি আসে। গত বিসিএস প্রিলিমিনারির আটাশিটা প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পেরেছিলো ওর বোন ফারিয়া। ফারিয়া তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিলো।
প্রথম রাতে বিড়াল মারার মতো প্রথম দিনেই ছাত্রকে মুরিদ বানিয়ে নিয়েছে খালেদ। ওর ছাত্রের নাম রাফিন। সে আবার চশমা পরে। খালেদ জিজ্ঞেস করলো : চক্ষুচিকিৎসকদেরকে ইংরেজিতে কী বলে, জানো?
ম্...আই-ফিজিশিয়ান।
বানিয়ে বললে, না? শোনো, চক্ষুচিকিৎসকের ইংরেজি হলো অকুলিস্ট। অকূলে কূল দেখায় চক্ষুচিকিৎসকরা। সেজন্য তারা অকুলিস্ট। চোখে যার সমস্যা, সে আসলেই অকূল পাথারে আছে, তাই না?
এত সহজে একটা শব্দ মনে রাখা যায়, এই পদ্ধতিতে রাফিন খুব খুশি। প্রথম দিন থেকেই সে তার টিচারের প্রশংসা শুরু করে দিয়েছে বাড়িতে। এটা খুব কাজে দিয়েছে। রাফিনের মেঝো বোন এই সুবাদে মাঝে-মধ্যে খালেদের কাছে আসে কোনো একটা পড়া সহজে মনে রাখার উপায় খোঁজার জন্য। প্রশংসিত মাস্টারের কাছে মেয়ে এলে মনে হয় কোনো দোষ হয় না।
রাফিনের মেঝো বোনের নাম লাবিনা। প্রথমদিন লাবিনা এসেই বললো : আসসালামু আলাইকুম। স্যার, ভালো আছেন।
ওয়াআলাইকুমুস সালাম। হ্যাঁ। আপনি...। মাথা তুলে আগন্তুকের দিকে তাকিয়ে বললো খালেদ।
তার জবাবের আগেই রাফিন বললো, আমার মেঝো আপু স্যার।
ও আচ্ছা। এটুকু বলার পর চোখ নামিয়ে আনতে হয়েছিলো অবশ্য। কারণ বসতে বললে মেয়েটাকে খালেদের পাশেই এসে বসতে হবে। টেবিলের সামনের দিকটা দেয়ালের সাথে লাগানো; নিজের দিকটায় খালেদ বসে। ডান দিকটা লাগানো রাফিনের খাটের সাথে; তার উল্টো দিকে রাফিন বসে।
কিন্তু ওর বলার আগেই মেয়েটা এসে রাফিনের পেছনে দাঁড়িয়ে বললো : স্যার কি সাইন্সের ছাত্র না কমার্সের।
কমার্সের। কেন?
স্যার, আমাকে হিসাববিজ্ঞানের কয়েকটা অঙ্ক দেখিয়ে দিতে হবে।
হুট করে যে মেয়ে কথা বলতে আসে, তাকে প্রশ্রয় দেয়া ঠিক না। সেজন্য খালেদ মুখের ওপর বলে দিলো : আপনার আব্বার সাথে কথা বলে দেখতে হবে, উনি দুইজনের বেতন দেবেন কি না।
একথায় কাজ হলো। রাফিনও তাকালো খালেদের দিকে। লাবিনার আর কিছু বলার থাকলো না। মুখটা ছোট করে সে চলে গেলো।
হলে ফেরার পথে মোবাইল ইন্টারনেটে যখন লাবিনা শব্দের অর্থ খুঁজছিলো, তখনি মেয়ের মায়ের ফোন।
স্যার, আপনি লাবিনাকে একটু দেখিয়ে-টেখিয়ে দিয়েন। তবে আপনি যেভাবে বলেছেন, সেভাবে পারবো না। দেড় করে দেবো।
একথার ওপর আবার কথা বললে সেটা ছোট মনের পরিচয় হয়। তাই ওকে জবাবে বলতে হয়েছিলো : আচ্ছা।
লাবিনা অর্থ দুধ। মেয়ের নাম রেখেছে দুধ—কী একটা হাস্যকর ব্যাপার! দুধ নামের মেয়ের এমন হওয়াটাই তো তাহলে স্বাভাবিক।
কিন্তু তারপরও টিউশনিটা ছাড়া হয়নি তিনটা কারণে। নতুন একটা টিউশনি নিলে সেটা টেকসই না হতে পারে; কিন্তু খালেদ নিজে না বলা পর্যন্ত এরা ওকে কিছু বলবে না। এরা অতটা শিক্ষিত পরিবার না হওয়ায় এতটা আস্থা। এজন্য পুরো পরিবারের কাছেই ও ‘স্যার’। প্রতিদিন নাস্তা শুধু এক পদের না; কয়েক পদের থাকে এই বাড়িতে। রাফিনের আব্বার লোহার ব্যবসা আছে ইংলিশ রোডে। কয়েকদিন আগে বত্রিশ হাজারের রড বায়ান্ন হাজার হয়ে গেছে। এখন তার অবস্থা আরো জমজমাট। দোকান আরেকটা দিয়েছেন। এজন্য বিকেলের নাস্তা বাবদ পাঁচ-ছয়শো টাকার খরচটা বেচে যায়। সবচেয়ে বড় কারণ হলো এরা কোনো কৈফিয়ত চায় না কখনো।
লাবিনাকে পড়ানো আর না পড়ানো একই কথা। আজকে যেটা তাকে শেখানো হয়, পরদিন সেটা তার মনে থাকে না। সেজন্য প্রথম দিকে চেষ্টা করলেও পরে যেকোনো বিষয় এলে একবার বুঝিয়ে দিয়ে বলতো : তুমি নিজে চেষ্টা করতে থাকো। হয়ে গেলে বলবে।
মেয়ে নিজে কখনো বলতো না হয়েছে। খালেদকেই জিজ্ঞেস করতে হতো। এরপরও যখন হ্যাঁ-না কোনো জবাব পাওয়া যেতো না, তখন ও বলতো : ঠিক আছে, তুমি যাও। রাফিনকে আরেকটা অঙ্ক করিয়ে আমি উঠবো।
এই মাথাভাঙ্গা মেয়েটাকেই বিয়ে করতে হলো খালেদকে। পড়ার সময় তো মেয়েকে কথা বলার সুযোগই দিতো না; মোবাইলে কল এলেও কোনোদিন রিসিভ করেনি। কিন্তু এই কথা বলতে না দেয়ার কারণে জমা হওয়া কথাগুলোর যোগফল আজ এভাবে বের হলো—রাফিন পড়তে আসেনি; লাবিনা চলে এসেছে।
খালেদ প্রশ্ন করলো : রাফিন কোথায়?
ও আজকে আসবে না।
কেন?
আপনাকে আর পড়াতে আসতে হবে না।
সেটা বলতে তুমি এসেছো কেন? তোমার মা কোথায়?
মা আমার ওপরে কথা বলবে না। আমাকেই বলতে হবে, কারণ আপনার পড়ানোর রাস্তা বন্ধ করেছি আমি।
কী বলছো? আগা-মাথা কিছুই বুঝছি না তোমার কথার।
আপনার বিরুদ্ধে আমি রেপ কেস করেছি স্যার। এর সাক্ষী মা।
খালেদের মনে হলো মাথার মধ্যে কেউ ওদের বাড়ির জোড়াচুলোটা বসিয়ে দিয়েছে। ‘কী বললে’ বলতে গিয়ে ওর গলা চড়ে গেলো।
লাবিনা মুচকি হাসতে হাসতে বললো : ভয় নেই স্যার। পুলিশ আপনাকে ধরতে আসবে না। তাই বলে মনে করবেন না আপনি পালিয়ে বাঁচতে পারবেন। এরপর সে বুকের ভেতর থেকে একটা কাগজ বের করে মেলে ধরলো। খালেদ স্পষ্ট দেখতে পেলো ধানম-ি থানার সিল-ছাপ্পড় মারা। শরীর কাঁপতে লাগলো ওর।
এবার আরো কায়দা করে বসে লাবিনা বললো : স্যার, আব্বার কিন্তু অনেক টাকা। উনি পুলিশকে বলেছেন আমরা যেভাবে বলবো সেভাবে চলতে। সেজন্য পুলিশ আপনাকে খুঁজবে না।
কিন্তু তুমি কেন এ কাজ করেছো?
আপনাকে আমি ভালোবাসি স্যার।
তা তো বহু আগেই বুঝতে পেরেছি। এরকম অনেক মেয়েই টিউশনির টিচারদেরকে ভালোবাসে। কিন্তু টিচার চলে গেলে ভালোবাসাও চলে যায়।
এতক্ষণ গলা আটকে আসছিলো খালেদের। এবার সেই আটকে থাকার অবস্থাটা চলে গেলো লাবিনার মধ্যে। খালেদের কানে কানে কে যেন বললো : এরই নাম ভালোবাসা। তোমার অবস্থাটা তোমার বিপরীতজনের মধ্যে চলে গেলো। লাবিনা ধরা গলায় বললো : আপনি স্যার বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। আমি জানি, ওখানকার কোনো মেয়েকেই আপনি বিয়ে করবেন। সেজন্য এই ফন্দি আমি করেছি স্যার। আমাকে বিয়ে না করা পর্যন্ত মামলা তুলবো না।
কিন্তু...।
আপনার আব্বা-আম্মার সাথে আব্বা কথা বলেছেন। ওনারা আজই রওনা দিয়ে আসছেন।
কই, আমাকে তো কিছু জানাননি ওনারা।
কিছুক্ষণ আগে কথা শেষ হলো। কিন্তু স্যার, আপনার পায়ে পড়ি—ওনাদের কাছে এই কেসের কথা বলবেন না স্যার।
সত্যি সত্যি ওর পা দুটো ছুঁয়ে ফেললো লাবিনা। ইশ, কী নরম হাত। মনে হচ্ছে কেউ যেন শিমুল তুলো দিয়ে আলতো করে মুছে দিচ্ছে পা। এরই নাম কি ভালো লাগা? এই অবস্থার মধ্যেও ভালো লাগাটা থামলো না?
রাতেই বিয়েটা হয়ে গেলো। খালেদ চেয়েছিলো ওর আব্বার সাথে তুমুল ঝগড়া লাগাবে। কিন্তু বাপের দিকে তাকাতেই চোখ দুটো নিচে নেমে এলো। শুধু এটুকু বলতে পারলো : আপনারা একটু ভেবে-চিন্তে দেখবেন না?
দেখেছি বাবা। আর তোমার মা-বাপ যেখানে চাচ্ছেন, সেখানে আশা করি তোমার জন্য ক্ষতির কিছু নেই।
বিয়ের অনুষ্ঠানে লাবিনার আব্বা বললেন : জামাই বাবাজি লেখাপড়া শেষ করে ফেলছেন, ভালো কথা। যদি ফরেন ক্যাডারে যেতে পারেন, তাহলে সরকারী চাকরিতে যাবেন। নইলে অন্য কোনো চাকরির পেছনে ছোটার দরকার নেই। আমি একা দুইটা দোকানে সময় দিতে পারি না। আপনি যদি প্রতিদিন ঘণ্টাখানেক সময় দেন, তাহলেই চলবে। ভয়ের কোনো কারণ নেই। আপনি আস্তে আস্তে আমার টাকা শোধ করে দেবেন। আর যদি মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করে দোকানদারি করা মানায় না, তাহলে ইন্ডাস্ট্রি করতে পারেন দোকান বিক্রির টাকায়। আমার একটা লোহার দোকান বিক্রি করলে পাঁচ-ছয় কোটি টাকা আসবে। এর সাথে ব্যাংকের টাকা যোগ করলে আশা করি কিছু করতে পারবেন।
খালেদ মনে মনে বললো : আগে আপনার মেয়ের কিছু একটা করে নিই; তারপর যা হওয়ার হবে।
কিন্তু কিছুই করা হলো না। বাসরঘরে ঢোকার পর লাবিনা বললো : তুমি আমার স্যার। আমার অপরাধের কারণে যেকোনো শাস্তি তুমি দিতে পারো। কেউ কৈফিয়ত চাইবে না। এই নাও হাত পেতে দিলাম।
বাধ্য হয়েই হাত দুটো টেনে নিয়ে চুমু এঁকে দিতে হলো।
ফিসফিস করে আবার লাবিনা বললো : যেখানে ইচ্ছে মারতে পারো।
যখন ক্লান্তি চলে এলো—ঠিক ক্লান্তি না, বিরতি পর্ব এলো—তখন আবার সে বলে উঠলো : কোনোদিন তুমি পড়া বুঝিয়ে দেয়ার পর হয়েছে কি না বলতে পারিনি। আজকে বুঝেছি। এবার হয়েছে। আমি বলছি, শোনো। এখন আমি চক খাবো।
কী?
হ্যাঁ। এটা আমার ছোটবেলা থেকে অভ্যাস। বড় হওয়ার পর থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে খাই। তবে লেখার চক খাই না; টেইলারিং চক খাই।
খালেদের গায়ে কাঁটা দিলো। এতে আরো শক্ত করে ওকে জড়িয়ে ধরে লুবনা বললো : ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি অসুস্থ না। পুরোপুরি সুস্থ। তবে এই বদঅভ্যাসটা ছাড়তে পারিনি। অনেকে দেখো না দাঁত দিয়ে নখ কাটে? সেরকম একটা বদঅভ্যাস। তবে মেয়েমানুষ হওয়ার কারণে মনে হয় টেইলারিং চক খাই। ছেলে হলে হয়তো লেখার চক খেতাম। দেখি তুমি কতদিনে আমাকে এটা থেকে ফেরাতে পারো।
আজই বন্ধ করবো তোমার খাওয়া। বলো কোথায় রেখেছো চক। নিশ্চয়ই তুমি সাথে নিয়ে এসেছো।
বালিশের নিচে।
খালেদ বের করলো কাগজে পেঁচানো গোলাপী রঙের চক। কিন্তু চকের চেয়ে তখন কাগজটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলো। কাগজটা মামলার।
হরিষে বিষাদ নেমে আসার আগেই লাবিনা বললো : কী, ভয় হচ্ছে—মামলা তুলে নিয়েছি কি না? বোকা, আমি কোনো মামলাই করিনি। এই সিল-ছাপ্পড় সব ভুয়া। রেজিস্ট্রেশনে আমার বয়স এখনো আঠারো হয়নি। বিয়ে হয়েছে জন্ম নিবন্ধন দিয়ে। এখন আর পড়ালেখা করবো না। পড়ালেখার করুণ অবস্থা দেখে মা চেয়েছিলো বিয়ে দিতে। কিন্তু আন্ডারমেট্রিক মেয়েকে কেউ বিয়ে করতে চায় না বিধায় আবার লেখাপড়া শুরু করতে হয়েছে। আব্বার এক মামাতো ভাই আছে ধানম-ি থানার এসআই। তাকে এই পরিকল্পনা জানানো হয়েছে কেবল। বিয়েতে উনি এসেছিলেন। আগামী সপ্তাহে ওনাদের বাড়ি বেড়াতে গেলে তোমার সাথে তার কথা হবে। এখন ভেবে দেখো—এই কম পড়–য়া বৌ দিয়ে চলবে কি না। কী, এবার করবে সত্যি সত্যি মামলা? প্রতারণার মামলা?
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০১২ দুপুর ২:৫২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



