somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেয়ের অধিকারে ইসলাম ও অন্যান্য ধর্ম

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেয়ের অধিকারে ইসলাম ও অন্যান্য ধর্ম
ইসলাম সম্বন্ধে অজ্ঞদের নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা কেবল পেপার-পত্রিকা, বক্তৃতা ও বিবৃতির তর্জন-গর্জনের মধ্যেই সীমিত হয়ে আছে। কেউ প্রকৃত অর্থে নারী মুক্তি ও নারী প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করতে চাইলে প্রথমে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রীষ্টান ধর্মের নারীদের জন্য তাদের সোচ্চার হওয়া উচিত। অখণ্ড ভারতে বৌদ্ধ, শিখ ও খ্রীষ্টান নারীদের উত্তরাধিকার বিধান হিন্দু ধর্মের ন্যায়। এ কারণে ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের নারীদের উত্তরার্ধিকার বিষয়ে নিচে ৮টি বিষয়ে একটি তুলনামূলক পর্যালোচনা দেওয়া হল।
ইসলামী ১.মেয়ে সর্বাবস্থায় পিতার ওয়ারিছ হয়। চাই অন্য ওয়ারিছ থাক বা না থাক।
হিন্দু: মৃতের ছেলে, পৌত্র, প্রপৌত্র থাকলে বা মৃতের অথবা তার ছেলের কিংবা তার পৌত্রের বিধবা স্ত্রী থাকলে মেয়ে বঞ্চিত হয়।
ইসলামী২.মৃতের ওয়ারিছ হওয়ার জন্য তার আত্মার সৎকার্য তথা মাগফেরাত কামনা করা বা কামনা করার অধিকার প্রাপ্ত হওয়া শর্ত নয়। তবে মাগফেরাত কামনা করা উত্তম।
হিন্দু: হিন্দুশাস্ত্রে মিতাক্ষরা ও দায়ভাগ আইন চলে। দায়ভাগ আইনে যারা শাস্ত্রমতে মৃতের সপিণ্ড বা পিণ্ডদান (শ্রাদ্ধ) করার অধিকার রাখে তারাই কেবল উত্তরাধিকারী হয়। মেয়েকে সপিণ্ডের ধারাবাহিকতায় ৫০ নম্বরে রাখা হয়েছে। এর পূর্বে সে পিতার উত্তরাধিকার পাওয়ার হকদার হয় না। এ কারণে বাস্তবে হিন্দু মেয়েদেরকে মিরাছ পাওয়ার কথা শোনা যায় না।
ইসলামী ৩. মেয়ের অসতী হওয়া গুনাহ্। কিন্তু এটা উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণ নয়।
হিন্দু: দায়ভাগ আইনে অসতী বঞ্চিত হয়।
ইসলামী ৪. প্রত্যেক মেয়েই পিতার সম্পদে সমান হারে অধিকারী হয়।
হিন্দু: অন্ধ, বোবা, বধির, কুষ্ঠরোগী এবং কেবল মাত্র কন্যা সন্তান প্রসবকারী মেয়ে বঞ্চিত হয়। অনুরূপ কুমারী মেয়ে থাকতে বিবাহিতরা বঞ্চিত হয়।
ইসলামী৫. মৃতের স্ত্রী থাকলেও মেয়ের অংশ বহাল থাকে।
হিন্দু: মৃতের বিধবা স্ত্রীদের কেউ জীবিতা থাকলে মেয়ে বঞ্চিত হয়।
ইসলামী৬. যৌথ পরিবারে ছেলে জন্ম হলে বা পিতার জীবদ্দশায় ছেলে উত্তরাধিকার সূত্রে অংশের দাবি করতে পারে না।
হিন্দু: মিতাক্ষরা আইনে যৌথ পরিবারে ছেলে জন্ম হলেই সে উত্তরাধিকারী হয়ে যায়। ফলে পিতার জীবদ্দশায়ই ছেলে নিজের অংশের দাবি করতে পারে। কিন্তু মেয়ে হলে এ দাবি করার অধিকার নেই।
ইসলামী৭. ইসলামী উত্তরাধিকার আইনে ১২জনের অংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। তার মধ্যে ৮জনই হল নারী। তারা হল, মেয়ে, পৌত্রী, স্ত্রী, আপনবোন, সৎবোন, মা-শরীক বোন, মা, দাদী-নানী। এদের মধ্যে মেয়ে, স্ত্রী এবং মাতা কখনোই বঞ্চিত হয় না। আর পুরুষ হল, ৪জন। সুতরাং উত্তরাধিকারে নারীর অধিকারকেই ইসলামে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
হিন্দু: সপিণ্ড ছাড়া কেউ ওয়ারিছ হয় না। মিতাক্ষরা আইনে ৫৭ জন সপিণ্ডের মধ্যে ৫ জন হল নারী। বাকি ৫২ জন পুরুষ। আর দায়ভাগ আইনে ৫৩ জন সপিন্ডের মধ্যে ৫ জন নারী। বাকি ৪৮ জন পুরুষ। নারীদেরকে এমন স্থানে রাখা হয়েছে যে, তাদের পক্ষে উত্তরাধিকার সূত্রে অংশ লাভ করা দুর্লভ ব্যাপার।
ইসলামী ৮. মেয়ে পিতার থেকে প্রাপ্ত উত্তরাধিকারের পূর্ণ মালিক হয়। ফলে ইচ্ছামত তা ব্যবহার, দান বা বিক্রয় করতে পারে।
হিন্দু: সপিণ্ডের ধারাবাহিকতায় মেয়ে পিতা থেকে প্রাপ্ত উত্তরাধিকারের কখনোই মালিক হয় না। জীবনসত্ব বা জীবিত থাকা কালীন সে শুধু ঐ সম্পদ ভোগদখলের অধিকারী হয়। ইচ্ছামত ব্যবহার, দান বা বিক্রির অধিকারী মোটেও হয় না। মেয়ের মৃত্যুর পর মৃত পিতার নিকটাত্মীয়রা বণ্টন করে নেয়। (ফজলুর রহমান সাহেব সংকলিত ইসলামী উত্তরাধিকারী আইন) আর এ কারণেই হয়তো হিন্দু ধর্মে মেয়ের বিবাহে বরপণ দিতে হয়।
ইসলামী: ইসলাম ধর্মকে কেউ জিন্দেগীর মূল অবলম্বন বানালে সে সম্পদ থেকে বঞ্চিত হয় না।
হিন্দু: কোন হিন্দু সন্যাসী হলে তাকে মৃত গণ্য করা হয়। (জমি জমার আইন পৃ:৭১ মোঃ মতিউল ইসলাম)
এ আলোচনায় প্রমাণিত হল, ইসলাম নারী জাতিকে ঠকায়নি। বরং সম্মানের সিংহাসনে বসিয়েছে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৯

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

সবাই যখন ওসমান হাদিকে নিয়ে রিকশাওয়ালাদের মহাকাব্য শেয়ার করছে, তখন ভাবলাম—আমার অভিজ্ঞতাটাও দলিল হিসেবে রেখে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি জানতে চায়, এই দেশটা কীভাবে চলে—তখন কাজে লাগবে।

রিকশায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×