(এক)
আমরা পাড়ার যেই মুদি দোকান থেকে সদাই খাই, সেই দোকানদার আমাদের দেখলে কী করে?
উত্তর: দেখা মাত্রই আদন্ত হাসি দিয়ে কপালে হাত উঠিয়ে সালাম ঠুকে।
তারপর আমাদের মুড ভালো দেখলে কুশলাদি জিজ্ঞেস করে।
আমরাও মনমেজাজ ভালো থাকলে জিজ্ঞেস করি "কি অবস্থা ব্যবসাপাতি কেমন চলতাছে- ভালো তো?"
দোকানি হাসিতে গদগদ হয়ে জবাব দেয় "জ্বি আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় ভালো চলতাছে মাশাল্লাহ।"
কারণ আমাদের কাছে চাল-ডাল-তেল-নুন-পেয়াজ-রসুন-আদা-মরিচ বেচে মুদি দোকানির জীবন চলে, সংসার চলে।
এই সালাম ঠুকা আর কুশলাদি জিজ্ঞেস করাটা। ক্রেতার প্রতি বিক্রেতার যথাযথ ও স্বাভাবিক আচরণ।
....আর সেই দোকানি যদি আমাদের দেখলে সালাম ঠুকার বদলে চোখ গরম করে ফকিন্নির পুত, ছোট লোক আর কাঙ্গালি বলে গালি দেয় এবং থুথু ছিটায় তবে সেটা হবে অস্বাভাবিক আচরণ।
তার দোকান থেকে সদাই খাওয়া তো দূরের কথা এলাকার সবাই মিলে তাকে গদাম দেওয়ার ব্যবস্থাও হতে পারে......।
"ভারত" হচ্ছে বাংলাদেশের "মুদি দোকান" আর ভারতীয়গণ সেই দোকানের "দোকানি"।
এখন কথা হচ্ছে, বাংলাদেশ ও এর সম্মাণিত ক্রেতাগণের সাথে সেই "দোকানি" দের আচরণটা কিরূপ হওয়া উচিত??
গদাম খাওয়া টাইপ আচরণ, না-কি স্বাভাবিক আচরণ??
সিদ্ধান্তটা নিতে হবে তাদেরই।
(দুই)
আমাদের কারও বাসায় যদি চোর কিংবা ডাকাত ঢুকে, তবে চিৎকার শুনে পাশে থাকা মুদি দোকানি দোকান ফেলে দৌড়ে আসে। হম্বি-তম্বি ও দৌড়-ঝাঁপ করে।....
যদি ভাবি তার এই দৌড়ে আসাটা শুধুই আমাদের সহযোগিতার জন্য- তা হবে মারাত্মক ভুল।.... তার এই দৌড়ে আসাটা আমাদের কাছে তার নিজেকে গ্রহণযোগ্য করে তোলা এবং তার দোকানের নিয়মিত খদ্দের করে তোলা। .....যাতে অন্য দোকানি আমাদের কাছে ভিড়তে না পারে। এবং তার প্রতি আমাদের একধরণের সফট মাইন্ড তৈরী হয়।
....একাত্তরে ভারতও সেই রূপ ছুটে এসেছিল। আর সেই তখন থেকে তাদের প্রতি তৈরী হওয়া সফট মাইন্ড অদ্যাবধি বলবত রয়েছে আমাদের।
তবে আর কতোদিন থাকে সেটাই দেখার বিষয়......