somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈসা (আঃ) এর প্রকৃত জন্ম রহস্য- এবং আমাদের ভুল ধারনা। (পর্ব-২)

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম পর্বের লিঙ্কঃ Click This Link


“কুন” শব্দের মাধ্যমে ঈসা (আঃ) কে সৃস্টি করা হয়েছেঃ
বলা হয়ে থাকে “কুন” শব্দের মাধ্যমে আল্লাহ অলৌকিক উপায়ে ঈসা (আঃ) কে সৃস্টি করেছেন। আল্লাহ “কুন” শব্দের মাধ্যমে ঈসা (আঃ) কে সৃস্টি করেছেন এতে কোন সন্দেহ নাই, আপত্তি শুধুমাত্র অলৌকিক উপায়ে সৃষ্টি করেছেন -এই কথার ব্যাপারে।

The similitude of Jesus before Allah is as that of Adam; He created him from dust, then said to him: "Be". And he was. (৩:৫৯)
নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট ঈসার দৃষ্টান্ত হচ্ছে আদমেরই মতো। তাকে মাটি দিয়ে তৈরী করেছিলেন এবং তারপর তাকে বলেছিলেন হয়ে যাও, সঙ্গে সঙ্গে হয়ে গেলেন।(৩:৫৯)

জনপ্রিয় মতবাদ হচ্ছে যখন আল্লাহ বলেন হও (কুন) , সেটা সাথে সাথে হয়ে যায় (ফায়াকুন)। কিন্তু যে জিনিশটা অভারলক করে যাওয়া হয় তা হচ্ছে যে কুন থেকে ফায়াকুন হতে একটা সময়ের ব্যবধান আছে। এটা ইনস্ট্যান্ট হয় না, যদি সাথে সাথে হয়ে যাওয়ার মত কোন ঘটনা থাকে সেটা সাথে সাথে হতে পারে, কিন্তু আল্লাহর নিয়ম করে দেওয়া যে ঘটনার যে সময় লাগে, সেটা ঘটতে সেই সময়ই লাগবে, সাথে সাথে হয় না। (কারন আল্লাহ সব কিছু একটা প্রসেসের মধ্যে করেন, নিয়মের ব্যতিক্রম করেন না। উপরে বর্ণিত ৩০:৩০ আবার দেখতে পারেন)। সুতরাং মরিয়মের ক্ষেত্রে এই কুন শব্দ ফায়াকুন হতে ১০-১২ মাস বা তার বেশি সময় লাগবে।( বিবাহ হওয়া এবং পরে সন্তান হওয়া সব মিলিয়ে), নাকি বলবেন এই কুন বলার পর পর মরিয়ম সন্তান প্রসব করেছিলেন?

এই ক্ষেত্রে “কুন” শব্দ দ্বারা ইন্সট্যন্ট কিছু হয় না এটা প্রমান করার জন্য বিশেষ কোন গবেষণার প্রয়োজন নেই। এইখানে এটা বুঝা গুরত্বপুর্ন যে যখন আল্লাহ বলেন হও (কুন) তখন সেই জিনিসটা হওয়ার প্রসেস শুরু হয়ে যায় এবং সঠিক সময়ে সেই জিনিষ হয়ে যায় (ফায়াকুন)। ঈসা (আঃ) এর জন্ম কাহিনীর ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য। এছাড়াও কোরআনে এরকম অনেক উদাহরণ আছে যেমন ২:১১৭, ৬:৭৩, ১৬:৪০, ১৯:৩৫, ৩৬:৮২

মরিয়মের ক্ষেত্রে আল্লাহ যখন কুন বলেছেন তখন তার সন্তান হবার স্বাভাবিক প্রসেস শুরু হয়েছিল যার শুরু ছিল স্বামী নির্বাচন এবং শেষ ঈসা (আঃ) এর জন্ম। তাৎক্ষনিক কোন কিছু নয়।

এই “কুন” সংক্রান্ত কিছু আয়াতের রেফারেন্স উপরে একটু আগেই দিয়েছি, দয়া করে চেক করে নিবেন। আমি একটা স্যাম্পল রেফারেন্স উল্লেখ করছিঃ

তিনিই জীবিত করেন এবং মৃত্যু দেন। যখন তিনি কোন কাজের আদেশ করেন, তখন একথাই বলেন, হয়ে যাও-তা হয়ে যায়। (৪০:৬৮)

কুমারী মাতা বনাম সতী মাতা (Virgin Mother vs. Chaste Mother)ঃ
ইংরেজীতে সিলেক্টিভ পারসেপশন বলে একটা কথা আছে। অর্থাৎ মানুষ যা দেখতে চায় সে তাই দেখে, যা শুনতে চায়, সে তাই শুনে। কুমারী এবং সতীর মধ্যে পার্থক্য আছে। আমি এখানে এই পার্থক্য শুধুমাত্র সেক্সুয়াল পারস্পেক্টিভে বলছি, দয়া করে স্পিরিটুয়াল ব্যপার নিয়ে ক্যাচাল করবেন না। আশা করি এই পার্থক্য সবাই জানেন।

মরিয়ম খৃষ্টানদের কাছে কুমারী মাতা হিসাবে সর্বত্র পরিচিত। কুমারী মাতা, কুমারী মেরি- এই কথাগুলি খৃষ্টানদের মধ্যে বহুল প্রচলিত। মুসলমানরাও এই ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। মুসলমানরা মরিয়ম কে কুমারী মাতা হিসাবেই প্রচার করে। সেই ক্ষেত্রে তারা কোরআনের কিছু রেফারেন্স ব্যবহার করে। যেমনঃ

And (remember) her who guarded her chastity, We breathed into her from Our Spirit, and We made her and her son a Sign for all peoples. (২১:৯১)


এই আয়াতের তিনটা অংশ আছেঃ

১। মরিয়ম তার সতীত্ব রক্ষা করেছিলেন

২। তার মধ্যে (মরিয়মের গর্ভে) রুহু ফুকে দেওয়া হয়েছিল

৩। মরিয়ম এবং ঈসা (আঃ) মানুষের জন্য আল্লাহর নিদর্শন।

এই সম্পর্কিত আয়াত গুলি কে কম গুরুত্ব দেওয়ার কারনে, মুসলমানরা এই তিনটা অংশ ভুল বুঝে থাকে । এখন উপরে উল্লেখিত এই তিনটি বিষয় নিয়ে আমরা আলাচনা করব।

১। মরিয়ম তার সতীত্ব বজায় রেখেছিলেনঃ
কোরআন এখানে সতীত্বের কথা বলেছে, কুমারিত্ব নয়। আরবী শব্দ “আহসান” অর্থ chastity বা সতীত্ব। একজন নারী সতী থাকতে পারে যদি শুধু মাত্র তার আইনত স্বামীর সাথে সেক্সুয়াল রিলেশন থাকে অর্থাৎ যদি কোন বিবাহ বহির্ভূত অন্য কোন ধরনের সেক্সুয়াল রিলেশনে জড়িয়ে না পরে। যদি সে বিবাহ বহির্ভূত অন্য কোন ধরনের সেক্সুয়াল রিলেশনে জড়িয়ে পরে, তবে সে সতী নয়। এই সতীত্বের কথা এসেছে কারন ১৯:২০ এ মরিয়ম জিজ্ঞেস করছে কিভাবে তার সন্তান হতে পারে যখন সে অসতী নয়। এর লজিক্যাল উত্তর হচ্ছে সে একি সাথে সতী থাকতে পারে এবং তার সন্তান হতে পারবে যদি সে আইনত কারো সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।


মরিইয়াম বললঃ কিরূপে আমার পুত্র হবে, যখন কোন মানব আমাকে স্পর্শ করেনি এবং আমি ব্যভিচারিণীও কখনও ছিলাম না ? (১৯:২০)

কিছু মুসলিম (এর মধ্যে স্কলারও আছেন) বলে থাকেন যদি মরিয়মের স্বামী থেকে থাকে তবে সে সতী হতে পারেনা। এর উত্তরে বলতে হয়, স্বামী থাকলে যদি সতী না হয় তবে তাদের কারো মা ই সতী নয়। আশা করি বুজতে পেরেছেন।


এখানে প্রশ্ন আসে যে মরিয়ম কুমারী ছিলেন কি না? উত্তর হচ্ছে এই নির্দেশ যখন তার কাছে আসে তখন তিনি কুমারী ছিলেন। উনি যখন ফেরেস্তার সাথে এই নিয়ে কথা বলেন তখনও তিনি কুমারী ছিলেন। কিন্তু তাই বলে তাকে কুমারী মাতা বলা যাবে না, কারন তখনও উনি গর্ভ ধারন করেন নাই।

২. মরিয়মের গর্ভে রুহু ফুকে দেওয়া হয়েছিলঃ
উপরে বর্ণিত আয়াত ২১:৯১ যেখানে বলা হয়েছে We breathed into her from Our Spirit এই একই রকম আয়াত আরও আছে ৬৬:১২ তে, যেখানে বলা হয়েছে

আর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন এমরান-তনয়া মরিয়মের, যে তার সতীত্ব বজায় রেখেছিল। অতঃপর আমি তার মধ্যে আমার পক্ষ থেকে জীবন ফুঁকে দিয়েছিলাম এবং সে তার পালনকর্তার বানী ও কিতাবকে সত্যে পরিণত করেছিল। সে ছিল বিনয় প্রকাশকারীনীদের একজন। (৬৬:১২)

উপরের উল্লেখিত আয়াতে আল্লাহ পরিষ্কার ভাবে বলে দিয়েছেন যে We breathed into her from Our Spirit এই থেকে মুসলমানরা বলে থাকেন যে এই কারনে ইসা (আঃ) পিতা ছাড়া জন্ম গ্রহণ করেছিলেন।এই আয়াত বর্ণনা করার পর আর কোন লজিক্যালি চিন্তা করা হয় না যে আল্লাহ এই দ্বারা আসলে কি বুজিয়েছেন। কোরআনের প্রেক্ষিতে যখন আল্লাহ বলেছেন যে We breathed into her from Our Spirit এ দ্বারা বুঝা যায় কোন প্রকার শুক্রানু অণুঘটক হিসাবে কাজ করেছে যা গর্ভধারণ করতে সহায়তা করেছে, কারন আল্লাহ কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় এই কথা বলেছেন, যেমন

He who created all things in the best way, and He began creation of man from clay, and He made his progeny from a quintessence of despised fluid; then He fashioned him in due proportion, and breathed into him His spirit. And He gave you hearing and sight and understanding. Little thanks do you give! (৩২:৭-৯)

যিনি তাঁর প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে সুন্দর করেছেন এবং কাদামাটি থেকে মানব সৃষ্টির সূচনা করেছেন। অতঃপর তিনি তার বংশধর সৃষ্টি করেন তুচ্ছ পানির নির্যাস থেকে। অতঃপর তিনি তাকে সুষম করেন, তাতে রূহ সঞ্চার করেন এবং তোমাদেরকে দেন কর্ণ, চক্ষু ও অন্তঃকরণ। তোমরা সামান্যই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। (৩২:৭-৯)

এই আয়াত সব মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এখানে মানুষ সৃস্টির প্রক্রিয়া বর্ণনা করা হয়েছে। একটু ভালভাবে পড়লে বুঝতে পারবেন এইখানে আল্লাহ বলেছেন গর্ভ ধারনের প্রথম ধাপ হচ্ছে গর্ভে শুক্রানুর প্রবেশ। এরপর ফেটুস যখন একটা নিদৃস্ট সময় পর্যন্ত বাড়ে, তখন আল্লাহ তার মধ্যে রুহু ফুকে দেন। অর্থাৎ, আল্লাহ গর্ভের সন্তানের মধ্যে একটা নিদৃস্ট সময়ের পরে রুহু ফুকে দেন।

মোট কথা হল, ফার্টিলাইজেশনের পরে, একটি নিদৃস্ট সময় ফেটুস বেড়ে উঠার পরে, ফেটুসের মধ্য রুহু ফুকে দেওয়া হয়। সুতরাং শুক্রাণুর প্রবেশ এবং রুহু ফুকে দেওয়া এই দুইটা মানব সৃস্টির প্রাথমিক দিকের দুইটা ভিন্ন ধাপ। এইখানে আল্লাহ ইসা (আঃ;) সম্পর্কে এই কথা বলে কোন আস্বভাবিক বা অলৌকিক ঘটনার বর্ণনা করেন নাই, বরং মানুষ সৃস্টির স্বভাবিক ধাপের কথাই বলেছেন। সুতরাং রুহু ফুকে দেওয়ার অর্থ অস্বাভাবিক জন্মগ্রহণ (পিতা ছাড়া জন্ম গ্রহণ) কোরআনের প্রেক্ষিতে এই কথার কোন ভিত্তি নাই।


৩। ঈসা (আঃ)আল্লাহর নিদর্শনঃ
তিন নম্বর পয়েন্ট হচ্ছে ২১:৯১ এ আল্লাহ বলেছেন ইসা (আঃ) এবং উনার মাতা মানব জাতির জন্য আল্লাহর নিদর্শন। এইখান থেকেও অনেক মুসলিম বলে থাকেন মরিয়ম কুমারী ছিলেন, এবং ইসা (আঃ) পিতা ছাড়াই জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। এই কারনে এই দুইজন আল্লাহর নিদর্শন।কিন্তু সত্য হচ্ছে তাদের চারিত্রিক গুণাবলী, ব্যবহার, আল্লাহর প্রতি ডেডিকেশনের কারনে তাদেরকে মানবজাতির জন্য আল্লাহর নিদর্শন বলেছেন। মরিয়ম আল্লাহর নিদর্শন এই কারনে যে তিনি ছিলেন ধার্মিক, তিনি তার জীবন আল্লাহর জন্য ডেডিকেট করেছিলেন, আল্লাহ উনাকে সিলেক্ট করেছিলেন একজন রাসুলের মাতা হিসাবে।

ইসা (আঃ) আল্লাহর নিদর্শন এই কারনে যে রাসুল হিসাবে আল্লাহর প্রতি ডেডিকেশন, ক্রুশবিদ্ধ হবার থেকে আল্লাহর সাহায্যে বেচে যাওয়া যা আল্লাহ কোরআনে বর্ণনা করেছেন। এইখানে একটা কথা বলা দরকার যে আল্লাহর নিদর্শন হতে হলে কোন সুপার ন্যাচারাল পাওয়ারের অধিকারী হতে হবে এইরকম কোন বাধ্যবাধকতা নেই। অনেক বিষয়/জিনিষ কে আল্লাহ তার নিদর্শন হিসাবে বর্ণনা করেছেন যার অনেক কিছু এখনও বিদ্যমান আর কিছু ঐ সময়ের সাথে সাথে শেষ হয়ে গিয়েছে। সুতরাং ইসা (আঃ) আল্লাহর নিদর্শন এই কথা দ্বারা উনার অতিপ্রাকৃত জন্ম কাহিনীকে সমর্থন করে না।


কাযালিকাঃ গর্ভধারণের ওয়াইল্ড কার্ডঃ
আরবী শব্দ “কাযালিকা” র অর্থ এবং ব্যবহার এই ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারন সমস্ত যুক্তি এবং বিশ্লেষণ কে ভুল প্রমানিত করার জন্য এটা একটা ওয়াইল্ড কার্ড হিসাবে ব্যবহার করা হয়। মরিয়মের সন্তান বিষয়ক প্রশ্নের জবাবে, কোরআনের দুই জায়গায় আল্লাহ যে উত্তর দিয়েছেন তার প্রথম উত্তর ছিল এই শব্দ “কাযালিকা”

She said, "My Lord how is [it] for me a boy, and (has) not touch(ed) me any man?" He said, "Thus (“কাযালিকা”) Allah creates what He wills. When He decrees a matter then only He says to it, "Be," and it becomes (৩:৪৭)

তিনি বললেন, পরওয়ারদেগার! কেমন করে আমার সন্তান হবে; আমাকে তো কোন মানুষ স্পর্শ করেনি। বললেন এ ভাবেই (“কাযালিকা”) আল্লাহ যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন। যখন কোন কাজ করার জন্য ইচ্ছা করেন তখন বলেন যে, ‘হয়ে যাও’ অমনি তা হয়ে যায়। (৩:৪৭)

She said, "How can be for me a son, when not has touched me a man, and not I am unchaste?" He said, "Thus (“কাযালিকা”); said your Lord, 'It (is) for Me easy, and so that We will make him a sign for the mankind and a Mercy from Us. And (it) is a matter decreed.' (১৯:২০-২১)
মরিইয়াম বললঃ কিরূপে আমার পুত্র হবে, যখন কোন মানব আমাকে স্পর্শ করেনি এবং আমি ব্যভিচারিণীও কখনও ছিলাম না ? সে বললঃ এমনিতেই (“কাযালিকা”) হবে। তোমার পালনকর্তা বলেছেন, এটা আমার জন্যে সহজ সাধ্য এবং আমি তাকে মানুষের জন্যে একটি নিদর্শন ও আমার পক্ষ থেকে অনুগ্রহ স্বরূপ করতে চাই। এটা তো এক স্থিরীকৃত ব্যাপার।

এইখানে ১৯:২১ এ দুইটা সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে।
ক। আইনত কোন পুরুষের সান্নিধ্যে আসা
খ। বেআইনি ভাবে কোন পুরুষের সান্নিধ্যে আসা

মরিয়মের নিজের কথা অনুযায়ী সে অসতী ছিলেন না, সেহেতু দ্বিতীয় সম্ভাবনা (খ) এইখানে প্রযোজ্য নয়। এইখানে শুধুমাত্র প্রথম সম্ভাবনা প্রযোজ্য। উল্লেখ্য, ৩:৪৭ এ শুধুমাত্র প্রথম সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে- কোন পুরুষ তাকে স্পর্শ করেনি।

এই দুই জায়গায়, একই প্রশ্নের উত্তরে আল্লাহর প্রথম উত্তর ছিল “কাযালিকা” যার অর্থ Thus/ এইভাবে/একিভাবে। এই Thus/ এইভাবে/একিভাবে দ্বারা আল্লাহ উত্তর দিয়েছেন কোরআনের প্রেক্ষিতে যার অর্থ হয় মরিয়মের সন্তান এইভাবে হতে পারে, যেভাবে মানুষের সন্তান হয় অর্থাৎ মরিয়ম সতী থেকেও সন্তানের মা হতে পারেন বৈধ বিবাহের মাধ্যমে।

যদি আপনি মনে করেন কাযালিকার পরে কুন, রুহু ফুকে দেওয়া এই সব শব্দ দ্বারা অলৌকিক ঘটনা বুঝানো হয়েছে তবে দয়া করে আবার প্রথম থেকে এই শব্দগুলির ব্যখ্যা পড়ে আসুন। এর পরেও যদি কনফিউশন থাকে তবে আপনার সুবিধার জন্য যাকারিয়া (আঃ) এর ঘটনা বর্ণনা করছিঃ

"O my Lord ! How shall I have a son,seeing that I am very old and my wife is barren". He said: "Kazalika." (৩:৪০)

এই কাযালিকার অর্থ বা ব্যাখ্যা কোরআনের ২১:৯০ এ দেওয়া আছেঃ

So We responded to him, and We bestowed on him Yahya, and We cured for him his wife. (২১:৯০)

অতঃপর আমি তার দোয়া কবুল করেছিলাম, তাকে দান করেছিলাম ইয়াহইয়া এবং তার জন্যে তার স্ত্রীকে প্রসব যোগ্য করেছিলাম। তারা সৎকর্মে ঝাঁপিয়ে পড়ত, তারা আশা ও ভীতি সহকারে আমাকে ডাকত এবং তারা ছিল আমার কাছে বিনীত। (২১:৯০)

সুতরাং “কাযালিকা” এর অর্থ পিতা ছাড়া সন্তান হবে এই ধারনা সত্য নয়। বরং “কাযালিকা” বা “এইভাবে” বলতে মানুষের যে ভাবে সন্তান হয়, সেইভাবেই হবে অর্থাৎ এক্ষেত্রে সন্তান হবার প্রতিবন্ধকতা দূর করে স্বভাবিক নিয়মেই সন্তান হবার কথা বলা হয়েছে। যেমন যাকারিয়া (আঃ) এর স্ত্রীর ক্ষেত্রে তার বান্ধত্য দূর করা হয়েছে এবং এর পর স্বভাবিক নিয়মেই স্বামী স্ত্রীর মিলনের ফলেই সন্তান জন্ম হয়েছে।

এইক্ষেত্রে ইব্রাহিম (আঃ) এর স্ত্রীর কথা বলা যেতে পারে।
But his wife (Sarah) came forward, clamoring: and she smote her face and said: "An old barren woman!” They said: "Likewise (কাযালিকা), says your Lord".

এইখানেও কাযালিকা শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। আল্লাহ এখানে এই দ্বারা বুঝিয়েছেন একিভাবে হবে যেভাবে মানুষের সন্তান হয়। যাকারিয়া (আঃ) এর স্ত্রীর মত ইব্রাহিম (আঃ) এর স্ত্রীরও বান্ধত্য দূর করা হয়েছিল এবং তাদের স্বভাবিক দাম্পত্য জীবনের কারনেই সন্তান জন্ম হয়েছিল।

কাযালিকার মাধ্যমে যে ইনস্ট্যান্ট কোন কিছু হয় না (কুন শব্দের মত) তার আরও একটা উদাহরণ দেই।
And those who disbelieve say, "Why was the Qur'an not revealed to him all at once?" Thus (কাযালিকা), that We may strengthen thereby your heart. And We have spaced it distinctly. (২৫:৩২)

কোরআন ২৩ বছর ধরে অল্প অল্প করে নাযিল হয়েছিল। এইখানেও কাযালিকা শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।

এখন একটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দৃস্টি আকর্ষণ করছি। সুরা আল-ইমরান এবং সুরা মরিয়মে এই দুই সুরাতেই ইসা (আঃ) জন্মের ঘটনা উল্লেখ করার আগে আল্লাহ ইয়াহিয়া (আঃ) এর জন্ম কাহিনী বর্ণনা করেছেন। এইক্ষেত্রে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মরিয়ম (আঃ) এবং যাকারিয়া (আঃ) দুইজনই আল্লাহর কাছে প্রশ্ন করেছেন এই প্রতিকুল অবস্থায় কিভাবে তাদের সন্তান হতে পারে। যাকারিয়া (আঃ) এর ক্ষেত্রে (এবং ইব্রাহিম (আঃ) এর ক্ষেত্রেও (৫১:২৯-৩০)) প্রতিকুল অবস্থা ছিল তারা বৃদ্ধ ছিলেন এবং তাদের স্ত্রীগন বান্ধাত্ব্যে উপনীত হয়েছিলেন। মরিয়মের ক্ষেত্রে প্রতিকুল আবস্থা ছিল ঐ সময়ে উনি বিবাহিত ছিলেন না অর্থাৎ উনার স্বামী ছিলনা। এই তিন ক্ষেত্রেই নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে “কাযালিকা” বলে।
ইব্রাহিম (আঃ) এবং যাকারিয়া (আঃ) দুইজনই স্বভাবিক ভাবে সন্তান লাভ করেছিলেন- এতে কোন সন্দেহ নাই। সন্দেহ শুধুমাত্র মরিয়মের বেলায়!! যদি কাযলিকা কোন মিরাকল হিসাবে কাজ করত, তবে ইব্রাহিম (আঃ) এবং যাকারিয়া (আঃ) দুইজনেই স্ত্রী ছাড়া সন্তান লাভ করতেন, বরং তা না হয়ে তাদের স্ত্রীদেরকে সুস্থ করে তোলা হয়েছে এবং স্বাভাবিক ভাবেই তাদের সন্তান হয়েছে। মরিয়মের ক্ষেত্রে তার বিবাহ হয়েছে এবং অতপর স্বাভাবিক ভাবে ইসা (আঃ) এর জন্ম হয়েছে।




মানব সৃস্টির প্রক্রিয়াঃ
কোরআনে মানব সৃস্টির প্রক্রিয়া বিশদ ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই আয়াত গুলিতে বিস্তারিত ভাবে বলা আছে যার সুরুতে আছে শুক্রাণুর কথা (৩২:৭-৮, ৭৭:২০, ৭৫:৩৭, ৮৬:৫-৭ ইত্যাদি), পুরুষ এবং স্ত্রী গ্যমেটের মিলন (১৩:৩, ৩৬:৩৬, ৪৩:১২, ৪৯:১৩, ৫১:৪৯, ৫৩:৪৫, ৭৮:৮ ইত্যাদি)। এই সকল আয়াত গুলি সব মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এই খানে কোন আয়াতের ব্যতিক্রম হবার কোন সুযগ নেই (৩০:৩০) এবং আল্লাহ কোথাও বলেননি ইসা (আঃ) এর জন্ম ব্যতিক্রম।

আল্লাহ অন্য প্রসঙ্গে এই ব্যাপারে একটা আল্টিমেট স্টেটমেন্ট দিয়েছেনঃ

Originator of the heavens and the earth! How could there be to Him a child when there is to Him no consort? (৬:১০১)
তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের আদি স্রষ্টা। কিরূপে আল্লাহর পুত্র হতে পারে, অথচ তাঁর কোন সঙ্গী নেই ? তিনি যাবতীয় কিছু সৃষ্টি করেছেন। তিনি সব বস্তু সম্পর্কে সুবিজ্ঞ। (৬:১০১)

আল্লাহ সর্বশক্তিমান হওয়া সত্ত্বেও বলছেন কোন সঙ্গী ছাড়া তার পুত্র হতে পারেনা। যেহেতু আল্লাহর কোন সঙ্গী নেই, সেহেতু তার পুত্র সন্তান থাকার কোন কারন নেই। কারন আল্লাহর কথা, আইন অপরিবর্তনশীল। “কুন” শব্দ আল্লাহর এই আইন ভাংতে পারবে না। আল্লাহ যদি নিজের সম্পর্কে এই কথা বলেন, তবে মরিয়মের পিতা ছাড়া কিভাবে সন্তান হতে পারে?


উপসংহারঃ
এখন পর্যন্ত যে বিষয় গুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে তার একটা সংক্ষিপ্ত রুপ নিম্নরূপঃ
১। কোরআনের ৬:৮৪-৮৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ ১৮ জন নবীর নাম নিয়েছেন। এবং বলেছেন তাদের সকলের পিতা, সন্তান এবং ভাইদের আল্লহ সঠিক পথে পরিচালনা করেছিলেন। এই লিস্টে ঈসা (আঃ) এর নাম আছে। সুতরাং উনার পিতা ছিল।

২। আল্লাহ কোরআনে মানব সৃস্টির বিভিন্ন ধাপ বর্ণনা করেছেন যার শুরুতে রয়েছে শুক্রানুর ভুমিকা। এই শুক্রানুর কথা কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে বলা আছে যেমন ৩২:৭-৮, ৫৩:৪৫,৭৭:২০,৭৫:৩৭,৮৬:৫-৭।

৩। আল্লাহ বলেছেন তিনি নিয়মের ব্যতিক্রম করেন না। তার সৃস্টির কোন পরিবর্তন নেই। (৩০:৩০)

৪। “কুন” শব্দের দ্বারা তাৎক্ষনিক কিছু হতে হবে তা বাধ্যতামূলক নয়। “কুন” এবং “ফায়াকুন” এর মধ্যে সময়ের ব্যবধান আছে। কোরআনের বিভিন্ন রেফারেন্স এ এটা আমরা দেখেছি। সন্তান জন্ম দেওয়ার ব্যপারেও এটা প্রযোজ্য। এর সঠিক ব্যাখ্যা হয় আল্লাহ যখন কোন কিছ ইচ্ছা করেন তখন বলেন হও (কুন), তারপর যথা সময়ে সেটা হয়ে যায় (ফায়াকুন)। মানব সৃস্টির বেলায়ও এই কথা প্রযোজ্য।

৫। যাকারিয়া (আঃ) আল্লাহর কাছে প্রশ্ন করেছিলেন কিভাবে তার সন্তান হবে যখন তিনি বৃদ্ধ এবং তার স্ত্রী বান্ধ্যত্বে উপনীত হয়েছে। এর উত্তরে আল্লাহ বলেছেন “কাযালিকা”, অর্থাৎ একইভাবে। অর্থাৎ স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় যেভাবে সন্তান হয় সেভাবেই হবে (পয়েন্ট ২,৩)। এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার বাধা ছিল তার স্ত্রীর বান্ধত্ব্য। আল্লাহ সেই বান্ধাত্ব্য দূর করে দিয়েছেন (২১:৯১) এবং স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় তাদের সন্তান হয়েছে।

৬। ইবাহীম (আঃ) এর স্ত্রী একি প্রশ্ন আল্লাহর কাছে করেছিলেন এবং আল্লাহ একইভাবে সমাধান বলেছেন।

৭। মরিয়ম আল্লাহকে একি প্রশ্ন করেছেন যে কিভাবে তার সন্তান হবে যখন কোন পুরুষ তাকে স্পর্শ করেনি এবং সে অসতী নয়। আল্লাহ একি উত্তর দিয়েছেন তাহল “কাযালিকা” অর্থাৎ এইভাবে/একিভাবে। এইক্ষেত্রে বাধা ছিল মরিয়ম বিবাহিত ছিলেন না। সুতরাং তার বিবাহের প্রসেস শুরু হয়েছিল (3:44 ) এবং তার বিবাহের পর স্বভাবিক নিয়মেই তার সন্তান হয়েছিল।

৮। সুতরাং কোরআনের কোন আয়াত দ্বারা প্রমানিত হয়না যে ঈসা (আঃ) পিতা ছাড়া জন্ম গ্রহণ করেছিলেন।

এটা সত্য যে ঈসা (আঃ) আল্লাহর কালিমাহ, উনি এবং উনার মাতা আল্লাহর নিদর্শন, উনি আল্লাহর “কুন” শব্দ দ্বারা তৈরী হয়েছিলেন এবং তার মাতার গর্ভে আল্লাহ রুহু ফুকে দিয়েছিলেন। এই সবগুলি কথাই ভুল্ভাবে ব্যখ্যা করা হয়। আল্লাহর কালিমাহ এবং নিদর্শন বলতে যা বুজানো হয়েছে তা এইখানে উল্লেখ করা হয়েছে এবং এটাও দেখানো হয়েছে এতে অ-স্বভাবিক জন্মের সাথে কোন সম্পর্কে নাই। বাকি শব্দ “কুন”, রহু ফুকে দেওয়া -এই সব মানব সৃস্টির স্বভাবিক প্রক্রিয়া যা আল্লাহ কোরআনে বিশদ ভাবে বর্ণনা করেছেন। এতে কোন অস্বভাবিকত্ব নেই। সুতরাং শুধুমাত্র কোরআনের আয়াত নিয়ে যদি আমরা কথা বলি, তা হলে বলতে হয় ঈসা (আঃ) এর এই অস্বাভাবিক জন্ম বা পিতা ছাড়া জন্ম হবার কাহিনী কোরআনের কোন আয়াত দ্বারা সমর্থন যোগ্য নয়।

আমার লেখার উদ্দেশ্য কারও বিশ্বাসে আঘাত করা নয়, বা কারো বিশ্বাস পাল্টানো নয়। আমার উদ্দেশ্য পরিষ্কার। সেটা হচ্ছে এই বিষয়ে কোরআন কি বলে সেটা জানা। কেউ আমার লেখায় আঘাত পেয়ে থাকলে আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০২
১৮টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×