আমি যখন বল্লাম বাংলাদেশের ডাক্তার গুলি কিচ্ছু জানেনা, একেকটা যেন কসাই ওমনি আমার ডাক্তার বন্ধু তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠল ! বল্ল, তোর কথা মানতে পারলামনা, দু-একজন খারাপ হতে পারে তাই বলে তুই সবারে খারাপ বলবি ! আমাদের দেশে অনেক ভাল ভাল ডাক্তার আছে, দেশের বাইরে ও তাদের অনেক নাম ডাক ।
এরপর আমি কিন্তু চুপ রইলাম কারন ইতি মধ্যে যা ঘটার তা ঘটে গেছে, বন্ধুরা সবাই ডা: জাহিদকে ছেঁকে ধরেছে ! আট-দশজন এক জনকে আক্রমন করছে...সবাই তাদের দেখা-শুনা ঘটনা বর্ণনা করছে । সব ক্রোধ এখন ডা: জাহিদের উপর এসে পড়েছে । ঐদিকে বেচারার অবস্হা কাহিল কেউ তার কথা শুনছেনা..সবাই শুধু বলেই যাচ্ছে । আমি ও এর ফাঁকে দু-চারটা ঘটনা বলে ফেল্লাম
অবশেষে ডাক্তার বন্ধু বিশাল রাগ করে চোখ-মুখ লাল করে গাল ফুলিয়ে চিৎকার করতে করতে চলে গেল !
আমার কি দোষ ! আমিতো সত্যি কথাই বলেছিলাম ! এমন অভিযোগতো আপামর জনগণই করছে ! এতগুলি লোকতো আর ভুল কথা বলতে পারেনা !
আমি নিজের দেখা কয়েকটা ঘটনা বন্ধুকে বলেছিলাম আর বন্ধু কিনা রাগ করল ! আপনারাই শুনেন,.....
আমার এক বন্ধু হঠাৎ অসুস্হ হলো । তাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলাম । লক্ষণ দেখে ডাক্তার বল্ল ম্যালেনা হয়েছে, আমরাতো ঘাবড়ে গেলাম । ঠিক করলাম আরো কয়েক জনকে দেখাব । ঘুরে ঘুরে আরো কয়েক জনকে দেখালাম সবাই এই কথা বলছে । ম্যালেনা । শেষে এক ডাক্তারের কাছে গেলাম , বয়সে তরুণ, তিনি অনেকক্ষণ পরীক্ষা করলেন তারপর আমাদের দেয়া প্রেসকিপশন গুলি দেখলেন । কিছুক্ষণ চিন্তা করলেন, তারপর বল্লেন অন্য ডাক্তাররা ঠিকই বলেছেন, রোগীর ম্যালেনা হয়েছে । আর আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন এখন আপনি বলেন রোগীকে কি ঔষধ দেয়া যায় ! আমিতো হতভম্ব ! যাক, বের হয়ে ঐ ডাক্তারের প্রেসকিপশন ছিড়ে ফেলেছিলাম ।
আমার রুমমেটের মায়ের ব্রেন টিউমার হয়েছিল । রোগ ধরতেই আমাদের ডাক্তারদের বহু দিন লেগেছিল । যাক যখন ধরল ততদিনে অবস্হা খুবই খারাপ । অনাস্হার কারনে রোগীকে ইন্ডিয়া নেয়া হলো ।
ভালোভাবে অপারেশন হলো । রেডিওথেরাফি দেয়া হলো । কিছুদিন পর রোগীকে দেশে ফিরিয়ে আনা হলো । ইন্ডিয়ান ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেগ দেশে আরো কয়েকবার রেডিওথেরাফি দিতে হয়েছিল । মজার ব্যাপার হচ্ছে এদেশের ডাক্তাররা আমার ফ্রেন্ডের সাথে যথেষ্ট খারাপ ব্যাবহার করেছিল ! বল্ল, রোগীকে ইন্ডিয়া নিয়েছেন কেন !? টাকা বেশী হয়েছে ? কিছু হলেই ইন্ডিয়া ছুটেন ! আমাদের কাছে এসছেন কেন ? যান ইন্ডিয়া যান এইসব আর কি ! (ওর যা মেজাজ নিজের "মা" নাহলে হয়ত ডাক্তারদের দু-একটা দাঁত ফেলে দিত) । যাক, একবার বিশেষ প্রয়োজনে তার মায়ের প্রেসকিপশন নিয়ে সে কুমিল্লায় বসেন এমন একজন রেডিওথেরাফিস্টের কাছে গেল । ডাক্তার স্ক্যন প্লেট দেখে বল্ল আপনার মায়েরতো দেখি মাথার ডান পাশে টিউমার হয়েছিল ! ফ্রেন্ড বল্ল, ডানপাশে নাতো বামপাশে হয়েছিল । ডাক্তার তো ক্ষেপে গেলেন, আমি দেখছি ডানপাশে হয়েছে ! ফ্রেন্ড বল্ল, আপনিতো ফ্লেটটা উল্টো ধরেছেন ! তখন ডাক্তারের হুস হলো ! সত্যি আমারো বিশ্বাস হতে চায়না !
কিছুদিন আগের ঘটনা, আমার কলিগের ছোট বোন খুব অসুস্হ হয়ে পড়ে । তাকে স্কয়ার হাসপাতালে ভার্তি করা হলো । ড্ক্তাররা কিছুই ধরতে পারছেননা , অবস্হা দিনকেদিন খারাপ হতে লাগল । রোগী কিছুদিন কোমায় ছিল । অবস্হা একটু ভালো হতেই রোগীকে সিঙ্গাপুর নেয়া হলো ( স্কয়ারের বিল হয়েছিল প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা ) । ওখানে ধরা পড়ল 'ই' ভাইরাস ! অল্প কিছুদিন পর রোগী সম্পূর্ণ সুস্হ হয়ে দেশে ফিরল ! খরচ হয়েছিল ৪-৫ লক্ষ টাকার মত !
এই হলো আমাদের দেশের অবস্হা ! টাকা খরচ করবেন লাভ হবেনা । রোগীকে এই হাসপাতাল ওই হাসপাতাল ঘুরানো হবে । শেষে জমি বিক্রি করে লাশ নিতে হবে !
বন্ধু শুধু শুধু রাগ করল !

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



