somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার আমি নাই রে, আমার আমি নাই

১৮ ই অক্টোবর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকে সকালটা একটু অন্যরকম, আজকে কাজের লোড অনেক কম।

শুরুটা একদম হঠাৎ করেই, প্রথম আলোর ব্লগ ইঞ্জিনের কাজটা নেয়ার তেমন কোন প্ল্যান ছিল না। মাহবুব ভাইয়ের সাথে মাঝে মাঝে কথা বার্তা হত সাজেশন হিসেবে। এর মাঝেই ট্রিপার্ট ছাড়লাম জুলাই এর শেষে। এর পরের দুই মাস ভেবেছিলাম রেস্ট নিব, কিন্তু বেকার বসে থাকার চেয়ে প্রথম আলোর ব্লগের কাজটা করা ভাল। কারন কাজটা যাবে একদম রুট লেভেলে, তৃনমুল পর্যায়ে। ইহাব খুবই ভাল কাজ করেছে আমার ব্লগের, মারাত্মক কাজ হয়েছে একটা, কিন্তু সুশান্তর কিছু কমেন্ট দেখে মন খারাপ হল। অ্যাডমিন সুলভ কমেন্ট নয় মোটেও। সুশান্তর নিশ্চিতভাবেই জানা থাকা দরকার আমি বা ইমরান (সুশান্ত, প্লিজ নোট করুন নামটা ইমরান, ইম্রান না) কোনো প্ল্যাটফর্মের কোড মারি না। আর ওপেনসোর্স কোন প্রজেক্টে কোড রিইউজ করা কে কিন্তু কোড মারা বলে না - যতক্ষন আপনি তাদের লাইসেন্সের টার্ম গুলো মেনে চলেন। সচলায়তন নিশ্চিতভাবেই বেশ ভাল একটা মডিফিকেশন ড্রুপালের উপরে, প্যাঁচালীও ভাল, খুব বেশী ঘুরে দেখা হয়নি। একবার রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়েছিলাম কিন্তু আমার নিকটা এনাবল করে নাই এরা। আমি অনেক করে মেইল দিয়েছিলাম কি ব্যাপার, এরা জানালো কোন সমস্যা নাই, কিন্তু আমি লগ ইন করতে পারি নাই।

তো যাই হোক, আমি লিখতে বসেছি আমাকে নিয়ে। প্রথম আলোর কাজটা আমার জন্য অনেকটা সম্মাননাও বটে, কারন এর সাথে আমার এবং ইমরানের নামটাও জড়িয়ে থাকবে। সামহোয়্যারইন ব্লগের শুরুটাও ইমরান আর আমাকে দিয়েই, এখনও অনেকেই সেটা মনে রেখেছে। পরে মিজান, লাভলু,হাসান, আরিল, জানা এবং মোর্শেদের দুর্দান্ত পরিশ্রম আজকে সামহোয়্যারইন ব্লগকে নিয়ে এসেছে আজকের এই অবস্থায়। ধন্যবাদ তাদেরকে, সামহোয়্যারইন ব্লগ এখন অনেক স্ট্যাবল এবং ঈর্ষনীয় একটা ডেভেলপমেন্ট প্ল্যাটফর্ম।

ট্রিপার্ট ছাড়ার পর প্রথম আলো ব্লগের কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম বেশ কয়েকদিন। এরপর লোভনীয় চাকরীর অফার ফিরিয়ে না দেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে এই ভাবনা থেকে আইটুউই এর কাজ টা নিয়ে নিলাম। বাংলাদেশে সঙ্গী হিসেবে পেলাম শাহিদ এবং শোয়েব কে। খুব দ্রুতই মিজান (সামহোয়্যারইনের মিজান) আসল আমাদের গ্রুপে। আমি খুবই খুশী। শাহিদ, শোয়েব এবং মিজানের পারফরম্যান্স এবং স্কিল এক কথায় অতূলনীয়।

ধ্যাৎ, বার বার মেইনস্ট্রিম থেকে সরে যাচ্ছি। প্রথম আলোর কাজ টা করার পেছনে যে আসলে ব্যাপারটা কাজ করেছে আমার মাঝে সেটা বললাম। পুরো কাজটার বিভিন্ন সময়ে আমাকে সাহায্য করেছে মানচু (সবুজ কুন্ডু), অমি আযাদ, আনিস (আরবিএস এর), সাইদুর বিজন (আরবিএস এর) এবং ইমরান (নোট এগেইন, নামটা ইমরান, ইম্রান নয়), তাপস (ট্রিপার্ট ল্যাবস) এবং জাহিদ। মাহবুব মোর্শেদ ভাই পুরো কাজটা কোঅর্ডিনেট করেছেন দারুনভাবে। ওনার সাথে আমার সম্পর্কটা ঠিক বিজনেস ডেলিগেট এর মত নয়, অনেকদিন একসাথে কাজ করার জন্য ভেতরের চমৎকার মানুষটার সাথে সম্পর্কটা অনেকটা বন্ধুস্থানীয়। প্রথম আলোর এই কাজটার সুবাদেই পরিচয় হয়েছে আরো কিছু চমৎকার এবং শ্রদ্ধেয় মানুষের সাথে - তাঁদের মাঝে মতিউর রহমান, সাজ্জাদ শরীফ, হাফিজুর রহমানের কথা না বললেই না। সাজ্জাদ ভাই এর ভীষন ঠান্ডা ব্যবহার আমাকে বানিয়েছে তার ভক্ত।

আজকে মাথা আউলা হয়ে আছে বলে মনে হচ্ছে। আবোল তাবোল বেশি বকলাম। বকেই যখন ফেলেছি তখন আরো কতক্ষন বকা যাক। এই কয়দিনে আমি ছিলাম একদম বিচ্ছিন - একদম। সকাল ৪টায় ঘুমাই, ১১ টায় উঠি, সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রথম আলোর কাজ করি, রাত্রে কাজ করি আইটুউই এর কাজ। অপরাধবোধ কাজ করে দুইভাবে। না পারছি অফিসের কাজে ঠিক মত সময় দিতে, না পারছি প্রথম আলোর কাজ করতে। আল্লাহর অশেষ রহমতে ডেডলাইন মিস করি নাই কোনখানেই। শাহিদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা, অসাধারন কাজের জন্য।

ওহ আরেকটা জিনিস কিনেছি, যেটা লেনিন এবং ফেরদৌসের সাহায্য ছাড়া সম্ভব হত না কখনোই। একটা ১৫০ সিসি বাজাজ পালসার কিনেছি - আর এই দুইজন পুরো সময়টা আমাকে সাহায্য করেছে কাগজপত্র রেডী করার জন্য এবং সবশেষে ফেরদৌস বাইক টা চালিয়ে আমাদের নিয়ে এসেছে বাসা পর্যন্ত। ফেরদৌস আর আমানের এই ব্যাপারটা আমাকে মুগ্ধ করে খুব - আমান ছিল জিডি পাইলট, আর ফেরদৌস ছিল র‍্যাব এ - এখন দুজনেই পুরোদস্তুর ডেভেলপার। জটিল ডেডিকেশন, জটিলস!!

আফিফকে সময় দেয়া হয় নাই এই কয়দিনে। আমি যেন জাস্ট গুহাবাসী হয়ে গিয়েছিলাম এই কয়দিন। আমার রুমই হয়ে গিয়েছিল সবকিছু। খাওয়ার জন্য শুধু নিচে নেমেছি - আর মাঝে মাঝে নেমেছি এটিএম মেশিন থেকে টাকা তোলার জন্য, হেহ হেহ। আজ ভাল লাগছে খুব বেশী। এবার শুধু আইটুউই আর ফ্যামিলি। টাইম টু এনজয় সাম ফ্রি আওয়ারস।

ধন্যবাদ আমার বউ সুমিকে- অনেক। পুরো সময় টাই সাপোর্ট দিয়েছে আমাকে। আবার মাঝে মাঝে ডিস্ট্রাক্ট করেছে ঝগড়া করে সময় না দেয়ার জন্য - হেহ হেহ

বেশ কয়েকজনকে নতুন করে চিনলাম এই কয়দিনে। আনিস, শাহিদ, ইউনুস (আরবিএস), সুহৃদ সরকার, মিজান, সুহৃদ সরকার, জুনাল, জুয়েল, মাহমুদ,আমান, মানজিল, সাফায়েত, রাজু, রানা, অমি আজাদ, লেনিন এবং ফেরদৌস কে ধন্যবাদ আমাকে সঙ্গ দেয়ার জন্য। রুমে কাজ করতে করতে বোর হয়ে গেলে এদের সাথে আড্ডা মারতে ভালই লাগত।

প্রথম আলো ব্লগ আরো একটা কারনে আমার কাছে খুবই ইমপর্ট্যান্সী পেয়েছে। সেটা হল এটা আমার তৈরী করা ফ্রেমওয়ার্ক অর্কিডের প্রথম ফ্ল্যাগশিপ প্রোডাক্ট। এটা করতে গিয়েই অর্কিডকে অনেক ইমপ্রুভ করতে হয়েছে। অর্কিড হয়েছে অনেক ম্যাচিউর। আর ধন্যবাদ ইমরান এবং আনিসকে অর্কিডে কন্ট্রিবিউট করার জন্য।

আসছে মাসগুলোতে অফিসের পাশাপাশি আমি কাজ করব জেকোয়েরী-ট্যাগ-লাইব্রেরী নামে এখটা ওপেন সোর্স প্রজেক্টে। এটা আপাতত আমি আর মাহমুদ মিলে শুরু করেছি। এটা নিয়ে পরে একদিন বিস্তারিত লিখব। প্যাক্ট থেকে আর কোনো বই লিখব না আপাতত। এপ্রিল সিলভার নামের একজন লেখিকা ওয়ার্ডপ্রেসের নতুন এডিশনটা লিখছে, আমি না লেখায় ওয়ার্ডপ্রেসে আমার রেভিনিউ ১২% থেকে কমে হয়ে গেল ৬% - ইসসস - কিন্তু আর লিখতে ইচ্ছা করে না। খুবই পরিশ্রমের কাজ।

ওরে বাবা, পুরো উপন্যাস লিখে ফেললাম। আজকে থাক, অনেক কাজ পড়ে আছে হাতে।

ওল্ড টেস্টামেন্টের একটা লাইন আমার খুবই পছন্দ, জেনেসিসের - “লেট দেয়ার বি লাইট”

কোরান শরীফের আরেকটা লাইন আমার দারুন পছন্দ, অর্থটাও খুবই সুন্দর - ফাবি আইয়্যি আলায়্যি রাব্বিকুমা তুকাজ্জিবান। তোমার কোন নিদর্শনই অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই, মহানুভব। আমার প্রতিটা দিনের জন্যই, আমাকে কাজ করার সামর্থ দেয়ার জন্য, আমাকে আজকের এই আমি বানানোর জন্য এবং আমার বেশিরভাগ চাওয়া কে পূর্র্র্ণতা দেয়ার জন্য আমি তোমার কাছে কৃতজ্ঞ। আরেকটু সময় দাও আমাকে হাতের কাজটুকু শেষ করার জন্য, তাহলে আর কোনো আফসোসই থাকবে না
৪৩টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×