অনেক সময় কোন সিদ্ধান্ত নেয়া এতোটাই কঠিন হয়ে যায় যে, মনে হয় পৃথিবীতে এরচেয়ে কঠিনতর কোন কাজ বুঝি আর নেই। কেননা সেই সময়ের সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে কি পরিণতি পায় তা বোঝা দুস্কর, আজকের কোন সঠিক সিদ্ধান্ত সময়ের পরিক্রমায় নির্মমভাবে ভুল প্রমাণিতে হয়ে জীবনে অমানিশার ঘোর অন্ধকার এনে দিতে পারে। তবে, সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় যে জিনিষ মানুষমাত্রই মাথায় রাখে না, তা হল নিজের ভেবেচিন্তে নেয়া সিদ্ধান্ত নিজেকেই ভবিষ্যতে সঠিক বলে প্রমাণ করতে হবে। সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল সেই দায় কিন্তু সিদ্ধান্তগ্রহীতার। আজ এই মধ্য দুপুরে নিজের অফিস ডেস্কে বসে শায়লা এইসব চিন্তা করতে করতে খুব অস্থিরবোধ করছিল, মাথায় চাপা একটা যন্ত্রণা হচ্ছে। গত সপ্তাহের ঘটনা, প্রায় বছর দুয়েকের বেশী সময় পর জাভেদের এভাবে তাদের বাসায় হাজির হওয়া, আপত্তিকর সব কথাবার্তা আর আচরণ, সাথে শায়লার বড় ভাই শিপলুর আক্রমণাত্মক আচরণ সবকিছু মিলে হুট করে যেন বিশাল একটা ঝড় বয়ে গেছে শায়লার মনোজগতে। তার চাইতে বড় ঝড় বুঝি বয়ে গেছে শিশু রন্তুর মনের গহীনে।
এক সপ্তাহ যাবত শায়লার মনে হচ্ছে রন্তু অচেনা অজানা কোন এক শিশুপুত্র, যাকে আগে কখনো দেখেনি শায়লা। তার নিজের নাড়ি চেরা ধন নয়, এ যেন ভিনগ্রহের কোন বাসিন্দা। এতোটা বছরে তিলতিল করে তার নিজের হাতে গড়ে তোলা ছেলেটা যেন নিমিষে কেমন বদলে গেছে। সেদিনের পর থেকে চুপচাপ বসে থাকে, বেশীরভাগ সময় মাটির দিকে তাকিয়ে অন্যমনস্ক হয়ে থাকে। কিছু জিজ্ঞাসা করলে কেমন রেগে ওঠে। প্রথমদিন ওর এমন আচরণে শায়লা যারপরনাই অবাক হয়েছিল। রন্তু কখনো এমন উগ্র আচরণ করে নাই শায়লার সাথে, হুট করে যেন অনেক বড় হয়ে গেছে ছেলেটা। কেমন ঝাড়ি দেয়ার স্বরে কথা বলা শিখে গেছে একদিনে। স্বাভাবিক হ্যাঁ বা না বলাটাও অনেক কর্কশ শোনাচ্ছে শায়লার কাছে। জাভেদের এই হুট করে আগমন এবং তার পরবর্তী ঘটনা প্রবাহে রন্তুর মনে বিশাল আঘাত লেগেছে, যা অনেকটা পরিবর্তনের ছাপ ফেলে দিয়েছে এই শিশু মনে। শায়লা বুঝে উঠতে পারছে না সে কি করবে এই ছেলেকে নিয়ে। ছেলে তার বাবাকে এতোটাই ভালবাসে যে, সে বাবার এই রূপ মেনে নিতে পারছে না। তার সাথে তার মনে ধারণা সবাই মিলে তার বাবার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করেছে বলেই বাবা এতো ক্ষেপে গিয়েছিল। শায়লার কেন যেন মনে হচ্ছে রন্তু তার কাছ থেকে অনেক দূরের কোন জগতে হারিয়ে গেছে। আজকের এই রন্তুকে সে চেনে না, সম্পূর্ণ অচেনা একটা ছেলে তার আশেপাশে বিচরণ করছে।
(পূর্ব ঘটনা প্রবাহঃ রন্তু, শায়লা আর জাভেদের একমাত্র সন্তান। জাভেদের সাথে শায়লার প্রনয় থেকে পরিণয়, পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে। কিন্তু বিয়ের পর শায়লা ধীরে ধীরে বুঝতে পারে জাভেদ ভয়ঙ্কর রকমের মানসিকভাবে অসুস্থ। এক সময় মানিয়ে নিতে না পেরে ছোট্ট শিশু রন্তুকে নিয়ে মায়ের বাসায় চলে আসে। তাদের মিউচুয়ালি ডিভোর্স হয়ে গেছে। মা-বাবার এই টানাপোড়নে শিশু রন্তুর মানসিক জগতের গল্প, সাথে তার নিত্যদিনকার প্যাচালি, এই হল এই গল্পের উপজীব্য। কয়েক মাস আগ পর্যন্ত জাভেদ রন্তুকে স্কুলের গেটে মাসে এক-দুইবার দেখা করতে আসতো, গত মাস ছয়েক আগে শেষবারের মত ছেলেকে দেখতে এসেছে। মানসিক সমস্যাগ্রস্থ জাভেদ পরিবার, আত্মীয় পরিজন হতে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে একাকী জীবন পথে হেঁটে চলেছে। অপর দিকে রন্তুর মা শায়লা এক প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকুরী করছে, যেখানে তার এক সিনিয়র পোস্টের সহকর্মী ইরফানের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থেকে গড়িয়েছে প্রণয়ের। ইদানীং রন্তুর মাঝে একটি মানসিক সমস্যা দেখা যাচ্ছে, সে বাবা-মা সহ নিজেদের একটি পরিবার খুব মিস করে। আর সেই অপ্রাপ্তি থেকে সে নিজের মনে একা একা এক কাল্পনিক জগতে বিচরন করে। এরমাঝে শায়লার প্রবাসী বড়ভাই দেশে এসেছে ছুটিতে। কিছুদিন আগে রন্তু মাথায় আঘাত পেয়ে হাসপাতাল পর্যন্ত গিয়েছিল, ডাক্তাররা প্রথমে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু কোন বিপদ ছাড়াই সুস্থ হয়ে উঠেছিল সে। কিন্তু বিপদ যখন আসে, চারিদিক দিয়েই আসে। গত পর্বে রন্তুর বাবা জাভেদ বহুদিন পর দেখা দিয়েছে উপন্যাসে। শায়লাকে ইরফানের সাথে বাইরে ঘোরাফেরা করতে দেখে উত্তেজিত হয়ে বাসায় এসে বাজে আচরণ করেছে এবং ফলস্বরূপ শায়লার বড় ভাই শিপলু তাকে গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে। এইসব ঘটনা পরিক্রমা রন্তুর মনোজগতে ভীষণভাবে নাড়া দিয়ে গেছে। তার আচরণে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। বাবা-মায়ের সম্পর্কের এই টানাপোড়নের সাথে তার শিশু মনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া এবং পরিবারের মানুষগুলোর মিথস্ক্রিয়া’য় কেমন চলছে আমাদের রন্তুর জগত তা জানার জন্য আসুন এবার আবার শুরু করা যাক)
লাঞ্চ আওয়ার পেড়িয়ে গেলেও আজ লাঞ্চ করা হয় নাই। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় ইচ্ছে করেই লাঞ্চবক্স সাথে নিয়ে আসে নাই। মানসিক যন্ত্রণার তো শেষ নেই, এইদিকে ইরফান হুট করেই একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জব পেয়েছে, পোস্টিং দেশের বাইরে, লন্ডন। গত পরশু ইরফান সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে শায়লাকে, সেদিনই সে কনফার্ম হয়েছে চাকুরীটার ব্যাপারে। কিন্তু সমস্যার তো শেষ নেই, জীবনের বাঁকেরও বুঝি শেষ নেই। গতকাল ইরফান এক কনসাল্টেন্ট লইয়ারের সাথে কথা বলেছে, ইরফান শায়লাকে বিয়ে করে সাথে করে নিয়ে যেতে পারবে এখনই, কিন্তু রন্তুকে এই মুহূর্তে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। রন্তুকে রেখে যেতে হবে, সেখানে গিয়ে প্রায় মাস ছয়েক কিংবা বছরখানেক পর রন্তুকে নিয়ে যাওয়া যাবে। কিন্তু শায়লার পক্ষে এ অসম্ভব, কিন্তু ইরফান বলছে শায়লাকে এখনই ডিসিশন নিতে হবে। ইরফানের বাসার সবাই চাচ্ছে, লন্ডন যাওয়ার আগে সে বিয়ে করে বউ সাথে নিয়ে যাক। ইরফানেরও সেই ইচ্ছে, শায়লারও দ্বিমত নেই, কিন্তু রন্তুকে রেখে কিভাবে সে যাবে। ইরফান বলেছে, “তোমার মা আছে, ভাই আছে; ওরা কি এই কয়েকটা মাস রন্তুকে দেখে রাখতে পারবে না? তুমি এখন চাকুরী করছ, সারাদিন তো সে নিজের মত একাই থাকছে। তাই না?” কিন্তু তারপরও তো দিনের শেষে ছেলেটাকে বাসায় গিয়ে কাছে পায়। যদিও গত এক সপ্তাহ শায়লার সাথে তেমন একটা কথা হচ্ছে না রন্তুর। শায়লা কিছু জিজ্ঞাসা করলে কেমন কাটা কাটা উত্তর দিচ্ছে। শায়লা অবাক হয় এতোটুকু একটা পিচ্চি ছেলের কাছ থেকে এমন উত্তর পেয়ে। এটা কি জেনেটিক্যাল, বাবার কাছ থেকে ক্রোমোজোমে করে উগ্র বৈশিষ্ট্যগুলো ছেলে বহন করছে। শায়লা কায়োমনে প্রার্থনা করে যেন এমনটা না হয়। বাবার সেই বাজে দিকগুলো যেন ছায়া না ফেলে রন্তুর জীবনে, তাহলে যে রন্তুর জীবনও ধ্বংস হয়ে যাবে।
একদিকে রন্তু, অন্যদিকে ইরফান; এই দোটানার মাঝে এই তিন’চার দিন ধরে শায়লা যেন একটা ঘোরের মাঝে আছে। নিজের সাথে সারাক্ষণ মানসিক যুদ্ধ, দুটোকেই আঁকড়ে ধরার এক অদম্য ইচ্ছে, কিন্তু কিভাবে? তা জানা নেই। কারো সাথে এটা নিয়ে কোন আলোচনা পর্যন্ত করতে পারছে না। বাসায় মা ইরফানের সাথে ঘোরাঘুরির প্রসঙ্গ ধরে একদিন বেশকিছু মন্তব্য দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি ইরফানের সাথে তার সম্পর্ক পছন্দ করেন না। তাই এই ব্যাপার নিয়ে মা’র সাথে কথা বলার কোন মানে নাই। ঐ দিকে বড় ভাই শিপলু আছে তার প্রবাসী সেই আইবুড়ো পাত্র নিয়ে, সময় পেলেই হিতোপদেশ দেয়ার ছলে সেই ছেলের সাথে বিয়ের প্রসঙ্গ নিয়ে আসে। শায়লার এখন মনে হয় অতি শীঘ্রই সে পাগল হয়ে যাবে। মাথার যন্ত্রণা কমাতে পিয়নকে ডেকে চা দিতে বলল। হ্যান্ডব্যাগ খুলে একটা মাথাধরার ট্যাবলেট বের করে খেয়ে নিল। একবার ভাবল খালি পেটে ঔষধ খাবে কি না? পরে ভাবল, কিছু হলে দেখা যাবে, এখন এই মাথার দুপাশের বেয়ারা রগগুলোর দাপাদাপি কমানো দরকার।
রন্তু স্কুল থেকে বাসায় ফিরে চুপচাপ জামা কাপড় ছেড়ে গোসল করে রংপেন্সিল আর ড্রইং খাতা নিয়ে বসেছে। নিজমনে কি যেন আঁকছে। নানু কয়েকবার এসে দুপুরের খাবারের জন্য ডেকে গেছেন, সে মাথা তুলে চেয়ে দেখে আবার আঁকায় মনোযোগ দিয়েছে। রন্তুর নানু এই কয়েকদিন ধরে রন্তুর গতিবিধি ঠাহর করতে পারছে না। রন্তুর এই হঠাৎ করে বড়দের মত আচরণ নানু মেনেও নিতে পারছে না আবার কোন কিছু বলছেনও না। অন্যসময় হলে নানু হয়ত কান ধরে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে খেতে বসাতো রন্তুকে, কিন্তু আজ কিছু বলল না। শেষবার এসে শুধু বলে গেল, “টেবিলের উপর ভাত বেড়ে ঢেকে রাখলাম, নবাবজাদার মর্জি হলে খেয়ে নিয়ে আমাকে উদ্ধার করবেন”। অন্যসময় হলে রন্তু ফিক করে হেসে দিত, কিন্তু আজ শুধু গম্ভীর হয়ে একবার তাকালো নানুর দিকে, আবার তার নিজের কাজে মনোযোগ দিল।
আজ স্কুল থেকে বলা হয়েছে আগামী সপ্তাহে স্কুলভিত্তিক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা হবে, তার জন্য আগামীকাল সবাইকে একটা করে ছবি এঁকে নিয়ে যেতে বলেছে, যার যা ইচ্ছে। এই প্রতিযোগিতার নাকি এমনই নিয়ম, আগে যত প্রতিযোগিতা হয়েছে সেখানে রন্তু দেখেছে স্যারেরা বলে দেয় কি এঁকে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু এটা নাকি অনেক বড় প্রতিযোগিতা, শহরের সকল স্কুলের ছেলেমেয়েরা তাদের ইচ্ছেমত ছবি এঁকে জমা দিবে। সেখান থেকে বাছাই করা আঁকিয়েদের নিয়ে মূল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। ড্রইং ম্যাডাম খুব করে বলে দিয়েছেন, সবাই যেন খুব যত্ন নিয়ে ছবি আঁকে, এই ছবিটি হতে হবে তাদের জীবনের এ পর্যন্ত আঁকা সবচেয়ে সেরা ছবি। যার যা মন চায় তা আঁকবে, কিন্তু খুব মন দিয়ে। রন্তু স্কুল থেকে খুব উৎসাহ নিয়ে ফিরল ছবি আঁকার জন্য, বাসার এই মন খারাপ করা আবহাওায়র মাঝেও তার মন চঞ্চল হয়ে উঠল, কিন্তু বাহির হতে তা বুঝার উপায় নেই। বাবার সেদিনের সেই ঘটনার পর থেকে তার মাঝে আশ্চর্যরকমের একটা গাম্ভীর্য এসে ভর করেছে। ছোট মামা ঠাট্টা করে বলছে, “সাধু বাবা এখন ধ্যানে আছেন, তাই এতো গম্ভীর। ধ্যানে থাকলে হাসতে মানা আছে যে...”
ছবি আঁকতে বসে রন্তু ভেবে পেল না কি আঁকবে। অনেকক্ষণ বসে রইল রংপেন্সিল আর কাগজ নিয়ে। একসময় একটা বাসার ছবি আঁকল, একতলা একটা ছোট্ট বাসা, বাসার পেছনে কিছু গাছ রয়েছে। বাসার ছাঁদের পেছন দিয়ে মাথা উঁকি দিয়ে জানান দিচ্ছে। বাসার পাশ দিয়ে একটা রাস্তা দিয়ে দিল, যেই রাস্তাটা বাসার কাছ দিয়ে দুদিকে চলে গেছে। অনেকক্ষণ বাসাটার দিকে চেয়ে থেকে তার চোখে জল এল, এমন একটা বাসা যদি তাদের থাকত, যেখানে সে থাকত, সাথে বাবা-মা। বেশকিছু সময় পর চোখ মুছে বাসাটার দরজার কাছে একটা সিঁড়ি মত এঁকে সেখানে একটা ছেলের ছবি আঁকার চেষ্টা করল। ছেলেটা বসে আছে সেই সিঁড়িতে। ছেলেটার ছবি তেমন সুন্দর না হলেও বোঝা যায় রন্তুর সমবয়সী একটা ছেলে বসে আছে সেই একতলা বাসার দরজার কাছের সিঁড়িতে। ছবি আঁকা শেষ হলে দেখা গেল যেই রাস্তাটা দুদিকে ভাগ হয়ে চলে গেছে, সেই দুই রাস্তায় দুজন মানুষ হেঁটে কোথায় যেন যাচ্ছে, একটিতে একজন পুরুষ মানুষ, অন্যটিতে মহিলা। ছবিটা যেন বলছে সিঁড়িতে বসে থাকা ছোট্ট ছেলেটা চেয়ে আছে সেই চলে যেতে থাকা দুজন মানুষের দিকে।
'রন্তু'র কালো আকাশ' এর আগের সব পোস্টগুলোঃ
রন্তু'র কালো আকাশ - ১
রন্তু'র কালো আকাশ - ২
রন্তু'র কালো আকাশ - ৩
রন্তু'র কালো আকাশ - ৪
রন্তুর কালো আকাশ - (১-৫)
রন্তু'র কালো আকাশ - ৬
রন্তু'র কালো আকাশ - ৭
রন্তু'র কালো আকাশ - ৮
রন্তু'র কালো আকাশ - ৯
রন্তু'র কালো আকাশ - ১০
রন্তু'র কালো আকাশ - ১১
রন্তু'র কালো আকাশ - ১২
রন্তু'র কালো আকাশ - ১৩
রন্তু'র কালো আকাশ - ১৪
রন্তু'র কালো আকাশ (পর্ব ১-১৪ ফিরে দেখা)
রন্তু'র কালো আকাশ - ১৫
রন্তু'র কালো আকাশ - ১৬
রন্তু'র কালো আকাশ - ১৭
রন্তু'র কালো আকাশ - ১৮
রন্তু'র কালো আকাশ - ১৯
রন্তু'র কালো আকাশ - ২০
রন্তু'র কালো আকাশ - ২১
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:৫৯