somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অমূলদ ডট ডট ডট (গল্প)

১৭ ই অক্টোবর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিষ্প্রাণ হ্যামলেটের মতই মৃত কাকটি নিশ্চল পড়ে ছিল খিলগাও রেলগেটে , হয়ত বেশ কিছুক্ষণ যাবৎ। সুমন চ্যাটার্জির নাগরিক চিল হয়ে কারো ঘরের চালে সে বসেছিল কিনা, তা নিয়ে এই শহরের কারও ভাববার অবসর নেই; কিন্তু, তার লাশ বরাবর সরলরেখায়, রাস্তায় দু’দণ্ড থমকে দাঁড়িয়েছিল একজন- রূপায়ণ। সেই থমকে দাঁড়ানোটা স্থায়ী হওয়ার আগেই সে, দ্রুতপায়ে নাগরিকপথকে মাড়িয়ে, হেটে চলল দিপনের উদ্দেশে- তাকে একবার দৃশ্যটা দেখাতেই হবে; রাস্তার লিজ পেতে মরিয়া রিক্সা আর বাসের মধ্যকার অদৃশ্য দ্বৈরথটা অন্যদের মত সে’ও উপেক্ষা করল।

রূপায়ণ, দিপন, শোভন, মুকিম, অমিতাভ, সৈকত, আজম- সার্কেলের ক্ষেত্রফল যেমনই হোক, পরিধিটা বেশ দীর্ঘই। ক্ষেত্রফল নিয়ে প্রশ্ন তোলার মূল কারণ, আন্ত:বন্ধুমহলীয় কোন্দল এবং ইগোজনিত বিভ্রাট। যেমন অমিয় কোন কথা বললে মুকিম তার বিরোধিতা করবেই, আমিতাভের সঙ্গে দিপনের মারামারির কেদোজল কোর্ট অব্দি গড়িয়েছিল অভিভাবকদের গোয়ার্তুমিতে। তবে মুকিমকে দোষ দেয়া চলেনা; অমিয়র সঙ্গে গ্রুপের সবারই একটা স্পষ্ট মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়েছে এবছরের গোড়ার দিকে। দূরত্বের উপলক্ষ্য তাদেরই আরেক বন্ধু সান্তনু, এবং গ্রীস-ট্রয় মীথের আদলে এর নেপথ্যেও আছে এক হেলেন, নাম যার শর্মিলা। একই পাড়ার মেয়ে হওয়ার সুবাদে শর্মিলা ওদের পূর্বপরিচিত; সান্তনু আর তার সম্পর্কটাও সেই মাধ্যমিক স্কুল থেকে ইন্টার পর্যন্ত মসৃণগতিতে চলেছে অবিরাম। কিন্তু ভার্সিটিতে গিয়েই বদলে গেল ঘটনা- অমিয় আর শর্মিলা ঢাবিতে একই ডিপার্টমেন্টে চান্স পায়, আর সান্তনুর চান্স হয় রুয়েটে। এর কিছুদিন পরই সান্তনু- শর্মিলা নয়, বরং অমিয়-শর্মিলা উপাখ্যানই মঞ্চায়িত হতে থাকে। এই কাহিনীতে অমিয়ই প্যারিস, অমিয়-ই হেক্টর; অপরপক্ষে পুরো বন্ধুমহলকে একিলিস হিসেবে পেয়েও আগামেনন সান্তনু যুদ্ধের বদলে হেমলক বেছে নিল; তাই ছুটিতে ঢাকায় এলেও বন্ধুদের আড্ডায় তাকে সচরাচর দেখা যায়না, আর যদিওবা আসে, এককোণে গুটিসুটি বসে থাকে। অথচ এমন জঘন্য অপরাধ করেও অমিয়র মধ্যে কোন অনুশোচনা নেই; সুতরাং একিলিস আর হেক্টর/প্যারিস দৃশ্যত শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই করে যাচ্ছে আড্ডার পর আড্ডায়।

ফিরে এসে বেশ আশাহত হল রূপায়ণ- কিছুক্ষণ আগে দেখে যাওয়া সেই মৃত কাকটির অস্তিত্ব বলতে এখন রাস্তায় পড়ে থাকা কয়েকটা পালকের খণ্ডাংশ; হয়তবা এতক্ষণে কোন ডাস্টবিন বা ম্যানহোলের গভীরে পেয়েছে শেষ আশ্রয় । রূপায়ণকে ছাপিয়ে দিপনের হতাশাটা ওজনদার হল যখন সে ফুটপাতের উপরই ধপাস করে বসে পড়ল অপরিসীম অনিশ্চিয়তাময় চেহারায়; এদিকে, ট্রেন আসবে বলে রাস্তায় সিগনাল দেয়া হয়েছে; ফলে পথচারী থেকে যানবাহন আরোহী, সবাই অবাক দৃষ্টিতে, ফুটপাতে হাটুগেড়ে বসে দুহাতে মুখ ঢেকে থাকা, ভদ্রস্থ চেহারার একজন তরুণকে দেখছে। পরিস্থিতি সঙ্গিনতা দ্রুতই বুঝে নিল রূপায়ণ; তাই নজর ঘুরাতে সে জ্যামে আটকে থাকা এক রিক্সাওয়ালার সঙ্গে ইচ্ছাকৃতভাবে ঝগড়া বাধিয়ে একপর্যায়ে তাকে চড় মেরে বসল। রিক্সাওয়ালাও প্রতিবাদ করলে তার উদ্দেশ্য রীতিমত ১৭আনাই সফল হল।
এই কোলাহলে দিপনের কোন আগ্রহ নেই। আগেকার অবস্থান থেকে সে এবার উঠে দাঁড়িয়েছে; রূপায়ণকে বেমালুম ভুলে গিয়ে সে হাটা ধরল। এই হাটা’টির সঙ্গে রূপায়ণ পরিচিত, তাই তাকে না ঘেটে রিক্সাওয়ালাটার দিকেই মনোযোগ দিল। দিপনের গন্তব্যের ব্যাপারে সে সাময়িক দ্বিধান্বিত, তবে সম্ভাব্য জায়গাগুলো অনুমেয়ই বিধায় , তাকে হাটতে দেখেই তার ঠোটের অগ্রভাগে একটা কুটিল হাসির জটিল মানচিত্র দৃশ্যমান হল।

অন্তত সন্ধ্যার আগে দিপনের কোন আপডেট পাওয়া যাবেনা; এই সময়টুকু রূপায়ণকে বাসায় কাটাতে হবে। বাসাটাকে তার আক্ষরিক অর্থেই মানুষের গর্ত বা ম্যানহোল মনেহয়- গলিত সম্পর্কের দুর্গন্ধে দেয়ালগুলোরও বুঝি বমি আসতে চায়, এমন। আজ দরজা দিয়ে ঢুকতেই ড্রইংরুমে মৃদুলাকে দেখতে পেল সে। এ বাড়িতে যে কয়েকজন মানুষ প্রায় নিয়মিত আসে সে তাদের অন্যতম; মূলত রূপায়ণের মায়ের কাছে আসলেও রূপায়ণের বোন রূপন্তীর সঙ্গেও তার বেশ ঘনিষ্ঠতা । সে টেবিলের উপর রাখা পেপারের পৃষ্ঠা উল্টাচ্ছে অলস হাতে, কিন্তু রূপায়ণ একপলক তাকিয়েই বুঝতে পারল পড়া নয়, সময়দেবকে বলি দেয়াই মেয়েটির মূখ্য উদ্দেশ্য । সে তার নিজের রুমে গেল। মৃদুলার সাথে কখনোই কথা বলবার প্রয়োজন পড়েনি, তবুও রুমে এসেই তার সেই আপেক্ষমান দৃষ্টিতে পৃষ্ঠা উল্টানোর দৃশ্যটা মনে পড়ল; মেয়েটার চোখে একটা তিল আছে, এই সূক্ষ ব্যাপারটিও কিভাবে নজরে এল, এটা ভাবতে গিয়ে সে নিজের শরীরেও তিলের অস্তিত্ব অনুসন্ধানে ব্যাপৃত হল; একটা পাওয়া গেল – ডানপায়ে! ‘হতাম যদি তিল/ তোমার চোখের মেঘের ছায়ায় পেতাম সুখের মিল’- আচমকা এধরনের কাব্যিক ভাবনাতে মায়ের প্রতি তার চরম বিতৃষ্ণা জাগল; এমনিতেই মার চেয়ে তেলাপোকাও তার অধিক প্রিয়, তবে এ মুহূর্তে বিতৃষ্ণার কারণ মৃদুলাকে এভাবে অনর্থক বসিয়ে রাখা। সেই ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছে, কেউ তার কাছে আসলেই তিনি দরজা বন্ধ করে জানালা খোলা রেখে বই পড়তে বসেন, একেবারে আভিধানিক অর্থে সাহিত্যব্রতীর মত। সম্প্রতি রূপন্তীর কাছে সে জেনেছে , আদতে কোন বই-ই তিনি পড়েননা; এইসব অপেক্ষমান মানুষদের সামনে বিদূষি সাজার কাঁচা অভিনয় করেন! মানবাধিকার কর্মী হওয়ায় তার কাছে প্রতিদিন অনেক মানুষই আসে। তবে রূপায়ণ লক্ষ্য করেছে ৪-৫জন মানুষ প্রায় নিয়মিতই আসে। যেমন, দিনাজপুরের লিয়াকত, যশোরের মনিশঙ্কর, নরসিংদির জোবেদা, নারায়ণগন্জের নওশেদ; আর মৃদুলা তো আছেই। রূপন্তীর থেকে এদের পরিচয় পেয়ে শুরুতে উদ্ভট লেগেছিল, এখন ধাতস্থ হয়ে গেছে। দিনাজপুরের লিয়াকত নাকি পেশাদার খুনী, মনিশঙ্কর স্কুল মাস্টার, জোবেদা দর্জির কাজ করে; তবে মৃদুলার ব্যাপারে বলতে গিয়েও থেমে গেছে । মা’র কাছে এদের কী প্রয়োজন কে বলতে পারে, বিশেষত একজন পেশাদার খুনীর।
রূপায়ণের আজ ইচ্ছা করছে রুমের দরজা ভেঙ্গে মাকে শূন্যে তুলে একটা রাম আছাড় মারতে- ঢঙ জিনিসটা সে একেবারেই সহ্য করতে পারেনা। কিন্তু পরমুহূর্তেই মৃদুলার চোখ আর চোখের তিলের কথা মনে করতে করতে সে মার্গারেট মিচেলের লেখা গন উইথ দ্য উইন্ড বইটা হাতে নিল। মৃদুলার তিলোত্তমা চোখ এই অনুভূতিশূন্য দুপুরেও রাত্রি ডেকে আনল।

সন্ধ্যার একটু আগে অমিতাভ এল রূপায়ণের বাসায়। তার চেহারা দেখেই রূপায়ণ খারাপ কিছুর আশঙ্কা করছিল এবং তার সাথে কথা বলেই আশঙ্কার সত্যতা মিলল, যদিও এটা সে আগেই ধরে নিয়েছিল। ঘটনার সারমর্ম হল, দিপনকে অচেতন অবস্থায় টিটিপাড়া বস্তির সামনে পাওয়া গেছে, এখন সে হাসপাতালে। আরও একটি পাদটিকা হচ্ছে , সেসময় ওর হাতের মুঠোয় একটা কাকের ছবি ছিল। কিন্তু পুরো ব্যাপারটিকে ন্যুনতম পাত্তাও না দিয়ে রূপায়ণ আয়েশী ভঙ্গিতে HBO চ্যানেল খুলে বসলে অমিতাভ চটে গেল। রূপায়ণ সেটা আঁচ করতে পারল - ‘তোর ভাল নাম কিরে অমিতাভ? মনে আছে কিনা দেখি। আজকাল তো সবকিছুই ভুলে যাচ্ছিস, দুদিন আগেই কদমতলায় কী কথা হল আমাদের ৩ জনের, সেখানে কী সিদ্ধান্ত নিলাম, কিছুই তো মনে নেই তোর। হ্যা তারপর বল, দিপন বাঁচবে তো?’ শেষের খোচাটাতে অমিতাভের স্থবির টনকটা নড়ে উঠল – ‘ধুর শালা, মাথার প্রসেসর স্লো হয়ে গেছে। মল্লিকার একটা গরম গান দে দেখি, ইংলিশ মুভি এখন জমতেছে না’।
অমিতাভ যেভাবে পা তুলে শরীরে একটা ৩৩০ ডিগ্রি কোণে মোচড় দিয়ে রূপায়ণের পাশে সোফায় বসল, তাতে বোঝার উপায় নেই মাত্রই কিছুক্ষণ আগে তার চোখ দুটিতে আতঙ্ক ছিল, আঁধার ছিল।

সিনেমা দেখায় বিঘ্ন ঘটল হাসপাতাল থেকে মুকিমের ফোন পেয়ে। কথা বলতে গিযে হাপাচ্ছে মুকিম; দিপনকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তবে তার আগে দিপন উটকো একটা ঝামেলায় ফেলে দিয়েছে তাকে- ‘মুকিমের সাথে জরুরী কথা আছে’ বলে হঠাৎই সে ডাক্তার আর মা-বাবাকে বাইরে যেতে বলে; এভাবে ১০-১৫ মিনিট রুমে কাটিয়ে দেয় দুজনে। এরপর থেকে ডাক্তার আর দিপনের মা-বাবার অন্তহীন প্রশ্নে তার মাথায় শিং গজানোর দশা! অথচ সেই ১০-১৫ মিনিটের পুরো সময়টাই দিপন নীরব থেকে শেষে চরম ফালতু একটা প্রশ্ন করেছে তাকে- দোস্ত, কাকের কলিজার রঙ কী জানিস?’

রূপায়ণ একটা কিছু করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফোনটা রেখেই অমিতাভের সাথে হাইফাইভ করল, অত:পর মুকিমের তুঘলক হওয়ার আনন্দে দুজনে হাসির ঝাপি খুলল। খানিকবাদে হাসি থামিয়ে সিরিয়াস হল রূপায়ণ - দোস্ত , তুই কালকেই শাহবাগ মোড়ে দাঁড়িয়ে ভাত ছিটানো শুরু করে দে’। অমিতাভ কিছুটা ইতস্তত করল- একটু তাড়াতাড়ি হয়ে যাচ্ছেনা?
-আরে না, এখনো কত কাজ বাকি। তুই শুরু কর, মানুষের রিএকশন দেখি।
- পাবলিকে গালি বা মাইর দিলে? কিংবা পুলিশ ধরলে!
-পাব্লিক হয়ত তোকে গাঞ্জুট্টি ভাববে; আর পুলিশ ধরলে বলবি ‘ভাত ছিটালে কাকের অভাব হয়না’ এই প্রবচনের সত্যতা যাচাই করতে এসেছিস। তখন তোকে মেন্টাল ভেবে কিছু বলবেনা বোধহয় । তবে সাবধান, কেউ কিছু বললেই ভাব নেয়ার জন্য আবার ভার্সিটির আইডি কার্ড বের করিসনা।
অমিতাভ অনেকটা অনুরোধে ঢেকি গিলাজনিত চেহারায় বিদায় নিলে রূপায়ণ হিসেব কষতে বসল দরজ বন্ধ করে। দিপনের সাথে দেখা হওয়া দরকার; এখন পর্যন্ত সবকিছু ঠিকভাবেই এগুচ্ছে; সারাদিন কী করল জানতে পারলে ভাল লাগত- ‘ছেলেটার মাথায় এমন আইডিয়া কিভাবে যে আসে’ -সে ভাবে আর নিজের গোলগাল মাথাটাকে আয়নায় দেখে নির্বিষ ভেংচি কাটে।

রাত বৃদ্ধির সাথে যে ঢাকা শহরের লাবণ্য চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকে, সেখানে রাত ১১টা কোন রাতই নয়। এসময়টাতেই পাড়ার মোড়ের চায়ের দোকান থেকে গরম চায়ে ঠোট ছুঁইয়ে, সেই ঠোটেই সিগারেট চেপে কমলাপুর ওভারব্রীজের দিকে হেটে চলল রূপায়ণ, মুনিম আর দিপন; দোকান থেকে সাকুল্যে ৫-৭মিনিটের পায়ে হাটা পথ। দিপনের সারাদিনের কর্মকাণ্ড জানতে উশখুশ করতে থাকা রূপায়ণের সাথে পরবর্তী পরিকল্পনা বিষয়ে আলোচনাই এই নৈশভ্রমণের উদ্দেশ্য; ওভারব্রীজের ওপরটা নির্জন হওয়া উচিৎ এখন।

দিপনের তৎপরতায় রূপায়ণের যে মানসিক অবস্থাটা হল সেটিকে কেতাবি ভাষায় বলা হয় গলদঘর্ম – মাত্র কয়েকঘণ্টায় এতকিছু করেছে ও! ৬-৭জন আর্টিস্টের সাথে কথা হয়েছে, যারা ১মাসের মধ্যে শহরের প্রায় সব দেয়ালে কাকের ছবি আঁকবে; ছবির ক্যাপশন হবে- RAD( রূপায়ণ, অমিতাভ, দিপন)। কাজটা যথাসম্ভব গভীর রাতে করা হবে; পুলিশ ঝামেলা করলে কিছু টাকা ধরিয়ে দিবে। এ কাজে সম্ভাব্য বাজেট আপাতত ৫০ হাজার টাকা। এরপর গেছে প্রেসে- ১ সপ্তাহের মধ্যে তারা ‘RAD’লোগো সংবলিত ২লক্ষ লিফলেট ছেপে দেবে; খরচের ব্যাপারটা পরে জানা যাবে। বাকি সময়টুকু , সে সারাদিন বস্তিতে বস্তিতে ঘুরে বিভিন্ন বয়সের ২৫-৩০ জন মানুষ যোগাড় করেছে- অধিকাংশই টোকাই আর মাদকসেবী; এদের কাজ শুরু হবে আগামী বুধবার । শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে এরা ভাতের থালা হাতে দাঁড়িয়ে থাকবে; আধাঘণ্টা বিরতিতে রাস্তায় ভাত ছিটাবে। লিফলেট ছাপা হলে এদের দিয়েই শহরের বিভিন্ন জায়গায বিলি করা যাবে। বিনিময়ে দুইবেলা খাবার আর খুচরো কিছু টাকা-পয়সা, এর বেশি দাবি নেই। তার আগে আগামীকাল অমিতাভের পরীক্ষামূলকভাবে ভাত ছিটানোর প্রতিক্রিয়ার জন্য আপেক্ষা করতে হবে।
এতক্ষণকার আলোচনায় মুকিমের অবস্থান রাতের ঝিঝি পোকার মতই অনাহূত আগন্তুকধর্মী। তবুও কিছু একটা প্রশ্ন করতে হয় বলেই সে জানতে চাইল- এইসব করে লাভটা কী? তাছাড়া এত খরচই বা কোথায় পাবি?’ কিন্তু তার কথা শুনতেই পায়নি এমন একটা ভাবে দিপন বলল - আচ্ছা দোস্ত, কাকের কলিজার রংঙটা যেন কী! রূপায়ণ সে তুলনায় যথেষ্টই উদার- মুকিম, দোস্ত তুই বরং বসায় গিয়ে রেস্ট নে’।
মুকিম চলে গেলে রূপায়ণ কিছুটা শঙ্কিত হল - আচ্ছা, মুকিম যদি সবাইকে বলে দেয়! কিন্তু দিপন সেটাকে ধর্তব্যের মধ্যেই নিলনা- আরে ধুর, বললে বলবে, হু কেয়ারস! আর কয়দিন পরে এমনিতেই সবাই জানবে। চল আজ আমাদের বাসায় থাক- রাতে পুরো ম্যাপিংটা সেরে ফেলি কখন কোন পয়েন্ট থেকে ভাত ছিটাতে হবে, তাছাড়া বাজেটের হিসাবটাও জরুরী; অমিতাভ গাধাটা থাকলে ভাল হত। দিপনের প্রস্ত্তাবটা লুফে নিল রূপায়ণ; বাসায় মায়ের কুচ্ছিৎ অভিনয়, বাবার বিকৃত ব্যভিচারী জীবন, রূপন্তীর মৃত মানুষের মত সর্বক্ষণ বইয়ে মুখ গুজে থাকা- সবকিছুর প্রতিই তার প্রবল বিতৃষ্ণা ; তাই প্রতিদিন বাসায় ফেরেই সে না ফেরার হতাশা নিয়ে। দিপনের বদৌলতে বাসার ক্লেদাক্ত জীবন থেকে দূরে থাকতে পারছে ক’টা দিন এজন্যই ওর প্রতি কৃতজ্ঞতার দীঘি সৃষ্টি হয়েছে; বাসায় থাকতে বলায় সেই দীঘিতে নিদেনপক্ষে ১ টা পদ্মশালুক তো ফুটেছেই । কাজটাতে তার আনেক খরচ হচ্ছে ঠিকই, তবুও বাবা-মা’র অবৈধ অর্থ যদি অনর্থেই ব্যয়িত হয়, সমস্যা কী!

অমিতাভের ভাত ছিটানো কার্যক্রম বাড়তি দৃষ্টি আকর্ষণে ব্যর্থই হল। শাহবাগ ওভারব্রীজটার ঠিক নিচেই ভাতের থালা হাতে দাঁড়িয়েছিল, কিন্তু থালা থেকে ভাত ছিটানো শুরু করতেই ব্রীজের একটু সামনের বাস কাউন্টারে অপেক্ষমান যাত্রীসহ বাসের টিকেট বিক্রেতারা ছুটে এসে তাকে নিরস্ত করে; একজন তো উত্তেজনার বশে মাথায় কষে চাটি’ই মেরে বসে; ব্যস এ পর্যন্তই । দিপন বোধহয় এটুকুই প্রত্যাশা করেছিল, তাই আজ সবকিছু ভুলে সারাদিন সে গিটার নিয়েই কাটিয়ে দিল; অন্যদিকে রূপায়ণ দীর্ঘদিন বন্ধ রাখা ড্রইংখাতাটা খুলে কাকের ছবি আঁকতে চেষ্টা করল। কিন্তু কাকের ছবিটা বারেবারে তিলওয়ালা একটা চোখ হয়ে যাচ্ছিল। মীনাক্ষী শব্দটার সাথে তার আগেই পরিচয় ছিল, আজ সে নতুন একটা শব্দ আবিষ্কার করল- তিলাক্ষী। সম্ভবত মৃদুলা নয়, মৃদুলার চোখের তিলটাই তাকে দিয়ে এধরনের অর্ধকাব্যিক শব্দের প্রজনন ঘটাচ্ছে ।

আজ সোমবার। রূপায়ণের ধারণা এই সপ্তাহটা দারুণ কাটবে। তাদের পুরো সার্কেলটা বহুদিন পর আজ রমনাপর্কে একত্রিত হয়েছে; একত্রীকরণের হেতু অমিয়-শর্মিলা । তারা গোপনে বিয়ে করেছে এই শনিবার; সেটা বন্ধুমহলকে জানাতেই সবাইকে এভাবে পার্কে আসতে বলা। আসার ইচ্ছা ছিলনা কারোরই, কিন্তু সান্তনুর জোরাজুরিতে একরকম বাধ্য হয়েই এল সবাই; তাকে কেন্দ্র করে বন্ধুমহলে যে তিক্ততার সৃষ্টি হয়েছে, এই ফোকাসটা কিছুতেই আর বহন করতে রাজী নয় সান্তনু। তবে অমিয় কিংবা শর্মিলার সঙ্গে সে কোন কথা বলছেনা; শোভনের পাশে বসে গম্ভীর দৃষ্টিতে দেখছে অদূরে দাঁড়ানো চা-ওয়ালাকে। আকস্মাৎ অমিয় আর শর্মিলার মাঝে রূপায়ণ নিজের কদাকার মানসিকতার মা-বাবাকে দেখতে পেল, আর তখনই হাতে ধরা সেভেন আপ এর বোতলটা দড়াম করে অমিয়র মাথায় বসিয়ে দিতে ইচ্ছা হল তার। রূপায়ণ বুঝতে পারল, বড্ড ভুল ভাবছিল শুরুতে; এই সপ্তাহের অন্যনাম হতে যাচ্ছে কলির সন্ধ্যা।

সেদিন রাতেই ভাত ছিটানোর পয়েন্টগুলো ম্যাপিং করে রেখেছিল দিপন। সকাল সাড়ে সাতটায় হাইকোর্টের সামনে থেকে ভাত ছিটানো শুরু হবে, এরপর আটটার সময় কাকড়াইল মোড়, ৯টায় শ্যামলী সিনেমা হলের গেটে, সাড়ে ৯টায় মতিঝল শাপলা চত্বরে; এভাবে চলবে সারাদিন, শেষ হবে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় কারওয়ান বাজারে। সাড়ে সাতটা বাজার পর থেকেই দিপন দরদর করে বেশ ঘামছে, যদিও রূপায়ণ একমনে সিগারেটই টেনে যাচ্ছে। অমিতাভ গেছে প্রেসে লিফলেটের খোঁজ নিতে; কালকের মধ্যেই সেগুলো হাতে চলে আসবে। আর্টিস্টরাও থেমে নেই- লালবাগ, হাজারীবাগ, ওয়ারি, গেন্ডারিয়াসহ বেশ কয়েকটা এলাকার দেয়ালে কাক মহাশয়দের ছবি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, ছবির নিচে RAD লেখাটাও জ্বলজ্বল করে। সবকিছু এত ভালভাবে চলা সত্ত্বেও দিপনের দুশ্চিন্তার কারণটা ধরতে পারছেনা রূপায়ণ । তবুও ওর চিন্তামনস্কতায় সে বিঘ্ন ঘটাতে চাইলনা, কারণ সময় এলে বিস্তারিত জানা যাবেই।

ভাত ছিটানো কার্যক্রম কেমন হল সেই পর্যালোচনায় আসা যাক। টোকাই আর মাদকসেবীরা প্রতিটা পয়েন্টেই আন্তরিকভাবে কাজ করেছে, কিন্তু অধিকাংশ জায়গায়ই তারা নিগৃহীত হয়েছে। মুক্তাঙ্গনের সামনে যে কিশোরটি ভাত ছিটাচ্ছিল ট্রাফিকের লাঠির আঘাতে তার হাত ফুলে গেছে, মোহাম্মদপুর পয়েন্টের লোকটাকে চোর সন্দেহ করে এলাকাবাসী গণপিটুনী দিয়েছে, একই ঘটনা ঘটেছে গাবতলীতেও । এই সংবাদগুলো হতাশা বাড়ানো ছাড়া বিশেষ কোন গুরুত্ব বহন করছিলনা দিপনের কাছে ; তবে এয়ারপোর্টের সামনের রাস্তায় ভাত ছিটাতে গিয়ে সামাদ নামের মধ্যবস্ক লোকটি গ্রেফতার হয়েছে শুনে দিনের মধ্যে প্রথমবারের মত তার মুখে হাসি দেখা দিল। ইতিমধ্যে ভাত ছিটানোর ঘটনাটাও বেশ চাউর হয়েছে, পৌছে গেছে ইন্টারনেটেও; শোভন বলল ইউটিউবে নাকি ১৫সেকেন্ডের একটা দেশী ভিডিও পাওয়া গেছে- ভিডিওটাতে ১৪-১৫বছরের এক কিশোর কমলাপুর রেলস্টেশনে প্লেট থেকে ভাত ছিটাচ্ছে চারপাশে, আর মানুষজন এসে তাকে কিল-ঘুষি মারছে; কথাটা শুনে মুনিমের প্রতি শ্রদ্ধা জাগল দিপনের- মোবাইলে ভিডিওটা ও-ই করেছে; এবার বোধহয় সে রিলাক্সড হতে পারে।

পরবর্তী ঘটনাবলী উড়ে উড়ে এগুচ্ছিল। গ্রেফতার হওয়া সেই লোকটিকে টিভির সংবাদে দেখানো হয়েছে, এয়ারপোর্টের সামনের লোকজনের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে; একজনের বর্ণনার সঙ্গে অন্যজনেরটার সামান্যতম মিলও নেই, তবুও বলে যাচ্ছে। স্পষ্টতই, এইসব তথাকথিত প্রত্যক্ষদর্শীরা ঘটনার সময় সেখানে ছিলই না, ক্যামেরা দেখে একেকজন কথাসাহিত্যিক হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যে লিফলেট বিতরণও শুরু হয়েছে নানা জায়গায়; দেয়ালগুলোতেও কাকের ছবি চলে আসছে ধীরে ধিরে। সেই গ্রেফতার হওয়া লোকটি বোধহয় এখনো ছাড়া পায়নি, দিপন অবশ্য আর কোন খোঁজ নেয়ারও চেষ্টা করেনি। গ্রেফতারের ভয়ে লিফলেট বিলানো টোকাইরা দ্বিগুণ বেতন দাবি করে বসেছে, এটা কোন সমস্যা নয়; এখন কিছুদিন কাজ বন্ধ রাখলেও কার্যসিদ্ধি হয়ে যাবে বলেই তার বিশ্বাস। তাই দলবলে তারা কুয়াকাটা রওয়ানা হল; সান্তনু ছুটিতে এসেছে, একসাথে বেড়ানোর সুযোগটা আবার কবে আসে!

এদিকে লিফলেট আর ভাত ছিটানো সাথে দেয়ালে কাকের ছবির ব্যাপারটা খুব দ্রুতই সংবাদপত্র মিডিয়ায় হটইস্যু হয়ে উঠল। নিয়মিত এ সংক্রান্ত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বেরোতে থাকল; কেউ RAD কে RAB এর প্রতিদ্বন্দ্বী নতুন কোন সংগঠন আখ্যা দিয়ে টানা লিখে গেল, কেউ কেউ একে কোন আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন হিসেবে প্রচার করে রিপোর্ট ছাপতে লাগল, যদিও এইসব অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের এত উপাত্ত তারা কোথায় পেল এ নিয়ে কখনই কোন প্রশ্ন জাগেনি!

৩দিন পর ঢাকায় ফিরেই এ কয়দিনের পুরনো পেপারের রিপোর্টগুলো দেখল দিপন। ঠিক এই রিপোর্টগুলোর জন্যই এতদিন পরিশ্রম করছিল সে। প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসের সাথে হাত ঝাকিয়ে সে বলল- ইয়েস।
কাকের ব্যাপারটা ছিল একটা আদ্যন্ত ফেইক প্রোজেক্ট- তিলকে তাল কারায় এদেশের মিডিয়ার জুড়ি নেই। হুজুগে বাঙালির হুজুগের মিডিয়া। মিডিয়া আর কাককে সবসময়ই তার সমগোত্রীয় মনে হত; একটার কর্কশ স্বরে কান আক্রান্ত হয়, অন্যটার কর্কশ সংবাদে চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়; অথচ দিনশেষে তাদের স্থান কিন্তু ডাস্টবিনেই। দিপন ভাবল একটা সংবাদ সম্মেলন করে ব্যাপারটা খুলে বলবে; তার আগে আরও কয়েকটা অনুসন্ধানী রিপোর্ট লেখা হোক, লিখিয়েদের রুটি-রুজির সংস্থান হোক।

পক্ষান্তরে, রিপোর্টগুলো দেখে আৎকে উঠল রূপায়ণ; দিপনের কথা শুনে কি সে ভুল করল? দু’মুঠো ভাতের জন্য একথালা ভাত ছিটাচ্ছে বিপণ্ন কিশোর, এরকম একটা স্যাটায়ার করতেই দিপনের প্রোজেক্টে সে এতটাকা খরচ করেছে; মা-বাবার চেয়ে কাকও বরং তার অনেক প্রিয়, তাই কাক খাওয়ানোর মত নিরর্থক কাজে টাকা নষ্ট করে মা-বাবার বিপক্ষে একটা বিরাট মনস্তাত্ত্বিক সাফল্য আশা করেছিল। কিন্তু গত কয়েকদিনের পত্রিকার প্রতিবেদনগুলো পড়ে তো তার শরীর হিম হয়ে আসছে। স্বগতোক্তি করতে করতে নিজের গালে কষে একটা চড় মারল সে- শালা আহাম্মক, ছেলেখেলার বয়স অনেকদিন আগেই ফেলে এসেছো মনে থাকেনা?

অমিতাভের অবস্থা আরও শোচনীয়। দিপনের মুখে এবারকার ভার্সিটি বন্ধের ছুটিট কাটানোর আইডিয়াটা তার অসাধারণ লেগেছিল, অজান্তেই সেই অসাধারণত্বের লুপে পড়ে গিয়েছিল; কিন্তু এখন তার শরীর শিরশির করছে। বিশেষত ভাত ছিটানোর কাজটায় যে সে সরাসরি অংশ নিয়েছিল। একবার চোখ খুলে, একবার বন্ধ করে; এভাবেই নিদারণ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় তার ভীতু সময়গুলো ক্রমশই তাকে করে ফেলছে খোলসবন্দী।

কাকের কা কা ডাক শুনে মেজাজ চরম খারাপ হয়ে গেল মুনিমের; জুতাটাই ছুড়ে মারল কাকের দিকে- শালা কাক, আর যদি দেখছি তোরে এই এলাকায়; যে বিপদে ফেলছোস, আল্লাহয় জানে দিপনের ভাগ্যে কী আছে’!
কাক সেখান থেকে উড়ে গেল ঠিকই, কিন্তু কর্কশস্বর থামাল না; উপরন্তু কর্কশ স্বর আরোও তীব্র হল- কা কা কা...





২০টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×