somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাতে ইলেক্ট্রনিক্স শেখা..৩

২৫ শে মে, ২০১০ ভোর ৪:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্যাপাসিটর
তৃতীয় কিস্তি লিখতে এত দেরি করার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে শুরু করছি। এই কিস্তিতে ক্যাপাসিটর নিয়ে লিখব বলেছিলাম। শুরু করা যাক।
আমার বুঝামতে ক্যাপাসিটর জিনিষটা হচ্ছে রাস্তায় গর্ত বা খানা খন্দের মত। রাস্তা দিয়ে পানি গড়িয়ে যাবার সময় একটা গর্ত পড়লে পানি সামনে এগোনর বদলে গর্তে জমা হতে থাকে। গর্ত ভর্তি হয়ে গেলে তখন পানি উপছে আবার সামনে গড়ানো শুরু করে। ঠিক একইভাবে কোন বর্তনীতে ইলেক্ট্রন উচ্চতর ভোল্টেজ এর দিকে যেতে যেতে সামনে যদি কোন ক্যাপাসিটর পায়, তবে তার মাঝে জমা হতে থাকে, যতক্ষন না তার ধারনক্ষমতা পূর্ণ না হয়। একে বলা হয় ক্যাপাসিটর চার্জড হওয়া। গর্তে কতখানি পানি জমা হবে এটা যেমন নির্ভর করে গর্তের আয়তনের উপর, এবং ঐ পরিমাণের চেয়ে বেশি পানি জমা হতে পারবে না। তুলনা করলে বলা যায় যে, ক্যাপাসিটর এর ধারনক্ষমতা নির্ভর করে এর আকারের উপর এবং, যতই চার্জ আসুক না কেন তার ধারনক্ষমতার চে বেশি চার্জ সে ধারন করতে পারবে না। গর্ত পানি দিয়ে ভরতে যেমন কিছু সময় লাগে, ক্যাপাসিটর চার্জ হতেও তেমন সময় লাগে এবং তা নির্ভর করে তার ধারনক্ষমতার উপর। যে সময়টুকু গর্ত ভরতি হতে থাকে, সে সময়ই শুধু গর্তের মাঝে পানি প্রবাহিত হতে থাকে। ক্যাপাসিটর এও শুধুমাত্র চার্জ হওয়ার সময়ই কারেন্ট প্রবাহিত হয়।

চিত্র ৩,১ঃ ক্যাপাসিটর আর পানির গর্তের তুলনা।
কিন্তু ক্যাপাসিটর কেন চার্জ ধরে রাখে? এটা বুঝার জন্য ক্যাপাসিটর এর চিহ্নটা খেয়াল করা যাক।

চিত্র ৩,২ কঃ ক্যাপাসিটর এর চিহ্ন।
এই চিহ্নের সমান্তরাল লাইন দুটা দিয়ে বুঝায় দুটা সমান্তরাল ধাতব পাত। এর সাথে লম্বালম্বিভাবে যে দুটা কাঠি আছে, সেগুলা হল ক্যাপাসিটর কে বাকি বর্তনীর সাথে যুক্ত করার পথ। ক্যাপাসিটর এর বাস্তবিক গঠনও এরকম। ক্লাব স্যান্ডুইচের মত।

চিত্র ৩,২ খঃ দুই স্লাইস রুটির (ধাতব পাত) এর মাঝে খানিকটা হাবিজাবি (ডাইইলেক্ট্রিক পদার্থ)দিয়ে একটা কাঠি (দুই প্রান্তের সংযোগকারী তার) গেঁথে দেয়া। এই ডাইইলেক্ট্রিক পদার্থের কারনে ক্যাপাসিটর চার্জ ধরে রাখতে পারে। কেন? কারন ডাইইলেক্ট্রিক পদার্থের দু প্রান্তে ভোল্টেজ দেয়া হলে এর ভিতরে ইলেক্ট্রন আর হোল আলাদা হয়ে গিয়ে দু ভাগে ভাগ হয়ে যায়। ৩.৩ নং ছবি দেখলে কিছুটা ধারনা পাওয়া যেতে পারে কি ঘটছে।

চিত্র ৩,৩ঃ
ইলেক্ট্রন আর হোল আলাদা হয়ে যাওয়ার ফলে ক্যাপাসিটর এর দু প্রান্তে পজিটিভ আর নেগেটিভ চার্জ জমা হয়। যদি দু প্রান্তের সাথে ভোল্টেজ সংযোগ দেয়া হয় তাহলে ভোল্টেজ সোর্স থেকে ইলেক্ট্রন এসে ক্যাপাসিটর এর প্রান্তে এসে জমা হয়। ক্যাপাসিটর এর প্রান্তে যতগুলো পজিটিভ চার্জ থাকে ক্যাপাসিটর ঠিক সেই পরিমাণ নেগেটিভ চার্জ ধারণ করতে পারে। চার্জ জমা হওয়ার ফলে ক্যাপাসিটর এ ভোল্টেজ তৈরি হয়। যত ক্ষন না ক্যাপাসিটর এর ভোল্টেজ সোর্স ভোল্টেজ এর সমান না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ইলেক্ট্রন এসে জমা হতে থাকে অর্থাৎ কারেন্ট প্রবাহ চলতে থাকে।
ক্যাপাসিটর এ চার্জ জমা থাকা অবস্থায় যদি একে বর্তনী থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয় তবে ক্যাপাসিটর ঐ চার্জ ধরে থাকবে, যতক্ষন সে চার্জ ছেড়ে দেবার কোন পথ পায়। ধরা যাক এরকম একটা চার্জড ক্যাপাসিটর এর সমান্তরালে একটা রোধ বা রেজিস্টর দিয়ে মাটির/গ্রাউন্ডের সাথে সংযোগ দেয়া হলো। এখন ক্যাপাসিটরটি ঐ রোধের মধ্য দিয়ে চার্জগুলো মাটিতে পাঠিয়ে দেবার চেষ্টা করবে। মাটির ভোল্টেজ হচ্ছে শূন্য, তাই যতক্ষণ না ক্যাপাসিটর এর ভোল্টেজ শুন্য হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত কারেন্ট প্রবাহ চলতে থাকবে। এই প্রক্রিয়াকে সাধারনত বলা হয় ডিসচার্জ। চার্জ এবং ডিসচার্জ এর সময় ক্যাপাসিটর এর সমান্তরালে ভোল্টেজ এবং এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট এর পরিবর্তনের গ্রাফ দেখাবে অনেকটা চিত্র নং-৩,৪ এর মত।

চিত্র৩,৪ঃ
একই সোর্স ভোল্টেজ এর জন্য ক্যাপাসিটর চার্জ এবং ডিসচার্জ হতে কত সময় লাগবে তা নির্ভর করবে ক্যাপাসিটর এর ধারণক্ষমতা এবং যে পথে কারেন্ট প্রবাহিত হচ্ছে তার রোধের উপর। শুরুতে যদি ক্যাপাসিটর এর ভোল্টেজ হয় V0, রোধ আর ক্যাপাসিটর এর মান হয় যথাক্রমে R ও C, এবং সোর্স ভোল্টেজ হয় Vs, তাহলে ক্যাপাসিটর চার্জ হবার হার হিসেব করা যায় নিচের ১ নং সূত্র দিয়ে। আর ডিসচার্জের হার হিসেব করা যায় ২নং সূত্র দিয়ে।
Vcap = (Vs-V0)*[1-exp(-t/RC)] --- (১)
Vcap = V0*exp(-t/RC)] ---(২)
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১০ ভোর ৪:২২
১৮টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×