মা,পৃথিবীর নাকি সব থেকে মধুর শব্দ।মা,যার তুলনা কোথাও নেই।মা,যাকে নিয়ে সবগুলো ধর্মে আলাদা করে সম্মান দেয়া হয়েছে।আমার এ লেখাটা কাউকে অপমান করার জন্য নয়।তবে জানি এ লেখায় বাকি সবার সম্মান থাকলে ও সেই বিশেষ মায়ের মনে হয় সেটা ও নেই।তাই তাকে বাদ ই রাখলাম।মূল লেখায় যাবার আগে সেই সকল মমতাময়ী মায়েদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলাম।
আমার বাবার কাছে তার মেয়ে মায়ের থেকে ও বেশি।সন্তানের জন্য যেমন মন কাঁদে তেমনি আমার বাবার জন্য আমার বোন পাগল থাকে।যতটা পাগল আমরা ভাইগুলো নই।১৯৭৫ এ শেখ মুজিবুর রহমান যখন নিহত হলেন তখন এক লোক নাকি নৃত্য করেছিল খুশিতে।ইতিহাস থেকে জানা।আজ ও প্রতিবছর ১৫ ই আগস্ট আসে,সম্মানের সাথে জাতি তাকে স্মরন করে।সেই অনুষ্ঠান আমরা লাইভ দেখি।সে পিতার মা(মেয়ে) টিভি ক্যামেরার সামনে চোঁখের জলে একাকার।আর পাশে কে বসে থাকে জানেন?কে আবার,সেই ৭৫ এর নৃত্যশিল্পী!
নুর হোসেনের পরিবার আজ গর্বিত। যদি ও আমার সন্দেহ তারা এখন গর্ব করে কিনা।চিনলেন তো নুর হোসেনকে?ঐ যে সালমান খানের মতো বডি দেখিয়ে গনতন্ত্র চেয়েছিলেন।নায়ক তিনি ঠিকই হয়েছেন।আমার ও গণতন্ত্র পেয়েছি!আর তিনি পেয়েছেন তার নামে একটা দিবস,নুর হোসেন দিবস।আমাদের মা,নুর হোসেন কে নিয়ে আবেগময় ভাষন দেন।আমরা সে ভাষন শুনে মায়া কান্না করি।পাশে আরেকজন বসে থাকে।কে জানেন?নুর হোসেনের হত্যাকারী।সে আজ নুর হোসেন দিবসের মহান অতিথি!
এক সকালে সেই মা আমেরিকা থেকে একটা কল রিসিভ করলেন,কিরে বাবা কি হয়েছে?তোর গলার স্বর এমন কেন?জ্বর বা ঠান্ডা লাগেনি তো?ডাক্তার দেখানো হইছে?মেডিসিন কি নিলি?তাড়াতাড়ি দেশে চলে আয়।তোর জন্মদিনে নিজ হাতে বিরিয়ানি রান্না করবো।ছেলের সামান্য গলার আওয়াজ বদলে যাওয়াতে সে মা পাগল প্রায়।বুকে চিনচিন ব্যাথা ছেলে কে দেখার জন্য।
বিশ্বজিৎদের মা টিভি আর পত্রিকায় দেখেছেন তার সন্তানকে হত্যার দৃশ্যগুলো।দীপনের বাবা নিজ চোঁখে দেখেছেন রক্ত শুকিয়ে জমাটবদ্ধ ছেলের লাশ।রাজনের মা দেখেছেন কি করে আস্তে আস্তে তার কলিজার টুকরো ছেলেকে হত্যা করা হচ্ছে।রাজনের মায়ের মুখটা যদি তখন দেখতে পেতাম।তার হৃদয়ের হাহাকার যদি শুনতে পেতাম।আমি অনেকটা সাহসি মানুষ। তারপর ও রাজনের ভিডিও দেখার মতো সাহস আমার হয়নি।তিনি ও একজন মা।তবে তার হৃদয় কাঁপে না কেন?তিনি তো আমাদের সবার মা।তাহলে কেন তার কষ্ট লাগে না?তবে কি আমরা তার গর্ভে জন্ম নেই নি বলে!
তিনি কেমন মা,যে কিনা কেবল নিজের সন্তানের সামান্য গলার আওজায় শুনে ব্যাকুল হয়ে যান।ঠিক তারই মতো অন্য মায়ের বুক খালি করাদের তিনি শাস্তি দিতে পারেন না।তিনি কেবল তাহলে জয় আর পুতুলের মা?নাকি তিনি তেমন মা,যে মা কেবল সমাজে পরিচয় দিতে পারবে না বলে ডাস্টবিনে ফেলে যায় তার সদ্যজাত সন্তানকে।সে মা আর এ মায়ের মাঝে আমি কোন পার্থক্য রাখি না।আমি জানি এ কথা শোনার পর ও তার খারাপ লাগার কথা নয়।কারন তিনি যে অনুভূতি শূন্য এক স্বার্থপর মা।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১২