ওয়ামির ব্যান চেয়ে একাধিক দুর্গন্ধযুক্ত পোস্ট প্রথম পাতায় ঝুলছে। তাই আশা করবো এর বিরোধিতা করে আমার এ পোস্টটিতে কতৃপক্ষ হাত দিবেননা।
কতৃপক্ষের সিদ্ধান্তটি মেনে নিতে পারলাম না।
কর্তৃপক্ষ কতিপয় বিশৃঙ্খল ও একগুয়ে ব্লগারের স্বৈর ও বেপরোয়া আচরণের কাছে নতি স্বীকার করেছেন।
ব্লগার ওয়ামি কি করেছেন, কি কথা বলেছেন, সে বিষয়ে ব্লগ কতৃপক্ষ বিষদ ভাবনার সুযোগ পাননি, পেলেও ন্যায়পূর্ণ আচরণ প্রদর্শণের সৎ সাহস দেখাতে পারেননি, অসত্য ও অন্যায় দাবীর কাছে নতি স্বীকার করেছেন।
জামায়াতে ইসলামীর অন্যতম সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল জনাব কামারুজ্জামান বাংলাদেশের একজন বৈধ নাগরিক, একটি বৈধ রাজনৈতিক দলের সিনিয়র নেতা। বাংলাদেশ সংবিধান কিংবা আইন আদালতের কোন নির্দেশনা মোতাবেক তিনি কোনভাবেই দোষী সাব্যস্ত নন। সেদিন সেক্টর কমান্ডার্সদের প্রোগ্রাম ছিল প্রেস ক্লাবে। জনাব কামারুজ্জামানও কোন কারণে প্রেস ক্লাবে গিয়েছিলেন, যেতেই পারেন। পেশাগত দিক থেকে তিনি একজন সাংবাদিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়েছেন । সেদিন প্রেসক্লাবে তাকে দেখে কতিপয় বিশৃংখল ব্যাক্তি তার প্রতি যে আচরণ করেছেন তা কোনভাবেই আইন সিদ্ধ নয়।
২০০৬ সালের ২৮শে অক্টোবর ঢাকার রাজপথে যে নির্মমভাবে লগি বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে ও গুলি করে একের পর এক মানুষ খুন করা হয়, তার অন্যতম নির্দেশদাতা ও উস্কানিদাতা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তার কর্মীদেরকে প্রকাশ্যে নির্দেশ দিয়েছেন লগি বৈঠা নিয়ে রাজপথে নামার জন্য। আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা ডা. ইকবাল সেদিন তার সাঙ্গপাঙ্গ সহ হামলা করেছেন, যার ভিডিও ফুটেজ জাতির কাছে বিদ্যমান। এ অপরাধে কোনভাবে শেখ হাসিনাকে বাগে পেয়ে যদি তাকে লাঞ্ছিত করি, আপনি কি তা অনুমোদন করবেন? এ অপরাধে কোনভাবে যদি ডা. ইকবালকে বাগে পেয়ে রাস্তায় ফেলে আঘাত করি, আপনি কি তা সমর্থন করবেন? আইন কি তা সমর্থন করবে? কখোনোই না। প্রথমত তারা অপরাধী তা আইন দ্বারা প্রমাণিত না, তদুপরি, আইন দ্বারা প্রমাণিত হলেও কোন সাধারণ নাগরিকের অধিকার নেই অপরাধীর গায়ে হাত তোলার। তাই ২৮শে অক্টোবরের নিহতদের জন্য আমাদের বুকে শোকের নদী বইলেও, প্রতিশোধের আগুন জ্বললেও আমারা শেখ হাসিনাকে কাছে পেলে কোন ধরণের অসংগতিপূর্ণ আচরণ করবোনা। চোখের সামনে তার কোন ধরণের বিপদ দেখলে আমরা তার পক্ষে দাড়িয়ে যাব তাৎক্ষণিক।
জনাব কামারুজ্জামান একাত্তরে কোন অপরাধ করেছেন কিনা তা বাংলাদেশের কোন আইন দ্বারা প্রমাণিত না। তাই তাকে অপরাধি বলার কোন অধিকার কারো নেই। অধিকন্তু তিনি যদি অপরাধী প্রমাণিত হয়েও থাকেন তবু তার গায়ে হাত তোলার আইনগত অধিকার কোন সাধারণ মানুষের কারো নেই।
সেদিন জনাব কামারুজ্জামানের সাথে যারা অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন, আমরা যতটুকু জানি তারা সেক্টর কমান্ডারদের মত দায়িত্বশীল কেউ ছিলেননা, তারা ছিল উপস্থিত কতিপয় বিশৃঙ্খল ব্যাক্তি। তারা যা করেছে তা সুস্পষ্টভাবে আইনের লঙ্ঘন। আইন কারো গায়ে হাত তোলার অনুমতি দেয়না। যারা বাংলাদেশের আইন মানতে পারেনা, সংবিধান মানতে পারেনা, আমাদের প্রশ্ন কেন তারা বাংলাদেশ ছেড়ে তাদের কাংখিত মগের মুল্লুকে চলে যায়না? যে সমস্ত ব্লগার সেদিনের উৎশৃঙ্খল লোকগুলোর কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করলো, তাদের প্রতি আমাদের প্রশ্ন, আপনারা যদি বাংলাদেশের আইন ও সংবিধানকে মেনে নিতে না পারেন, তাবে কেন বাংলাদেশের নাগরিক পরিচয় দিয়ে ব্লগিং করেন, কেন মগের মুল্লুকে চলে যান না যেখানে আইন-সংবিধান মানার প্রয়োজন হয়না? উপরন্তু যারা তার সন্তানের এখানে ব্লগিং করার বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ, আমার প্রশ্ন কোন আইন, নৈতিকতা ও ভদ্রতার জোড়ে আপনারা এ দাবী তোলেন? আপনাদের মত গায়ের জোড় প্রদর্শনকারীদের জন্যই বাংলাদেশে এখন অগনতান্ত্রিক সরকার চেপে বসেছে।
ব্লগার ওয়ামি কাউকে কুকুর বলেননি, একটি বিখ্যাত কবিতার লাইনকে কতিপয় উশৃঙ্খল লোকের আচরণের জন্য ব্যাবহার করেছেন। তাও যখন আপত্তি এলো তখন তিনি তা প্রত্যাহার করে নিলেন। তারপরও তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে যাচ্ছে তাই ব্যবহার করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী যে সমস্ত ব্লগার স্বৈর আচরণ করে ব্লগকে অস্থির করে তুললো, তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণের পরিবর্তে অন্যায়ের প্রতিবাদকারী ব্লগার ওয়ামিকে ব্যান করে কতৃপক্ষ তাদের অন্যায় আচরনের প্রকাশ ঘটালেন। আমি কতৃপক্ষের এহেন আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই এবং ওয়ামির অবিলম্বে আন ব্যান দাবী করি। এমন আচরণ ভবিষ্যতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের উৎসাহিতই করবে। আমরা কতৃপক্ষের এমন আচরণে মর্মাহত।
পরিশেষে, বলতে চাই, সামহোয়ার ইন হোক সকল মতের মিলনকেন্দ্র, মত প্রকাশের অবিসংবাদিত প্লাটফরম,এবং অস্থিরতা সৃষ্টিকারীদের জন্য কণ্টকাকীর্ণ ময়দান- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।