somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা ভালো লক্ষ্মী সবাই, তোমরা ভারি বিশ্রী : কতিপয় নাস্তিক ও আস্তিকদরে প্রতি

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের যে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা, দেখা যায় প্রত্যেকে প্রত্যেককে ‘‘দূর ছাই’’ বলে উড়িয়ে দেয়ার এক প্রবনতা, যা এই ব্লগেও স্পষ্ট, বিশেষ করে কতিপয় নাস্তিক-আস্তিকদের তথাকথিত বিতর্কে। তারা পরস্পরকে ‘‘দূর ছাই’’ বলে উড়িয়ে দিচ্ছে; কিন্তু আমার কেনো জানি উভয়কেই ‘‘দূর ছাই’’ বলে মনে হচ্ছে, আবার এ-ও মনে হয় যে একেকজন কত বড়ো বড়ো কথা বলে! আহ্ কত বড়ো বড়ো কথা তারা জানে! তবে আমি বুঝতে পারি না বড়ো বড়ো কথা দিয়ে কী হবে আমাদের? কিন্তু এটি স্পষ্ট যে, তর্ক করার মত আনন্দ জগতে আর নেই, এদের দেখে তা-ই মনে হয়, আর মনে হয় জগতে যেন ধর্ম ছাড়া আর কোনো সমস্যা নেই।

আমি চেয়েছিলাম একটা কবিতা পোষ্ট দেবো, কিন্তু এই লেখাটি দিলাম, এর কারণ সন্নাসী’র
বুদ্ধিজীবি হত্যাকান্ডঃ ধর্মের নামে একটি জাতিকে মেধাশূন্য করা এবং মুক্তবুদ্ধি চর্চার অপমৃত্যু এই পোস্ট। এই পেস্টেও ধর্ম নিয়ে যে-বাড়াবাড়ি এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জ্বজনক।

যে-কবিতাটি দিতে চেয়েছিলাম তার জন্যে গোগলে সার্চ দিয়েছিলাম, কবিতাটির প্রাসঙ্গিক হিসেবে ঈশ্বরের একটা ছবি চাই, কয়েকটা পছন্দ হলো, কিন্তু হঠাৎ করে মনে হলো, এটি আমি করতে পারি না; আমার ব্লগার বন্ধুদের প্রতি, যারা আস্তিক তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধ্যা ও ভালোবাসার জায়গা থেকে, এবং মানুষ হিসেবে তাদের প্রতি শ্রদ্ধ্যার জায়গা থেকে। ব্লগে নাস্তকি-আস্তিক বিতর্কের (ঠিক বিতর্ক না, গালাগালি) যে ধারাকাহিকতা তাতে কতিপয় নাস্তিকগণ এখানে হয়তো তাদের সেই বড়ো বড়ো কথা বলে মহাবিশ্বের ঈশ্বরহীন অপার মহিমা প্রমান করবে, আর আস্তিকগণ এর উল্টোটা, তার মনে পরস্পর পরস্পরকে বাতিল করবে। পরস্পরকে বাতিল করা বা ‘‘দূর ছাই’’ বলার কিছু নমুনা পাওয়া যাবে উল্লেখিত পোষ্টে।

একজন মানুষকে আমি বললাম, শোনো ভাই, আল্লা বলতে কিছু নাই, আর আমার তত্ত্ব দিয়ে আমি তার বিশ্বাষে আগুন জ্বালিয়ে দিলাম, আর সে সেই আগুনে পুড়ে আল্লাকে ভুলে গেলো। বিষয়টি এতো সরলভাবে দেখা একেবারেই হাস্যকর, এতো সহজে সমাজ বদলে যাওয়ার নজির ইতিহাসে নেই। যদিও আমার নিজের কাছে অনেক সময় মনে হয়, ধর্মের যে কোনো মানে নেই, এইসব নিয়ে কথা বলাই হাস্যকর। কিন্তু আমি কী এমনটি আশা করতে পরি? অর্থাৎ একজন আস্তিক কেনো আস্তিক? একজন মানুষ হাওয়া থেকে আসে না, তার পরিবার, সমাজ, শিক্ষা, কালচার, শ্রেনী, ইতিহাস... অনেক কিছুর সমন্বয়ে একজন মানুষ; কেনো সে ধর্মে বিশ্বাষ করে? এইসব পর্যলোচনার মধ্য দিয়ে না গেলে কেমন করে হবে? আর এর জন্যে কি কেবল সে-ই দায়ি? সামাজিক-রাজনৈতিক ও অন্যান্য বাস্তবতা নেই? আমাদের তো সেখানেও কাজ করার আছে। এর সহজ কোনো পথ নেই।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ইসলাম তো একটি কারণ ছিলোই, যেভাবেই হোক, তবু এই নিয়ে সন্নাসী’র পোস্টটিতে যে কাদাছোঁড়াছুঁড়ি! এ-লেখাটিতেও ২৬৭ (এখন পর্যন্ত) সংখ্যক মাইনাস, এবং লেখাটা নিয়ে এতো কিছু বলার থাকলেও ধর্ম নিয়ে সবার মাথা ব্যথা, ভয়াবহ! আরো ভয়াবহ যে, লেখাটিতে ’৭১ এর কিছু ছবিও আছে, এবং আমাদের মুক্তিযুদ্ধে যে ভয়াবহতা, এই অনুভূতি কারো ভেতরে দেখা যায় না বলা যায়। এইসব অসুস্থ ও ফালতু বিতর্কের চেয়ে আমরা এখন কোথায় আছি? যেমন, আমাদের শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ সাম্রজ্যবাদের দক্ষলে; সেখানে মোবাইলের বিজ্ঞাপন হয়, আরো কত প্রতিকুল অবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি। কিন্তু এদের দেখে মনে হয় ধর্ম ছাড়া আমাদের যেন আর কোনো সমস্যা নেই।

প্রাসঙ্গিক বলে আমার একটা কবিতা দিলাম :

গোলটেবিল বৈঠক : বাংলাদেশ ২০০৭

বার্গার খেতে খেতে কথা বলছেন তাঁরা মহাবিশ্ব নিয়ে, টিস্যু ছুঁড়ে ফেলছেন পেছনে। টেবিলে রাখা ফুল মিষ্টি ঘ্রাণ ছড়াচ্ছে; একটু আগে পাপড়িতে সুগন্ধি ছিটিয়েছেন আহ্বায়ক। তাঁদের হৃষ্টপুষ্ট রূপের আভায় আমাদের চোখ দুটো যেনো ঝলসে যাচ্ছে!

—এ পৃথিবী আর বাসযোগ্য নয়!
—প্রথমেই টাইম এবং স্পেসের
ডেফিনেশন বুঝতে হবে;
যেহেতু টাইম এবং স্পেস ছাড়া
আমরা চিন্তা করতে পারি না...
—আ রে! শোনেন, আমার এ কথা
সে সময় কাগজেও বেরিয়েছে...
—না না, রাষ্ট্র যদি আমাদের...
তো... আমরা কী করতে পারি...
—তাই বলে... শোনেন, প্রশ্নটা হচ্ছে...
—আসলে... এটা রাজনীতিবিদদের...
—কিন্তু... বুদ্বিজীবীরা!... কী আর বলবো ...
—হ্যাঁ হ্যাঁ... ও!... আ চ্ছা !... না না...
—কিন্তু... আপনি যা-ই বলেন...আসলে...

বৈঠক মনে হচ্ছে শেষের দিকে, কোনমতে হাসির বেগ চেপে শুনছিলাম আমি একমনে; আগেকার দিনে সতিনদের মাঝে কী ঝগড়া হতো—রূপকথার গল্পে পড়েছি, আজও মনে এলে হাসি পায়। এখন অবশ্য দিন দিন বুঝতে শিখছে ওরা!

বৈঠকের আগাগোড়া কিছুই বোঝা গেলো না! কেনইবা এই অসময়ে হাসি এলো আমার! তাঁরা যে উঁচুতলার মানুষ, উঁচুদরের কথাবার্তা; লাস্ট বেঞ্চের ছাত্রের অসহনীয়, অস্বস্তিকর এবং লজ্জাকর নীরবতা নেমে আসে আমার চোখেমুখে!

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:৪৭
৩৫টি মন্তব্য ৩৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=স্মৃতির মায়ায় জড়িয়ে আছে মন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:০৯


ঘাস লতা পাতা আমার গাঁয়ের মেঠো পথ, ধানের ক্ষেত
জংলী গাছ জড়ানো লতাবতী - আহা নিউরণে পাই স্মৃতির সংকেত,
রান্নাবাটির খেলাঘরে ফুলের পাপড়িতে তরকারী রান্না
এখন স্মৃতিগুলো পড়লে মনে, বুক ফুঁড়ে বেরোয় কান্না।

ফিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×