somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“বুদ্ধিজীবী”দের ঘুম ভাঙানো জরুরী

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিজের ঢোল নাকি নিজেরই বাজাতে হয়। অন্যকে বাজাতে দিলে ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশী, না হয় বাদক যথাযথ বাজাতে পারবেন বলে ভরসা করা কঠিন। বিষয়টি সর্বজন স্বীকৃত না হলে যে আজকাল এটাকে ঠেলে ফেলে দেয়া যাবে না। তাই সবাই মিলে “আপনা ঢোল আপনি বাজান”র প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। আমার কাছে বরাবরই বুদ্ধিজীবী ও প্রগতিশীল শব্দদ্বয় ভয়ানক। এই দুই বিশেষণে বিশেষিতদের পরিচয় পেলে আঁতকে উঠি কিংবা সূচ ফুটানো বেলুনের মতই চুপসে যাই,আত্মরক্ষার সুপথ খুঁজি আপন মনে। দ্বিধান্বিত হতে হয় নিজের দায়বদ্ধতার কথা ভেবে-ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় কি? ভবঘুরে মনে কখন যে আসে তাঁর সমাধান খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়। গত দেড় দশক ধরে আমাদের দেশে টিভি চানেলের ছড়াছড়ি। সন্ধ্যার পরে রাত্রি’র সাথে বাড়ে কথামালার ফুলঝুড়ি-টকশো;ঢোল বাজানোর এক প্রতিযোগিতা। কে কার আগে শুরু করতে পারে! আলোচনার বিষয়বস্তু পূর্ব থেকেই নির্ধারিত-শিরোনাম অনেকটা বাংলা ছবির মত যেন খুবই আকাল। আবার এসমস্ত ঢোল বাদকদের(দু-একজন ছাড়া প্রায় সকলেই কোন না কোন রাজনৈতিক দলের চিহ্নিত চামচা) সময় সংক্ষিপ্ত। একজায়গায় ঢোল বাজানো শেষ করে মানে একটা টকশো শেষ করে আরেকটাতে অংশগ্রহণ করতে হবে। বুদ্ধিজীবী কিংবা প্রগতিশীলদের কী ঘাটতি দেশে! একসময় বিশিষ্ট কোন নাগরিক টকশো-তে অংশগ্রহণ করলে তাকে সম্মানী দেয়া হত আরা এখন উল্টো টাকা দিয়ে কিংবা অনুরোধ করে অতিথি হওয়ার ঘটনাই বেশী বলে মনে হয়। হিসেবের খতিয়ানে লাভবান উভয়ই। প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবসায় বেতনভুক্ত পরিচালক(paid director)-এর কথা শোনা যায় ঠিক সেরকমই রাজনৈতিক বেতনভুক্ত বুদ্ধিজীবীদের অভিসার দৃশ্যমান হয় ক্যামেরার লেন্স-এ। হাল আমলে মুক্তমনা’র নামে ইসলাম বিদ্বেষী কিংবা যা খুশি তাই ব্লগে লেখা হচ্ছে। না চাইলেও প্রকাশ্যে এদের সমর্থন করেন না এরকম একজন বুদ্ধিজীবী’র নাম খুঁজে পাওয়া না। স্বাধীন মত প্রকাশের বিপক্ষে নই।তবে কোন স্বীকৃত বা গ্রহণযোগ্য বিষয়ের আলোচনা কিংবা সমালোচনা করতে হলে অকাট্য প্রমাণ সহকারেই করতে হয়। আর যদি বিষয়টা হয় কোন বাক্তির বা জাতির বিশ্বাসের ব্যাপার তাহলে অন্য পক্ষ কিংবা ভিন্ন মতাদর্শের কেহ আঘাত দিয়ে সমালোচনা করতে পারে এমন কোন আইন কোন দেশেই নেই, আমাদের দেশেও নেই। সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত আমাদের দেশ-সম্প্রীতির এক উজ্জল দৃষ্টান্ত। এখানে প্রত্যেক ধর্মের জন্য স্বাধীনতা সংরক্ষিত। বৌদ্ধ বা হিন্দু মন্দিরে হামলা হলে সরকার যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নেয়। তারপরও বুদ্ধিজীবীরা নড়েচড়ে ওঠেন,বিরতিহীন বক্তব্য দিতে থাকেন। একজন থামেন তো আরেকজন শুরু করেন। চশমাপরা অধ্যাপক-কলামিস্টরা কিংবা ধুতি-পাঞ্জাবিপরা বুদ্ধিজীবীরা কেহই বিরাম দিতে চান না-সরকারের এই ব্যর্থতা সেই ব্যর্থতা। অন্যদিকে যখন নামধারী কোন মুসলমান বা অভিজিৎরা পবিত্র কোরআন ও মহানবী(সঃ) এর বিরুদ্ধে সমালোচনার নামে কুৎসিত মন্তব্য করে তখন তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা খামোশ থাকেন। কেন? কারণ, লাভের খাতা শুন্য;এখানে তো কোন দলের নিকট থেকে দক্ষিণা পাওয়ার সম্ভবনা নেই।
ইসলাম নিয়ে চলছে এক গভীর ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্রের বীজ আজ যে কোথায় ঢুকেছে তা কেহ উপলদ্ধি করছি না। প্রাইমারি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত অমুসলিম শিক্ষকদের গড় হার ৫৮ভাগেরও বেশী। কোন কোন বিদ্যালয়ে ৮৫ভাগ শিক্ষকই অমুসলিম। প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তকে অমুসলিমদের লেখা গল্প-কবিতার পরিমাণ ৫৭ থেকে ৮০ভাগ(সূত্র- http://www.dailyinqilab.com/details/4359)। ৯২ থেকে ৯৫ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলিম সেখানে মাত্র ৭% ভাগ জনগোষ্ঠীর কৌশলগত নিয়যুক্তির ফলে আজ তাঁদের সংখ্যা ৬০ভাগ। একজন শিশুর হাতেখড়ি তাঁর গুরুজনের রুচি-আদর্শ-বিশ্বাস এর উপর অনেকটা নির্ভর করে শিশুর ভবিষ্যৎ চিন্তা-চেতনার বিকাশ। কীভাবে সম্ভব একজন অমুসলিম গুরুজনের কাছে দীক্ষা নিয়ে আদর্শ মুসলিম হিসেবে জীবন গড়া? ভাবার সময় হয়েছে বোধকরি। বুদ্ধিজীবীদের ঘুম ভাঙা
দরকার। ধর্ম ব্যবসায়ী দল জামাত-এর বিরোধিতা করতে গিয়ে আজ নিজের বিরুদ্ধে নিজকে দাঁড় করাচ্ছি। যতই ধর্ম নিরপেক্ষতার দোহাই দেয়া হোক কেন বাংলাদেশ একটি মুসলিম দেশ। যে দেশের ৯৫ভাগ মুসলিম সে দেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম-এটাই স্বাভাবিক। তাছাড়া,আমাদের সংবিধানের শুরু-“পরম করুণাময় আল্লাহর নামে”। এই রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে রক্ষা করার দায়িত্ব রাষ্ট্রেরই। বন্ধ হোক রাজনীতির নামে ধর্মব্যবসা। তন্ত্রাচ্ছন্ন নাস্তিক্য ভাবধারার খোলসমুক্ত হোক সঠিক বুদ্ধিদীপ্ত চেতনা। অন্যথায়, নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর নিকট বিক্রিত স্বার্থান্বেষী এ সকল “বুদ্ধিজীবী”দের অবস্থা সেই দুধ প্রিয় লোভী বিড়ালের ক্ষেত্রে ঘটে যাওয়া ঘটনা-ই প্রণিধানযোগ্য। বিড়াল পাঁথরের পাত্রে দুধ খেতে খেতে এক সময় দুধের নেশা তাকে বাস্তবতা ভুলিয়ে দেয় আর দুধ শেষ হলেও পাঁথরের পাত্রে লালায়িত জিহ্বা দিয়ে চেটে চেটে দুধ খুঁজতে থাকে। তখন দুধের পরিবর্তে রক্তের স্বাদ তাকে ভুলিয়ে দেয় আত্মপীড়ন। ফলে, জিহ্বার রক্তক্ষরণের সাথে সাথে ঘনিয়ে আসে মৃত্যুক্ষণ। তখন বিড়ালের মোহ ভাঙলেও সব সময় শেষ যায়। বাস্তবতা তো ভিন্ন-বিষয়টা পরিণামদর্শী বিড়ালের একক বিষয় নয়। যার পরিণতি আপনা ঢোল বাজানো বুদ্ধিজীবীদের সাথে গোটা মুসলিম জাতিকে ভোগ করতে হবে।

মূল উৎস
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×