ইউনিভার্সিটির সেই শুরু থেকেই ভাল লাগার শুরু.. ধীরেধীরে একটু একটু করে কাছে এসে দুজন দুজন কে জেনে নেয়া!
ভাল লাগা কখন যে ভালবাসায় রুপ নেয় সেটা কেউ বুঝে উঠতে পারে নি..
আড্ডার ছলে বিভিন্ন কথার ফাঁকে কখন যে সার্কেলের অন্য সবার থেকে বেশি ক্লোজ হয়ে গেছে সেটাও জানেনা!
ক্যাফেটেরিয়ায় বন্ধুরা মিলে আড্ডা দেয়ার সময় তার উপস্থিতি একটু শিহরণ জাগিয়ে তোলে, সব সময় বকবক করা ছেলেটাও যেন কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলে
ছেলেটা নিজের অজান্তেই একটু বেশি কেয়ারিং হয়ে যায়, বন্ধুরা ধরে ফেললে হেসে উড়িয়ে দেয়!
ছোট ছোট কিছু ব্যাপারে মন খারাপও হয়, মেয়েটা কারও সাথে হেসে কথা বললেই ঘুর্নিঝর বয়ে যায় ছেলেটার মধ্যে!
ক্যাফেটেরিয়া, ক্ল্যাস, বাংকার'স পয়েন্টে একসাথে সব সময় কিন্তু কথা বলার টপিক খুঁজে পায়না দুজনের কেউ, বাধ্য হয়ে বন্ধুদের বিভিন্ন কথায় একটু একটু এংগেজ হয়ে একটু হাসি-তামাশা!
মেয়েটারও কোন অজানা কারনে ছেলেটাকে ভাল লাগে; ক্লাসে আড়চোখে দেখে ছেলেটাকে, নোটিস করে ছেলেটার বিভিন্ন ছোট ছোট বিষয়, ক্যাফেটেরিয়ায় বা ক্লাসে ছেলেটার পাশের সিটটা পেতে একটু তাড়াহুড়ো করেই চলে আসে.. এক্সামের আগে শীট গুলো সব একসাথে ম্যানেজ করে ওকে দেয়া, কারোও জন্য লাইফটাইমে ওয়েট করেনি যে মেয়েটা, সেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে বসে রোমন্থন করে একসাথে কাটানো ভাল মুহুর্ত গুলো!
দুজন দুজন কেই চায় বাট মুখ ফুটে বলার সাহস টা আর হয়ে ওঠে না কারো!
এমনি কাটতে থাকে সময়..
হঠাত একদিন ক্যাম্পাসের মোস্ট সিনিয়র এক ভাই মেয়েটাকে পছন্দ করে ফেলে.. ব্যাপক রাজনৈতিক ক্ষমতার অধিকারী সে.. কারও কিছু বলার সাহস নেই..
প্রপোজ করেই বসে সে মেয়েটিকে, মেয়েটিও এক কথায় মিষ্টি হেসে সম্মতি জানায়!
ছেলেটি আর সহ্য করতে না পেরে সেই বড় ভাইয়ের সাথে ঝামেলায় জড়িয়ে যায়! এবং দু মিনিটের মধ্যে তার দলবল এসে মারতে শুরু করে ছেলেটাকে.. মার খেতে খেতে ফ্লোরে পরে অজ্ঞান হয়ে যায় ছেলেটা!
হঠাত করেই শুনতে পারে ওকে কেউ ডাকছে, উঠেই দেখে ও আসলে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখছিলো এতোক্ষন!
চোখে ভেসে ওঠে ওর দুঃস্বপ্নটা!
তাই এবার বুকে সাহস এনে আজকেই বলে ফেলবে ওর মনের কথা, যা হবার হবে!
ক্যাফেটেরিয়া থেকে বের হয়েই দেখে সেই বড় ভাই আর মেয়েটা সামনাসামনি দাঁড়িয়ে কথা বলছে!
ঠিক ওর স্বপ্নের মত; তাহলে কি ওর স্বপ্নই সত্যি হবে?
আর কোন কিছু না ভেবেই ছেলেটা ছুটে যায় মেয়েটির দিকে, বলে ফেলে ওর মনের কথা!
মেয়েটার মুখ কালো হয়ে যায়, বলে: দোস্ত, তুই আমার খুব ভাল একটা ফ্রেন্ড, এর থেকে বেশি কিছু আমি চিন্তাই করতে পারি না তোকে নিয়ে!
পাশ থেকে সেই বড় ভাই বলে ওঠে: চলো আমরা কফি শপে যাই!
মেয়েটাও খুশিখুশি মনে চলে যায়!
আকাশটা জেনো ভেঙে পরে ছেলেটার মাথায়! সিঁড়িতে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে..
হঠাত করেই ফ্রেশার একটা সুইট-এন্ড-কিউট মেয়ে এসে বলে: ভাইয়া, আমি এই প্রোগ্রাম টা বুঝতে পারছি না, আপনি আমাকে একটু সময় দিতে পারবেন? প্লিজ ভাইয়া...!
হৃদয় স্পন্দন ফিরে পেয়ে চোখ দুটো বড় বড় হয়ে যায়, নিজের অজান্তেই দাঁত গুলোও বেরিয়ে যায়!
মৃদ্যুস্বরে বলে: হ্যা, শিউর!