somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অণুগল্পের ভিতর বাহিরঃ কি কেন ও কিভাবে???

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লেখক সমাজ হিসেবে সচরাচর লেখার সকল ধরণকে নিজেদের পদচারণায় আরো মুগ্ধ করতে চায় সবাই। কিন্তু সকল কিছু চাইলেই তো আর সহজে অর্জন করা যায়না। লেখার কিছু কিছু ধরণের আলাদা কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে, যদি সেই সাহিত্যে আপনি সেগুলো সঠিকভাবে মেনে চলতে না পারেন তবে লেখার সেই রকমফেরটাকে যথার্থভাবে উপস্থাপন করা যায়না। এর মধ্যে সাধারণত অণুগল্প ও রম্যরচনা লিখতে কিছু নিয়ম কানুনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সেগুলো যদি সঠিকভাবে মেনে না চলেন আপনার লেখাটা লেখা হিসেবেই পরে থাকবে কখনো কোন পাঠকের মনকে নাড়া দিতে পারবেনা। অণুগল্প কিভাবে লিখতে? সেগুলো নিয়েই আমার এই সংগ্রহ।

~অণুগল্প কিঃ

১. অল্প পরিসরে অল্প কথায় অনন্য উন্মোচন।
২. অণুগল্পে কোন গল্প থাকতেও পারে কিংবা নাও থাকতে পারে।
৩. অণুগল্পে চমক থাকতে হবে।
৪. অনুভূতি ও ভাব-ভাবনার চমকপ্রদ উপস্থাপনে সময় বা ঘটনার অংশবিশেষের প্রতীকি কথাচিত্র।
৫. একটা বড় গল্প-ভাবনাকে চুম্বকে পরিণত করতে হবে। খুব ছোট আয়তনে ছোট গল্পের সব মাধুর্য এতে থাকবে।
৬. শুরু ও শেষের আকস্মিকতা, বিশেষ চরিত্রের ওপর আলোকপাত করা, স্বল্প চরিত্র, ঘটনার বাহুল্য না থাকা, তত্ত্ব-উপদেশ একেবারেই নয়, কাহিনি একমুখী, অন্তরে অতৃপ্তিবোধ এবং চূড়ান্ত ব্যঞ্জনা।
৭. কাব্যময়তাও এর একটি বিশেষ লক্ষণ।
৮. মুহূর্তের একটা ঘটনাকে সাবলীল আর উজ্জ্বলভাবে উপস্থাপন।
৯. অল্প পরিসরে বিশালতাকে আবৃত করাই অণুগল্প।
১০. একশো দেড়শো শব্দের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
১১. জীবনের খণ্ডছবি উঠে আসে।
১২ বর্ণনার বাহুল্য নেই।
১৩. কিছু না-বলা কথা উহ্য রেখে এক দারুণ রহস্য তৈরি করা।
১৪ পাঠ করার পর নিজের মত করে অর্থ খুঁজে নেবে পাঠক।
১৫. খুব অল্প ও প্রয়োজনীয় শব্দে এবং যথার্থ বাক্য বিন্যাসে।
লেখক দ্রুত ঢুকে যাবেন গল্পে।
১৬. অণুগল্প পাঠকের অভ্যন্তরীণ ক্রিয়াকলাপে দ্রুত প্রভাব ফেলে।
১৭. অণুগল্প সবটুকু বলে না, বেশিরভাগই থেকে যায় পাঠকদের জন্য। (পাঠক নিজে বুঝে নেওয়ার জন্য।)
১৮. কাহিনির ইঙ্গিতময়তা থাকে।
১৯. অণুগল্পের প্রচণ্ড সংযম থাকে।
২০. আকস্মিক পরিণতি থাকে।
২১ ছোটগল্পের নবজাতক শিশু।
২২. অণুগল্প ছোটগল্পের নবজাতক নয়, মা।

~নানারকম উদাহরণের মাধ্যমেও অণুগল্পকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। যেমন—

১. আমার কাছে অণুগল্প হচ্ছে অনুভূতির পুকুরে ঢিল ছোঁড়ার মত। পুকুরে ঢিল ছোঁড়ার সাথে সাথে প্রথম যে ছোট্ট বৃত্তটি তৈরি হয় তা হলো—অণুগল্প। তারপর বৃত্তের বাইরে একের পর এক বড় বৃত্ত তৈরি হয়। যা পাঠকের মন অণুগল্পের ভেতরের গল্পগুলো নিয়ে নিজের মধ্যে ভাবনার বড় বড় বৃত্ত সৃষ্টি করে
২. অণুগল্প হতে হবে ওই Rabbit Hole-এর মত, যার ভেতর পাঠক Alice-এর মত হারিয়ে যেতে পারে চাইলে। Magnetism থাকতে হবে, গল্প না থাকলেও চলে।
৩. অণুগল্পকে অনেক সময় ক্যামেরার ফ্ল্যাস লাইটের সাথেও তুলনা করা যায় । তারপর ক্যামেরার বুকে লুকিয়ে থাকে সেই ছবি ।
৪. অণুগল্প হলো ধ্যানীর ধ্যেয় অতিবিন্দু স্বরূপ। ওই অতিবিন্দু-রূপ অণুগল্পকে ওই বিরাটাকার পূর্ণব্রহ্মরূপ দর্শন দর্শাতে পারেন আর এই পূর্ণব্রহ্মরূপ অণুগল্পই হলো একটি সার্থক না-বলা শিল্প।
৫. অণুগল্প হচ্ছে রংতুলি দিয়ে ছোট্ট ক্যানভাসে প্রাকৃতিক বা অপ্রাকৃতিক দৃশ্যকে সুষম বিন্যাসে ফুটিয়ে তোলা, যা আকর্ষক এবং ভাবগম্ভীর হবে …যার মধ্যে পূর্ণতা থাকবে, কিন্তু সেই পূর্ণতা ধোঁয়াশায় মোড়নো ।

~নোটঃ লেখার মূল অংশ সম্পূর্ণ সংগৃহীত। বিচ্ছিন্ন যায়গা থেকে সংগ্রহ করার জন্য লেখকের নাম জানা হয়নি। লেখাটি মূলত আমার নিজের জন্যই সংগ্রহ করা, সাথে সাথে চাইলাম সহ ব্লগারদের সাথেও শেয়ার করলে ভালো হয়, অনেকেই হয়ত এগুলোর ব্যপারে নাও জেনে থাকতে পারেন (শুধু তাদের জন্যই।) আপনারা যদি আরো বিস্তারিত কিছু জেনে থাকেন কিভাবে অণুগল্প লিখতে হয় বা এই লেখনীর ব্যপারে আপনাদের কাছে কোন সাজেশন থাকে তাহলে জানিয়ে ধন্য করবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১৮
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×