যেসব শব্দ মুসলমানদের ব্যবহার করা উচিত নয় ১
খারাপ শব্দ ব্যবহারের কুচিন্তায় যোগসাধনের ষড়যন্ত্র ইহুদী-খ্রিস্টান-মুশরেকদের ঐতিহ্যগত প্রবৃত্তি। স্বয়ং হুযূর পাক ছল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সময়ও ইহুদী খ্রিস্টানদের এরূপ ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার ছিল। যার ফলে স্বয়ং আল্লাহ পাক আয়ত শরীফ নাযীল করলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা ‘রঈনা’ বলো না ‘উনজুরনা’ বলো এবং শ্রবণ কর আর কাফিরদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।” (সূরা বাক্বারা: ১০৪)
আর কাফেরদের সম্পর্কে আল্লাহ পাক মুসলমানদের সতর্ক করে বলে দিয়েছেন যে মুসলমনাদের প্রধান শত্রু হচ্ছে প্রথমত: ইহুদী, দ্বিতীয়ত: মুশরিক, তৃতীয়ত: নাছারা এরপরে অন্যন্য ইসলাম বিদ্বেষী। যারা ক্বিয়ামত পর্যন্ত মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবে, মুসলমানদের বিভিন্ন কৌশলে ক্ষতি করার চেষ্টা করবে। তারই ধারাবাহিকতায় ইহুদী-নাছারারা মুসলমানদের উপর সরাসরি শারিরীক নির্যাতন বা ঈমানী নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র করে। সে সমস্ত কোটি কোটি কু-চক্রান্তের মধ্যে একটি হল মুসলমানদে ঈমানে আঘাত করে এমন কিছু শব্দ প্রচলন। যেমন:
১. লাকি সেভেন (৭): ইংরেজি বর্ণমালার ক্রমানুসারে ৭ নাম্বার অক্ষরটি হল G যা God শব্দের প্রতি ইঙ্গিত করে। যেহেতু ইহুদী-খ্রিস্টানরা ইশ্বরে বিশ্বাসী তাই তারা লাকি(Lucky) 7 বলে থাকে। কিন্তু মুসলমানদের God বা ইশ্বর শব্দে আল্লাহকে ডাকা বা সম্বোধন করা শিরক হবে। কেননা ইশ্বর শব্দটির সাথে ইশ্বরী বা ইংরেজীতে Goddess জড়িত আছে। খ্রিস্টানদের বিশ্বাস মোতাবেক ইশ্বরের স্ত্রী(ইশ্বরী) আছে যাকে তারা মেরী বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! কাজেই মুসলমানদের উচিত যিনি সৃষ্টিকর্তা, খালিক্ব, মালিক, রব আল্লাহ পাক উনাকে ‘আল্লাহ’ বা ‘আল্লাহ পাক’ নামেই সম্বোধন করা। কোন মুসলমান যদি লাকি 7 বলে তাহলে সে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় শিরক করবে আর আল্লাহ পাক উনার সাথে কাউকে শরীক (শিরক) করা হচ্ছে সবচেয়ে বড় কবীরা গুনাহ যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ।
২.আনলাকি থার্টিন(13): ইহুদী-খ্রিস্টানরা ১৩তম সংখ্যাকে আনলাকি বলে থাকে। কারণ ইংরেজি বর্ণমালার ১৩ তম স্যংখার বর্ণটি M যা হুযূর পাক ছল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার নাম মুবারক(Muhammad)-এর অক্ষর এর সাথে জড়িত। তাই ইহুদী-খ্রিস্টানরা বিদ্বেষবশত ১৩ কে অশুভ বা আনলাকি বলে থাকে। এমনকি ইহুদী-নাছারাদের প্লেনে, রেলে, জাহাজে, হোটেলে ইত্যাদিতে 13 নং কোন সিট বা রুম রাখেনা। কিন্তু মুসলমানদের কাছে ১৩ই হল শুভ বা লাকি। কারণ হুযূর পাক ছল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বা উনার নামকে যারা সম্মান করবে মুহব্বত করবে তারা আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি পাবে। সে হিসেবে ১৩তম সংখ্যাকে (M) সম্মান ও মুহব্বত করা সৌভাগ্যের বা লাকী হওয়ার বিষয়।
৩. MD./MohD.: অনেকে তাদের নামের Muhammad শব্দটিকে সংক্ষেপে Md. অথবা Mohd. লিখে থাকে। এই সংক্ষিপ্তকরণের মাধ্যমে একদিকে মুসলমানেরা নিজেরাই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারকে ইহানত বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে। আবার এর ফলে ইহুদী-নাছারারাও এটি নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের সুযোগ পাচ্ছে। যেমন- সংক্ষিপ্তাকারে লিখিত Md. অথবা Mohd. কে তারা প্রচার করছে Mouth of Dog বলে। নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক! তাই Md. অথবা Mohd. অবশ্যই পরিহার করে সম্পূর্ণরুপে Muhammad লিখতে হবে। কারণ এভাবে সংক্ষেপে লেখা ও বলা উভয়টাই কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভূক্ত।
৪. Mecca: অনেকে মক্বা শব্দটি ইংরেজিতে Mecca লিখে থাকে। অথচ এই শব্দ দ্বারা ইহুদী-নাঝারারা Bar (শরাবখানা) বুঝিয়ে থাকে। তাই মুসলমানদের উচিত Mecca না লিখে Makkah লিখা।
৫. God: এ শব্দটির প্রবর্তক ইহুদী-নাছারারা-মুশরেকদের। কেননা তাদের বিশ্বাস সৃষ্টিকর্তা একক নন, তাঁর শরিক স্ত্রী, পরিববার-পরিজন রয়েছে। নাউযুবিল্লাহ! এ জন্য God শব্দটির বিপরীতে স্ত্রী বাচক হিসেবে তারা Goddess শব্দটি ব্যবহার করে। যার বাংলা হচ্ছে পুঃ ইশ্বর, স্ত্রীঃ ইশ্বরী।
অনেক মুসলমান অজ্ঞতাবশত কথা প্রসঙ্গে `Oh my God’ `God Gifted’ ইত্যাদি অনেক ভাবে God বলে থাকে। যার কারণে সূক্ষ্মভাবে সে শিরক করে ফেলে; আর নিজের অজান্তেই হয়ে যায় মুশরেক। সূতরাং এ শব্দটি পরিহার করে মুসলমানদের ‘আল্লাহ’ বা ‘আল্লাহ পাক’-এভাবে উল্লেখ করা উচিত। মূলতঃ আল্লাহ পাক উনাকে আদবের সাথে যে কোন নামে ডাকলেই উনি বান্দার ডাকে সাড়া দিয়ে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
৬. Masque: অজ্ঞতাবশত অনেক মুসলমান মসজিদকে ইংরেজিতে Masque লিখে ও বলে থাকে। অথচ এই শব্দ দ্বারা মুসলিম বিদ্বেষী ইহুদী-নাছারারা (House of Mosquito) মশার ঘর বুঝিয়ে থাকে। তাই মুসলমানদের উচিত Mosque না লিখে Masjid লিখা।
৭. Rx সব ডাক্তারই রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্রে Rx লিখে থাকে। অথচ সংক্ষেপে Rx হল Referred to Jesus Christ অর্থাৎ ‘প্রভু যিশু’ সমীপে সোপর্দ করে বোঝায়। নাছারাদের ‘প্রভু যিশু’-এর কাছে আত্মনিবেদনের প্রক্রিয়া অনুসরণের কারণে ঈমান হারিয়ে কাট্টা কাফির, মুরতাদে পরিণত হতে হয়, তা কথিত মুসলমান ডাক্তারদের মগজে নেই।
৮. মৌলবাদ: মৌলবাদ শব্দটি সম্পর্কে অনেকের ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। অনেকে মনে করে থাকে মুসলমানদের ‘মৌলভী’ বা ‘মোল্লা’ শব্দ থেকে মৌলবাদ শব্দটির উৎপত্তি ঘটেছে। আসলে এটি একটি ভুল ধারণা।
মূলতঃ মৌলবাদ শব্দের অর্থ হলো- যে কোন ধর্ম বা মতবাদের মূলতত্ত্ব, মৌলিক বা মূল বিষয়সমূহ অথবা মৌলিক বা মূল মতবাদ সমূহ। আর ব্যবহারিক অর্থে ধর্মান্ধ চরমপন্থী (Extremist) আমেরিকান খ্রিস্টান প্রোটেস্ট্যান্ট সম্প্রদায়ের বাইবেল সম্পর্কীয় মতবাদকে মৌলবাদ বলে এবং বহির্বিশ্বে এ অর্থেই এটা ব্যপকভাবে পরিচিত, আর এই ধর্মান্ধ চরমপন্থী আমেরিকান খ্রিস্টান প্রোটেস্ট্যান্ট সম্প্রদায়ই মৌলবাদী বলে পরিচিত। কাজেই মুসলমানদেরকে মৌলবাদী বলা বা মুসলমানগণ অজ্ঞতাবশত নিজেদেরকে মৌলবাদী বলে দাবী করা কখনো কোন মতেই শরীয়তসম্মত হবেনা। কারণ এটা খ্রিস্টানদের শেয়ার বা চিহ্ন বা আলামত।
৯. ইসলামিক রাষ্ট্র: ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ দ্বীন। অন্যদিকে ‘রাষ্ট্র’ ধারণার উৎপত্তিস্থল হলো গ্রিসে। রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কিত যত মতবাদ সব বিধর্মীদের সৃষ্টি। আর রাষ্ট্রের সংজ্ঞা হিসেবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা চারটি বিষয় উল্লেখ করেছে। ১. নির্দিষ্ট ভ’খ-, ২. জনসমষ্টি, ৩. সার্বভৌবত্ব ও ৪. সরকার। অথচ রাষ্ট্রের এ সংজ্ঞার মাঝে ইসলাম নির্দিষ্ট ভ’খ-, জনমসষ্টি, এবং কথিত রাষ্ট্রীয় সরকার বা সংবিধান এবং সার্বভৌমত্বের ক্ষমতার মালিক জনগণ- এর কোনটাই স্বীকার করেনা বরং এ বৈশিষ্টগুলো ইসলাম পরিপন্থী। সূতরাং ইসলামে কখনোই ইসলামি রাষ্ট্র বলতে কোন শব্দ নেই। তবে দেশ বা সমগ্র পৃথিবী পরিচালনা করার জন্য ইসলাম যে ব্যবস্থা রেখেছে তা হচ্ছে ‘খিলাফত’ ব্যবস্থা।
১০. ইসলামী গণতন্ত্র: এ শব্দটিও একধরণের সূক্ষ্ম ফাঁদ। যে ফাঁদে আটকা পড়ে সাধারণ ধর্মপ্রাণ অজ্ঞ মুসলমানগণ। মূলতঃ গণতন্ত্র কষ্মিনকালেও ইসলামী হতে পারেনা। কারণ গণতন্ত্র ধারণাটি মানব রচিত। আব্রাহাম লিঙ্কন এর জনক। যে কিনা তার স্বরচিত বইতে নিজেকে জারয সন্তান বলে পরিচয় দিয়েছে। তাহলে এ জারয রচিত মতবাদ ইসলামী হয় কি করে? আর ইসলামতো পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। ইসলামের দৃষ্টিতে ‘গণতন্ত্র’(Democracy) সম্পূর্ণরূপে হারাম। যারা ইসলামের নামে গণতন্ত্র করতে চায় তারা নিঃসন্দেহে ধর্ম ব্যবসায়ী। কেননা ইসলামী গণতন্ত্র আর ইসলামী মদ, ইসলামী সুদ একই ধরনের ধারনা।
১১. ওরস: ‘ওরস’শব্দের আভিধানিক অর্থ ‘ওলীমা বা বিবাহের খানা, যিয়ারত, বিবাহের দাওয়াত, বাসর যাপন’ ইত্যাদি। পারিভাষিক ও রূপক অর্থ ‘কোন আউলিয়ায়ে কিরাম ও বুযুর্গানে দ্বীনের ইন্তেকালের দিন ফাতিহা পাঠ উপলক্ষে খাওয়া, ওয়াজ-মাহফিল, মীলাদ-ক্বিয়াম ইত্যাদির ব্যবস্থা করা। পূর্ববর্তী যামানায় ওরস শব্দ ব্যবহার করাকে ওলামায়ে হক্কানী-রব্বানীগণ দূষণীয় মনে করেননি। কিন্তু পরবর্তী যামানায় ওরসের নাম দিয়ে বেপর্দা, বেহায়াপনা, গান-বাজনা, মেলা এমনকি নেশা জাতীয় দ্রব্য সামগ্রী সেবনেও অভ্যস্ত হয়ে যায় অনেকে। এজাতীয় শরীয়ত পরিপন্থী কাজ করার কারণে পরবর্তী যামানার হক্কানী-রব্বানী আলিমগণ ফতওয়া দিয়েছেন যে, কোন নেক বা দ্বীনী কাজে ওরস শব্দ ব্যবহার না করে ‘ঈসালে সাওয়াব’ বা ‘সাওয়াব রেসানী’ শব্দ ব্যবহার করতে হবে।
১২. লাউ: কদু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রিয় খাবার; যে সম্পর্কে হাদীস শরীফও বিদ্যমান। যার ফলে কদুকে মুহব্বত করা ঈমানের অংশ। কিন্তু কদুকে ‘লাউ’ শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা উচিত নয় কেননা ‘লাউ’ শব্দের একটি খারাপ অর্থ আছে বিধায় কদুকে লাউ বলা মুসলমানদের উচিত নয়।
১৩. বিসমিল্লায় গলদ: আমরা শুরুতেই ভুল এই কথাটি প্রকাশ করতে গিয়ে অনেক সময় বলে থাকি, ‘বিসমিল্লায় গলদ’ অর্থাৎ কুরআন শরীফ-এ ভুল। নাউযুবিল্লাহ! এ কথাটির প্রচলন ঘটিয়েছে বিধর্মী মুসলিম বিদ্বেষীরা। সূতরাং মুসলমানদের এ কথাটি ব্যবহার করা কাট্টা কুফরী হবে।
লেখাটি সবুজ বাংলা ব্লগ থেকে সংগৃহীত।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




