somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাকে সে নিয়েছিল নীল

১০ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাকে সে নিয়েছিল নীল জোছনায়,
নক্ষত্রের আশীর্বাদ প্লাবিত ঢেউয়ে,
পবিত্র স্নান সেরে উঠে আসলেও,
অনুভূতির চিক চিক চিবুকে কেমন ,
আদিম এক নোনতা স্বাদ জেগে থাকে।
আকাশের তারা কত আছে চোখ মেলে,
গুনে দেখবার জন্য বেঁচে নেই কোন চারন কবি,
রাজকন্যেরা সব সোনার খাঁচায় ঝাড়বাতি জ্বালে সাঁঝকালে।
একজন দিয়েছিল নির্দেশ উত্তাল আনন্দযজ্ঞের,
মানবীয় সুর জাদুর বাসনা মন্দিরের দ্বারে,
ভীরু আগ্রাসি পায়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম পূজারী আনাড়ী।
পথে বৃষ্টি ছিল, হাতে ছিল শুধু সোনালুর ঝুরি।
রক্ত কান্তল কৃষ্ণচূড়া নেইনি বলে,
ফিরিয়ে দেয়নি দ্বাররক্ষী কেন জানি,
নবীন ছিলাম বলেই বোধহয়!
তখন আর কে জানত,
হৃদয়ের গোধূলী রাঙ্গা সিঁদুর ছাড়া যে
এ দেবী রাখেনি মন কোন মন্দিরে।

আমাকে সে নিয়েছিল নীল অরন্যে,
মহাকালের বেদনা অভিষিক্ত আলিঙ্গনে ,
তবুও ধেয়ে এসেছিল হিমেল তুষারযুগ,
অনন্তর মৃত্যুর মত শুভ্রতার কোল ঘেঁষে,
এমন করেই জাগতো কামনা আদিম যুগলের,
তখন কে শেখাত শ্লোক হৃদয় বিনিময়ের?
তখন কে ধরেছিল দাঁড়িপাল্লা পাপ-পূন্যের?
গুহার চিত্রলিপির প্রানের কানে বাজে,
আলো ছায়া শক্তিমান শীৎকার ঝঙ্কার,
আকাঙ্খা পাত্রের কামনাবতী দলের জীবনপাত্রে,
প্রথিত হত পবিত্র সেইসব স্বপ্নবান আলোকবীজ,
তখন কে বানাত নিয়ম মধু বিনিময়ের?
তখন কে শেখাত পাঠ অনুতাপ শাস্ত্রের?


আমাকে সে নিয়েছিল নীল জলে,
বৃক্ষের সবুজ আল্পনার ইন্দ্রজাল নৈঃশব্দে,
যাযাবর পথিকের জন্য পথের নিবিড় অপেক্ষায়,
ধারে ধারে ঘাসফুল আর প্রাচীনের ছায়া সাজালেও,
পথের বুক জুড়ে থেকে যায় ধূলি ধূলি প্রান্তর।
কিছু শিকড় সঞ্চারী স্বপ্ন, পাখিদের সাথে সন্ধি পাতিয়ে,
পাড়ি দেয় দূরতম অস্তাচলের সীমানা,
কেউ কেউ ছড়িয়ে পরে বাতাসে,
ফুলেদের সাথে ভ্রমরের প্রনয় প্রবাহে,
পারিজাত পাল্কিতে করে বধূবাড়ী যায় সোনাবীজ।
পাহাড়চূড়ায় চড়ে বসে কিছু সবুজ,
টিলায়, উপত্যকায় আর নিরস পাথরের খাঁজে খাঁজে,
জাগিয়ে তোলে জীবনের মাতাল বিপ্লব।
সমুদ্রের কিছু জলকণা নিকষ অভিমানে ডুব দেয় অতলে,
যেখানে এমনকি সূর্যেরও নেই স্পর্শের অধিকার।
প্রেমে উত্তাল আবেগে আকাশচারী হয় কিছু মেঘ,
দূর দ্বীপবাসিনী দয়িতার বিচ্ছেদে সাথী হয় বাসনাদূত।
কিছু জল বয়ে চলে অবিরল,-
মন তার শঙ্খিনী থেকে যাবে সব জনমে!

আমাকে সে নিয়েছিল আগুনের নীল রাত্রিতে,
উৎসব মদিরায় ঢুলু ঢুলু সময়ের আত্মা ভর করে,
জনপথ ও জনপদের অলিতে গলিতে, জানালায়, কার্নিশে,
এক একটি প্রান সুরভিত ফুলের আনন্দে চোখ মেললেও,
সন্ধ্যার নিষ্পত্তিতে কিছু মুখের কাজল ধুয়ে যায় জলে,
কিছু জামার হাতা ভিজে যায় ছেলেবেলার মত অলক্ষ্যে!
বুকের মধ্যে বেজে চলে এখনও সেই রাতভর আদিবাসী ঢাক,
চারদিকে সতেজতা জাগানিয়া ফসলের পাহাড়ী ঢেউ,
সভ্যতার অস্তিত্ব জানানোর মত নেই একটিও মানুষ সচেতন,
তারাগুলো সেই রাতের মতই এখনও মিটি মিটি দেখে যায়,
এরকম এক রাতের জন্য মরেছিল এক ডানাভাঙ্গা পাখি,
কিন্তু তার কোন দুঃখ ছিল না, ফিনিক্স হতে চায়নি সে কখনও,
শুধু যদি সে বুঝে নিত পাখিটার বুকে ছিল অচেনা অরণ্যের ঝড়,
শুধু যদি জেনে যেত সে একটিবারের জন্যে হলেও,
ভালোবাসা ছিল খুব পাখিটার ছোট বুকে অপলক টলমল ।



**** ইন্টারনেট সংযোগ নাই, বড় কষ্টে আছি। :( অনেকে অনেক সুন্দর সুন্দর লেখা দিচ্ছে, ঠিকমত পড়াও হচ্ছে না! কবিতা পোস্ট দেওয়া হচ্ছেনা, এই দুঃখে কবিতাও লেখা হইতেসে না। :( গতকিছুদিন একটা লাইন খুব যন্ত্রনা দিচ্ছিল- 'আমাকে সে নিয়েছিল ... ' । লিখতে লিখতে বিশাল হয়ে গেল, তাই থামিয়ে পোস্ট দিয়ে দিচ্ছি, না হলে আরও অতিকায় হয়ে যাবে, তখন হয়ত আমার নিজেরই আর পড়তে ইচ্ছে করবে না ! বিলম্বিত প্রতিমন্তব্যের জন্য অগ্রিম ক্ষমা চেয়ে নিলাম। ভালোবাসা রইলো সবার জন্য! :)
৩০টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×