“আজ বিকেলে তোদের বাসায় আমার দাওয়াত।”
সোমার কথায় আমি একটু বেকায়দায় পড়ে গেলাম।
“আজ বিকেলে?”
“কেন? কোন অসুবিধা আছে?”
“না, মানে...”
আমি মনে মনে হিসেব করে নেই আমার ঘরের অবস্থা। পড়ার টেবিলটা অগোছালো হয়ে আছে। আজ বিছানাটাও গোছাইনি। বিছানার চাদরটা বোধ হয় ২ মাস কি ৪ মাস আগে ধোয়া হয়েছিল ...
“ঠিক আছে তাহলে যাব না।”
সোমা মুখ ঘুরিয়ে দূরে জটলা পাকানো ফার্স্ট ইয়ারের ছেলে-মেয়েদের দেখতে থাকে। আমি তড়ি ঘড়ি করে বলি,
“না না, কোন অসুবিধা নেই। তুই আয়। কখন আসবি?”
“বিকেলেই।”
সোমা ছোট্ট করে বলে।
আমি এক ছুটে কলেজ থেকে বাড়ি চলে আসি। বইগুলো সব গুছিয়ে রাখি। মার সাথে আমার একচোট ঝগড়া হয়ে যায় বিছানার ময়লা চাদর নিয়ে। মা পরিস্কার চাদর বের করে দিতে দিতে বলে,
“তু্ই-ই তো তোর ঘরে কাউকে ঢুকতে দিস না। মানুষ এত নোংরা থাকে?”
আমি একটু একটু করে আমার ঘরটা গোছাই। সোমা আসবে আজকে। মনে মনে শব্দের পরে শব্দ সাজাই, কোন কোন কথা বলব তাকে। একটু একটু করে সময় বয়ে যায়। পড়ন্ত সকাল থেকে দুপুর। দুপুর থেকে বিকাল। বিকাল পেরিয়ে সন্ধ্যা। সোমা আসে না। আমার মন খারাপ হয়ে যায়। পরদিন তাকে জিজ্ঞেস করি,
“কাল এলি না যে?”
“কোথায়!?”
“আমাদের বাসায়।”
“ওমা তুই অপেক্ষা করে ছিলি নাকি? সরি রে, আমি এমনি এমনিই বলেছিলাম।”
আমার মুখে একটা তিক্ত হাসি ফুটে ওঠে। মনে মনে বলি, তুই খেয়ালের বসে এমনি এমনিই একটা কথা বলিস আর আমার পুরো একটা দিন মাটি হয়ে যায়। পরক্ষণেই আবার মনে হয়, তুই-ই তো আমার দিন মাটি করবি। তোরই তো আছে সেই অধিকার।
রচনাঃ ১/২/২০০৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


