somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধরো বন্ধু আমার কেহ নাই !!

২২ শে জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৫:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কোথায় যেন দেখছিলাম , যৌবনে যে সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করে না তার হৃদয় নাই আর পরিণত বয়সে যে পুঁজিবাদে বিশ্বাস করে না তার মগজ নাই । মাওলানা দুরের পাখি আরেকধাপ আগায়া বলেন, প্রথম যৌবনে যে নিহিলিজম বিশ্বাস করে না, সে আর কোনদিনও বালেগ হয় না । নিহিলিজম ডিফেন্ড করার সাধ বা সাধ্য কোনটাই আমার নাই । (অবশ্য আইজকাল বোধহয় কোন ইজমই ডিফেন্ড করার সাধ নাই, সাধ্য যদিওবা থাকে ) । নিহিলিজম আবার বৃত্তাকার সাপ । নিহিলিজমের উপ্রেও যদিও নিহিলিজম প্রয়োগ করন যায়, তাইলে খেলা আরো জমতে পারে ।


ফেসবুকে এক ছোটভাই স্ট্যাটাস মেসেজ লেখছে, বাংলা মোটামুটি এইরকম : "আমরা একা আসি, একা থাকি, একা যাই । মাঝে মাঝে কেবল বন্ধুত্ব, ভালোবাসা এই ধরণের কিছু সম্পর্ক দিয়া , নিজেদের ভুলাই যে আমরা একা না "। পোলার বয়স যা, তাতে বড় বড় কথা বলার এখনই সময় । পরে সময় আর নাও থাকতে পারে । বেশীরভাগেরই থাকে না । কেউ কেউ ইল্যুশনটাকেই শেষ গন্তব্য বৈলা ধৈরা নেয়, আর সেইটার সাথেই বোঝপড়ায় আসার চেষ্টা করে । কেউ কেউ যে সারাজীবন অস্বীকার কৈরা যায় না তা না । কিন্তু সেইগুলা বিরল ঘটনা । প্রোবাবিলিস্টিক বিচারে আলোচনার টেবিলে আনার মত না ।


বাল্যকালের সম্পর্কগুলার একটা অবশ্যাম্ভাবী বৈশিষ্ট্য হৈলো, তখন কেউই সম্পর্কের মধ্যে টাইম লিমিট যোগ করে না । সবকিছুই তখন চিরদিনের জন্য, সারাজীবনের জন্য । একটা সুন্দর মার্বেলও সারাজীবনের জন্য রাখার প্রতিজ্ঞা , ভালো বন্ধূর সাথে সম্পর্কেও সারাজীবনের জন্য প্রতিজ্ঞা । বালেগ নাবালেগে পার্থক্য হওনের এইটাও একটা দিক যে, কে কখন বুঝলো কোন কিছুই সারাজীবনের জন্য না । চিপাবুদ্ধির মনোবিজ্ঞানীর মনে হৈতে পারে, হয়ত গড় প্রত্যাশিত আয়ুস্কালের চাইতে অনেক দূরে থাকে বৈলাই পুলাপান জীবনটারে অনেক বড় মনে করে, এইকারণে যেকোন পরিকল্পনা অনেক দীর্ঘ, অনেক লম্বা সময়ের জন্য করে ।


তাইলে ঠিক কখন থাইকা, কোন দিন কোন অশুভক্ষণটা থাইকা মানুষ মনে করা শুরু করে, আজকের এই সময়ের এত প্রিয় জিনিসটা মানুষটা বেশিসময়ের জন্য নাই ? অতিপ্রিয় কিছু হারায়া গেলে ? অতি ঘনিষ্ট কোন বন্ধুর সঙ্গ আগের মত ভালো না লাগা শুরু হৈলে ?


দুইন্যাতে যেইকাজে মানুষ সবচে বেশি সময় নষ্ট করে সেইটা বোধহয় পরিকল্পনা । সারাজীবন যেই পরিমান পরিকল্পনা মানুষ করে , তার হাজারভাগের একভাগ যাদের সফল হয় তারাই বড় বড় হোমরা চোমরা হয় । তারপরেও মানুষ পরিকল্পনা করে, উজবুকেরা সেইটারে গালভরা নামও দিছে । আশা ।


নতুন কোন সম্পর্কের শুরুতেই যদি মাথায় হিসাব চৈলা আসে, এইটা কদিনের সম্পর্ক, কতটুকু গভীরে পারমিটেড, কতটুক অগভীর , তাইলে সম্পর্ক জিনিসটা ইল্যুশনের মত মনে হওনে দোষ দেয়া যায় না কাউরে । ভালোবাসা বা বন্ধুত্ব কেবল নাম হিসাবে রাইখা, তলে তলে লিনিয়ার প্রোগ্রামিং (কতটুক কাছে গেলে কতটুকু লাভ হবে) । একটা না একটা বয়সে চোখ গজায় সবারই । তখন সবাই বুঝে অন্তরালের লিনিয়ার প্রোগ্রামিং । ফেসবুকের পিচ্চির মত সবারই তখন অবিশ্বাস আসে ।


লিভ ইন দ্য মোমেন্ট । পূঁজিবাদী দর্শণের বোধহয় সবচে বড় ঐশীবাণী । শত শত ডাইমেনশন চিন্তা করা যায় এই একটা ছোট কথার । এই অমৃতরসে টইটম্বুর দুনিয়ায় মানুষের স্থায়ী কোন কিছুই নাই । সবসময় ভাড়া খাটানির ব্যবসা জমজমাট ।


বছেরর পর বছর ধৈরা , মানুষের পর মানুষের সাথে একশ একটা প্রতিজ্ঞা কৈরা একশ একটা প্রতিজ্ঞা ভাইঙা এখন মনে হৈতেই পারে প্রতিজ্ঞা করাই অনুচিত । ছুটির নিমন্ত্রণ, বিয়ার নিমন্ত্রণ, টাকা ধার দেয়া, পড়ালেখায় সাহায্য করা, শত শত তুচ্ছের ঐসব বন্ধু এখন অনেকের নাম শুনলেও চিনা চিনা লাগে না । জরিনারে না পাইলে সুইসাইড খামু, সেই জরিনা মারা গেলেও , দূরে গিয়া মর, হয় প্রথম প্রতিক্রিয়া ।


এতকিছুর পরেও আমি সম্পর্কের পক্ষপাতি । বড় দুইন্যাতে অস্তিত্বের জায়গাহীন মানুষের লাইগা সম্পর্কগুলা আশ্রয় । দুইন্যার হাটে আমার দাম, আমার জীবনের দাম, আমার সমস্ত বিশ্বাসের কানাকড়ি দাম না থাকলেও, কারো কাছে আমার সামান্য মুখ বেজারখানাই ঝড়ের সমতূল্য, এইটুক পার্থক্যই মানুষকে বাঁচায়া রাখে , আইজ হোক কাইল হোক, সব নিহিলিস্ট পাকনাই এইটা বুঝবে ।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১১:৪২
২০টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×