somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পিশাচ সংসার ( পর্ব ৫ )

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের পর্বের লিংকঃ Click This Link

এই কালো ডায়েরীও আমার বরেরই হবে ৷ আমি কখনো কারো পার্সোনাল জিনিস নিয়ে ঘাটিনা সে যেই হোক সো ডায়েরীটা খোলার কোনো আগ্রহই এলোনা ৷
ডায়েরীটা রাখতেগিয়েই হাত থেকে পড়ে গিয়ে পা কেটে গেলো ৷ কি আজব না?

এই পিচ্চিএকটা ডায়েরী একটুও ওজন নেই ধারালোও না অথচ পায়ে পড়া মাত্র মনে হলো পা টা থেতলে গেলো বুঝি ৷ পায়ের ব্যাথায় জীবন শেষ আমার ৷ ডায়েরী হাতে নিয়ে দেখলাম না তো আসলেই কোন ওজন নেই ৷ কি হলো কিছুই বুঝলামনা ৷ আবারো রাখতে গেলাম আবারো হাত থেকে পরে গেলো ওটা এবার পায়ে পরেনি তবে একটা কাগজ বের হয়ে এলো ভেতর থেকে ৷

" শা কি ল তুমি আজীবন বন্দীই থাকবে"

কে লিখেছে এটা? কি আছে এই ডায়েরীতে ৷ বার বার যেনো এটা খোলার আভাস পাচ্ছি ৷ কেউ চায় আমি এটা খুলি? তাই বার বার রাখতে গিয়েও পারছিনা ৷
তখনই আবার সেই স্মেল ৷ কিন্তু এবার আমার একটুও ঘোর এলোনা ৷
নিজের কন্ট্রোলেই আছি ৷
লকটার চাবি তো নেই আমার কাছে কিভাবে খুলবো তাহলে? আচমকাই লকটা খুলে গেলো ৷ ওহ মাই গড কি সব ভৌতিক ব্যাপার হচ্ছে একা বাসায় ভূত মেরে ফেললেও কেউ জানতে পারবেনা ৷
সাহস নিয়ে খুললাম ডায়েরী ৷

"আমি রুবাইয়াত মোজাম্মেল শাকিল ৷
আজ প্রথম মারলাম জিনিয়া কে ৷ ওর সাহস বেড়ে গিয়েছিলো আমাকে থাপ্পর মারে কতো বড় সাহস"

" আমি সজল কে মারতে চাইনি কিন্তু ও আমার বোনকে হার্ট করেছে সো ওকে মরতেই হতো"

" চায়ের দোকানদার অযথাই ঝামেলা করলো তাই ওর প্রাণটাও নিয়ে নিলাম"


বন্ধ করে ফেললাম ডায়েরী ৷ দৌড়ে গিয়ে মাথায় পানি দিলাম ৷ আমি কি পড়লাম? নিশ্চিত পাগল হয়ে গেছি কি দেখতে কি দেখেছি ৷

কাপা কাপা হাতে আবারো হাতে নিলাম ডায়েরী ৷ আমি নরমালি মোটামুটি শক্ত মেয়ে ৷ তাই সবগুলো মার্ডার নিউজ পরেই যাচ্ছিলাম ৷
আমার জানতে হবে সমস্যাটা কোথায় ৷
২৬৬ নম্বর পাতায় চোখ আটকে গেলো ৷

"আম্মু তোমাকে অনেক ভালোবাসি কিন্তু তুমি কেনো কালো গোলাপগুলো পুড়িয়ে দিলে? সেটা না দিলে তুমি আজ বেঁচে থাকতে "

ওহ মাই গড ৷ শাকিল! শাকিল ওর মাকেও মেরেছে? আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে ৷ তখনই বাবার কথাটা কানে বাজছে
মামনি তুমিই পারবে শাকিলকে মুক্তি দিতে ৷
তার মানে বাবা জানতো সব? কিন্তু আমি কীভাবে?
উফফ মাথা কাজ করছেনা ৷ কিন্তু না এটার সব জানতে হবে আমাকে ৷ আমি স্ট্রং থাকবো ৷

" আজমেরী পার্লার কর্মীর কতো বড় সাহস আমার বউয়ের বেনারশী নিয়ে কটাক্ষ করে"

আমার স্পষ্ট মনে আছে এ ব্যাপারে শাকিলকে আমি কিছুই বলিনি ৷ ও জানলো কিভাবে??
৪৪৪ তম পেজে এসে বাবার মৃত্যু দিয়ে শেষ হলো এই অভিশপ্ত ডায়েরী ৷ বাবার মৃত্যুর কারণ আমাকে ধমক দেয়া ৷ ওহ নো আমি আর ভাবতে পারছিনা শাকিল একজন পিশাচ? তা না হলে এতগুলো মানুষ সাথে নিজের মা বাবাকেও মারলো শাকিল??
আর এত পিচ্চি একটা লক ডায়েরীতে এতগুলো পেইজ অথচ দেখে বোঝার উপায় নেই ৷
আমি হতবম্ভ হয়ে আছি ৷ নিজেকেই নিজের বিশ্বাষ হচ্ছে না ৷ এই মানুষের সাথে প্রায় আট নয় মাস হলো সংসার করছি কোনদিন তো তার কোন খারাপ বিহেভ দেখিনি ৷ আমি কি করবো এখন?

কলিং বেল বাজলো আমার বুকের ভেতর ধক করে উঠলো নিশ্চই শাকিল ওহ মাই গড আমি ওর সামনে গেলে যদি ও আমাকে মেরে ফেলে? ওতো সব জানতে পারে ৷ পার্লারের মহিলা আর বাবার ধমকই যার প্রমাণ ৷ দুটোর কোনটাই ওকে আমি বলিনি ও তাও জানতে পেরেছে ৷ তাহলে ওর ডায়েরী পরেছি এটাও নিশ্চই ও জানে ৷
--আপু দরজা খুলেন না ক্যান ৷
ওহহহ ময়না এসেছে শাকিল না ৷ দৌড়ে গিয়ে দরজা খুললাম ৷ ময়নাকে দেখে একটু স্বস্তি পেলাম ৷ কিন্তু আবার চিন্তা বাড়তে থাকলো ৷ আমাকে সিম্পল কথা বলার জন্য দুজন প্রাণ হারালো যদি ময়না কখনো ভুলে কিছু বলে ফেলে? তখন তো ময়নাকেও...
ওহ নো ৷ এটা হতে দেয়া যাবেনা ৷
ময়নাকে কিছু টাকা দিয়ে বাড়ী পাঠিয়ে দিলাম ৷ আমি কাউকে নিয়ে রিস্ক নেবোনা ৷ আর আমিও বাড়ী যেতে পারবো না ৷ যদি বাড়ীর কারো ক্ষতি হয়? তখন?

আমাকে থাকতে হবে এবং আমি এর শেষ দেখে ছাড়বো ৷
নাহ সব কাপড় গুছিয়ে রাখতে হবে শাকিল আসার আগেই ৷
এখন চারটা বাজে শাকিল আসবে ছয়টায় বেঁচে থাকার উপায় খুজতে আরো দু ঘন্টা পাওয়া গিয়েছে ৷ এক মিনিটও নষ্ট করা যাবেনা ৷
আমি জানি এই বাসার ভেতরই প্রশ্নের উত্তর পাবো কিন্তু তার জন্য তো সময় দরকার সেই উত্তর কোথায় আমি তা জানিনা ৷ কিন্তু যেটুকু সময় পেয়েছি এর মধ্যেই খুজতে হবে আমার ৷
স্টোর রুমে ক্লু খুজলাম কিন্তু সেখানে কালো গোলাপগুলো ছাড়া কিছুই পেলামনা ৷ গোলাপগুলো এখনো তাজা যেনো মাত্র গাছ থেকে তোলা অথচ সেদিনও ফুলগুলো টাটকা দেখেছিলাম আজও সেইম আছে ৷ আগে না বুঝলেও এখন বুঝি এগুলো পিশাচসিদ্ধ ফুল হয়তো তাই টাটকা ৷ যাই হোক রুম লক করে আমার ঘরে খুজলাম সবখানে কিন্ত কিছুই পেলাম না একঘন্টা শেষ ৷ বাবার রুমে আসলাম যদি কিছু পাওয়া যায় এখানে ৷

আমার মোটেও ভালো লাগছেনা এসব করতে কিন্তু আমার করার কিছু নেই সমাধান আমাকেই বের করতে হবে ৷ এই মূহূর্তে চাইলেই চলে যেতে পারি কিন্তু তাতে সবার জীবনের হুমকি হতে পারে তাই সেটা সম্ভব না ৷ আমার মনকে আবার শক্ত করলাম ৷ আমাকে পারতেই হবে ৷ টেনশন করলেই আমি দুর্বল হয়ে যাবো ৷ না না না নাদিয়া রিল্যাক্স ৷ তোমার কিচ্ছু হবেনা তুমি ঠিক থাকো ৷
বাবার ঘরেও কিছু পেলামনা ৷ এখন উপায় একটাই ৷ আমি জানি এটা খুবই অবান্তর উপায় আর এটার কোন লজিকই নেই তবুও এটাই শেষ ভরষা ৷
সেই কন্ঠস্বরটা যে আমার কানের কাছে দুবার কিছু বলেছিলো ৷ সে যেই হোক অবশ্যই ক্ষতি করবেনা ৷ সে বারবারই আমাকে কিছু ইঙ্গিত দিয়েছে ৷ যেমন রাত বাকী আবার গোলাপ সরাতে পারবোনা ৷ এসব কেনই বা বললো সে? আর যখনই গভীরভাবে কিছু ভেবেছি তার কন্ঠ পেয়েছি ৷

আপনি কোথায়? প্লীজ আসুন আমার দরকার আপনাকে ৷ আমি জানিনা আমি বাঁচবো কিনা কিন্তু একবার আসুন আমি জানতে চাই এই রহস্য ৷ জানতে চাই কোথার এর শেষ ৷
নাহ কোন লাভ হলোনা ছয়টা প্রায় বাজতে চললো ৷ এখনো কোন কিছুই পেলামনা আমি ৷ শুরু মানেই তো শেষ ৷ এটারও শেষ আছে কিন্তু সেটা কি? আমি কি কিছু মিস করছি? কিছু দেখেও দেখছিনা? বুঝতে পারছিনা ৷

" তু মি পা র বে না দি য়া তু মি ই পা র বে মা ম নি"

আবার সেই কন্ঠ ৷ শুনছেন? কি পারবো আমি? প্লীজ বলুন ৷ কে আপনি? প্লীজ ৷

আমার খুব কান্না পাচ্ছে কন্ঠটা আর কিছুই বললোনা ৷ ইশ কি হবে এখন?
আচ্ছা উনি আমাকে মামনি বললেন কেনো? এটা তো বাবা বলতো ৷ কিন্তু কন্ঠটা তো মেয়েলী আর বাবা বেঁচে থাকতেও এই কন্ঠ শুনেছি সো বাবা হতে পারেনা ইম্পসিবল ৷ তাহলে কে? কে বলতে পারে? কে? কে হতে পারে? কে? কে? মা????????
ইয়েস! আমার শ্বাশুড়ী মাই হবেন ৷ না হলে মামনি বলবে কেনো? তিনি মামনি বলে আমাকে হিনটস দিয়েছেন যে তিনি আমার শ্বাশুড়ী ৷ বাবার ডাকটা তিনি যানেন তাই এটাই ডেকে বুঝিয়েছেন ৷

" তু মি অ নে ক বু দ্ধি ম তী মা ম নি"

আবার! ইয়েস আমি তাহলে ধরে ফেলেছি এটা মা ৷ মা হয়তো ডিরেক্ট আমাকে কিছু বলতে পারছেননা কিন্তু তিনি আমাকে সাহায্য করতে চাইছেন ৷

Incoming call
Dark Boy........
-- হ্যা হ্যালো ৷
-- নাদিয়া আজ আসতে লেইট হবে একটু ৷
-- কেনো?
-- একটু কাজ পরে গেছে ৷ তুমি ভয় পাচ্ছো না তো?
-- ন ন না না কিসের ভয়?
-- টেক ইউর টাইম বাই ৷

ওহ গড তার মানে শাকিল জেনে গেছে সব? টেক ইউর টাইম কেনো বললো? সে দেখতে চায় আমি কি করতে পারি? সে সুযোগ দিলো আমাকে? তার মানে সে এসেই আমাকে মেরে ফেলবে? ওহ নো আর ভাবতে পারছিনা আমি ৷

চলবে...

শেষ পর্বের লিংকঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:২০
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৩:০৬

অবশেষে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এবং প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবি জানিয়েছে সে ছোটবেলা থেকেই বদমাইশ ছিল। নিজের বাপকে পিটিয়েছে, এবং যে ওষুধের দোকানে কাজ করতো, সেখানেই ওষুধ চুরি করে ধরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×