আচার আচরনও একটি ইবাদত। আর এ ইবাদতের মধ্যে ইখলাছ আছে কিনা সেটা বুঝা যাবে যখন আমি ধনি এবং দরিদ্র উভয়ের সাথে একই ধরনের আচরন করবো । ধনিদের সুক্ষদর্শিতা দেখলে খোশামদের হাসি হাসবো, তাদের ভুলত্রুটিকে তুচ্ছ জ্ঞান করে এড়িয়ে চলবো । পক্ষান্তরে গরিবের সুক্ষদর্শিতা দেখলে মজাক করবো, গরিবের ভুল পাওয়া গেলে চেচামেচি করবো। তাহলে বুঝা গেল এ আচার ব্যবহার বাণিজ্যিক।
এক্ষেত্রে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আচরন ছিল সরল। ধনি নির্ধন সবার সাথে একরকম ব্যবহার করতেন তিনি ।
আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এক ছিল বেদুইন। তার নাম ছিল যাহার ইবনে হারাম। তিনি যখন কোন কাজে মদিনায় আসতেন , তখন নবীজীর জন্য ঘি বা পনিরের হাদিয়া নিয়ে আসতেন।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও তাকে খুব ভালবাসতেন ।
যাহার ছিলেন কৃষ্ণাঙ্গ।
একদিন তিনি তার মরুগৃহ হতে বের হলেন। চলে এলেন মদীনায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাড়িতে। কিন্তু সেখানে তাকে না পেয়ে তিনি বাজারে চলে গেলেন। সঙ্গে আনা জিনিসপত্তর বেচার জন্য।
যাহােরর আসার খবর পেলেন নবীজী। এজন্য তিনি বাজারে চলে গেলেন। তাকে খোজ করার জন্য। একজায়গায় তিনি তাকে দেখতে পেলেন। দেখলেন ঘর্মসিক্ত যাহার রোদে দাড়িয়ে জিনিসপত্তর বিক্রি করছেন। কৃষ্ণাঙ্গ মানুষটির গায়ে তখন যাযাবরের পোষাক ; আর গন্ধ তো আছেই। নবীজী কাছে গিয়ে তাকে পিছন দিক থেকে জড়িয়ে ধরলেন। যাহার তাকে দেখতে পাচ্ছিলেন না। তিনি বুঝতেও পারছিলেননা যে কে তাকে জড়িয়ে ধরেছেন। তিনি সন্ত্রস্ত হয়ে বললেন, আমাকে ছেড়ে দিন .... কে আপনি?
নবীজী কোন কথা বললেন না। যাহার বেষ্টনী থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আড় চোখে একটু পিছন দিকে নজর দিলেন। দেখতে পেলেন নবীজীকে। তখন তিনি শান্ত হয়ে গেলেন। তার ভীতি দূর হয়ে গেল।
এখন তিনি রাসূলুল্লাহর বুকের সাথে নিজের পিঠ লেপটে দিতে লাগলেন।
নবীজী যাহারের সাথে মজাক করে বলতে লাগলেন -
এই গোলামটি কে কিনবে? এই গোলামটি কে কিনবে?
যাহার জানতেন নিজের হতদরিদ্র অর্থহীন শ্রীহীন অবস্থার কথা। তিনি বললেন,
আল্লাহর কসম! হে আল্লাহর রাসুল! আপনি কিন্তু খুব বেশি দাম পাবেন না।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন -
তাই বলে আল্লাহর কাছে তোমার দাম কম নয় ; তাঁর কাছে তুমি অত্যান্ত মূল্যবান।
#ইশারা : হয়ত কোন গরিব দুঃখীর তরে আপনার সামান্য হাসি, আল্লাহর কাছে আপনার মর্যাদা বাড়িয়ে দিবে অনেক গুণ।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:২১