এই সন্ধ্যায় ঠিক কোনো কাজ পাচ্ছিলাম না। গিয়ে বসলাম ড্রইং রুমে।
রিমোটের বাটন চাপতেই শুরু হয়ে গেলো গোলাগুলি। যতটুকু বুঝলাম নায়ক শাকিব খান আর অপু বিশ্বাসের বিয়েকে কেন্দ্র করে এই গন্ডগোল।
আরো যতটুকু বুঝলাম, ইহা-ই ছবির শেষ অংশ। কারণ, চারদিকে প্রায় অর্ধশতাধিক লোক তুমুল উচ্ছাসে, তুমুল আগ্রহ নিয়ে গোলগুলি করছে। মুহুর্মুহু গুলি।
প্রথম অবস্থায় বিয়ের দুই প্যান্ডেলের সামনে কোনো প্রকার আমন্ত্রিত অতিথীর দেখা না মিললেও গোলাগুলি শুরু হওয়া মাত্র কোথা থেকে যেন একদল অতিথী গোলাগুলিকে ভয়ংকর প্রমাণের জন্য ছোটছুটি করতে লাগলো।
গোলাগুলি চলছে। সে কাজগুলো চ্যালাচামুন্ডারা ভালোই করছে। কিন্তু শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করা নায়ক, নায়কের ভাই ডিপজল, ভিলেন মিশা সওদাগর, ভিলেনের ভাই ডন এবং আরো নাম না জানা পরিচিতমুখগুলো হাতে দিয়েই মারামারি চালাচ্ছিল।
এই গোলাগুলির মাঝেই গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে আছেন ছবির মুল চরিত্র দাদীমা আনোয়ারা।
এখন যায়, তখন যায় অবস্থা। তাকে ঘিরেও বসে ডায়ালগ ঝাড়ছেন ডিপজল, শাকিবখানসহ অন্যরা। একদিকে গোলাগুলির শব্দে প্রকম্পিত বাড়ীর ওঠোন তার মাঝেতেই তাদের এই অবস্থা। গুলিতো লাগছেই না। কোনো টেনশনও নেই কারো এই গোলাগুলি নিয়ে।
হঠাৎ এক ভিলেন মহিলা আবার কাকে যেন গুলি করতে উদ্ধ্যত হলে পেছন থেকে বর্ষীয়ান অভিনেতা খলিল এসে তাকে গুলি করে দেন। ওই ভিলেন মহিলা গুলি খেয়ে মাটিতে পড়ে আছেন এবং সমান উৎসাহে প্রশ্নও ছুড়ছেন, আমাকে তুমি গুলি করতে পারলে?
হায়! বাংলা ছবি।
গুলিবিদ্ধ অবস্থাতেও এই আহলাদিত কোশ্চেন।
যা হোক, তারপর শুরু হঠাৎ অবাক করে প্রায় মারা যাওয়ার রাস্তা থেকে আযরাইলকে ফেরত দিয়ে ওঠে দাড়াঁলেন। মোটমুটি করুণ দৃশ্যটা কমেডী দৃশ্যে বদলে গেলো।
পরিচালক সাহেব হয়তো ভুলেই গেছেন আনোয়ারার হাত গুলিবিদ্ধ। কারণ, হঠাৎ করে দেখা গেল গুলিবিদ্ধ হাত দিয়েই দাদীমা আনোয়ারা ম্যাডাম চোখ মুছছেন বারবার।
আমার ইচ্ছে করছিল বলি, এক্সকিউজ মি দাদীমা আপনি এই হাত দিয়ে চোখ মুছবেন না। আপনি ভুলে যাবেন না আপনার এই হাত এখন গুলিবিদ্ধ।
বিষয়টা কাহিনীকে দূর্বল করে দিচ্ছে।
যেহেতু এসব বলা গেল না, তাই এসব আমার চোখ আর সহ্য করতে পারলো না।
আমি চোখ বন্ধ করে ড্রইং রুম থেকে চলে এলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৪৫