somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অদ্ভুত প্রেমের গল্প (পর্ব ৮)

৩১ শে মে, ২০১৩ রাত ৩:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পুলক আর রীতার এখন মাঝে মাঝে দেখাও হয়। শনিবারে রীতার ক্লাস থাকে। পুলকের অফিস ওইদিন বন্ধ। তো রীতার ক্লাস এর পর ওরা দেখা করে। একটু ঘুরা ফিরা, গল্প আড্ডা চলে। যদিও রীতা বেশীক্ষণ থাকতে পারে না। সন্ধ্যার পর বাইরে থাকার অনুমতি নেই তার বাসা থেকে। তাতে পুলকের কোন অভিযোগ নেই। যতটুকু সময় কাটায় ওটাতেই সে খুশি থাকে।

রীতার ক্লাস দুইটা পর্যন্ত চলে। পুলক ক্যাম্পাসে চলে যায় ২টার মধ্যে। মাঝে মাঝে এরকমও হয় যে রীতা ক্লাস না করে পুলককে ফোন দেয় আগে আগে চলে আসার জন্য। ওর নাকি ওইদিন ক্লাস করতে ভালো লাগছে না। পরীক্ষা না থাকলে দেখা যায় শনিবার দিনটা পুরোটাই ওরা একসাথে কাটাতে পারে। দুইজনই মনে মনে শনিবারের জন্য অপেক্ষা করে। বলে রাখা ভালো যে এখনো তাদের প্রকাশ্য সম্পর্ক শুধুই বন্ধুত্ব।

সারাদিন ঘোরার পর পুলক তাকে রিকশা করে দেয়। তারা কেউ কাউকে ভালোবাসার কথা বলে না। কেউ কাউকে স্পর্শও করে না। কিন্তু তারপরও এই তথাকথিত বন্ধুত্বের বাইরেও একটা সম্পর্কের আবহকে তারা অগ্রাহ্য করতে পারে না। চোখে চোখে বহু কথা হয়ে যায় যা মুখে হাজার বার বলেও বোঝান যায় না। অন্যদের কাছে এই ব্যাপারটা যথেষ্ট ড্রামাটিক মনে হলেও ওদের কাছে মনে হয় এই তো স্বাভাবিক।

যাই হোক!! সম্পর্কের কিছু নতুন দিক আছে। রীতা পুলককে এখন তুমি সম্বোধন করে। কখন যে আপনি থেকে তুমি তে এসেছে এটা দুইজন ঠিকই জানে। কিন্তু ভাব করে এমন যে এটাই স্বাভাবিক।

আরও কিছু নতুন দিক আছে। যেমন আগে খালি পুলক রাগ করতো। এখন মাঝে মাঝে রীতাও রাগ করে। তবে তাঁর রাগ অযৌক্তিক রাগ না। যেমন পুলকের মেজাজ খারাপ হলে সে বেশীরভাগ মানুষের সাথেই উগ্র আচরণ করে। এই তো সেদিন পুলকের অফিস এর এক কলিগের সাথে দেখা ওদের। কোন কারণে পুলক একে দেখতে পারে না। তো সেই লোক চিরাচরিত ভণিতামূলক সামাজিকতা রক্ষার জন্য পুলকের সাথে অনেক বেশী সামাজিক কথাবার্তা বলার চেষ্টা করলো। কিন্তু পুলক ভান করতে একদমই ভালোবাসে না। সে মোটামুটি লোকটাকে পাত্তাই দিল না। এখন এদিকে রীতা খুবই অদ্ভুত অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েছে। এই লোক তো আর তাঁর পরিচিত না যে সে সামাজিকতাটা রক্ষা করবে। পরে বেচারা লোকটা নিজেই বিদায় নিয়ে চলে যায়।

-ঘটনাটা কী হল?
-কী ঘটনা?
-তোমার অফিস এর কলিগ। তুমি তাঁর সাথে ঠিকমত কথাই বললা না!!
-এরকম ধামাধরা লোকদের সাথে আমি কথা বলি না। এ একটা বিশ্ব ধামাধরা চামচা। সারাক্ষণ বসের পিছে পিছে ঘুরে আর এর ওর নামে বদনাম করে। অথচ সামনে দেখা হলে ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানে না।
-যেটাই হোক। উনি না হয় এরকম। তাও তুমি কেন এরকম ব্যবহার করবা?
-বাঃ! তাও তুমি ওর সাপোর্ট নিচ্ছ!!!
-আমি মোটেও ওর সাপোর্ট নিচ্ছি না। ও আমার কেউ লাগে না। কিন্তু আমি চাই না তোমাকে কেউ খারাপ জানুক, খারাপ বলুক।
-দেখ রীতা!! এই লোক দেখানো ভাল আমি কখনো হতে চাই না। এই ভদ্রতার মুখোশে থাকা লোকজনদের দলে আমি যেতে চাই না।
-আমি জানি যে তুমি লোক দেখানো না। কিন্তু আমি চাই না তুমি কারো সাথে খারাপ ব্যবহার কর। ব্যাস!! এই নিয়ে আমি কোন কথা শুনতে চাই না।
-না এটা তো হলো না। তুমি লজিক এ আস।
-কোন লজিক ফজিক না। তুমি যদি এরপরো এরকম কর। তাহলে খুব খারাপ হবে।
পুলক ভিতরে ভিতরে রীতাকে ভয় পায়। কারণ রীতা তাঁর মত হুট হাট রাগ করে না। তাঁর রাগের পিছনে সুনির্দিষ্ট কারণ থাকে। আর এই ধরনের রাগ সহজে যায়ও না। তাই সে এরকম পরিস্থিতিতে রীতার কথাই মেনে নেয়।

যথারীতি রীতাকে রিক্সা করে দিচ্ছে পুলক। তাঁদের দুইজনের বাসা দুইদিকে। রীতাকে উঠিয়ে পুলক নিজের বাসায় যাবে।
-এই রিকশা যাবেন?
-কই যাইবেন?
-মৌচাক।
-১০০ টাকা
-কি?????????????
আকাশ থেকে যেন গরম কড়াইয়ে পড়ল পুলক। রাগে তাঁর মনটা চাচ্ছে বেটার মাথায় একটা গাঁট্টা মারে। সে তাকে ভদ্র ভাষায় তুই তোকারি মুলক কিছু কথা বার্তা বলতে যাচ্ছিল কিন্তু হঠাৎ দেখল যে রীতা তাঁর দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। পুলক হাত মুঠ করে রিকশাওয়ালার দিকে ক্রুদ্ধ দৃষ্টি দিয়ে বড় বড় নিশ্বাস ফেলতে ফেলতে অন্য রিকশার খোঁজে গেলো।
রীতা নিজের মনে হাসতে লাগলো। এই পাগলকে সে কাছ ছাড়া করতে পারবে না।

(চলতে পারে)
আগের পর্বের লিঙ্ক
Click This Link
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×