সাতআটটা ঘরের লোকজনকে একটা রাস্তা ব্যবহার করে বড়রাস্তায় যেতে হয়। রাস্তাটার মাথায় মিন্টুর বৌয়ের দোকান (জট্টিল ব্যবসায়ী মহিলা), চা-বিস্কিট, শীতের পিঠা, ধুমধাড়াক্কা গান, উৎসবে বাচ্চাদের খেলনা, সন্ধ্যার পর গাজার পুরিয়া বিক্রী যেমন চালায় তেমনি মুরুব্বি দেখলে গানবাজনা বন্ধ করে ঘোমটা টেনে কয় - "লন কাকা আদা-চা খান, নাইলে কাচাঁসুপারি দিয়া পান'' মোটকথা সবাইকে খুশি রাখে।
নিজের জায়গাজমি নাই, একলোকের জায়গায় পাহারাদারির জন্য ঘর তুলে থাকে পাশাপাশি ছাগল পেলে কোরবানি ঈদে বিক্রী করে।
আশপাশের ঘরগুলোর সব অস্হির ছাগলের জ্বালায়, মিন্টুরবৌ তো থাকে দোকানেই, ছাগল দেখার লোক নাই। আজ এর সবজিক্ষেত তো কাল ওর ফুলবাগান তছনছ। অভিযোগ করলে গড়িমসি, বলে - "মাফ করে দেন, আর হবেনা।" কিন্তু আবার, আবারও একইকান্ড !!!
গাজীবাড়ীর ক্লাশ ফাইভের শান্ত ছেলে পনির মিয়া, শখের বাগানবিলাসী। আপেলকুল, পাতাবাহার, দোলনচাপা তার আদরের সংগ্রহ। ওর এটা ওটাও সাবাড় করে, সবার মতো ও চুপ থাকে, হটহট করে সরিয়ে দেয়। সহ্যের সীমা ভাঙে যখন স্কুল ফিরে দেখে আপেলকুলটার আধখাওয়া গাছটা। থানইট আর গিরাবাশঁ নিয়া ছাগলের পাল ধুমাইয়া পিটান শেষে বাড়ি ফিরল।
মিন্টুরবৌ চেচানে সেদিন সবাই বিরক্ত - "ও আমার ছাগলের হাড্ডি ছুটায়া দিছেরে , অ্যাআআ"
সকালে স্কুলে যেতে বিপত্তি বাধল। মিন্টুরবৌ পনির মিয়ারে আটকে বলল, "কানে ধরে নাকে খত দিয়ে তবেই দোকানের সামনে দিয়া যাবি"। জিদ্দি ছেলে, প্যান্ট গুটিয়ে কাদা মাড়িয়ে স্কুলে গেল। বিকাল থেকে শুরু কাজ । গুলতির টিপ পড়তে লাগল চায়ের কেটলিতে। আর রাতে ছাগলের পাল ধুমাইয়া পিটান । ঐগুলার মেৎকারে মিন্টুরবৌয়ের ঘুমহারাম।
একরাত দু'রাত কাহাতক সহ্য হয়.... আবার নতুন ঝামেলা হলো বাকি পোলাপানও গুলতির টিপ ফেলতে লাগল চায়ের কেটলিতে। ব্যবসা লাটে উঠার যোগাড়.... শেষে গাজীবাড়ী গিয়ে পনির মিয়ারে বলে - "" বাপ , তুইদোকানের সামনে দিয়া যা, আমি আমার ছাগলের পালের জন্য খোয়ার বানামু "
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ১২:৪৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




