somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কপি-পেষ্ট :D

০৭ ই আগস্ট, ২০০৮ বিকাল ৩:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শ্রমআইন সংক্রান্ত কোনএক সেমিনারে জাষ্টিস নির্মলেন্দু ধর'কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, আমাদের নতুন "বাংলাদেশ শ্রমআইন ২০০৬" -এর নানান ধারায় অসামন্ঞ্জস্যের কারন সম্পর্কে। সাধারনত নতুন আইনে নতুন নতুন সংযুক্তির সাথে সাথে পুরানো ভুলগুলোও শুধরে নেয়া হয়, আমাদের ক্ষেত্রে তা হয় না কেন?
মৃদু হেসে উনি বলেছিলেন, - একটা গল্প শোনেন, তারপর পাবেন উত্তর।


দেশের এক উচ্চপদস্হ আমলা, এক ধর্মগুরুর একনিষ্ঠ ভক্ত। গুরুর নিবাস নিউয়র্কে। অতিবৃদ্ধ গুরু শেষ বারের মতো সম্মেলন ডাকলেন, আমলা যাবতীয় কাজকর্ম ফেলে ছুটে গেলেন সম্মেলনে। সৌমক্রান্তি গুরু একটানা নানা বিষয়ে বানী দেয়ার পর হঠাৎ নিশ্চুপ হয়ে উদাস নয়নে আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকে তারপর চোখ বুজেঁ রইলেন, যেমনটা ভাব ধরে মাঝে মাঝে গুরুরা।
বেশ কিছুক্ষন পর চোখ মেলে বললেন - "অনেকদিন ধরে সবাইকে বলবো ভাবছি বলা হয়ে ওঠেনি কিছুকথা, যদিও মনে পড়ে সবসময়ই। এই যে আমার এই আমি হয়ে ওঠা, এতো সম্মান-প্রতিপত্তি, এই সবই সম্ভবপর হয়েছে এক নারীর কারনে, আমার অন্তরের কাছের সে, আমার জীবনে তার অবদান অনস্বীকার্য। ............তবে সেই নারী আমার স্ত্রী নন"।

এটুকু বলে গুরু চুপ হয়ে চোখ বুজলেন। চারপাশে জোর গুন্ঞ্জন, হতবাক সবাই। কি, বলছে কি গুরু? এতোদিনের শ্রদ্ধা, আসক্তি সব টলটলায়মান। প্রায় সবাই বীতশ্রদ্ধ। চোখ মেলে গুরু শান্তভাবে ভক্তদের প্রতিক্রিয়া দেখলেন, ফিসফাসের মাঝে গুরু হাত তোলায় থেমে যায় সব।
ভাবধরা গলায় উনি বললেন - "না, তিনি আমার স্ত্রী নন, সে নারী আমার মা"।
হাহাকার পড়ে গেল চারিদিকে। নিজেদের ছোট মনের জন্যে নিজেরাই ধিক্কার দিতে লাগল। যারা বেশি উচ্চবাচ্য করছিল, তারা কান্নায় গড়াগড়ি, ছি: ছি: নিজেদের কুটিল পাপবোধের কারনেই কুটিল ভাবনা এসেছে মনে। গুরুর প্রতি মমতা বেড়ে গেল তাদের আরো বেশি।


আর যাই শিখুক না কেন সম্মেলন থেকে মানুষকে তাক লাগানো এই পদ্ধতি জানতে পেরে আমাদের আমলা সাহেব বেজায় খুশি। অল্পক'দিন পর কি এক কারনে তার সম্মানে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো। আমলা ভাবলেন এই সুযোগ হাতছাড়া করবেন না, এটাতেই প্রয়োগ করবেন ওই ভাব লাগানো শিক্ষা। সুন্দর বক্তব্য দেবার পর, নাটকীয় ভাবে উনি গুরুর স্টাইলে শুরু করলেন, সবই ঠিকঠাক, প্রথমঅংশ বলে শেষ করার পর প্রতিক্রিয়াও পাচ্ছেন সেরকমই, চোখ বুজে উপভোগ করছেন মজা টুকু। তবে বাকিটুকু ভাবধরা গলায় বলার জন্যে যেই না চোখ মেলেছেন, সামনে পেলেন রণমূর্তিধারিনী সহধর্মীনি'কে। আমলা সাহেব ভুলেই গিয়েছিলেন যে অনুষ্ঠানে তিনিও উপস্হিত থাকবেন। বাকিটুকু বলার কিবা কোন সাফাই দেবার সুযোগ না দিয়েই সহধর্মীনি কাছে এসে শুধু - "এসো আজ বাসায়" বলেই চলে গেলেন। আর আমাদের আমলা সাহেব বারবার বলতেই লাগলেন - "না, তিনি আমার স্ত্রী নন, সে নারী আমার , সে নারী আমার ........"


সেমিনারে উপস্হিত সবার হাসি থামলে জাষ্টিস নির্মলেন্দু ধর বললেন, আমাদের বেশিরভাগ লোকেদের হাল কিছুটা আমলাসাহেবের মতোই, আমরা সবকিছু কপি করতে পারি কিন্তু পেষ্ট করার সময় খেয়াল করিনা পরিবেশ পরিস্হিতির সাথে তা খাপ খায় কিনা। তাই করেছেন আইন প্রণেতারা, নতুন সংযুক্তির সাথে পুরনোর যে সমন্বয় ঘটানোর কথা তা না করে পুরনোটা পেষ্ট করে দিয়ে "বাংলাদেশ শ্রমআইন ২০০৬" -এর নানান ধারার অসামন্ঞ্জস্যের সৃষ্টি করেছেন।


[এক অর্থে আমিও করলাম কপি-পেষ্ট, কতদূর গড়বড় করলাম আল্লাহ মালুম :D :D :D]
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০০৮ বিকাল ৩:৪০
৪৯টি মন্তব্য ৩৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×