somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সবচেয়ে ছোট মসজিদ! বাংলার বিস্ময় !!!

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সবচেয়ে ছোট মসজিদ!এত ছোট মসজিদ বোধ হয় বাংলাদেশের আর কোথাও নেই। বড়জোর তিনজনের জায়গা হবে। বগুড়ার সান্তাহার থেকে তিন কিলোমিটার দূরে তারাপুর গ্রামের প্রাচীন ওই মসজিদটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ৮ ফুট। প্রায় ৩৫০ বছরের পুরনো মসজিদ
সকাল সকাল বের হলাম তারাপুর গ্রামের উদ্দেশে। তারাসুন্দরী নামের কোনো এক নারীর নামেই নাকি গ্রামের নাম হয়েছে তারাপুর। আঁকাবাঁকা রাস্তা। গ্রামে ঢুকতেই মন ভরে গেল। সারি সারি মাটির বাড়ি। এক তলা, দোতলা। পেঁৗছে গেলাম একটা স্কুলে। সেখানেই পেয়ে গেলাম গাইড। জানিয়ে দিল কোথায় গেলে পাওয়া যাবে ওই মসজিদ। ওটাই তারাপুরের সবচেয়ে প্রাচীন স্থাপনা। গ্রামবাসীর মতে, ওটা বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট মসজিদ। কে জানে, হয়তো বিশ্বের মধ্যেও সবচেয়ে ছোট।
কিছুক্ষণের মধ্যেই পেঁৗছে গেলাম মসজিদটির কাছে। সুনসান জায়গা। জানতে পারলাম, আজ থেকে ১৫০ বছর আগে নামাজ পড়া হতো ছোট্ট এই মসজিদে। এর পর গড়ে ওঠে নতুন মসজিদ। আর যেহেতু তিনজনের বেশি দাঁড়ানোও সম্ভব নয়, তাই লোকজনও এটিতে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। ধীরে ধীরে অযত্নে ছেয়ে যায় ঝোপঝাড়। খসে পড়ে ইট।

জানালা নেই। ছোট একটা দরজা আছে শুধু। একটি ছোট গম্বুজ আর একটি মিনার। মেপে দেখলাম মসজিদটা। উচ্চতা ১৫ ফুট, দৈর্ঘ্য-প্রস্থ দুটোই ৮ ফুট। দরজার উচ্চতা ৪ ফুট, চওড়ায় দেড় ফুট। একসঙ্গে একজন মানুষই ঢুকতে পারবে। ইটের তৈরি দেয়ালের পুরুত্ব দেড় ফুট। ইটগুলোর প্রতিটি অর্ধেকই ভাঙা। মসজিদের দরজায় দুটি রাজকীয় আদলের খিলান আছে। মুসলিম স্থাপত্যের নিদর্শন সংবলিত মিনার, খিলান ও মেহরাবই এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
কে কবে এই মসজিদ নির্মাণ করেছেন তা নিয়ে আছে অনেক গল্প। গ্রামের যুবক আজমুল হুদা রিপন জানালেন, তিনি শৈশব থেকেই মসজিদটাকে এ অবস্থায় দেখে আসছেন। দাদার কাছেও গল্প শুনেছেন এ মসজিদের। দাদার কাছে শোনা গল্প অনুযায়ী, তাঁর পরদাদার আমলে নাকি এখানে শিতন নামের একজন নামাজ পড়তেন। গ্রামবাসীরা নাকি তাঁর পরিবারকে একঘরে করে দিয়েছিল। তাই তিনি নিজেই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন।

বৃদ্ধ আবদুর রাজ্জাক বললেন, 'আরো একটা গল্প প্রচলিত আছে। দাদাদের কাছে শুনেছি সাড়ে ৩৫০ বছর আগে তারাপুরে মসজিদ ছিল না। হিন্দু জমিদারদের দখলে ছিল এলাকাটি। তবে কয়েকজন মুসলমান পেয়াদা কাজ করতেন এখানে। তারাই মসজিদটি নির্মাণ করেন। জমিদারের পেয়াদা বলে মসজিদটি নির্মিত হয় বিশেষ ব্যবস্থায়। তাই দেখতে এটা রাজকীয় পুরাকীর্তির মতোই।'
গ্রামের তরুণ আরিফুল ইসলাম জনি বললেন, 'আমি শুনেছি অন্য একটা গল্প। সান্তাহারের ছাতিয়ান গ্রামে রানি ভবানীর বাবার বাড়ি ছিল। তারাপুরেও ছিল তাঁর রাজত্ব। তাই রানি ভবানীর আসা-যাওয়া ছিল এই গ্রামে। তখন তারাপুরে একজন মাত্র ধার্মিক মুসলমান নারী থাকতেন। হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা হওয়ার কারণে নামাজ পড়তে অসুবিধা হতো তাঁর। এ কথা শুনে রানি ভবানী চলে আসেন তারাপুরে। ওই মহিলার যেন নামাজ পড়তে অসুবিধা না হয়, সে জন্য রাজকীয় নকশায় একটি মসজিদ তৈরির হুকুম দেন পেয়াদাদের।'

তবে শিশুদের সঙ্গে কথা বলে মনে হলো মসজিদটি নিয়ে কিছু ভ্রান্ত ধারণা পোক্ত হয়ে আছে। রাসেল বলল, 'কোনো এক হুজুর নাকি এখানে কয়েক জিনকে বোতলে ভরে এই মসজিদে আটকে রেখেছে। এ জন্য তারা মসজিদের আশপাশে আসে না।' সংস্কারের অভাবে মসজিদটির এখন ভগ্নদশা। অথচ ঠিকমতো সংরক্ষণ করা হলে এটি দেশের প্রত্নতাত্তি্বক নিদর্শনের তালিকায় অনন্য হয়ে থাকবে। তাই এটা সংরক্ষণে প্রশাসনের যথাযথ পদক্ষেপ আশা করছেন গ্রামবাসী।
১৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×