somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভাষা প্রকাশের দীনতা

১৫ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মনের ভাব প্রকাশের সরল এবং সহজ মাধ্যমই ভাষা। শিশুর প্রথম বুলিই শুরু হয় তার আশেপাশের মানুষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে। এমন বাবা-মা পাওয়া যাবেনা যারা তাদের কে মা বাবা ডাকার জন্য শিশুটিকে উতসাহিত করেনি। বাবার চাইতে শিশুর বেশী কাছাকাছি থাকে মা, তাইতো প্রথম বুলি মা দিয়েই শুরু হয়। মা যে ভাবে কথা বলবে শিশুটির কথার ধরণও তেমন হবে, সেটাই মাতৃভাষা। মা ডাক শুনে খুশি হলেও বিদ্যালয়ে ভর্তির কথা আসলে ইংরেজী মাধ্যমটাকেই প্রাধান্য দেয়া হয়। গিলতে না পারলেও বাচ্ছাকে জোর করে শেখানো হয় বিদেশী ভাষার বই। আর বাচ্ছা যদি ফটাফট ইংরেজি বলে তাহলেতো সোনায় সোহাগা।

ভাষা ভাষীর ভিত্তিতে বাংলাদেশে তিন শ্রেনীর মানুষের বসবাস।
১) উচু স্তরের মানুষঃ এরা ভদ্রতার মুখোশ পরে থাকে এবং প্রচুর অভিনয় করতে পারে বাংলাকে ভালবাসার, আদতে তারা বাংলাকে চরম ভাবে ঘৃনা করে। ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবি এরা এ শ্রেনীতে পড়ে। তাদের প্রধান ভাষা ইংরেজী শুধু মাত্র জনগনের কাছা কাছি আসার জন্য, জনগনকে ধোঁকা দিতে তারা কদাচিত বাংলার ব্যবহার করে। দাপ্তরিক কিংবা কূটনৈতি সহ পারিবারিক ক্ষেত্রেও তারা ইংরেজীর ব্যবহার নিশ্চিত করে।
২) সাধারণ জনগনঃ বাংলা ভাষাকে যদি কেউ মনেপ্রানে পালন করে তারা হলো সাধারণ জনগন। তারা সংখ্যায় বেশী হলেও রাজনীতিবিদ কিংবা ব্যবসায়ীদের মতো এতো ক্ষমতাশালী নয় বলে তাদের বাধ্য হয়ে শিখতে হচ্ছে ইংরেজি। এ ক্ষমতাহীনতার কারণেই তাদের অনিচ্ছা স্বত্তেও তারা নিজেরাই তিলে তিলে নিঃশেষ করে চলছে প্রাণের বাংলাকে।
৩) আঞ্চলিক ভাষা-ভাষীঃ ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে এরা তাদের আঞ্চলিক ভাষাকেই প্রাধান্য দেয়। তারা শুদ্ধকরে বাংলা বলতে পারেনা অবশ্য বাংলা শেখার প্রতি তাদের কোন আগ্রহও নেই, তারা প্রবল আগ্রহ নিয়ে শিখতে চায় ইংরেজি। ইয়েস, নো, ভেরীগুড় এর মত ভুল ইংরেজি ভুল জায়গায় প্রয়োগ করে নিজেকে অনেক বড় মনে করে।

তবুও বাংলাদেশের মানুষ এবং সরকার বাংলা নিয়ে গর্ব বোধ করে, আদতে তারা কতটুকু সক্রিয় বাংলার ব্যবহারে? বাংলাদেশের ব্যাংক, কর্পোরেশন, বিচারালয়, সচিবালয়, বিশ্ববিদ্যালয় সব জায়গায় শুধু ইংরেজিরই জয় জয়কার। প্রকৌশল এবং প্রযুক্তির বিষয়েতো কিছুই বলার অপেক্ষা রাখেনা। আজকাল ইংরেজি না পারলে তাকে শিক্ষিত হিসেবেই ধরা হয়না। এ হীনমনতাকে পূঁজি করে অল্প সময়ে ইংরেজি শেখানোর ব্যবসা করে যাচ্ছে ম্যানটোরস্, স্পীড, এফ এম মেথড, সাইফুরস্ সহ বিভিন্ন সুবিধাবাদী প্রতিষ্ঠান।
বাঙ্গালী মুসলমানরা ভাষার প্রতি খুব আবেগ প্রবন, বাংলাকে সর্বস্তরে চালু করার দাবিও পেশ করে সব সময় কিন্তু নিজের ছেলেকে মাদ্রাসায় দিতে না পারলেও আরবি কোরান কিন্তু পড়া চাই, তা সে বুঝতে পারুক আর না পারুক। আরে ভাই আল্লাতো সকল ভাষা বোঝার কথা সে ক্ষেত্রে বাংলা কোরান পড়লে সমস্যাটা কোথায়?
বাংলাকে আরো আড়ষ্ট করে আছে ভারতীয় টিভি মাধ্যম, হিন্দী ভাষার ব্যঙ্গ চিত্র (কার্টুন), ধারাবাহিক (সিরিয়াল), চলচ্চিত্র, গান। এসব বিনোদনের মাধ্যম হলেও তাদের ভাষায় প্রভাবিত হচ্ছে বাঙ্গালীরা। এ প্রভাবটা খুব বেশী পরিবর্তন করে চলছে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে।
কিন্তু এ বাংলা ভাষার জন্যই আন্দোলন করেছিল, রাজপথ রাঙ্গিয়েছে বুকের তাজা রক্তে, জেল নির্যাতন কোনটাকেই গায়ে মাখেনি তারা। আজকের বাংলা ভাষা যে অবস্থায় এসে পোঁছেছে ভাষা শহীদরা যদি উঠে এসে দেখতো, লজ্জায় ঘৃনায় তারা আবার আত্ব হত্যা করতো।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩০
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×