somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবীর বিচিত্র ইতিহাস । সত্য কাহিনী সিরিজ- ১

১৩ ই নভেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয় ব্লগার ভাই-বোনেরা ,

বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীর বয়স ৪.৬ বিলিয়ন । কোটি কোটি বছর পার হয়ে গিয়েছে । আমরা কয় জনে জানি পৃথিবীর সঠিক ইতিহাস ?



কি কি উত্থান - পতন ঘটেছে এই পৃথিবীর বুকে ?আর কিভাবেই বা জানব ? আমরা মানুষেরা আর কয় বছর বাচি ? বেশি হলে একশ বছর । গড়ে ৭০/৮০ বছর । আধুনিক বিজ্ঞানের গবেষণার ফলে যা জানি তাই । এমন যদি হতো আমরা অতীতে ফিরে যেতে পারতাম টাইম মেশিনে করে, তবে দেখে আসতে পারতাম আগেকার মানুষের জীবন যাত্রা কেমন ছিলো । তাহলে কতইনা ভাল হতো । অনেক কিছু জানতে পারতাম । কিন্তু সেটা তো হচ্ছে না । তাই এখন এমন একজন ব্যক্তির বক্তব্য দেয়া হলো যিনি সত্যি সত্যি অনেক দিন ধরে বেচে আছেন এবং পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বেচে থাকবেন । চলুন দেখা যাক ওনার কথা থেকে আমরা কিছু শিখতে পারি কিনা , জানতে পারি কিনা !

অনেক দিন আগের কথা । বনি ইসরাঈলী এক রাজার সাথে হযরত খাজা খিজির (আঃ) এর সঙ্গে দেখা হয়েছিলো । রাজা খিজির (আঃ) কে উদ্দেশ্য করে বল্লেন, 'জনাব, আমার অনেক দিনের শখ আপনার কাছ থেকে কিছু বিচিত্র গল্প কাহিনী শুনব । আপনার মত জ্ঞানী-গুনী এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তি এই পৃথিবীতে খুব কম । দৃশ্য-অদৃশ্য অনেক কিছুই আপনার জানা । জলে-স্হলে, আকাশে, পাতালে সর্বত্রই আপনার অবাধ বিচরণ । আপনার জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা থেকে দয়া করে আমাকে কিছু শুনান ।'

খিজির (আঃ) বল্লেন,'পৃথিবীর কত ঘটনাইতো বিচিত্র । আবার অনেক আজব ঘটনাই অনেকের কাছে আজব বলে মনে হয়না । তবে ছোট্ট একটি ঘটনা আমি বলব যা থেকে বোঝা যাবে দুনিয়াটা কত অদ্ভুত ।

'হাজার বছর আগেকার কথা । আমি একটি বড় শহরের উপর দিয়ে যাচ্ছিলাম । শহরটি অত্যন্ত জনবহুল এবং সমৃদ্ধশালী ছিল । শহরের অধিবাসীদের আমি জিজ্ঞেস করলাম, 'কত বছর আগে এই শহরের গোড়াপত্তন হয়েছে ?' কিন্তু কেউ এর সঠিক জবাব দিতে পারল না ।

'পাচশো বছর পর আবার আমি সেই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলাম । কিন্তু তখন সেখানে কোন শহরের অস্তিত্ব নেই । জায়গাটা ঘন বন জঙ্গলে পরিণত হয়েছে । দেখলে মনেই হয়না যে এখানে একসময় একটি বড় শহর ছিলো ।
'আমি লোকজনকে জিজ্ঞেস করলাম, 'এখানে যে একটি বড় শহর ছিলো সেটির কি হলো ?' লোকেরা অবাক হয়ে বলল,"কি যা তা বলছেন আপনি ? এই জঙ্গলে আপনি শহর দেখলেন কোথায় ? আপনার মাথা কি খারাপ হয়ে গেলো ? আমার জীবনেও শুনিনি যে এখানে কোন শহর ছিলো ।"

'আরও পাচশো বছর পরে আবার আমি সেই জায়গা দেখতে গেলাম । তখন সেখানে কোন বন জঙ্গলের চিহ্নও নেই । সেখানে খুব বড় ও খরস্রোত নদী প্রবাহিত হচ্ছে । নদীতে জাল ফেলে জেলেরা মাছ ধরছে ।

'জেলেদের জিজ্ঞেস করলাম,'ভাই সব এখানে যে একটা ঘন বন ছিলো তার কি হলো ?"

ওরা আমার কথায় হেসে উঠল, " এখানে বন ছিলো সেকথা আপনি কোথায় শুনলেন ? দেখতে পাচ্ছেন না কত বড় একটি নদী বয়ে যাচ্ছে, কখনও আমরা শুনিনি যে এখানে কোন বন ছিলো ।"

আরও পাচশো বছর পর আমি সেই জায়গা দিয়ে যাচ্ছিলাম । কিন্তু সেখানে কোন নদী দেখতে পেলাম না । জায়গাটা বিরাট এক খোলা ময়দানে পরিণত হয়েছে ।নদীটি ভরাট হয়ে গেছে ।

'এলাকার লোকজনকে জিজ্ঞেস করলাম, "এখানে যে একটি বড় নদী ছিল তার কি হয়েছে, বলতে পারো ?"

লোকজন আমার কথায় দারুন বিস্মিত হয়ে বলল, " কি বলছেন আপনি ? নদী ! এখানে নদী কোথা থেকে আসবে । বাপদাদার আমলেও তো কখনও শুনিনি যে এখানে কোন নদী ছিল । আপনার মাথা ঠিক আছে তো ভাই ? "



'এবং আরও পাচশো বছর পর ওই জায়গা দেখার জন্য আমি আবার গিয়েছিলাম । তখন সেখানে খোলা মাঠ চোখে পড়ল না । মাঠের জায়গায় শোভা পাচ্ছিল এক বিরাট শহর । এটা প্রথম শহরটার চেয়ে জনবহুল ও সমৃদ্ধ ছিল ।

'আমি শহরের লোকজনকে জিজ্ঞেস করলাম, "কখন থেকে এই শহরের গোড়াপত্তন হয়েছে কেউ বলতে পারো ?"

"সেটা কি করে বলব," জবাব দিল লোকেরা । "শত শত বছর ধরেই এই শহর এখানে রয়েছে । এর কোন সঠিক তারিখ কেউ বলতে পারেনা ।"

' আমি হেসে তাদের কাছ থেকে বিদায় নিলাম ।'

এই গল্প বলে হযরত খিজির (আঃ) বণি ইসরাঈলী রাজার দিকে তাকিয়ে বললেন, 'এখন আপনিই বলুন এই ঘটনা কি বিচিত্র নয় ?'

এই বলে খাজা খিজির (আঃ) রাজার সামনে থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলেন ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:৪৩
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×