সনাতন ধর্মের শ্রী-কৃষ্ণ ও শ্রী-রাম কি নবী ছিলেন ? নিম্নে এ বিষয়ে সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করছি বিভিন্ন তথ্যের আলোকে ।

সুচনাঃ

সনাতন ধর্মের প্রেরিত পুরুষ বা পথ প্রদর্শক বলতে অবতার বুঝায় ।
অবতার এর শাব্দিক অর্থ জমিনে আসা । ঈশ্বরের অবতার অর্থ মানুষদেরকে আল্লাহতা'আলার পয়গাম শোনানোর জন্য মহান ব্যাক্তির জমিনে প্রেরিত হওয়া বুঝায় । ' সংষ্কৃতের মধ্যে "অবতার" ইংরেজীতে "প্রফেট" এবং আরবীতে "নবী" - দুনিয়ার মুক্তির পথ প্রদর্শনকারী আল্লাহর প্রেরিত ব্যক্তিদের বলা হয় ।' (হিন্দু-মুসলিম একতা ঃ সুন্দর লালজী পৃ-২৯-৩০)

আল-কুরআন কি বলে ?
কুরআনে আল্লাহপাক উল্লেখ করেছেন, প্রত্যেকটি জাতি এবং ভূ-খন্ডের জন্য নবী এসেছেন । যেমন,
'প্রত্যেক জাতির জন্য একজন পথ প্রদর্শক ' (১৩ৎ৭) ।

'এমন কোন সম্রপ্রদায় নেই যাদের মধ্যে একজন সতর্ককারী না গেছেন ' (৩৫ঃ২৪)

We sent not an apostle except (to teach) in the language of his (own) people, in order to make (things) clear to them. (14:4)

...For each period is a book (revealed). (13:38)

অন্যান্যদের মতামতঃ
ভারতের দারুর উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আবুল কাসেম নানতুবী রামচন্দ্র ও কৃষ্ণ সম্পর্কে কোন বেআদবীপূর্ণ উক্তি করতে মানা করতেন, কারণ তাদরে ধারণায় তাদের নবী-রাসূল হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না ।

শ্রী-কৃষ্ণ

সনাতন ধর্ম থেকে ঃ

১.
মহাঋষি ব্যাসজীর লিখিত ভবিষ্য পুরাণ ( একে ব্রক্ষার এলহাম মনে করা হয়) । বেদব্যাসজী পথপ্রদর্শক কৃষ্ণজীকে, পরিপূর্ণ আলোকময় সত্তা হযরত মুহম্মদ (সঃ) এর খিদমত করার আকাংখা প্রকাশ করতে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, -'হে আমাদের পথ প্রদর্শক, যে ধর্মগুরুর নাম জগৎগুরু, যিনি আগমণ করবেন কলিকালে সেই মহাগুরু যখন সত্য সত্যই আসবেন তখন তার সাথে আপনি কি ব্যবহার করবেন ?' কৃষ্ণ তখন সুষ্পষ্টভাবে জওয়াব দিলেন-

'হে ভ্রাত ! আসব যখন আবার আমি
আসব আমি উমরের রৃপ ধরে । (শ্রীকৃষ্ণ লীলা, ২য় খন্ড)

এ শ্লোকটি অত্যন্ত আশ্চর্যজনক বিস্ময়কর একটি রহস্য উম্মোচন করেছে । এর মধ্যে কুরআন শরীফের একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অর্ন্তনিহতি রয়েছে । সমস্ত নবী রাসূল তথা সকল পথ প্রদর্শককে স্বীকারোক্তি ও তার অনূসারীদের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত আল-কুরআন এভাবে বর্ণনা করেছে-
'তোমরা তার (মুহাম্মদ (সঃ)) প্রতি ঈমান আনয়ন করবে এবং তাকে সাহায্য করবে । (সূরা আল-ইমরান -৮১)

২.
আর এক মন্ত্রে শ্রীকৃষ্ণজী নীচে প্রদত্ত কথাটির মাধ্যমে অর্জুনকে হুকুম দিয়েছিলেন যেন সে জালেম এবং অসৎ লোকদেরকে ধ্বংস করে দেয় ।
' হে কুন্তীর ছেলে অর্জুন, যদি শহীদ হও, জান্নাতে প্রবেশ করেব । অথবা যদি বিজয়ী হও, রাজক্ষমতা লাভ করে রাজত্ব করতে পারবে । সুতরাং যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হয়ে যাও । দরুন, ভীষ্ম, দকরন এইসব সাহসী বীরদেরকে খতম করে দিয়ো, কোন দুশ্চিন্তা করার প্রয়োজন নেই, যুদ্ধের ময়দানে তোমাদেরই বিজয়ী হবে এবং তুমি বিজয়ী হয়ে ফিরে আসবে ।' (ভগবৎ গীতা)

৩.
প্রাচীন যুগ হতে প্রত্যেক ধর্মে কুরবানী বা উৎসর্গের রীতি চালু আছে । কুরবানীর সময় এলে শ্রীকৃষ্ণ পশু কুরবানী করেছেন । এর মধ্যে একটি গাভীও ছিলো । (ভগবত, দশম স্কন্দ, অধ্যায়-৫৮)

৪. এছাড়াও শ্রী-কৃষ্ণের জীবনী থেকে আমরা জানি তিনি ছোটবেলায় মেষপালক ছিলেন, যা ইসলামের অনেক নবীর জীবনীতেও আমরা পাই । এছাড়াও ওনার জন্মের পূর্বে উনার জন্মকে ঘিরে ভবিষৎ বাণী ও করা হয়েছিলো বলে জানতে পারি ।

হাদিসঃ
I found a Hadees but I am not sure of its authenticity, as I could not relate it to a well-known collection of Hadees. It claims that Prophet Muhammad said “Kanna filhindhi nabiyyun asvadhul lavni ismuhoo Kahina” meaning “A Prophet appeared in India. He was black in complexion. His name was Kahina”. This is reported to be mentioned in the book ‘Firdowsul Akbar’ by Hazrat Thylami. If this is true, which I could not find a way of ascertaining, it quite clearly mentions about Sri Krishna who had a dark complexion and was in his childhood lovingly called kanha. "Mirza Faisal -http://indianmuslims.in"

শ্রী-রাম

হুনুমানজী রামজীর নিকট জিজ্ঞাসা করেন- 'হজুর ! উপাসনা কিভাবে করা উচিত ?' প্রতি উত্তরে রামজী বলেছেন -'প্রথমে দাড়াও, অতঃপর সেজদা কর, অতঃপর বস, অতঃপর অর্ধচন্দ্র হয়ে যাও, অতঃপর একটি বিন্দুতে ধ্যানমগ্ন হয়ে যাও (মুরাকাবাহ কর), ধ্যনমগ্নতা জ্যোতির এক রৃপ ।' (শ্রীরাম তত্ত্ব) ।
ইহা ইসলামী নামাজের সাথে সামন্জস্য রাখে । নামাজ নুর এবং মহান আল্লাহর নির্দেশ এবং আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবীর নূর । শ্রীরামজী উপাসনায় ধ্যানমগ্ন হওয়ার কথা বলেছেন । মুসলমানরাও নামাজ শেষে মুনাজাত মুরাকাবায় নিজেকে হারিয়ে ফেলে ।

উপসংহারঃ

এটি একটি আলোচনা কোন সিদ্ধান্ত নয় । কেননা সঠিক সত্যটা একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই বলতে পারবেন । আল-কুরআনে আল্লাহ বলেন,
'মানব জাতি হচ্ছে একই জাতি । কাজেই আল্লাহ উত্থাপন করলেন নবীদের সু-সংবাদাতা রুপে এবং সতর্ককারীরুপে । (আল-বাকার -২১৩)"

তথ্য সূত্র-
এখানে দেখুন.......

--জগদগুরু মুহাম্মদ (সাঃ) , শায়খুল উবুদিয়া ইমাম সাইয়েদ মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ ইবনে আবদুহু আল-হোসাইনী । রেনেসাঁ পাবলিকেশন্স ।

----আল-কুরআন ।

চলবে...........