প্রথা বিরোধী লেখক হিসেবে সুপরিচিত হুমায়ুন আজাদ। যে কোন বিষয়ে তাঁর তীব্র প্রকাশভঙ্গী আকর্ষণ করে পাঠক মন। উনার 'প্রবচন গুচ্ছ'পড়েন নাই বা নাম শুনেন নাই এরকম পাঠক বিরল। আমার পছন্দের কিছু প্রবচন এখানে তুলে দিলাম।
"ক্ষমতায় যাওয়ার একটিই উপায়ঃ সমস্যা সৃষ্টি করা। সমস্যা সমাধান করে কেউ ক্ষমতায় যায়না, যায় সৃষ্টি করে"
"ইতিহাস হচ্ছে বিজয়ীর হাতে লেখা বিজিতের নামে একরাশ কুৎসা"
"বিপ্লবীদের বেশি দিন বাঁচা ঠিক নয়। বেশি দিন বাঁচলেই তারা প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে"
সৎ মানুষ মাত্রই নিঃসঙ্গ, আর সকলের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু"
"ফুলের জীবন বড়ই করুণ। অধিকাংশ ফুল অগোচরেই ঝরে যায়, আর বাকিগুলো ঝোলে শয়তানদের গলায়"
"বাঙালীর জাতিগত আলস্য ধরা পড়ে ভাষায়। বাঙালী 'দেরি করে', 'চুরি করে', 'আশা করে' এমনি 'বিশ্রাম করে'। বিশ্রামও বাঙালীর কাছে কাজ!"
"বাঙালী জীবিত প্রতিভাকে লাশে পরিণত করে, আর মৃত প্রতিভার কবরে আগরবাতি জ্বালে"
"বিশ্বের নারী নেত্রীরা নারীদের প্রতিনিধি নয়; তারা সবাই রুগ্ন পিতৃতন্ত্রের প্রিয় সেবাদাসী"
"বান্ঞ্ছিতদের সাথে সময় কাটাতে চাইলে বই খুলুন, আর অবান্ঞ্ছিতদের সাথে সময় কাটাতে চাইলে টেলিভিশন খুলুন"
"ক্ষুধা ও সৌন্দর্য্যবোধের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। যে সব দেশে অধিকাংশ মানুষ অনাহারী, সেখানে মাংসল হওয়া রূপসীর লক্ষণ। এজন্যেই বাংলা ফিল্মের নায়িকাদের দেহ থেকে মাংস ও চর্বি উপচে পড়ে। ক্ষুধার্ত দর্শকেরা সিনেমা দেখে না, মাংস ও চর্বি খেয়ে ক্ষুধা নিবৃত্ত করে"
"অধিকাংশ রূপসীর হাসির শোভা মাংসপেশির কৃতিত্ব, হৃদয়ের কৃতিত্ব নয়"
"যারা ধর্মের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেয় তারা ধার্মিকও নয়, বিজ্ঞানীও নয়। শুরুতেই স্বর্গ থেকে যাকে বিতাড়িত করা হয়েছিলো, তারা তাদের বংশধর"
"বাঙালী আন্দোলন করে, সাধারণত: ব্যর্থ হয়। কখনো কখনো সফল হয়; সফল হওয়ার পর বাঙালীর মনে থাকেনা কেন তারা আন্দোলন করেছিলো"
"বাঙলাদেশের প্রধাণ মূর্খদের চেনার সহজ উপায় টেলিভিশনে কোন আলোচনা অনুষ্ঠান দেখা। ওই মূর্খগুলির মধ্যে উপস্থাপকটি হচ্ছেন মূর্খশিরোমণি"
হুমায়ুন আজাদের আরো অনেক প্রবচন আছে, আপনাদের পছন্দেরগুলো শেয়ার করতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০১০ রাত ১০:১৫