যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল দুমড়ে মুচড়ে দেওয়ার পর দেশটির সবচেয়ে জনবহুল শহর নিউ ইয়র্কে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় আইরিন।
প্রচণ্ড ঝড়ো বাতাস আর প্রবল বৃষ্টিতে এক প্রকার অচল হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত নিউ ইয়র্কের জনজীবন। শহরের গণপরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে, অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। নর্থ ক্যারোলাইনা, ফ্লোরিডা ও ভার্জিনিয়ায় অন্তত নয় জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
৭৮০ কিলোমিটার ব্যাপ্তির এই ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রস্থল (চোখ) কেপ লুকআউটের কাছ দিয়ে নর্থ ক্যারোলাইনা উপকূল অতিক্রম করে স্থানীয় সময় শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার (বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টা) দিকে। প্রথম আঘাতেই বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। ঝড়ো বাতাস ও প্রবল বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয় বন্যা পরিস্থিতির।
নর্থ ক্যারোলাইনা ও ভার্জিনিয়ার অন্তত ৬ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সময় রাত ২টার দিকে নিউ ইয়র্কেও শুরু হয় ঝড়ের তাণ্ডব। এর আগেই নগর কর্তৃপক্ষ বাস সার্ভিস, সাবওয়ে ও বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয়। নিউ ইয়র্কের নিচু এলাকা থেকে সরে যেত বলা হয় সাড়ে ৩ লাখেরও বেশি মানুষকে। ব্র"কলিন, কুইনস ও ম্যানহ্যাটনের অনেক অধিবাসীকেও সরে যেতে হয়।
আইরিন 'বড় ও বিপজ্জনক' ঝড় হতে পারে বলে আগেই সতর্ক করে দেওয়ার পর নিউ ইয়র্ক, নরফোক ও ভার্জিনিয়াসহ বড় শহরগুলোর ২০ লাখের বেশি মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ।
নিউ ইয়র্কের মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গ বলেন, আইরিনের আঘাতে প্রাণহানিসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, ঘূর্ণিঝড় আইরিনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ 'নজিরবিহীন' হতে পারে। অবকাশ সংক্ষিপ্ত করে শনিবার ওয়াশিংটনে ফিরে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি।
আইরিন আঘাত হানার আগেই রাজধানী ওয়াশিংটনসহ পূর্ব উপকূলের সাতটি রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে, স্থলভাগে চলে আসায় আইরিনের ভয়াবহতার মাত্রা দ্বিতীয় ক্যাটাগরি থেকে প্রথম ক্যাটাগরিতে নেমে এসেছে। তারপরও ঝড়ের কেন্দ্রে ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের প্রায় সব বড় শহরগুলোই আইরিনের আওতার মধ্যে রয়েছে।
বর্তমানে পূর্ব উপকূল ধরে ধীরে ধীরে উত্তর দিকে সরে যাচ্ছে এ ঘূর্ণিঝড়।
এ বছর একের পর একে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিল করতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষকে। বন্যা, টর্নেডো আর তাপদাহে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এরই মধ্যে ৩৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। আইরিনের আঘতে এর পরিমাণ আরো কয়েকশ কোটি ডলার বাড়বে বলেই ধারণা করছে কর্তৃপক্ষ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




