somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চে পার্ট ওয়ান: এক বিপ্লবীর জীবন কাহিনী

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা চে’কে চিনি তার বিপ্লবী ভূমিকার কারণে। তার নেতৃত্বেই ফিডেল ক্যাস্ট্রো কিউবাকে স্বৈরাচারী সরকারের হাত থেকে রক্ষা করেন। আপনারা অনেকেই জানেন, ফিডেল দীর্ঘ দিন কিউবা শাসন করছেন। এবং বর্তমানে তারই ছোট ভাই রাউল ক্যাস্ট্রো কিউবা শাসন করছেন। রাউলও তখন বড় ভাই ফিডেল এবং চে’র সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। অনেক তরুণকে টি শার্টে চে’র ছবি বুকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। অনেকের কাছেই চে ভালোলাগা একজন বিপ্লবী। আর এ চে’কে নিয়েই অস্কার উইনার ডিরেক্টর স্টিভেন সডারবার্গ বিশ শতকের অন্যতম প্রভাবশালী পলিটিকাল ব্যক্তিত্বের ওপর মুভি তৈরি করেন।

চে গুয়েভারা আর্জেনটিনার এক তরুণ ডাক্তার। তখন কিউবায় ক্ষমতায় ছিলেন দুর্নীতিবাজ ডিক্টেটর ফালগেনসিও বাটিস্টা। চে’র মধ্যে একটি বিশেষ গুণ ছিল। তার কাছে মানুষ এলেই ইমপ্রেসড হয়ে যেত। আর তাই অচিরেই তার সৈন্য সংখ্যা বাড়তে থাকল। এবং তিনি গেরিলা আন্দোলনের নেতায় পরিণত হন। এক পর্যায়ে অনেকেই চে’র বাহিনীতে যোগ দিতে আসতে লাগল। কিন্তু চে তাদের সবাইকে নিতে চাননি। কারণ সবাই গেরিলা হলেই দেশ স্বাধীন হয় না। চে গেরিলা বাহিনীর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের লোক চাচ্ছিলেন। যেমন পরবর্তী সময়ে যারা গেরিলা বাহিনীতে যোগ দিতে আসতেন তারা শিক্ষিত কি না তা চে জানতে চাইতেন। এর ফল বোঝা যায় যখন বাটিস্টা বাহিনী তাদের আস্তানায় আঘাত করে তখন তাদের বলতে শোনা যায় চে’র বাহিনী খুবই শক্তিশালী এবং পরিকল্পনা মাফিক চলে।তারা যে শুধু যুদ্ধই করছিল তাই নয়, তারা জাতিসংঘসহ বিভিন্ন ফোরামের অধিবেশনে যোগ দিতেন। এতে করে তারা কেন যুদ্ধ করছেন তা যেমন বিশ্ববাসী জানতে পারতেন, তেমনি তাদের দেশের মানুষও জানতে পারতেন। আরেকটি দিক হলো চে চাচ্ছেন স্বৈরশাসনের অবসান এবং আমেরিকানদের কবল থেকে মুক্তি।

নেতা হতে হলে যে গুণগুলো থাকা দরকার তার বেশিরভাগেরই সমন্বয় ঘটেছিল চে’র মধ্যে। তার দলের কিছু লোক গাড়ি লুট করলে চে গাড়ি থামিয়ে তা ফেরত দিয়ে আসতে বলেন। এমনি আরো অসংখ্য ঘটনা রয়েছে যা চে সম্পর্কে সম্মান আরো বাড়িয়ে দেবে।

ইতিহাস বা জীবনীনির্ভর মুভি তৈরি করতে হয় খুবই সতর্কভাবে। কারণ হলো এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে ইতিহাস। কোনো দেশের ইতিহাস নিয়ে মুভি তৈরি করতে গেলে পরিচালককে সতর্ক থাকতে হয় সে দেশের ইতিহাসকে বিকৃত করা হলো কি না। আর জীবনীনির্ভর মুভির ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হয় মানহানিকর কোনো বিষয় তুলে ধরা হয়েছে কি না। কারণ, যাদের নিয়ে মুভি তৈরি করা হয় তারা হয়ে থাকেন খুবই সম্মানীয় নতুবা নিন্দনীয়। মানহানিকর বা যথাযথভাবে তুলে ধরা না হলে পরিচালকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হতে পারে। এমন কি মুভির ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলাও হতে পারে। তারপরও প্রতিভাবান পরিচালক অনেক সময় নিয়ে রিসার্চ করে মুভি তৈরি করেন। যেমন, চে’র চরিত্রে অভিনয় করা অভিনেতা ডেল টরো সাত বছর ধরে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর রিসার্চ করেছেন এবং বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছেন, কথা বলেছেন। এর মধ্যে কিউবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিডেল ক্যাস্ট্রোও ছিলেন।

২০০৮ সালের ৪ ডিসেম্বরে মায়ামি বিচে আর্ট ব্যাসল ফেস্টিভালে চে পার্ট ওয়ান মুভির প্রিমিয়ার হয়। সেখানে কিছু লোক এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে। পরে ডেল টরো বলেন, এর কারণ হলে তারা মুভিটি না দেখেই বিক্ষোভ করছেন। কান মুভি ফেস্টিভালে মুভিটিকে মাস্ট সি মুভি হিসেবে ধরা হয়েছিল। সেখান মুভি ক্রিটিকরা বলেন- এটা একটি ব্রিলিয়ান্ট কাজ যা দর্শককে আনন্দ দেবে। আবার কেউ কেউ বলেন, এটা যে শুধু রেভলিউশনের ওপর তৈরি করা মুভি তাই না, মুভিটি নিজেই একটি রেভলিউশন। তবে, কিছু ক্রিটিক বলেছেন মুভিটিকে টেনে লম্বা করা হয়েছে এবং দুটি পার্টে ভাগ করা হয়েছে। আর মুভিটিতে চে’কে যে ভাবে দেখানো হয়েছে তার থেকে বাস্তব জীবনে তিনি আরো অনেক চটপটে এবং শিক্ষিত ছিলেন।মুভিটি সবারই ভালো লাগবে নিঃসন্দেহে বলা যায়। একই সঙ্গে বায়োগ্রাফি, ড্রামা, হিস্ট্রি এবং যুদ্ধনির্ভর এ মুভিটি রিলিজ পায় ২৪ জানুয়ারি ২০০৯-এ আমেরিকাতে। স্টিভেন সডারবার্গ পরিচালিত এ মুভিটিতে অভিনয় করেন বেনেকিও ডেল টরো, কুলিয়া অর্মন্ড প্রমুখ। এ পর্যন্ত মুভিটি তিনটি পুরস্কার ও আটটি নমিনেশন পেয়েছে।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×