ব্যারিস্টার মওদুদ আহামেদ কে রিমান্ডে নেয়া হোউক
শিরনাম দেখে পাঠক, একটু অবাক হতে পারেন। মনে করতে পারেন যে, উনি আবার কি করল? মাপুজ(ইডা রহমানের……)পাগলার মত উল্টা-পাল্টা কিছু বলে, ধরা খাইলো? নাকি ইলিয়াসের স্ত্রী উনার দিকে কোনা ইঙ্গিত করল? না, উনি এত ছোট খাট লোক না, মশা মেরে হাত ময়লা করেন না উনি।
উনি বয়সে আমার অনেক বড়। আমর বাবার চাইতেও অনেক বড়। আমার জন্মের প্রায় আগে আগে তিনি already বাংলাদেশের জন্য, দুইটা রাজনৈতিক দলের, জন্মদানে অংশ গ্রহন করেছেন। উনি সুদির্ঘ সময় বাংলাদেশের ক্ষমতাশীল সরকার গুলোর, প্রধানদের খুবই কাছের লোক। বলতে গেলে ক্ষমতার তৃপ্তির ঢেকুর উনার চেয়ে বেশি, বাংলাদেশের আর কোন মানুষ তুলেন নাই।
১৯৭১ এর ২৫মার্চ রাতের, বিকৃত তামাশার সময় উনি ছিলেন, Hotel Inter-continental এ মার্কিন সাংবাদিকদের সাথে, এর বর্ননা উনি প্রায়ই স্মৃতি চারনে বলেন। এর পর ৯ মাস সময়ের কোন বীরচিত বর্ননা পওয়া যায় না। উনি যদি ঐ সময় দেশে থেকে থাকেন, তবে কি কি করলেন, এই ৯ মাসে, তা জানা দরকার। আর উনি যদি লন্ডন পালিয়ে গিয়া থাকেন তাও, কিভাবে কিভাবে হল, জানা দরকার। যাই হোক এই পর্যায় আর ঘাটালাম না। কারন কত জনইতো, কত জায়গায় পালিয়ে ছিলেন(জাতির পলাতক বীরেরা)।
স্বাধীনতার পর উনি হলেন বঙ্গবন্ধুর পি এস, ঐ সময় উনার বয়স ছিল ৩১ কি ৩২। এর পর ফারাক্কা বাধ থাকা সত্ত্বেও পদ্মার অনেক পানি বয়ে গেল। নানা রকম জাতীয় আন্তর্জাতিক শক্তির ষড়যন্ত্রে, বঙ্গবন্ধুকে তার পুত্রসম আর্মি অফিসাররা খুন করল। এর পর উনি মন্ত্রি হলেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রাহমানের, যার মধ্যে উল্লেক যোগ্য হল উপ-প্রধান মন্ত্রিত্ত্ব কাল(১৯৭৭-১৯৮১)। পুরা সময়টা আবার ক্ষমতা ক্ষমতা আর ক্ষমতা। যাই হোক, বিএনপির জন্ম হল, দেশও দারুন চলছিল। খুবই জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট ছিলেন জিয়াউর রাহমান। কিন্তু হায়!!! কোন এক জাতীয় আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে তাকেও মরতে হল। এই বার HORNY চাচা এরশাদের পালা।
এরশাদ প্রেসিডেন্ট হলেন, মওদুদ সাহেব তারও মন্ত্রি হলেন, প্রধানমন্ত্রিও হলেন, এর পর উপরাষ্ট্রপতিও হলেন। ১৯৯০ এ বঙ্গবন্ধুর কন্য এবং জিয়াউর রহমানের স্ত্রী যখন রাজপথে, তখনো ক্ষমতা তাকে বুড়া আঙ্গুল দেখাতে পারে নাই। যাই হোক, HORNY এরশাদের পতন হল। তার জাতিয় পার্টি নামক দলের অনেক নেতা পালিয়ে বাচলেন। এরশাদ সহ অনেক নেতাদের নামে দেয়া হল শত শত মামলা। কিন্তু যথারিতি মওদুদ সাহেবের তেমন কিছুই হল না। তলে তলে উনি কি করলেন কে জানে, তবে প্রকাশ্যে বি,এন,পি তে এলেন ১৯৯৬ তে। বিএনপি তখন বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বৃহত্তম বিরধি দল, আর খালেদা জিয়াতো তাকে ছাড়া কিছুই বুঝেন না। so again, ক্ষমতা ক্ষমতা ক্ষমতা।
২০০১ সালে বি,এন,পি(+জামাত) আবার ক্ষমতায়। মওদুদ সাহেবের সুখবাস যেন শেষ হবার নয়। কিন্তু বি,এন,পির অন্য বড় নেতাদের একি অবস্থা, তারা একে একে, খালেদা জিয়ার সাথে ঝগড়া বাধাতে থাকলেন। ক্ষয় প্রাপ্ত হতে থাকল বি,এন,পি। যত দোষ পড়তে থাকল হাওয়া ভবনের, তাও ব্যাপার না। কিন্তু বি,এন,পি আসল চমক দিল, যখন বিশেষ কু-উদ্দেশ্যে, বিচারকদের চাকুরির বয়স বাড়ান হল, যার নাটের গুরু মওদুদ সাহেব। গনতান্ত্রিক দেশে আবার রাজনৈতিক অস্থিরতা। বিএন,পির কুচক্র আর আওয়ামিলীগের লগি-বৈঠা, সৃষ্টি হল ২৮শে অক্টোবর, তারপর মওদুদের উৎসাহেই ইয়াজউদ্দিন(ইয়েসউদ্দিন) হলেন প্রেসিডেন্ট কাম প্রধান উপদেশটা, এর পর হতে থাকল গড়-মিল-গড়-মিল-গড়-মিল, অবশেষে ১/১১।
১/১১ এর পর, খোদ খালেদা আর হাসিনা তখন জেলে যাবে বা already তারা জেলেই আছেন। এমন সময় মওদুদ সাহেবের বাসায় পওয়া গেল বিদেশি সাদা মদ, জানা গেল তিনি বিদেশি সাদা মদ খান না, তার সাদা বিদেশি(বাবা)দের খাওয়ান। কত জন কে কত রকমের মামলা দেয়া হইল, কিন্তু সাদা ফুলের মত পবিত্র মওদুদ সাহেবের ঘাড়ে পড়ল সাদা মদের মামলা।
গভীর ভাবে চিন্তা করলে দেখবেন যে, ঘটনা বানান। কারন আজও হয়ত ঢাকার ধনি এলাকা গুলোর শত শত বাড়িতে এই জিনিস পওয়া যাবে। কিন্তু পুলিশের এগুল ফালতু জিনিস দেখবার, সময় কি ঢাকায় আছে? সন্দেহ মুক্ত ভাবে বলা যায় যে উনি কাউকে খুশি করবার জন্যই, এবং সন্দেহ মুক্ত থাকবার জন্যই, সেচ্ছায় জেলে গিয়াছেন। এবং জেলে ডিভিশন নিয়া প্রায় প্রতিদিন রাজনৈতিক সহকর্মিদের সাথে, ছোটবেলার মত চুড়ই-ভাতি খেলতে খেলতে, বেশ সুখেই দিন কাটিয়েছেন। হায়রে মওদুদ আপনার(তোর) শুখ আর শেষ হয় না। আর এই দিকে খালেদা জিয়াকে বাধ্যতা মুলক বিদেশ পাঠানর চেষ্টা, তারেকের spine ভেঙ্গে পঙ্গু করার চেষ্টা, শেখ হাসিনাকে slow poisoning এর চেষ্টা আরো কত কি…………যে হল…।
যাই হোক ২০০৯ নির্বাচনে নিজ এলাকায় হেরে, উপনির্বাচনের কল্যানে, উনি সংসদে এখন ম্যাডামের পাশেই বসেন। ইদানিং নাকি বি,এন,পি তে তার কথা ছাড়া কেউ শৌচাগারেও জান না।(ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার কথায় ঐ দিন তাই মনে হইল)
এই মুহুর্তে উনি কতটুকু সুখে আছেন, তা ঠিক বুঝতে পারছিনা। কিন্তু এই টুকু বলতে পারি, বর্তমানে আওয়ামিলীগ সরকার ভালো অবস্থানে নাই, আর বি,আন,পি তো গত ৫ বছর ধইরাই দৌড়ের উপর আছে, আর চারিদিকে খালি তৃতীয় শক্তির উত্থানের গুঞ্জন, আরো একটা রাজনৈতিক পট পরিবর্তন যদি ঘটে, এবং তার ন্যপথ্যেও যদি মওদুদ সাহেব থাকেন, তবে অবাক হব না।
পাঠকদের আরও কয়েকট গুরুত্ত্ব পুর্ন ব্যাপার মনে করিয়ে দিতে চাই।
১)আওয়ামিলীগ ছাড়া অন্য সকল দলের কাছে বিতর্কিত, সংবিধানের ৪র্থ সংশধনির(বঙ্গবন্ধুর আমলে) সময় উনি বঙ্গবন্ধুর কাছের লোক ছিলেন।
২)বিতর্কিত ৫ম সংশধনির(প্রেসিডেন্ট জিয়ার আমলে) সময় উনি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রাহমানের লোক ছিলেন।
৩)বিতর্কিত ৭ম ও ৮ম সংশধনির(HORNY আমলে)সময় উনি HORNY এরশাদের লোক ছিলেন।
৪)বিতর্কিত ১৪শ সংশধনির(২০০১-২০০৬)সময় উনি বি,এন,পির লোক ছিলেন।
দেশে এই পর্যন্ত যত রাজনৈতিক উল্টা-পাল্টা গ্যাঞ্জাম হইসে, তার সব গুলার ভিত্তি, এই সংবিধান গুলার পরিবর্তনের সাথে related।
আমার বয়স অল্প, বুদ্ধি কম, পড়ালেখা কম, কিন্তু যতটুকু জানি বুঝি তাতে আমি এই জিনিয়াস লোকটার গায়ে মার্কিন গন্ধ পাই। আমরা জানি আমাদের দেশ চলে WORLD BANK, IMF, MARKIN আর EU এর ইশারায়। আর যত আকাম কুকাম হয় ISI আর RAW এর সহায়তায়। কিন্তু এই ভাবে আর কয়দিন? কবে আমরা সচেতন হব? কবে আমাদের দেশের, বিদেশী agent দের আমরা চিহ্নিত করার উদ্যোগ নিব?
আমরা কি মওদুদ সাহেবের মত লোক কে জনগনিয় রিমান্ডে নিতে পারি না ? রিমান্ডতো প্রমানিত অপরাধি কে নেয়া হয় না, নেয়া হয় সন্দেহ ভাজন অপরাধিদের, বা এমন সন্দেহ ভাজন অপরাধিদের যারা অন্য অপরাধিদের খোজ দিতে পারে ও চিহ্নিত করতে পারে। আমাদের দেশ পিছিয়ে পরার পিছনে কাদের হাত আছে, কারা এই দেশের মানুষের কষ্টের যন্ত্রনার মূলে, তাদের খোজ কি মওদুদ সাহেবের জানবার কথা না? অপরাধি না হলেও, উনিত অপরাধি কারা তা জানেন। কারন স্বাধিনতার পরথেকেই উনি রাষ্ট্রিয় ক্ষমতার চরমে থাকা লোক গুলোর আস্থা ভাজন। আর কত কাল আওয়ামীলিগ বি,এন,পিকে আর বি,এন,পি, আওয়ামীলিগকে দোষ দেয়ার খেলা খেলবে? পাঠক আপনারা কি আমার সাথে একমত না?
দেশ স্বাধিন হবার সময়, পরা শক্তি অর্জনে সক্ষম এমন দেশগুলোর IAEA এর যে list ছিল, তাতে আমরা ছিলাম ৬ষ্ঠ কি ৭ম। এখন আমরা কোথায়? মালয়েশিয়ার মানুষ এক সময় আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে পড়তে আসত, আর আজ আমাদের দেশের মানুষ ঐ দেশে যায় জোগালির কাজ করতে। এই রুপ পশ্চাত গমনের জন্য কারা দায়ি, ইতিহাসে কি তা লেখা থাকা উচিত না?
মওদুদ নামক জিনিয়াস লোকটাকে আমরা দেশের কোন কাজেই লাগাতে পারি নাই। এইটা আমাদের ব্যার্থতা।
যতদিন বাংলার জিনিয়াসদের বিদেশীরা প্রতিপালন করবে, তত দিন বাংলার হাহাকার থামবে না।
দেশকে ভালোবাসুন, নইলে ইমান পুর্নাঙ্গ হবে না।
ইনশাল্লাহ, আবার কথা হবে। আসসালামুয়ালাইকুম।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




