somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসময়ে হাচি দেয়া বা হাই তোলা আটকাবেন কিভাবে???

০৭ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১০:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
বিসমিল্লাহির রাহমানের রাহিম


অসময়ে হাচি দেয়া বা হাই তোলা আটকাবেন কিভাবে???


হাচিদেয়া এবং হাইতোলা খুবই স্বাভাবিক দুইটা ব্যাপার হওয়া সত্তেয় অনেক সময়ই আমাদের কাছে এই ব্যাপার গুলো অনাকাংক্ষিত। যেমন ধরেন অফিসে বস কোন জরুরি ব্যাপারে মিটিং ডাকল, আর আপনি মিটিং এর মধেই, তার সমানে একটার পড় একটা হাইতোলা শুরু করলেন, এই দিকে দুই-এক সপ্তাহের মধ্যেই হয়ত আবার ACR । কেমন লাগে ভাই এই রকম পরিস্থিতিতে পড়লে?? বা ধরেন কোন প্রজেক্টে ভালো কাজ করার জন্য পুরষ্কার স্বরুপ, অফিসিয়াল ডিনারে, আপনার স্থান হইল চ্যেয়ারম্যান সাহেবের পাশের সিটে, আর আপনি শুরু করলেন USA এর cluster bomb গুলার মত একটার পড় একটা হাচি!!!!!!!!!??


হাচি কি?


হাচি হল আমাদের respiratory tract (শ্বাস যন্ত্রের)এর অনেক গুলো প্রতিরক্ষা কবচের একটি। আমাদের শরিরের জন্য অনাকাংক্ষিত কোন বস্তু কনা বা জৈব কনা, যখন আমাদের শ্বাস যন্ত্রের উপরিভাগে ডুকে পড়ে, তখন তা বের করে দেবার জন্য, আমাদের শ্বাসযন্ত্র খুবি স্বমন্নিত প্রক্রিয়ায় বিপুল পরিমানে বাতাস ফুসফুসে ঢুকিয়ে তা প্রবল বেগে বের করে দেয়, যেন এই প্রবল বেগে বাতাস বেরিয়ে যাবার সময় ঐ অনাকাংক্ষিত কনাটি সহ বারিয়ে যায়।


হাচি আটকান কি উচিত?? না উচিত নয়???


যেহেতু শরিরকে স্বার্বিক ভাবে সুস্থ রাখবার অন্যতম সহায়ক প্রক্রিয়া হল এই হাচি, তাই স্বাভাবিক ভাবে হাচি আটকান উচিত নয়। কিন্তু কিছু পরিস্থিতিতে হাচি একেবারেই দেয়ে উচিত নয়,
যেমনঃ
১) মল ত্যাগের সময়
২) মুত্র ত্যাগের সময়

সম্ভব হলে এই সময় গুলোতে অবশ্যই হাচি আটকাতে হবে নইলে জটিল বেদনাদায়ক শারিরিক সমস্যার তৈরি হতে পারে।


হাচি আটকাবেন কিভাবে???


হাচিটা যাদের অসুখ পর্যায় চলে গিয়েছে তাদের জন্য ডাঃ রা antihistamin জাতীয় ঔষধ বা অন্নান্য ঔষধ ব্যাবহার করে থাকেন।


হঠাৎ অনাকাংক্ষিত হাচি আটকাবেন কি ভাবে??


আমাদের উপরের ঠোটের মাঝ খানে খাজকাটা যে অংশটা আছে তাতে এক আঙ্গুলদিয়ে চেপে ধরবেন হাচি আটকে যাবে। best of luck. Try it next time. এই উপরের ঠোটের খাজ টাকে আমরা বলি philtrum যার নিচে থাকে depressor septi neris নামক একটি muscle, আর এই muscle টিতে চাপ লাগলেই হাচিটা থেমে যায়।


হাই কি??


শারির তত্ত্বিয় ভাবে এর কোন গুরুত্ত বিজ্ঞানিরা এখন খুজে পান নাই।(শুধু মাত্র narcotic substance(eg. Morphin) withdrawl এর একটা symptom হিসাবে এর একটা পরিচিতি আছে)

এক সময় বিজ্ঞানিরা মনে করতেন ঘুম ধরলে মানুষ হাই তোলে কিন্তু তা ঠিক না। একটু খেয়াল করলেই দেখবেন আপনি খুব কম সময়ি ঘুমাতে যাবার আগে হাই তোলেন। বা আপনার হয়ত প্রচন্ড ঘুম পেয়েছে কিন্তু এর মানে এই না যে আপনার হাই উঠবেই।

আবার এক সময় বিজ্ঞানিরা মনে করতেন পরিশ্রান্ত শরিরের কারনে মানুষ হাই তোলে কিন্তু তাও ঠিক না। একটু খাল করলেই দেখবেন ফুটবলার, ক্রিকেটার, আথলেট, রেসলার কেউই হাই তুলতে তুলতে মাঠ থেকে বের হন না।

বিজ্ঞানিরা এও মনে করতেন যে আমাদের brain যখন oxygen এর অভাব feel করে তখন আমারা হাই তুলি কিন্তু তাও ঠিক না। এরকম যদি হইত তাহলে কক্সবাজারের মানুষ ঢাকাতে বেরাতে আসলে সারাক্ষন হাই তুলত। আর বাংলাদেশের মানুষ নেপাল বেরাতে গেলে শুধু হাই তুলতে তুলতেই দিন শেষ হয়ে যেত।

বিজ্ঞানিদের ভাষায়, “Yawning is a peculiar “infectious” respiratory act whose physiological basis and significance are uncertain”

বিজ্ঞানিরা একে infectious বলেছেন, এজন্যই বলেছেন যে, আসলে এক মানুষ আরেক মানুষ কে হাই তুলতে দেখলে নিজেও হাই তুলে। এমনকি আপনি যদি টেলিফোনে কাউকে হাই তুলতে শুনেন তাহলেও আপনার হাই চলে আসবে। একটু খেয়াল করবেন প্লিস।


হাই তোলা আটকাবেন কি ভাবে???


এক সময় আমি প্রচুর হাই তুলতাম। কথা নাই বার্তা নাই যখন তখন হাই আর হাই। একটু অলস ভাবে বসে থাকলেই, একটু অন্য মনস্ক হয়ে বসে থাকলেই হাই, ক্লাসে হাই, রিক্সাতে হাই, হাই আর হাই। আমি কোন কারন খুজে পেতাম না। শুনতাম অলসদের হাই বেশি উঠে, এই জ়িনিশ আমার ছিল আর এক বিরক্তির কারন। কারন আমি একেবারেই অলস না বরং তার বিপরিত। আমার বিজ্ঞান মন আমাকে বার বার বোঝাত যে, “এই ব্যাটা তোর respiratory tract পুরাপুরি সুস্থ না, তাই তুই ঠিক মত ব্লাডের অক্সিজেন সেচুরেশন ঠিক রাখতে পারিস না তাই তুই বার বার হাই তুলিশ”।

আমি আমার বিজ্ঞান মন কে বহু কাল মেনে চললাম। কিন্তু অস্বস্তি লাগল তখন, যখন জানলাম বিজ্ঞানিরা এই হাইপোথিসিস বহু আগেই বাদ দিয়েছেন।যাই হক দিন ঐ ভাবেই চলছিল। এমনি একদিন আপনাদের ভাবি আমার হাই তোলা শেষে কি জানি লক্ষ্য করল, তারপর আমাকে জিজ্ঞাস করল,
--কিরে তুই হাই তোলার পর “লা হাওলা” পড়স না?

----কি কইলি?

--“লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা” পড়স না?

----কি কস তুই, হাচির পড় “আলহামদুলিল্লাহ” বলতে হয় জানি, “আলহামদুলিল্লাহ” বলা শুনলে “ইয়ারহামুক আল্লাহ” বোলতে হয় জানি, কিন্তু হাই দেওয়ার পড় আবার কিছু পড়তে হয় নাকি?

--ও আল্লাহ, রহম কর মাবুদ!!
----হইসে, বেশি পাট লইস না, একটা কাগজে লাইখা দে, পড়ুমনে । অর্থ সহ লেখিস নেইলে আমি পড়ুম না।

--অর্থ লিখতে পারুম না, পড়লে পড় না পড়লে না পড়।

----আচ্ছা ঠিক আসে দে, আমারো দিন আইবো।

--“লা হাওলা ওয়ালা কুয়য়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়ুল আযিম”
--সাথে ওয়াস্তাগফিরুল্লাহ ও পড়তে পাড়স

----ঠিক আসে পুড়াটা একসাথে লিখা দে।

--“ওয়াস্তাগফিরুল্লা, রাব্বি মিন কুল্লি যাম্বিউ, ওয়াতুবু ইলাইহি, লা হাওলা ওয়ালা কুয়য়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়ুল আযিম”

ভাই আপনাদের বিশ্বাস আপনাদের কাছে। কিন্তু ভাই, এইটুক আপনাদের বলতে পারি, যে ওই যে আমি ঐ দিন এই লাইন পড়া শুরু করসি, আমার হাইতোলা almost gone. আর যদি আসেও আমার মুখ দিয়া “লা হাওলা ওয়ালা কুয়য়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়ুল আযিম” উচ্চারন শেষ হবার আগেই আমার হাই শেষ হয়া যায়। এখন আমার দুই সপ্তাহেও একবার হাই আসে কি না সন্দেহ। আর আমার লাইফে, এর পর ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে, ঐ প্যাচালে আজ আর নাই ঢুকলাম।


যাই হোক, হাই আটকানোর কোন scientific way না পেয়ে islamic way বললাম। অমুসলিম ভাইয়েরা কিছু মনে করবেন না।

আর ইমানদার ভাইয়েরা আসা করি সকলেই আজ থেকে হাই দেবার পর “লা হাওলা ওয়ালা কুয়য়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়ুল আযিম” পড়বেন। আর নিজের জীবনের পরিবর্তন গুলা খেয়াল করবেন।


হাই আর হাচি সম্পর্কিত একটা হাদিস, “Al-Bukhaari (6226) and Muslim (2994) narrated from Abu Hurayrah (may Allaah be pleased with him) that the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) said: “Allaah likes sneezing and dislikes yawning, so if one of you sneezes and praises Allaah (by saying Al-hamdu Lillaah), it is a duty upon every Muslim who hears him to say to him, Yarhamuk Allah (may Allaah have mercy on you). With regard to yawning, it is from the Shaytaan so if one of you feels like yawning, let him suppress it as much as he can, for if one of you yawns the Shaytaan laughs at him.”


“আলহামদুলিল্লাহ” = সকল প্রশংসা আল্লাহের জন্য, হাচি দিলে বলতে হয়।

“ইয়ারহামুক আল্লাহ”= আল্লাহ আপনার উপর রহম করুন, হাচি দান কারি আলহামদুলিল্লাহ বললে তার উত্তরে বলতে হয়।

“লা হাওলা ওয়ালা কুয়য়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়ুল আযিম”= আল্লাহের সাহায্য ছাড়া কারো কোন কাজ করার শক্তি কারোও নাই। হাই দিলে বলতে হয়।

যদিয় বিজ্ঞানিরা এখন yawning(হাইতোলার) এর কোন physiological significance stablish করতে পারেন নাই। তবুয় আমার বিজ্ঞান মন মানে না যে, এটা শুধুই শয়তানের কারসাজি । একদিন বিজ্ঞান হয়ত এর physiological significance বা physiological effect খুজে পাবে। ইনশাল্লাহ।




এই সব ইসলাম ঘেষা ফালতু পোস্ট এই সামুতে কোন দিন নির্বাচিত হবে না। তাই ভালো লাগলে বা উপকারি মনে হইলে, নিজ দায়িত্বে সেয়ার করুন।
৪৮টি মন্তব্য ৪৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×