somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডাঃ হাসানের আকুপ্রেশার প্রিতি(ভীতি) and Dhaka(dacca) solution নিয়া আফসোস!!!

৩০ শে আগস্ট, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
বিসমিল্লাহির রাহমানের রাহিম

ডাঃ হাসানের আকুপ্রেশার প্রিতি(ভীতি) and Dhaka(dacca) solution নিয়া আফসোস!!!:-*:((



ডাঃ হাসানের সাথে আড্ডায়, তার কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা, আর খানিক ভিন্ন দৃষ্টিকোনের চিন্তা ধারা আমাকে চিন্তিত করল। ভাবলাম অন্য ব্লগারদের সাথে সেয়ার করি।

আমি যেভাবে শুনেছি সেই ভাবেই লিখার চেষ্টা করলাম।

ডাঃ হাসানের ঘটনা একঃ

“আমার এক পুরাতন রোগী মারিয়াম বেগম, গত চার মাসে এ নিয়ে তৃতীয় বার আসলেন তার হটুতে ব্যাথা। সাধরনত রোগীদের কথা আমার মনে থাকে না কিন্তু তার কথা মনে থাকে কারন আমার মেয়েটার নামও মারিয়াম। মারিয়াম বেগমের বয়স ৪৫, অবিবাহিত, বেশ নাম করা একটা এন,জি,ও তে চাকরি করেন, কাজের প্রচন্ড ব্যাস্ততা, প্রায় দিনই ঢাকার বাইরে থাকতে হয়, কিন্তু ঢাকায় বসবাস করেন তারই মত, এক কলিগের সাথে। নুতন এই হাটুব্যাথা ছাড়া জীবনে তার আর সমস্যা নাই বললেই চলে। আর একটা সমস্যা আছে যার গুরুত্ত্ব উনি বুঝতে পারছেন না।”

“গত মাসেই উনি প্রথম এই সমস্যার(লক্ষন গুলর) কথা বললেন এবং বলার সময় উনি একটু মুচকি মুচকি হাসছিলেন, লজ্জিত ভঙ্গিতে।……ডাঃ আমি প্রায়ই রাস্তা ভুলে যাই……কোন কাজ করতে থাকা অবস্থায়, কি করছিলাম ভুলে যাই………কথা বলার সময় প্রসঙ্গ ভুলে যাই…………রাস্তার দিক ভুলে যাই…….এইতো সেদিন সিলেটের আম্বরখানা মোড়ে দাড়িয়ে ভুলে গেলাম, আমি কোথায়? কি করছি? কেন আমি এখানে? অথচ গত ২৫বছরে আমি ১০০ বার কাজের কারনে সেখানে গিয়েছি। যাই হোক এই রকম কিংকর্তব্যবিমুড় ৫মিনিটের মত থাকার পর সব কিছু মনে পড়ল, কলিগদের ফোন দিলাম তারা আমাকে নিয়ে গেল। ইদানিং এই রকম আমার প্রায়ই হয়…।”

“এরপর আমি তাকে ব্যাক্তি গত অনেক প্রশ্ন করলাম এবং নিশ্চিত ভাবেই বুঝতে পারলাম যে উনি Alzheimer’s dementia অথবা অন্য কোন dementia তে আক্রান্ত হতে যাচ্ছেন।(ডিমেন্সিয়া=স্থায়ি সৃতি লোপ)। আমাদের দেশে এই রোগ সাধারনত কম হয়। বেশির ভাগ Dementia ই একাকিত্তের রোগ।পশ্চীমাদের এই রোগ বেশি হয়। আমি ব্যাপারটা(মনে মনে) খুবই সিরিয়াসলি নিলাম, তাকে বুঝালাম এবং বললাম,

আপনি দয়াকরে এই উপসর্গ গুলোকে বেশি হালকা ভাবে নিবেন না, আবার খুব সিরিয়াসলি এ ব্যাপারে চিন্তা করার দরকার নাই, যা হয়েছে হয়েছে উপসর্গ গুলোকে আর কোন মতেই বাড়তে দেয়া যাবেনা। আর আমার জানা মতে বর্তমান চিকিৎসা বিজ্ঞানে এর পুর্ণ উপশম নাই। কিন্তু এই রোগের বৃদ্ধি আটকানো যায়। তাই আপনি Psychiatrist Dr.**** অথবা Neurologist Dr.**** এর কাছে যাবেন, Its your choise.” “উনারা উভয়েই আপনার চিকিৎসা করতে পারবেন তবে, আপনি Psychiatrist Dr.**** এর কাছে গেলে মনে হয় বেশি ভালো হবে। হয়তো দেখবেন আপনার হাটুব্যাথারও help হবে।”

“১ মাস পর মারিয়াম বেগম ৪৫ আবার আসলেন”,

“নুতন ঔষধটায় উনার হাটুব্যাথা অনেক কমে গেছে, কিন্তু উনি জানতে চাচ্ছেন রমজানে উনি কিভাবে, কখন কোন ঔষধটা খাবেন, আর ঔষধ কমানো যায় কি না?? আমি তার সমস্যার সমাধান করলাম, তারপর জিজ্ঞাস করলাম Psychiatrist বা Neurologist কার কাছে উনি গিয়াছিলেন, এবং উনারা কি ঔষধ দিলেন?? উনি বললেন যে, উনি তাদের কাছে যাননি এবং উনি আকুপ্রেশারে মাধ্যমে এর চিকিৎসা করবেন। আমি অবাক হলাম, এই প্রথম উনি আমার কোন উপদেশ গুরুত্ত্ব দিলেন না।”

“যাই হোক আকুপ্রেশার সম্পর্কে আমার কোন ধারনা ছিলনা, তাই জিজ্ঞাস করলাম এটা আবার কি? উনি প্রথমে আমাকে ধারনা দেবার চেষ্টা করলেন, কিন্তু আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারলেন না।যাই হোক আমি শেষ-মেশ তাকে শুধু এইটুকু বললাম, দেখেন যা করবার তাড়াতাড়ি করেন, এত কম বয়সে dementia খুব কম মানুষেরই হয়, চিকিৎসা না করালে এক সময় হয়ত নিজের বাড়িই নিজে চিনবেন না, নিজের ঘরেই কোনটা টয়লেটের গেট আর কোনটা বারান্দার তাও চিনবেন না………………ইত্যাদি।”

“এর ১ কিংবা দেড় ঘন্টা পর আমাকে বাস(বাংলাদেশ আকুপ্রেশার সোসাইটি) দ্বারা প্রকাশিত আকুপ্রেশার নামক একটা চটি বই দিয়ে গেলেন। বইটা পড়লাম, একটু নেট ঘাটলাম।”



এক কথায় আকুপ্রেশার হল সেই চিকিৎসা বিদ্যা(বিজ্ঞান) যার মূল ধারনা, আমাদের শরিরে ৩৬টি(মতান্তরে ২০০টি) বিশেষ বিন্দু আছে, যাতে চাপ প্রয়োগ করে রোগ নিরাময় করা যায়, আর কেউ যদি সুস্থ শরিরে নিয়মিত নিয়ম মেনে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে, তবে যে কোন রোগ প্রতিরোধ করা যায় অনায়েসে।

বইটি cover to cover পড়ে আরও জানতে পারলাম যে দুই হাতের তালু দুই পায়ের তালুতেই ৩৮টি বিভিন্ন বিন্দু বিদ্যমান। শরিরের কোন অঙ্গ যদি অসুস্থ থাকে তাহলে ঐ অঙ্গ রিলেটেড বিন্দুতে চাপ প্রয়োগে ব্যাথা হবে, কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে আমরা এই বিন্দু গুলোতে ব্যাথা অনুভব করি না।

অবাক হলাম যখন দেখলাম হাতের এবং পায়ের বুড়া আঙ্গুলের শির্ষে অবস্থিত ১নং বিন্দুটি মস্তিষ্কের জন্য বরাদ্দ। ছোটবেলা থেকেই আমার বাবার কাছে শুনছি, বুড়া আঙ্গুলের ঐ স্থানে ব্যাথা পেলে brain এর ক্ষতি হয়, তাই তিনি আমাকে কখনই টাইট জুতা পরতে দিতেন না, এমন কি ঐ স্থানে আমি ব্যাথা পেলে উনি মন খারাপ করতেন।

আরো অবাক হলাম যখন, হাতের তালুতে অবস্থিত ৩০ নং বিন্দুতে চাপ প্রয়োগ করতেই ব্যাথা অনুভব করলাম, আমার Asthma আছে, সেই হিসাবে আমার ফুসফুস অসুস্থ, আর ৩০ নং বিন্দুটাও ফুসফুসের, ৩-৪ সেকান্ডে একটা thrill অনুভব করলাম, Next ৩-৪ মিনিট ভাবলাম বক্ষব্যাধি হাসপাতালটা বন্ধ কইরা দেই!!!!!!!!!! সব রোগীরে ৩০নং বিন্দুটা চিনিয়ে দেই, সবাই নিয়মিত এই বিন্দুতে টেপাটিপি করুক, আর সুস্থ থাকুক। ”

ডাঃ হাসানের ঘটনা দুইঃ

“আমার বয়স তখন ১০-১১, এক দিন এক বিয়ে বাড়িতে ভাই বোনদের সাথে দুষ্টামি করতে করতে, এক কুকুরকে লাথি দিলাম, কুকুর দিল পায়ে কামড়। আমিতো পড়লাম মহা ফাপোরে, জলাতঙ্ক-টলাতঙ্ক বুঝিনা, নাভির গোড়ায় ১৪টা ইঞ্জেক্সন নিব না that’s it. তাই ঠিক করলাম মা-বাবা বা বড় কাউকে জানানো যাবে না।কিন্তু কোন এক জনের বিশ্বাস ঘাতকতায় ultimately সকলেই জানলো। আমিতো নাভির নিচে ইঞ্জেক্সনের ভয়ে শেষ। এই সময় ফেরেশতার মত আমার ছোট চাচা আমাকে জানাল, ইঞ্জেক্সন নিতে হবে না, তিনি আমাকে ভেষজ(স্বপ্নে প্রাপ্ত) ঔষধ দিবেন। ১০ দিন খেতে হবে, কোন আমিষ এই ১০ দিন খাওয়া যাবে না, that’s it. শুধু এক টুকরা আদাতে(জিঞ্জারে) ঐ কুকুরটার(যেটা আমাকে কামড়িয়েছে) লালা লাগিয়ে নিয়ে আসতে হবে। এবং ঐ আদাই হবে আমার জন্য তৈরি ঔষধের একটা মূল উপাদান। হয়েছেও তাই। ১০ গ্রামের শত শত লোক কুকুরে কামড়ানোর পড় এই ঔষধ খেয়েছে বিনা পয়সায়(যেহেতু স্বপ্নে পাওয়া ঔষধ,তাই টাকা নেয়া বারন ছিল)কারো জলাতঙ্ক হয় নাই। তুমিতো জানোই আমার বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা প্রথম দিকের একজন ফার্মাসিষ্ট। ঔষধ সম্পর্কে আমি ডাঃ হয়েও তার চেয়ে ভালো জানিনা বোলেই বোধ করি। ডাক্তারি পরার সময় Rabies নিয়ে অনেক পড়েছি, but এখনো জানি না how did it worked.”

স্বপ্নে পাওয়া ঔষধ হোক আর নাই হোক, ঐ ঔষধের ভেষজ গুন এখন আমাকে মুগ্ধ করে।”


ডাঃ হাসানের ঘটনা তিনঃ

“আমার স্কুল লাইফের সবচেয়ে কাছের একজন বন্ধু “আনবি”। তার মত মেধাবী যেমন কম, ঠিক তেমনি তার মত উদ্ভট কথা বার্তার মানুষও ছিল কম। একদিন টিফিনে আমি, গিসিপ, ভুই, আনবি গল্প করছি হঠাৎ করেই আনবি জিজ্ঞাস করল।

আনবি- আই তোরা হাগতে বইলে, যদি হাগা না আসে, তাইলে কি করস?

আমরা- হাগতে বইলে, হাগা আইবনা কেন?

আনবি- আরে ধর তোগো হাগা ধরসে, হাগতে গেসোস কিন্তু হাগা হইতেসেনা, এই রকম কি কখন হয় না?

আমরা- হয়তো……

আনবি- সালারা শরম পাস নাকি…?

আমরা- এইটা জাইনা তুই কি করবি……?

আনবি- এই রকম হইলে কি করবি শোন, ডাইন হাতের কানি আঙ্গুল দিয়া বাম পায়ের বুড়া আঙ্গুল ঘসবি, বা বাম হাতের কানি আঙ্গুল দিয়া ডাইন পায়ের বুড়া আঙ্গুল ঘসবি, দেখবি হাগা বাইর হয়া গেসে।

আমরা- তুই কৈ থাকে পাইলি……

আনবি- আমার দাদি শিখাইসে, আমার দাদি সাওতাল, আমিও হাফ ১/৪র্থ সওতাল, সাওতালরা এই রকম করে।

এর কিছু দিন পর একবার সত্যি constipation হইলে জিনিসটা try করি এবং successful হই। এর পর থেকে এই problem এ পড়লেই কাজটা করতাম, এমনকি অনেক সময় তাড়াতাড়ি করার জন্যও করতাম এবং প্রতিবারই সফলতা পাওয়া যেত।”



“Neuroanatomy আর physiology পরার সময়, এর মূল রহস্যটা পেলাম বলে মনে হয়। আমাদের শরিরের ঐচ্ছিক পেশীগুলোর নিয়ন্ত্রন করে Cerebral cortex এর Brodmann’s area 4 (বা primary motor area)। এই area4 এ great toe(বুড়া আঙ্গুল) আর anal spingter(পায়ু দ্বার) এর নিয়ন্ত্রন করার স্নায়ু গুলোর অবস্থান খুবই খুবই কাছা-কাছি। so এর যে কোন একটাকে নাড়া-চারা করলে আর একটা stimulated হইতেই পারে। তবে কানি আঙ্গুলের ব্যাপারটা বুঝি নাই। আরো একটা ব্যাক্ষা আছে আমার মনে, কিন্তু এখন আর বলার ইচ্ছা নাই।”

এই ব্যাপারটা কিন্তু indicate করে যে আকুপ্রেশারের ব্যাপারটা একেবারে ফালতু না।”


ডাঃ হাসানের ঘটনা চারঃ

“আমার asthma এর কথাতো তুমি জান, ক্লাস ৮-৯ এ থাকতে কেন জানি একটু বেশি বেশি attack হচ্ছিল। মা খুবি চিন্তিত। দুঃসম্পর্কের এক ফুপু মাকে বলল আমাকে একটা তাবিজ এনে দিবে, একজনের কাছ থেকে, এনেও দিল। একদিন তাবিজ পড়লাম, গোসল করে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন অবস্থায়, সর্ত রূপে আমার জন্য নিষিদ্ধ হল আমার সবচেয়ে প্রিয় হাসের ডিম। মেডিকেলের তৃতিয় বর্ষ পর্যন্ত ছিল ঐটা আমার গলায়(দিনাজপুর বেরাতে গেলে হারিয়ে যায়)ছিল। ঐ কয় বছরে asthma হয় নাই বলব না কিন্তু honestly অনেক সুস্থ ছিলাম ঐ কয়েক বছর, I mean I almost forgot that I had asthma । আর ডাঃ হবার পর নিজের চিকিৎসা নিজেই করছি, now I know that I am the Doctor my parents were looking for, and I am doing even better than that tabij.”


ডাঃ হাসানের ঘটনা পাঁচঃ

“আমার ছেলেটার বয়স তখন ১৪-১৫ মাস, ডাইরিয়া শুরু হইল। তাকে পুর্নাংগ ভাবেই চিকিৎসা দেয়া হল। বলতে গেলে আমার বৌ আর আমি আমাদের সকল প্রকার জ্ঞান দ্বারা আমাদের ছেলেটার চিকিৎসা করছিলাম। in fact আমার বৌ আর আমি student life এও ডাইরিয়া নিয়া এতো পড়ালেখা করি নাই। সকল চেষ্টার পর ১০-১২ দিন চলে গেলেও ডাইরিয়া ভালো হচ্ছিল না। অবশেষে আমার শ্বাশুরি লবন পড়া পাঠালেন। লবন পড়া যিনি দিয়েছেন উনি অত্যন্ত দরিদ্র মহিলা, উনি আমার শ্বশুর বাড়ির এক্স-কাজের লোক। রাতের এক চিমটি লবনেই আমার ছেলে পরের দিন সকালে ডাইরিয়া মুক্ত। আমার ধারনা আমার চিকিৎসার জয় হয়েছে, আমার বৌ এর ধারনা লবন পড়ার জয় হয়েছে। anyway লবন পড়াটা এর পর আরো একবার জয় যুক্ত হয়েছে।”


ডাঃ হাসানের ঘটনা ছয়ঃ

“প্রচলিত চিকিৎসা ব্যাবস্থায় Phobia(ভয়) এর চিকিৎসা খুবি কঠিন আর সময় সাধ্য। graded exposure…ব্লা ব্লা ব্লা………….। কিন্তু কোন বাচ্চা যখন অদৃশ্যকে ভয় করে তখনতো আর graded exposure বা full exposure এর কোন ব্যাপার থাকে না। আমার ছেলেটাও অসময়ে ভয় পওয়া শুরু করে ছিল। অর্থাৎ যে বয়সে একটা বাচ্চার ভয়ের feelings থাকবারই কথা না, সে সময় ভয়। অস্বাভাবিক অসম্ভব ভয়। এমন ভয় যে ওর ভয় দেখে মাঝে মাঝে আমি ভয় পেয়ে যেতাম। ওর কিছু বুঝারো বয়স হয়নাই ততদিনে, তাই তাকে বুঝাবারও কিছু নাই। আমার ডাক্তার স্ত্রীকে, আমার শ্বাশুরি নাতির জন্য তাবিজের পরামর্শ দিলেন। কিন্তু তত দিনে আমার তাবিজের প্রতি কোন respect আর নাই, কারন বেশীর ভাগ মওলানা সাহেবরা তাবিজকে হারাম বলছেন এবং নিরুৎসাহিত করছেন। তাই আমি আমার ডাক্তার(??!!)স্ত্রীকে বললাম, যে আমার ছেলের গায়ে তাবিজ না দিয়ে কিছু করা গেলে করতে পার। আমার শ্বাশুরি কোন একজন ধার্মিক মওলানা সাহেবের কাছ থেকে একটা কাগজের টুকরা পাঠালেন। ঐ জিনিস ঘরে ঢুকবার পর থেকেই আমার ছেলের ভয় শেষ। as if fear doesn’t exist!!!”


ডাঃ হাসান ঘটনা সাতঃ

“বিয়ের পর গলায় মাছের কাটা বিধল একবার, দুই-তিন দিন হয়ে গেল, কষ্ট পাচ্ছিলাম। অনেক গুতা গুতির পরও গেল না, চিন্তা করছিলাম হোমিওপ্যাথি ঔষধ আনিয়ে খাবো, চাচাতো বোনদের ছোটবেলায় খেতে দেখেছি, শুনেছি খুবই কাজের জিনিস। কিন্তু তা করতে হলে অপেক্ষা করতে হবে সারা রাত, ভালো লাগছিল না। আমার বৌ আমাকে বলল যে তার বাবা, কোন একটা দুয়া পড়ে ফু দিলে তাদের গলার কাটা চলে যেত। ছোট বেলা থেকে সে তাই দেখেছে। শ্বশুর মাসাইয়ের কাছে ফোনে জানলাম সেই বিশেষ দুয়াটা হল সূরা ওয়াকিয়ার ৮৩ নং আয়াত, “ফালাউলা……ইযা…বালাগাতিল হুল ক্বুম” অর্থ,“অতঃপর যখন কারও প্রাণ কন্ঠাগত হয়।” লাইনটা কয়েকবার পড়ার সাথে সাথে গলার কাটা আর নাই। এর পরেও অনেক বার কাটা বিধেছে আর এই লাইনটা আওড়াতেই চলে গেছে প্রতিবার। কিন্তু জানিনা এর ফল পেতে ইমান আর তাকওয়া জরুরি নাকি, আয়াতটা যাদু মন্ত্রের মত কাজ করে??!!!! ”

“By the way Muddakir তুমি জানোতো রাসুল(সাঃ) সূরা ফাতিহা কে সূরায় শেফা বলেছেন। বলো দেখি এজন্যই কি নামাজি লোকের হাসপাতাল আনাগোনা কম নাকি, শৃংখলায় বাধা জীবনই প্রধান কারন?????”

এই পর্যায় ডাঃ হাসান তার ঘটনা গুলো শেষ করলেন, তারপর মন্তব্যের মত কিছু এলোমেলো কথা বললেন। আমি যথা সম্ভব গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করলাম

তার আরো কিছু কথা,

“দেখ মুদ্দাকির আমার ছোট বেলায় আমি ঘন ঘন অসুস্থ হইতাম। আমার বাবার মত ভালো ফার্মাসিষ্ট বাংলাদেশে কম আছে, so called এলোপ্যাথি ঔষধ সম্পর্কে উনার চেয়ে ভালো খুব কম মানুষই জানে। আমি অসুস্থ হইলে উনি আমাকে ডাঃ এম আর খান সারের কাছে নিয়া যাইতেন, মাঝে মাঝে antibiotic গুলার side effect চিন্তা কইরা বিরক্ত হয়ে, হেলাল হোমিও হলের ডাঃ হেলালের কাছেও নিয়া যাইতেন। আমি হোমিও চিকিৎসায়ও সুস্থ হইতাম। আবার আমার ডাক্তার জীবনে আমি হোমিওর অপচিকিৎসায় মানুষকে কিডনি হারাইতে দেখসি।”

“অনেক so called হোমিও ডাঃ বিজ্ঞাপন করে X, Y, Z, P, Q, S……. ইত্যাদি রোগের চিকিৎসা করে, কি হাস্যকর! ডাক্তারের প্রধান কাজই হল রোগ নির্ণয় করা আর ঐ সকল অপচিকিৎসক বলতে চাচ্ছেন যে, আপনি রোগ নির্ণয় করে নিয়ে আসুন, আমি তার চিকিৎসা দেব। এতেই বোঝা যায় তাদের জ্ঞানের লেভেল। আসলে কোন বিজ্ঞানই মূর্খের হাতে safe না।”

“আবার কেউ কেউ গেরান্টি সহকারে হেপাটাইটিস-বি রোগটা সারান, তথা HbsAg(+) রোগীকে HbsAg(-) সুস্থ মানুষে পরিনত করেন। প্রকৃত পক্ষে হেপাটাইটিস-বি তে আক্রান্ত হলে ৮৫-৯০% রোগী সম্পুর্ন সুস্থ হয়ে যান অর্থাৎ তারা শেষ পর্যন্ত HbsAg(-)হয়ে যান, আর বাকি ১০-১৫% সব সময়ই HbsAg(+) থেকে যান। আর এদের মধ্যেও only 5% liver cirrosis & liver cancer এ আক্রান্ত হন। অর্থাৎ যারা প্রতারনা মুলক ভাবে এই রোগের চিকিৎসা করেন তারা কিন্তু ৮৫% ক্ষেত্রে পূর্ণ সফল আর শুধু মাত্র ৫% ক্ষেত্রে পূর্ণ বিফল। কিন্তু হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা!!!!! প্রতিনিয়ত অপমান করছেন হোমিও চিকিৎসা বিদ্যা কে। সাধারন সচেতন মানুষের ঘৃনার বস্তুতে পরিনত করছেন ডাঃ হানিম্যানের এই মহান বিদ্যাকে।”

“আর আমাদের দেশের “ভেশজ” চিকিৎসক, “তাবিজ” চিকিৎসক, “ফু” চিকিৎসকরা বহু আগেই নিজেদের প্রশ্নের মধ্যে ফেলে দিয়েছেন। আর so called এলোপ্যাথি চিকিৎসা বলে আসলে কিছুই নাই। MBBS যারা পাশ করেন, তাদের শিখানো হয় শরিরের প্রতিটা অংশের জৈবিক ক্রিয়া, এর ব্যার্থতা, এবং তার সম্ভ্যাব্য ঠিক করার উপায়। অর্থাৎ একজন MBBS চাইলে হোমিও pharmacology অধ্যায়ন করে হোমিও চিকিৎসাও দিতে পারেন। ইউনানি, আয়ুর্বেদি pharmacology অধ্যায়ন করে তার চিকিৎসাও দিতে পারেন।”

WHO defination of drug: “Any substance or product that is used or intended to be used to modify or explore physiological systems or pathological states for the benefit of the recipient is drug”

“অর্থাৎ যে কোন কিছুই ঔষধ হতে পারে। ডাঃ যদি চামড়া পরিষ্কারের জন্য মাটি মাখতে বলে তাহলে মাটিই ড্রাগ আর যদি রক্ত পরিষ্কারের জন্য পানি পান করতে বলে তাহলে পানিই ড্রাগ।”

এই পর্যায় ডাঃ হাসান আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, Icddr,B এর ORS আবিষ্কারের ভিত্তি কি জানো মুদ্দাকির? আমি বললাম “না- জানি না”

তাহলে শোনঃ

“আমাদের এই গঙ্গা অববাহিকায় ডাইরিয়া হলে, রোগীদের (চিরা+পানি+লবন) অথবা (চিরা+পানি+লবন)+গুর অথবা (চিরা+পানি+লবন)+কলা খেতে দেয়া হইত। এই combination গুলারি easily available রূপ হইল ORS. যা আজ সাত মহাদেশের কোটি কোটি প্রান বাচায়। এই ORS এর আবিষ্কারের সময় ও তৎ পরবর্তি কালে এর নাম ছিল Dhaka(dacca) solution। কিন্তু হায় আমরা এই নামটাও ধইরা রাখতে পারি নাই…………আফসোস……!!!!”

ডাঃ হাসানের বাস্তবতার সাপেক্ষে আমার কিছু কথাঃ

১) গ্রাম বাংলার আনাচে কানাচে এখনো অনেক মেধাবি মানবের কষ্টার্জিত জ্ঞান ধুলা সম যত্নে আছে। বিজ্ঞানের এই যুগে সেগুল আর হাত ছাড়া হোতে দেয়া উচিত নয়। আমাদের স্বর্ন খনির স্বর্ন আমাদেরই তোলা উচিত।

২) আকুপ্রেশার যদি চৈনিক ভালো বিজ্ঞান হয় তবে যেন, আমাদের দেশেও এটা ভালো হাতেই থাকে, ভন্ড প্রতারকদের নুতন মানুষ ঠকানোর হাতিয়ার না হয়।

৩) চাইনা আর কোন ভালো বিজ্ঞান স্বপ্নে পওয়া ঔষধের খেতাব পাক(শুধু মাত্র গুরুত্ত্ব বাড়ানর জন্য)। আর বাংলার কেউ যদি স্বপ্নে কোন জ্ঞান পায় তা যেন বাংলার সম্পদ হয়ে থাকে। কাজ হইলে আমাদের স্বপ্নে পাওয়া ঔষধেও চলবে।

৪) আকুপাংচার যেমন অসাবধানতায় প্রচুর রক্তবাহি জিবানু ছড়িয়েছে, আকুপ্রেশার যেন অসবধানতায় একটিও সামাজিক জিবানু না ছড়ায়।

৫) মানুষের বোঝা উচিত, বিশেষ করে (গোয়াড়,MBBS) ডাক্তারদের বোঝা উচিত যে, প্রচলিত কোন একটা নির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতিতে সকল রোগের চিকিৎসা সম্ভব না।

৬) কোন রোগের জন্য প্রচলিত প্রতিষ্ঠিত কোন চিকিৎসা পদ্ধতি থাকতে অপ্রচলিত অজানা কোন চিকিৎসার দিকে ঝুকবেন না। (যেমনঃ ঘটনা এক এর মারিয়াম বেগম ডিমেনসিয়ার চিকিৎসা আকুপ্রেশারের মাধ্যমে করাতে চাচ্ছেন, যা কোন ক্রমেই উচিত না)


আমার কিছু ইমোসানাল দাবিঃ

১) শরির বিদ্যার কিছু না জেনেই শরিরের চিকিৎসা করা যায় না, আজ কালের ক্লাস ফাইভ পাশ অর্ধ মূর্খের জন্য বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি গুলো প্রতি নিয়ত তাদের গুরুত্ত্ব হারাচ্ছে। এর অবসান চাই।

২) আর যদি কোন মূর্খের কাছে পুরাতন স্বর্নের ভান্ডার থাকে, তবে তার সঠিক ব্যাবহার চাই।

৩) আঞ্চোলিক ভাবে সীমাবদ্ধ আছে, এমন আঞ্চলিক কিন্তু কার্যকরি চিকিৎসা পদ্ধোতি গুলার বৈজ্ঞানিক সংরক্ষন চাই।

৪) স্বশিক্ষিত কোন বাঙ্গালির জ্ঞানের সঠিক সম্মান, ও মালিকানা চাই।

৫) আদিবাসি??!!(উপজাতি??) দের ব্যাবহারিত চিকিৎসা পদ্ধোতির বৈজ্ঞানিক profile and study চাই।

উপরের এক নং ঘটনাটা বলা শেষে ডাঃ হাসান নিম্নক্ত মন্তব্যটি করেছিলেন,

যদি শুধু মাত্র হাতের ৩০ নং বিন্দুতে টিপে Asthma, COPD, Lung TB, Lung cancer, cystic fibrosis, pneumonia, ILD, allergic bronchopulmonary aspargillosis………………ইত্যাদি সকল ফুসফুসিয় রোগের চিকিৎসা হইত তাহলে, তা হইত মানুষের চাঁদে যাওয়ার চেয়ে যুগান্তকারি বৈজ্ঞানিক ঘটনা। আর ঐ বিজ্ঞান কাউকে খুজে খুজে শিখতে হত না।”



আসসালামুআলাইকুম, ভালো থাকবেন।
পরে আবার কথা হবে। ইনশাল্লাহ।

!!!মুসলমানের পৌরাণিক মিরাজ!!!

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:৫৪
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×