somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কে এই রানা?

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কে এই রানা?

রানা প্লাজার সোহেল রানা। সোহেল রানার পিতা আব্দুল খালেক তেলের ঘানির শ্রমিক (কলু) মানিকগঞ্জে বাড়ির কাছে গ্রামে তেল ফেরি করতেন। সেজন্য মানিকগঞ্জের গ্রামে তারা কলু পরিবার হিসেবে পরিচিত।
১৯৮৯ সালে মানিকগঞ্জ থেকে সাভার বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন ছোট বলিমেহের মৌজার ১৫,১৬, ১৭ ও ২৩ নম্বর দাগের কিছু জমি ক্রয় করে সাভার চলে আসেন আবদুল খালেকের পরিবার। এসে তেলের ঘানি স্থাপন করেন, পুরনো ব্যবসার সুত্র ধরে।

১৯৯৪ সালে জাকির ড্রাইভার নামক এক বন্ধুর মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল নেতা ও সাভার কলেজের ভিপি হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে তার সখ্যতা হয়। জাকির ছিল ছাত্রদলের সন্ত্রাসী হেলালউদ্দিনের বডিগার্ড ও গাড়ির ড্রাইভার। রানা তখন এক সাধারন ছিঁচকে সন্ত্রাসী। ৮ম শ্রেনীর পর লেখপড়ায় ইস্তফা। ছাত্রদলে যোগ দেয়ার যোগ্যতাও নেই।
ড্রাইভার জাকিরের সঙ্গে রানার বোন সুফিয়া আক্তারের প্রেম থেকে পরে বিয়েও হয় এবং এরপর হেলালের সঙ্গে যোগসুত্র আরো বেড়ে যায়।
ছাত্রদল নেতা হেলালউদ্দিন ও দেহরক্ষী ড্রাইভার জাকিরের মদদে সাভারে রানা হয়ে যায় একজন ছাত্রদল-যুবলদলের মালদার টেরর।

২০০১ সালে বিএনপি নেতা আবদুল খালেকের ছেলে সোহেল রানা জোর করে নামমাত্র মুল্যে ২৭ শতাংশ জমি দখল করেন। জমির মালিক রবীন্দ্রনাথ সরকার মামলা করলে বিএনপি-জামাতের ক্ষমতার প্রভাবে সাভার ছাড়া হতে হয় তাকে।
পরে বিএনপি-জামাতের প্রভাবে এই হিন্দু পরিবারের কাছ থেকে নামমাত্র অর্থ দিয়ে এই জলাভূমিটি নিজের নামে লিখে নেন। জলাভূমিতেই নির্মাণ শুরু করেন রানা প্লাজার কাজ।
রানা প্লাজার অনুমোদন পায় ২০০৫ সালে, পৌরসভার নির্মান অনুমতি পায় পূর্তমন্ত্রী মির্জা আব্বাসের সুপারিশে সাভার পৌরসভার মাধ্যমে ।
২০০৬ সালে ৬ তলা ভবনের কাজ শুরু, কিন্তু ডেভোলপারের সাথে দন্ধে ২তালার পর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৭এ কাজ শুরু হয়, তার আগে নিয়ম ভঙ্গ করে অনুমোদন ৬ তলা থেকে ৯ তলায় পরিনত করা হয় বিএনপি সমর্থক পৌরসভার মাধ্যমে।
এই অনিয়মকে বৈধ করতে বিএনপি সমর্থক পৌরসভা, মির্জা আব্বাস ও স্থানীয় বিএনপি নেতাদের কোটি টাকা ঘুষ দিতে হয়েছিল। রানা বিয়েও করেছিলেন প্রভাবশালি বিএনপি নেতা ও সাভার পৌর কমিশনার (কাউনসিলার) এর মেয়ে কে।
রানাপ্লাজায় ভাড়ানেয়া নিউ ওয়েভ বটমস লিমিটেডের মালিক বজলুস সামাদ আদনান, নিউ ওয়েভ স্টাইলের মালিক মাহবুবুর রহমান তাপস ও ইথার টেক্সের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান, এরা সবাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
২০০৯ এ আওয়ামীলীগ নির্বাচনে জয়লাভ করলে ছাত্রদলের হেলালুদ্দিনের ক্ষমতা খর্ব হয়, তখন রানা কিছুদিন নিষ্ক্রিয় থাকে।

২০১০এ রানাপ্লাজার দোকান ভাড়ার এডভান্স নিয়ে শালিশি বৈঠকে স্থানীয় MP তৌহিদ জং মুরাদ এর সাথে তার পরিচয়, এর পর হয়ে যায় যুবলীগের ক্যাডার,
হতেই হবে। আত্নসাত করা অবৈধ সম্পদ রক্ষা করার এটাই সর্বত্তম উপায়। কিছুদিন পরে বনে যান যুবলীগের নেতা।

রানা প্লাজা ধ্বংশের দায় আমি সবটা রানাকে দিবনা। যারা অনুমোদন দিল, ৬ তালাকে ৯ তালার অনুমতি দিল, ২৩ তারিখে একটি পিলারে ক্রাক দেখা দিলে সবাইকে ভবন খালি করে UNO, OC ও উপজেলা পোর চেয়ারম্যান, পৌর প্রকৌশলিদের ডাকে। তারা চেক করে বলে, এটা জটিল এবং আমার আওতার বাইরে। বুয়েট ও রাজুকের এক্সপার্ট ছাড়া সিদ্ধান্ত দেয়া যাচ্ছেনা। এরপর UNO বলে কাল বুয়েট থেকে টিম আসবে।
এরপর সে তার দলবল নিয়ে চলে যায়, ভবনটি তালাবদ্ধ না করেই।

আমার মতে দায়ী যারা, তালিকা।

১। UNO সবচেয়ে বেশী দায়ী।

২। সাভার পৌর সভার চেয়ারম্যান, পদাধিকার বলে ৬ কে ৯ তালা করার অনুমোদন ক্ষমতা তার।

৩। গার্মেন্টস মালিকেরা ৬, ৭, ৮ ও ৯ তলার। যারা জেনেশুনে অর্থ লোভে সেদিন কারখানা চালু করেছিলেন।

৪। রানা অবস্যই দায়ী, কিন্তু কতটুকু?

রানা বরং হরতালের প্রথম দিন ভবন খালি করে পৌর টিম ও ইউএনও কে এনেছিলেন পিলার ফাটা ভবনটির একটা বিহিত করার চেষ্টায়, কিন্তু গার্মেন্টস মালিকেরা শুনেনি।

পদাধিকার বলে UNO সবচেয়ে বেশী দায়ী, কারন সে জেনেশুনেও ভবন সিগালা করেনি। তার ফাসি হওয়া উচিত!

কেউ কেউ বলছে রানা হরতাল বানচাল দেখাতে কারখানা চালু করেছিলেন। কিন্তু গার্মেন্টস সেক্টর যারা জরিত তারা ভালভাবেই জানেন এই গার্মেন্টস প্রডাকশান খাত সব আমলেই হরতালের আওতা মুক্ত। এটা অলিখিত চুক্তি। সাভার, আশূলিয়া গাজিপুর অন্চলে সবাই জানে।
তাই গার্মেন্টস চালু রেখে হরতাল বানচাল চেষ্টা হয়েছে বলা হলে ভুল হবে। এসব এখানে ফাল্তু অযুহাত।

হয়তো সময়ই বলে দিবে কে কে দায়ী।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৭
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×