somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ট্যাঁশগরু গরু নয়, আসলেতে পাখি সে

০২ রা মে, ২০০৭ বিকাল ৪:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কষ্ট করে আমাকে আর হারুদের আপিসে যেতে হয় না। ট্যাঁশগরু, ট্যাঁশছাগু, ট্যাঁশসাধুদের একটা ধৈর্য নিয়ে বসলে এই ব্লগেই মাঝে মাঝে দেখা যায়।

এই ট্যাঁশগরুদের কয়েকজন ব্লগের শুরু থেকেই খুব পরিস্কার ভাষায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে কটাক্ষ করে আসছে। তখন দুয়েকজন ব্লগার ক্ষীণকন্ঠে তাঁদের সাধ্যমতো প্রতিবাদ করেছেন সেইসব পাকমনপেয়ারদের (ধন্যবাদ শিমুলকে এই শব্দসজ্জার জন্য)। মাসখানেকের মধ্যে ব্যাপারটা উল্টে যায়, ব্লগে শূকরের তুলনায় মানুষের অংশগ্রহণ বেড়ে যায় এবং মুক্তি সংগ্রাম নিয়ে যে কোন ধরনের ইতরামোকে কঠোর ভাষায় তিরস্কার একটা নিত্যকালীন ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এর পরেই ব্লগে আগমন ঘটে সাবানের-স্যুপ-আর-মোমবাতিখোর ট্যাঁশগরুদের।

এদের অ্যাঙ্গল অফ অ্যাটাক ছিলো ভিন্ন। নিজেকে বিভ্রান্ত দাবী করে নানারকম মন্তব্য করে যাওয়াই ছিলো তাদের খুনসুটি। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়ে কি আসলেই বিভ্রান্তির তেমন কোন সুযোগ আছে, যদি স্বেচ্ছায় কেউ বিভ্রান্ত থেকে যেতে না চায়? খুনসুটির জোয়ারে একসময় তাদের বিভ্রান্তির তাঁবু থেকে বেরিয়ে পড়ে মওদুদিবাদী উট। দেখা যায় বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসপাঠে অনিচ্ছুক কোন মুহতারামার বালিশের নিচ থেকে বেরিয়ে পড়ে গোলাম আজমের জীবনী, "পাকিস্তানকে সমর্থন করা কোন অপরাধ নয়" গোছের কথাবার্তাও যেন কীবোর্ড ফসকে ছিটকে এসে পড়ে পোস্টে, আর ট্যাঁশসাধুরা প্রশ্ন তোলে ১৯৭১ এর নয়মাসের হত্যাযজ্ঞে নিহতদের সংখ্যা নিয়ে। তিন লক্ষ নাকি তিরিশ লক্ষ? যেন তিন লক্ষ মানুষ মারা গেছে এটা প্রমাণিত হলেই পাকিস্তানী সেনাবাহিনী, রাজাকার বাহিনী, আলবদর, আলশামস, বিহারী মিলিশিয়া, স্থানীয় দালাল, এদের সবার পাপ লঘু হয়ে যায়।

এ নিয়ে বিতন্ডা কম চলেনি। আমরা সাধ্যমতো প্রতিবাদ করেছি এই বিভ্রান্তিবণিকদের প্রলাপের। অমি রহমান পিয়াল তখন দিনের পর দিন পোস্ট করে গেছেন মুক্তিযুদ্ধকালীন বাস্তবতা নিয়ে। তথ্যের স্রোতে ভেসে যাবার সময় থেকে মঞ্চে আগমন ঘটে স্পিনার ট্যাঁশছাগুদের।

ট্যাঁশছাগুরা কোমর বেঁধে নেমে পড়ে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধকে ইসলামবিরোধী একটি কর্মকান্ড হিসেবে প্রতিপন্ন করার। তাদের স্বীকার্য ফরমূলা হচ্ছে অনেকটা এমন, ইসলাম = জামাতে ইসলাম। এ কথা সত্য যে মুক্তিযুদ্ধ আর জামাতে ইসলাম দুটি পরস্পরবিরোধী ব্যাপার, এমনকি জামাতে ইসলামের কর্মকান্ডের সাথে ইসলামের মূলধারার কতখানি যোগ তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। ট্যাঁশছাগুরা তাদের স্বল্প মেধার আস্তিনের নিচ থেকে একের পর এক তাস বের করার চেষ্টা করে, যার বেশির ভাগই ছিলো জোকার নয়তো দুই নাম্বার। এ নিয়ে ব্লগে হাস্যরসও গড়িয়েছে অনেক, ধন্যবাদ দিতে হয় ত্রিভুজকে।

নিজের মাতৃভূমির খেয়েপরে যারা একটি নৃশংস রক্তলোভী খুনীবাহিনীর সমর্থন যুগিয়েছিলো কথায় ও কাজে, তাদের পুত্রকন্যারা যদি তাদের সেই কলঙ্ককে ধর্মের সাবান দিয়ে ধোয়ামোছার চেষ্টা করেন, তাহলে অপমানটা বর্তায় ধর্মের ঘাড়েই। নিজেদের চামড়া বাঁচানোর জন্যই তাদের এই মরিয়া হাল, আমরা বুঝি। নানাভাবে তারা আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, ৩৬ বছর আগের সেই ঘটনাটির কথা ভুলে গিয়ে সামনে তাকাতে, আবার পরক্ষণেই বিশ্লেষণ করতে বসেন সাহাবাদের কীর্তিকাহিনীর। যার পরিবারের্‌ একটি মানুষও নিহত হয়েছে সেই বর্বরদের হাতে, সে কি এসব কথায় ভোলে?

ক্ষমা নাই সেইসব হন্তারকদের। হন্তারকের নতুন প্রজন্মের ল্যাংবোটরা পারবেন না তাদের বাপচাচাদের পাপ মাটিচাপা দিতে। সেই পাপের অংশীদার তারা না হোন, সেই অনুরোধ করি।

৩২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×