বেশ কিছু দিন যাবৎ লক্ষ্য করছি সামুর কিছু বন্ধুরা ধুমছে কবিতা লিখছেন। পঞ্চমুখ বলে একটা কথা শুনেছিলাম। তবে কাদের পঞ্চমুখ আছে তা আজও দর্শনের সুযোগ হয় নাই। পাঁচ মুখের সমাহারে পঞ্চমুখ হয় বলে আমার ধারণা। তো সামুর অনেক বন্ধুরা এই সকল কবিদের কবিতা পাঠ করে উচচ্ছাসিত প্রশংসা করে। এক কথায় প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বিশেষ করে সেই কবি যদি বিপরীত লিঙ্গের হন। আমার বিশ্বাস কবিতা লেখা বা বুঝার ক্ষমতা সবার থাকে না। আমি সেই দলের। মোটা মাথার কবিতা পাঠক বলা যায়। ছন্দের মিল না থাকলে আমার কাছে সেটা কবিতা বলে মনে হয়না। আমার ধারণা ছন্দের মিল না থাকলে বা ছন্দপতন কবিতার অংগহানী করে।
তবে আধুনিক কবিদের সেই চিন্তা করতে হয়না। এটার নাম গদ্য কবিতা। আধুনিক কবিরা গদ্য লিখে যান ইচ্ছামত, নাম দেন কবিতা। অনেকে ভূয়সী প্রশংসা। এমন প্রসংশা যে কবিতার লেখক ও হয়তো লজ্জাবোধ করেন তাদের প্রশংসা বাক্যে। পারলে হয়তো নোবেল পুরস্কার দিয়ে দিতেন জাতীয় বাক্য প্রয়োগ করেন তারা তাদের মন্তব্যে। আমি বিব্রত বোধ করি। যারা সত্যি কবিতার সমঝদার বা যারা কবিতার বিজ্ঞ পাঠক তারও নিশ্চয়ই এই সকল নব্য কবিদের লেখার মন্তব্যকারীদের মন্তব্য দেখে মুচঁকি হাসেন। কবিতা লেখা বা লিখবার চেষ্টা অবশ্যই দোষের কিছু নয়। তবে কবিতা লিখতে হলে যা প্রয়োজন তা হলো বেশী বেশী করে প্রতিষ্টিত কবিদের কবিতা পাঠ করা। এর কোন বিকল্প নাই।
তা ছাড়া কবিতাটি সামুতে পোস্ট দিবার পূর্বে কোন একজন বিজ্ঞজনকে দিয়ে তার ভুল ত্র“টি সংশোধন করা কর্তব্য। আর যারা সত্যিই কবিতা বোঝেন তাদের উচিৎ যথার্থ সমালোচনা করা। শুধু কবিকে সন্তষ্ট করার জন্য বা তার কাছে আসবার চেষ্টা পরিহার করে তার গঠনমূলক পরামর্শ দিন যেন সে আরো ভালো লেখায় উদ্বুদ্ধ হন। ভালো লেখা উপহার দিতে সক্ষম হন। প্রতিটি মানুষের জীবনে একটা সময় আসে যখন সব কিছুই ভালো লাগে। নিজেকে কবি কবি ভাবতে ইচ্ছা করে। আপনারও হয়তো সেই সময় এসেছে বা আসবে। হয়তো আমার মতো সে সময় পেরিয়ে গেছে। আমিও একসময় কবি হবার ইচ্ছা হতো। চেষ্টা করে সফল হতে না পেরে এখন গদ্য ও কলাম লেখায় মনোযোগী হয়েছি। এই লেখারসাথে সংশ্লিষ্ট আমার জীবনের একটা কথা শেয়ার করতে লোভ হল। ” কবি হতে
ইচ্ছার সময়টাতে বেশ কিছু কবিতা লিখে খাতার পাতা পূর্ণ করে ফেলেছি। তারপর তা পত্রিকার পাতায় প্রকাশের খায়েস জাগলো। আমার পরিচিত এক প্রকাশকের দ্বারস্থ হলাম। তিনি মনোযোগসহকারে কবিতাগুলো পাঠ করে আমাকে উপদেশ দিলো। কবিতাসমূহে আমার আবেগ ও যত্নের ছাপ থাকলেও কবিতার অন্তরা ও ছন্দের পতন হয়েছে।
সুতরাং আরও লিখবার পরামর্শ দিলেন। আর পরামর্শ দিলেন ” গদ্য কবিতা লেখার চেষ্টা করতে পার ”। আমি গদ্য কবিতা লেখার নিয়ম কানুন জানতে চাইলে তিনি যা বললেন তাতে আমার আক্কেল গুড়–ম। তার পরামর্শ - ”প্রথমে যেকোন একটা বিষয়ে রচনা লিখবে। গরুর রচনা হলেও ক্ষতি নাই। তার পার রচনাটির দুই পার্শ্ব থেকে এক ইঞ্চি করে ছেটে ফেলবে দেখবে চমৎকার একটি গদ্য কবিতা রচনা করে ফেলছ।” আমি সেদিন তার সেই কথার মানে না বুঝলেও এখন বুঝতে পারছি সামুর কিছু নব্য কবিদের কবিতা পঠ করে। আর তাদের প্রশংসাকারীদের মন্তব্য দেখে শুধু বলতে ইচ্ছা হয় হায় সেলুকাস ! কি বিচিত্র আমাদের সামুর কবি ও তার পাঠক।
বিঃদ্র ঃ আমি সম্মানের সাথে সেই সকল কবিদের আমার এ লেখার আওতামূক্ত রেখেছি যারা সত্যিই অনেক ভালো লেখেন। আমার লেখার সাথে যারা একমত তাদের মন্তব্য আশা করি । আর যারা দ্বিমত পোষণ করেন তাদের কাছ থেকে ব্যাখ্যা । আমার লেখা কারো মনোপীড়ার কারন হলে নিজগুণে ক্ষমা করবেন এই প্রত্যাশায়
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৪:৫১