সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির নৃশংস খুনের রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে (!) তবে পুলিশের আইজি হাসান মাহমুদ খন্দকার সংবাদ সম্মেলণে বলেন "সাগর ও তার স্ত্রী রুনির খুনিদের শনাক্তের শেষপ্রান্তে রয়েছে পুলিশ"। যে কোনো সময় গ্রেফতার হতে পারে খুনিরা। সম্ভবত এই দম্পতির দুই বন্ধুর হাতেই নির্মম এ খুনের ঘটনা ঘটেছে। সূত্র জানিয়েছে, ব্যক্তিগত আক্রোশের জের ধরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। কিলিং মিশনের দুই সদস্যকেই শনাক্ত করেছে পুলিশ। তবে টেকটিক্যাল কারনে এখনই তাদের নাম প্রকাশ করছেন না। তারা দু'জনেই গোয়েন্দা জালে রয়েছেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। অপর একটি সূত্র বলছে, তাদের ইতিমধ্যেই আটক করা হয়েছে। অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, তারা দু'জনই পেশায় সাংবাদিক। তাদের গোয়েন্দা হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, খুনিদের গ্রেফতারের খবর যে কোনো মুহূর্তে জানানো সম্ভব হবে।পুলিশ তাদের পরিচয় না জানালেও ধারণা করা হচ্ছে, সন্দেহভাজন দুই খুনিই সাংবাদিক দম্পতির দীর্ঘদিনের পরিচিত।
প্রসঙ্গত গত শুক্রবার রাতে রাজাবাজারের ৫৮/এ/২ নম্বর হোল্ডিংয়ে রশিদ লজের ছয়তলা ভবনের পঞ্চম তলার ফ্ল্যাটে (এ-ফোর) নৃশংসভাবে খুন হন এই দম্পতি। শনিবার সকাল ৭টার দিকে তাদের ছেলে মেঘ বাবা-মায়ের রক্তাক্ত লাশ দেখে রুনির মাকে খবর দেয়। এ ঘটনায় রাজধানীসহ দেশব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। সাগর সরওয়ার বেসরকারি টেলিভিশন মাছরাঙার বার্তা সম্পাদক এবং মেহেরুন রুনি এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ছিলেন।
গত দুই দিনের পত্রপত্রিকা ও মিডিয়ার খবর পাঠে ও শুনে প্রশ্ন জাগে (!!)
১। মেহেরুন রুনি সন্ধ্যে ৬:৩০ মিনিট থেকে ৭:০০ মধ্যে তার কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে তার মা'য়ের বাসা থেকে মেঘ কে সাথে করে বাসায় আসে। গাড়ীতে তার সাথে আর কে কে ছিলো !
২। যেহেতু খুনিরা তার পূর্ব পরিচিত তাই রুনি সাথে থাকায় তাদের পরিচয় লিপিবদ্ধ হয়নি গেস্ট লিষ্টে, এরা কি আগেও এই বাসায় আসতো !
৩। রুনির এক ভাই রাত ১০:০০ পর্যন্ত বাসায় ছিলো এবং মেঘকে প্রশ্ন করে ছিলো গেস্টদের পরিচয়, মেঘ বলেছিলো তারা আব্বুর বন্ধু, রুনির ভাই যখন চলে যায় তখনও কি তারা বাসায় ছিলো? তাদের সম্পর্কে কি কোন প্রশ্ন করেছিলো তার বোনের কাছে?
৪। রুনি আগন্তকদের নুডুলস/ডিম ভাজি দিয়ে ভাত খেতে দিয়েছিলো যার প্রমাণ ও মিলেছে, আন্তরিক পরিবেশে কেন তারা খুন করার মতো নির্মম কাজে লিপ্ত হলো !!
৫। রুনির মোবাইল ফোন কেন বন্ধ ছিলো দীর্ঘ সময় (!) সাগরের ওই দিন রাত ১টার খবর প্রচারের দ্বায়িত্ব ছিলো, তার সাথে যোগাযোগ রাখতে ফোনের বিকল্প নাই। তার পরেও ফোন বন্ধ থাকায় সাগর চিন্তিত ছিলো। যা তিনি তার সহকর্মীদের কাছে প্রকাশ করেছেন।
৬। সাগরের পাঁ ও মাথা বাধা থাকলেও রুনির কোন অঙ্গ বাধা ছিলোনা ! এতে বোঝা যায় সাগরকে হত্যার কাজে বাধ সাধাতে তাকে খুন করা হয়েছে!
৭। সাগর দম্পতির ৫ বছরে একমাত্র ছেলে মেঘের উর্দ্ধিতি দিয়ে এক এক রকম খবর পরিবেশিত হয়েছে। একবার বলা হয়েছে খুনিরা তাকেও গুলি করার ভয় দেখিয়েছে , আবার বলা হয়েছে পিকনিক থেকে ফিরে ক্লান্ত হয়ে সে ঘুমিয়ে পড়েছিল। সকালে ঘুম থেকে উঠে সে বাবা মার মৃতদেহ দেখে তার নানুকে সংবাদ দেয়। এর কো্ন টি ঠিক ! মেঘ পুলিশকে বলেছে, দুই ব্যক্তি তারা বাবা-মাকে হত্যা করেছে। ওই দু'জনকে আগে সে একটি পিকনিকে দেখেছিল।
এমন অনেক প্রশ্নেরই জবাব মিলছে না। তবে অচিরে এই নির্মম ও নৃশংস হত্যাকান্ডর রহস্য উন্মোচিত হবে তা যতই নির্মম হোক এবং দোষী যেই হোক তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে এটাই আমাদের কাম্য।
এ হত্যার রহস্য 'শিগগির' উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:৩৮