কোরআন যে সত্যি তার প্রমান তার ভিতরেই আছে,
কোরআন শরীফে হযরত মুহাম্মদ(স) এর একজন দুশমন এর নাম
উল্লেখ করা হয়েছে, তার নামে সূরা যার নাম সুরা লাহাব। সে হচ্ছে আবু
লাহাব। ওহী নাযিল হওয়ার পর যদি আবু লাহাব ইসলাম কবুল
করতো তাহলে কোরআন শরীফের আয়াতটি মিথ্যা প্রমাণিত
হতো। কিন্তু আবু লাহাব ইসলাম কবুল করেনি এবং কোরআন
শরীফের আয়াত চিরকাল সত্যিই রয়ে গেছে।
কোরআনশরীফে ‘সূরা রোম’ এ পারস্য সাম্রাজ্য ধ্বংসের
ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে এবং যে সময় এই ওহী নাযিল হয়
তখন মানুষের পক্ষে বিশ্বাস করা অকল্পনীয় ছিলো যে,
রোমকদের যারা পরাজিত করলো তারা অচিরেই তাদের
হাতে ধ্বংস হতে পারে। এ আয়াত নাযিল হবার ৭ বছর সময়ের
মধ্যে, অর্থাৎ ৬২৭ খ্রীস্টাব্দে এসে সত্য প্রমাণিত হয়েছে। এ
আয়াতে ‘ফী আদনাল আরদ’ বলে আল্লাহতা‘আলা গোটা ভূ-
মন্ডলের যে স্থানটিকে সর্বনিম্ন অঞ্চল বলেছেন
তা ছিলো সিরিয়া, ফিলিস্তিন ও জর্ডানের পতিত ‘ডেড
সী’
এলাকা। এ ভূখন্ডেই ৬২৭ খ্রীস্টাব্দে রোমানরা ইরানীদের
পরাজিত করে। মাত্র কিছুদিন আগে আবিষ্কৃত ভূ-জরিপ
অনুযায়ী এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, এই
এলাকাটা সারা দুনিয়ার মধ্যে আসলেই নিম্নতম ভূমি।
‘সী লেবেল’ থেকে ৩৯৫ মিটার নীচে। এ
জায়গাটা যে গোটা ভূ-খন্ডের সবচেয়ে নীচু জায়গা এটা ১৪ শ
বছর আগের মানুষ কি করে জানবে? বিশেষ করে এমন একজন
মানুষ যিনি ভূ-তত্ত্ব, প্রাণী-তত্ত্ব
ইত্যাদি কোনো তত্ত্বেরই
ছাত্র ছিলেননা।
কোরআনে অনেক জায়গায়ই একের
সঙ্গে অন্যের তুলনা উপস্থিত
করা হয়েছে। এ তুলনা উপস্থিত করার
ব্যাপারে একটি অবিশ্বাস্য মিল অবলম্বন
করা হয়েছে এবং তা হচ্ছে, সে দু‘টি নাম অথবা বস্তুকে সমান
সংখ্যাতেই আল্লাহতা‘আলা তাঁর কিতাবে উল্লেখ
করেছেন।
যেমন, কোরআন শরীফে সূরা ‘আল ইমরান’ এর ৫৯
নং আয়াতে আল্লাহপাক বলেছেন, ‘আল্লাহতা‘আলার
কাছে ঈসার
তুলনা হচ্ছে আদমের মতো।’ এটা যে সত্য
তা আমরা বুঝতে পারি। কারণ, মানবজন্মের
স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় উনাদের কারোরই জন্ম হয়নি। আদম
(আ) এর মাতাও ছিলনা, পিতাও ছিলনা এবং ঈসা (আ) এরও
পিতা ছিলোনা। এখন এই তুলনাটি যে কত সত্য তার প্রমাণ
পাওয়া যায় যখন আমরা কোরআন শরীফে এ দু’টি নামের মোট
সংখ্যা অনুসন্ধান করি। দেখা যাচ্ছে কোরআন শরীফে আদম
(আ) ও ঈসা(আ) উভয়ের নামই পঁচিশবার এসেছে। কোরআনের
বাণীগুলো যে মানুষের নয় তা বোঝা যায় এ দু’টি নামের
সংখ্যার সমতা দেখে। আল্লাহতা‘আলা যেহেতু বলেছেন, এ
দুটো একই রকম, তাই সেগুলোর সংখ্যা গণনাও ঠিক একই রকমের
রাখা হয়েছে। এই তুলনার ক্ষেত্রে আরেকটি অলৌকিক বিষয়
হলো,
যেখানে তুলনাটি অসম সেখানে সংখ্যা দুটিকেও অসম
বলা হয়েছে। যেমন, কোরআনে বলা হয়েছে-সুদ ও বাণিজ্য এক
নয়। আমরা দেখতে পাচ্ছি, এ শব্দ দুটির
একটি কোরআনে এসেছে ছয়বার এবং অপরটি সাতবার।
বলা হয়েছে ‘জান্নাতের অধিবাসী ও জাহান্নামের
অধিবাসী সমান নয়’। জান্নাতের সংখ্যা হচ্ছে আট, আর
জাহান্নামের সংখ্যা হচ্ছে সাত। সূরা ‘আরাফ’ এ এক
আয়াতে আছে , ‘যারা আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ
অস্বীকার করে তাদের উদাহরণ হচ্ছে কুকুরের মতো’।
বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যেতে হয় যখন আমরা দেখি,
‘যারা আমার
সুস্পষ্ট আয়াতকে অস্বীকার করে’-এই
বাক্যটি কোরআনে পাঁচবার এসেছে। যেহেতু তাদের উদাহরণ
দেয়া হয়েছে কুকুরের সাথে, তাই সমগ্র কোরআনে ‘আল কালব’
তথা কুকুর শব্দটাও এসেছে পাঁচবার।
এই মিলটা প্রমান করে কোরআন এক মহা বিস্ময়!!!!!