somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অল্পস্বল্প ব্লগিং-১

১৮ ই মে, ২০১৪ রাত ১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মোটামুটি ভাবে পার করে দিতে পারা এই জীবনটাতে আমার আশপাশে এমনকি আমার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষগুলোকে দেখে আসছি যারা নিজের ষোলোআনা বুঝে পেতে সর্বক্ষণ মরিয়া। কখনো কখনো আঠারো আনাতেও যেন অতৃপ্তি থেকে যায়। আজন্ম ঠকে ঠকেও শিখতে পারলাম না নিজের ষোলোআনাটুকু বুঝে নিতে। এ যেন আমার নির্ধারিত নিয়তি।

অদৃষ্ট তো কখনো কখনো বদলায়, আমার অদৃষ্ট সেই একটাই; সর্বক্ষেত্রে ঠকে যাওয়াটাই পরিণতি। আমার কাছ থেকেই সবাই ছাড় পেতে উন্মুখ, কিন্তু নিজের পান থেকে এক রত্তি চুন খসাতেই যেন হাত চলে না কারো। তাদের মনের ভেতরটা তো আর দেখতে পাই না। ওপরে ওপরে যতটা টের পাই পলিস কখনো কখনো কারো ফেটে যায়। কী প্রয়োজনরে বাপু তোমার যা নেই তা দেখানোর মতো আহাম্মকি করতে যাওয়া? এতে কি তোমার গুরুত্ব কিছুটা বাড়ে? মুসাফিরকে শোবার জায়গা দিতে না পারলে রাত বাড়বার আগেই তাকে মসজিদের পথ দেখিয়ে দেওয়া উচিত। এতে করে গেরস্থের যেমন মান বাঁচে মুসাফির বেচারারও রাতের আশ্রয়টুকু নিশ্চিত হয়। চারদিকে এতসব মুখোশের ভিড়ে নিজের মুখোশ খুঁজে না পেয়ে পালিয়েছি কিছুটা সময়ের জন্যে। দম ফেলবার জন্যে হলেও খানিকটা একা থাকা জরুরি।

এক চিলতে বিছানা থেকে নোংরা চাদর সরিয়ে পরিষ্কার আরেকটি পুরোনো চাদর বিছানোর ফাঁকে ফাঁকে অনর্গল কথা বলে যাচ্ছিল মেয়েটি। পাশে দাঁড়িয়েই রাতের জরাগ্রস্ত আলোতে খুঁটিয়ে দেখতে চেষ্টা করছিলাম তাকে। এক সময় শিখেছিলাম এভাবে কোনো মেয়েকে খুঁটিয়ে দেখা অসভ্যতা। কিন্তু সভ্য যে হতে পেরেছিলাম সেই নিশ্চয়তাও কারো কাছে পাইনি। তা ছাড়া দীর্ঘকাল নারীসঙ্গ বঞ্চিত পুরুষের মনে কী পরিমাণ লোলুপতার জন্ম হতে পারে তা হয়তো সবার অনুমান শক্তির বাইরেই থেকে যায় পুরোটা। মেয়েটির আচার আচরণে মনে হচ্ছিল পেশাদার হলেও কোথাও যেন খানিকটা সারল্য মিশে আছে। হতে পারে এটি আমার দেখার ভুল। অনেকে সারল্যের ভান করে ঠিকই, কিন্তু শেষপর্যন্ত ধরে রাখতে পারে না। কখনো না কখনো প্রকৃত সত্যটা মাথা তুলে দাঁড়াবেই। মানুষটা যত সতর্ক থাকুক না কেন, ভুলচুক সে করবেই; আর সে ভুলের ফাঁক-ফোঁকর দিয়ে খানিকটা হলেও দেখা যাবে তার সত্যিকার চেহারাটি।

এমন জায়গায় আমাকে আসতে হবে কখনো ভাবিনি। নিজেকে যৌন খদ্দের হিসেবেও কোনোদিন কল্পনা করিনি। কিন্তু এটাকেই সত্য করে তুললাম কেন বুঝতে পারছিলাম না। অবশ্য অতটা গভীরে ভাবতেও ইচ্ছে করছিল না। দেহকাতর কোনো মানুষের পক্ষে শুদ্ধতার পরীক্ষা দেবার ধৈর্য ধারণ অসম্ভব। অবাস্তবও। অথচ রুম্পার কাছে আমার একটিই অনুরোধ ছিল সকাতরে- আমাকে ভেঙে চুড়ে নিজের ছাঁচে গড়তে চেও না। তাহলে তোমার নাগালে আমার কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। কিন্তু আমি যে দুহাত ভরে দিতেই এসেছি, আমার মতো মানুষের কিছু চাইতে নেই; আর চাইলেও যে প্রাপ্তির ঘর ফাঁকা থাকবে তা আমার ভুলে যাওয়াটা উচিত হয়নি। আর সেই ভুলের মাশুল দিতেই আজ আমার রাত্রিবাসের পরিকল্পনা এই নিষিদ্ধ পল্লীর খুপরি ঘরে।

দুটো বালিশের কভার বদলানোর অবসরে মেয়েটি আমার দিকে চকিতে একবার তাকিয়ে ফের নিজের কাজে মন দিলে আমিও আবার দৃষ্টির ছুরি দিয়ে আগ্রাসন চালাই তার সর্বাঙ্গে। এমনটা গত পরশু দিন পর্যন্ত ছিলাম না। কিন্তু লাভলুর বিয়ের দিন যে মেয়েটি আমার হাতের তালুতে মেহেদি লাগানোর চেষ্টা করেছিল, তার একটি কথাতেই দেহমন কেমন বিক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিল। কাঁচা ক্ষত থেকে নতুন করে শুরু হয়েছিল ক্ষরণ। যে কারণে কোনো অঘটন ঘটে যাবার আগেই বলা যায় ভোর হবার আগে আগে তাদের দৃষ্টি থেকে হারিয়ে যেতে চাই। অত ভোরে কোথায় যাবো আর কাকেই বা জিজ্ঞেস করবো পথের হদিস? সুনসান মেঠো পথে হাঁটি উদ্দেশ্যহীন। কাউকে ফোন করবো সে উপায়ও নেই। বিদ্যুৎ ছিল না বলে ফোনের ব্যাটারির আয়ুও ফুরিয়ে গিয়েছিল।

হঠাৎ চমকে দিয়ে মেয়েটি আমার মুখোমুখি হয়ে বলল, বাইরে থেকে খেয়ে না এলে এখানেই খাবারের ব্যবস্থা করা যাবে। এ জন্যি আলাদা টাকা দিতে হবে।

-আচ্ছা দেবো।

-তাহলে এখনই দেন তিনশ টাকা!

পাঁচশ টাকার একটি নোট তার দিকে বাড়িয়ে দিলে সে বলল, ভাংতি দেন!

-নাই। বাকিটা আপনি রেখে দেন।

আমার কথা শুনে মেয়েটি হঠাৎ হেসে উঠে বলল, নতুন বস্তা নাকি?

(আজ এতটুকু টাইপ করতে পেরেছি।)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১২:৫৭
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×