somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বার্ধক্য অথবা যৌবনের আস্ফালন

১৩ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



(ছবিটি google থেকে ধার করা।)


(সতর্কতা: গল্পটি পরিণত মানসিকতার পড়ুয়াদের জন্য। তবু কারো কারো পক্ষে বেজায় অস্বস্তিকর হতে পারে। )

কদিন ধরে বেদম বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির তোড়ে অনেক রাস্তা তলিয়ে গেছে। কারো কারো ঘরে পানিও ঢুকেছে। এমন জলাবদ্ধতার জন্যে মেয়র মঞ্জুকে দোষ দিচ্ছে সবাই। যেন মঞ্জু মেয়র হয়েই ঈশ্বরকে বলে কয়ে রিলিফের মতো খানিকটা বৃষ্টিও চেয়ে এনেছে তার লোকজনের জন্য। অন্য সময় পর্যাপ্ত রিলিফ এলেও লোকজন কপাল চাপড়ায় পাইনি বলে, কিন্তু এবার মঞ্জুর দানে ভেসে গেল পুরো শহর। ভাগ্যিস পাহাড় ছিল, নয়তো সরাসরি বঙ্গোপসাগরের সঙ্গেই নৌকার যোগাযোগ ঘটে যেত। বাড়ির সামনে থেকে গতকাল ছোট সাম্পানে করে প্লাবিত এলাকাটা পেরিয়েছিলেন এরশাদ মোল্লা । তারপরও অনেক জায়গায় পানি মাড়িয়ে অবশেষে নেভাল এভিনিউতে পৌঁছুতে পেরেছিলেন।

সেদিক দিয়ে যাবার সময় রেড চিলিতে বেশ কিছু রঙ্গিলা পোলাপানের দেখা পাওয়া গিয়েছিল। আজকাল কিছু কিছু পোলাপান এমনই যে, রোগ-শোক-মহামারী কিছুতেই তাদের কিছু যায় আসে না। চব্বিশঘণ্টাই তাদের মনের ভেতর উদ্দামতার ড্রাম বেজে চলে। আর তারই ধাক্কায় যেন নেচে-কুঁদে দুনিয়াটাকে পায়ে মাড়িয়ে চলবার সংকল্পে ঋজু একেকটা কাঠামো। সন্তানরা বাইরে কী করে তাদের বাবা-মাগুলো হয়তো খোঁজ-খবর রাখে না বা এসব ব্যাপার তাদের চোখের আড়ালেই থেকে যায়। কায়-ক্লেশে অফিসে পৌঁছুতে পারলেও বিদ্যুতের সমস্যা দূর হয়নি বলে এরশাদ মোল্লাকে ফিরে আসতে হয়েছিল একই রকম কষ্ট স্বীকার করে। কিন্তু ঘরে ঢুকবার আগেই রাজিয়া বেগম দরজাটা মেলে বলে উঠল, বাইরের নোংরা-নজিস বাইরেই ধুয়ে আসতে পারলা না?

-সেই সুযোগ এখনও আছে। কিন্তু পানিতে তো সবই মিশে আছে।

-যাও আগে বাথরুমে। সাফসুতরো হয়ে ড্রয়িং রুমে এসে পড়বে। বিছানায় গিয়ে শোবে না, খবরদার!

এরশাদ মোল্লা দরজার ভেতর পা রাখতেই রাজিয়া বেগম আবার হা হা করে তেড়ে উঠে বলল, থামো থামো। বাইরের স্যান্ডেল বাইরেই রাখো। এগুলো পায়ে দিয়ে যাও। বলেই, স্পঞ্জের স্যান্ডেল জোড়া ধুপ করে সামনে ফেলল। তারপর আবার বলল, কাপড়-চোপড়ও সেখানেই রেখে আসবে।

রাজিয়া বেগমের কথায় হঠাৎ হাসি পেয়ে যায় এরশাদ মোল্লার । বলতে ইচ্ছে হয় যে, কাপড়-চোপড় ছেড়ে বাথরুমেই থাকবেন নাকি দিগম্বর হয়েই বের হবেন? কিন্তু তা আর বলার সাহস হয় না। মহিলা যেভাবে খরখর করছে বলা যায় না, কী থেকে কী হয়ে যায়। নাকের-চোখের পানি বের হয় নাকি গুম হয়ে বিছানায় কাত হয়ে পড়ে। তাহলে অশান্তির ওপর আর কী থাকতে পারে তা কল্পনায় আসে না তার। আসতে আসতে সিঁড়িতেই তার পেটের ভেতরটা মোচড় দিয়েছিল। এখন কেমন যেন অস্বস্তি হচ্ছে। ভেবেছিলেন ঘরে ঢুকেই আগে বাথরুমে ঢুকবেন। প্যান্ট ছেড়েই বসে পড়বেন কমোডে। কিন্তু রাজিয়া বেগমের আলগা ফাপরেই দেখা যাচ্ছে তার কাপড় নষ্ট হয়ে যাবে। আচ্ছা গেলে যাক। আগে নিরাপত্তা, তারপর অন্য কিছু।

স্পঞ্জের স্যান্ডেল জোড়া পায়ে গলিয়ে এরশাদ মোল্লা যতটা দ্রুত বাথরুমে ঢুকতে পারলেন, ততটা তড়িৎ প্যান্ট খুলতে পারেন না। পায়ের কাছে হাঁটুর নিচ তক ভাঁজ করে তুলে রাখবার ফলে গোড়ালির কাছে গিয়ে আটকে গেছে। কিন্তু পেটের চাপ সামলাতে না পেরে সে অবস্থাতেই তিনি বসে পড়েন। আধা বসা অবস্থাতেই তার নিষ্কাশন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। ফলে, কমোডের পেছন দিকটাতে হলুদ ছাপ দেখেন না। এমন কি টেরও পান না কী বিপত্তি ঘটে গেল।

পেটটা কেমন যেন ব্যথা ব্যথা করছে। তিনি তেমনই কোনো রকমে প্যান্টের কামড়ে আটকা পড়ে থেকেই কোঁথ দিয়ে পেটের ভেতর ব্যথা উদ্রেককারী বস্তুটাকে পায়ু পথে বের করে দিতে চেষ্টা করেন। কিন্তু তা বের হবার বদলে তার শিশ্নমুখে বেশ কিছু পরিমাণ আঠালো বীর্যের সমাগম ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবেই। এমনটা তার মাঝে মাঝেই হয়। বাহ্যকর্ম করতে বসলেই অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বীর্য চলে আসে। সেদিন বড্ড কষ্টে কাটে। শরীরটা কেমন খসখসে আর ভার ভার মনে হতে থাকে। সেই সঙ্গে আরো বোধ হয় শিশ্নের গোঁড়াটা যেন ভেতরের দিকে জ্বলছে। সে সময় তার রিরংসা প্রকট হয়ে ওঠে। রাজিয়া বেগমের সঙ্গে বাড়তি খাতির জমাতে চেষ্টা করে বরং পরিস্থিতি আরো জটিল করে ফেলেন কোনো কোনো দিন।

রাজিয়া বেগম উলটো ঝাঁঝ দেখিয়ে বলে, দিনদিন এক ঠ্যাং কবরের দিকে যত যাচ্ছে ততই দেখি তোমার খাই বাড়ে। এটাকেই ভীমরতি বলে নাকি? শ্যাম্পু নিয়ে যাও। আমার ধারে কাছেও আসবা না আজকে।

কিন্তু শরীর তো অত কিছু বুঝতে চায় না। বয়স হচ্ছে বলে খাওয়া দাওয়া কেউ ছেড়ে না দিলে যৌন বাসনা ত্যাগ করতে হবে কেন? আর সক্ষম থাকলে কেনই বা তাকে নির্জীবের মতো কাল কাটাতে হবে? মাঝে মাঝে খুবই রাগ হয় এরশাদ মোল্লার। ইচ্ছে হয় কিছু একটা হেস্তনেস্ত করে ফেলেন। ছেলে মেয়েরা বড় হয়ে গেছে। বিয়ের বাকি মাস্টার্সে পড়া দুই মেয়ে। ছেলের জন্য পাত্রী দেখছে রাজিয়া বেগম। এ সময় এমন কিছু করলে সবাই ছিছি করবে। কিন্তু মূল ব্যাপারটার দিকে কারো মনোযোগ যাবে না। উলটো এমন ভাব দেখাবে যে, বুড়ো হলেই তাদের যৌনাঙ্গ পকেটে নয়তো সুটকেসে ভরে ফেলতে হবে। আরো ভালো হয় যদি কোনো লকারে রেখে আসা যায়।

এই তো গত মাসেই রাজিয়া বেগমের বড় বোন আরজুদার হাজবেন্ড খোরশেদ ব্যাপারী বলছিল, বউগুলা খুবই বাজে আর ফালতু হয়ে যায় বুড়ি হলে। সারাক্ষণই কেবল খচখচ করতে থাকে। কুকুরের মতো শুঁকতে শুঁকতে বের করে ফেলে অন্য মেয়ে মানুষের ঘ্রাণ। আসলে এ বয়সে দুজনেরই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া উচিত। শরীর দিয়েই তো মনের নাগাল পাওয়া যায়। ছোঁয়া-ছুয়ি না থকলে মন তো মনের জায়গাতেই পচে মরার কথা। তা ছাড়া শরীরকে অস্বীকার করলে আমাকেই যে অস্বীকার করা হয়। তাই একদিন বেশ করে চেপে ধরেছিলাম। যা হবার হবে। নিজে বাঁচলে বাপের নাম। ঘরে দুই বুড়োবুড়ি। এমনিতেই তো মন থাকে উড়ু উড়ু।

এরশাদ মোল্লা অবাক হয়ে বলেছিলেন, তারপর কী?

-কী আবার! বলে হেসে উঠেছিল খোরশেদ ব্যাপারী। তারপর দাড়িতে হাত বুলিয়ে বলেছিল, পরের দিনই একটা পঁয়ত্রিশ-চল্লিশের বাঁজা মেয়ে নিয়ে এসে বলল, এখন থেকে এর কাছেই সব পাবে। আর মনে করবে আমি মরে গেছি।

এরশাদ মোল্লা অস্ফুটে বলে উঠেছিলেন, এমনটা কি এ আসমানের নিচে সম্ভব?

সে মুহূর্তে বড্ড ঈর্ষা হচ্ছিল খোরশেদ ব্যাপারীকে। কী কপাল করে জন্ম নিয়েছে লোকটা। অথচ তিনি...। সে মুহূর্তেই তার হাত চলে যায় শিশ্নের অগ্রভাগে। চটচটে আঠালো বস্তুটা আঙুলের মাথায় নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে টের পান বুকে অথবা মাথার কোথাও একটা কষ্ট কষ্ট অনুভূতি জানান দিচ্ছে হায়, ধন-রত্ন থাকতেও ভিখারি কি একেই বলে? সেই সঙ্গে মনে হচ্ছিল শিশ্নের ভেতরের দিকটা গোড়া থেকে কেমন জ্বলতে জ্বলতে সামনের দিকে এগিয়ে আসছে। তখনই হঠাৎ কী মনে করে শ্বাস বন্ধ করে আরো ভয়াবহ রকমের জোরে কোঁথ দেন তিনি। দিতেই থাকেন। যেন পেটের ভেতরকার মল, কৃমি, বীর্য আর নাড়ি-ভুঁড়ি যা আছে সবই ঠেলে বের করে দেবেন পায়ু পথে নয়তো শিশ্নের সরু নলটুকু দিয়ে। আর তখনই এরশাদ মোল্লার শিশ্নাভ্যন্তর থেকে আরো বেশ কিছু পরিমাণ ঘন আর আঠালো বীর্য বেরিয়ে এলে আটকে রাখা শ্বাস ছাড়তেই টের পান পুরো শরীরে যেন কেউ মরিচের গুঁড়ো লাগিয়ে দিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে প্রবল এক পিপাসা বোধ যেন তার বুকের ভেতরটাকে শুকনো মরুভূমির মতো খটখটে করে ফেলেছে। এক চুমুক পানি খেতে পারলে ভালো হতো। কমোডে বসা অবস্থায় তিনি ট্যাপের চাবি ঘোরান। কিন্তু পানি আসে না। এমন কি এক দু ফোঁটা করেও পানি আসে না। গলাটা এমন শুকিয়ে রয়েছে যে, ঢোক গিলতেও পারছিলেন না তিনি। পায়ের কাছ থেকে প্লাস্টিকের বদনাটা তুলে সেটার নলে মুখ লাগাতেই বুঝতে পারেন যে, সেটাও শূন্য। তাহলে? তিনি একবার প্রাণপণে ডেকে ওঠেন, মাসুদের মা!

তার মনে হচ্ছিল গলা দিয়ে স্বর বের হলো না। কিন্তু শরীরটা যেন নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। তাহলে কি তিনি মারা যাবেন এখনই? মানুষ কি এভাবেই মরে? এভাবে কষ্ট পেয়ে, গলা, বুক শুকিয়ে গিয়ে? হায়, এ জীবনটা আর দেখা হবে না। মাসুদের বউ, সন্তান। রুমা ঝুমার বিয়েটাও হলো না। ব্যাঙ্কে যে টাকা আছে, তাতে কি তাদের বাকি কাজগুলো হয়ে যাবে?

এরশাদ মোল্লা আর কিছু ভাবতে পারেন না। একরাশ অন্ধকার যেন চারদিক থেকে জাপটে ধরে তাকে।


বিছানায় শুয়ে নিজে নিজেই বিরক্ত হচ্ছিলেন এরশাদ মোল্লা। তার দু পাশে দু মেয়ে। মাথার কাছে রাজিয়া বেগম। আর পায়ের কাছে বসে আছে মাসুদ। সবার বিরস মুখ দেখে কেন যেন তার হাসি পায়। বলতে ইচ্ছে হয় কেন শুধু শুধু বিরস মুখের অভিনয় করছ তোমরা। অভিনয় অনেক কঠিন কাজ। সবাইকে দিয়ে এ কাজটা হয় না। অথচ সবাই ভাব দেখাচ্ছে যে, তাদের কাছে তিনি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। বাটপারের দল! মরে গেলে দেখা যেত যার যার সুবিধা মতো দিক কাজ বেছে নিয়েছে। সবচেয়ে বেশি খুশি হতো রাজিয়া বেগম। একা একা থেকে যা খুশি তাই করতে পারতো। ভাগ্যিস বেচারির যৌবন আর অবশিষ্ট নেই। যৌবনে যতটা না সন্দেহ প্রবণ ছিল এই মহিলা বিগত যৌবনে এসে আরো বেশি হয়েছে। নিজের দেহে তো মজা আনন্দের কিছুই অবশিষ্ট নেই, অন্যদিকে তিনি নিজে যাতে কোনো মজার বিষয়ে আসক্ত হতে না পারেন, চারদিক দিয়ে সব বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ছেলে-মেয়ে তিনটাই মায়ের স্পাই। সন্ধ্যার পর বা ছুটির দিনে বাইরে কোথাও দেরি হলেই শুরু হয়ে যায় চারটা ফোনের গুঁতোগুঁতি। সবার মুখেই একই জিজ্ঞাসা, বাইরে এতক্ষণ কী করছ? কী এত কাজ তোমার? অফিস তো শেষ হয়েছে সেই বিকেল পাঁচটায়। ঘরে না এসে বাইরে বাইরে থাকলে বল আমরা ঘর ছেড়ে দেই।

সবার একটাই দুশ্চিন্তা, বাবা বা স্বামী নামের ছাতা অথবা এটিএম মেশিনটা আবার হারিয়ে না যায়। কেউ না আবার দখল করে ফেলে। সব স্বার্থপর। যার যার নিজের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে ব্যস্ত সবাই। অথচ যৌন তাড়নায় তিনি কদিন পর সত্যিই পাগল হয়ে যাবেন মনে হচ্ছে। এখন তিন ছেলে-মেয়ে বিয়ের উপযুক্ত, অকাজের হলেও বউ জীবিত, এমন অবস্থায় আবার বিয়ের নাম মুখে আনা তো দূরের কথা, কোনো মধ্য বয়সী বা কিঞ্চিৎ যৌবন ধারণ করে এমন নারীর আশে পাশে দেখলেও চোখ রাঙিয়ে তেড়ে আসবে। মারতে পারবে না বা গায়ে হাত তুলতে পারবে না বলেই হয়তো কথার বল্লমে বুক-পিঠ এফোঁড় ওফোঁড় করতে ধারালো শব্দের বুননে পিছিয়ে থাকবে না কেউ। আমাদের শুধু দাও। তোমার যে কিছুর প্রয়োজন আছে, সে কথা মুখে এনো না ভুলেও। তুমি বুড়ো মানুষ। খুব বেশি কিছুর তো তোমার প্রয়োজন নেই। হ্যাঁ, খুব বেশি কিছুর প্রয়োজন নেই তা সত্য। তবে যেটা প্রয়োজন সেটা সামান্য হলেও তোমাদের সামর্থ্য আর সাহসে কুলালেও কলজে ছিঁড়ে যাবে বলে দেবে না। বাইরের মানুষের কাছে দাঁত দেখিয়ে মুখের দুর্গন্ধ আড়াল করে বলবে, বাবা তো অনেক বুড়ো হয়ে গেছেন। সিক্সটি আপ! সারাক্ষণ এ বয়সটাকে নিয়েই টেনশনে থাকি। হারামজাদারা!

মনে মনে গালি দিলেও চোখ আবার বুজে ফেলেন এরশাদ মোল্লা। খোরশেদ ব্যাপারীর কথাটা মনে পড়লেই মাথার ভেতরকার সহস্র তন্ত্রীতে যেন হুটোপুটি শুরু হয়ে যায়। শিরশির করতে থাকে নিস্তেজ শিশ্নের শরীর। কখনো কেঁচোর মতো আড়মোড়া ভাঙতে চাইলেও যেন ভাঙতে আরম্ভ করে তার বয়সের মেকি আচ্ছাদন। কপালের দুপাশে রগ দুটো দপ দপ করতে থাকলে তার নাম হয়ে যায় উচ্চ রক্তচাপ। ছেলে-মেয়ে অথবা রাজিয়া বেগমের কুট চালে একটি ট্যাবলেট মুখে পুরে গিলে ফেলার পর চোখ বুজে শুয়ে থাকতে হয়। এটাই তার জন্য একটি কড়াকড়ি নিয়ম। সব কিছুর অন্যথা হলেও ওষুধের কোনো গণ্ডগোল দেখা যায় না। সেবক সেবিকা বা সেবন করানোর ক্ষেত্রেও যেন সবাই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

এরশাদ মোল্লা কান পেতে শোনেন বদ্ধ জানালার পাল্লায় ঝাঁপিয়ে পড়া বৃষ্টির ঝনৎকার। আহা, বালক বেলায় বৃষ্টির সময় কখনো মনে হতো টিনের চাল বুঝি ভেঙে পড়বে। বৃষ্টির তোড়ের সঙ্গে বাইরের হাওয়ারাও যেন ঘরের ভেতর এসে ঘাপটি মেরে বসে পড়তো। কোনো কোনো দিন বাইরে বের হলে মাথালেও বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যেতো না। গৌরাঙ্গ সাহার মেয়ে কান্তা বিষ কচুর পাতা দিয়ে আবিষ্কার করেছিল পুরো শরীর ঢেকে নেবার কৌশল। কিছুটা মাথা গরম টাইপের মেয়ে ছিল বলে তেমন একটা পাত্তা দিতো না কেউ। অবশ্য সারের বাতিল বস্তা দিয়ে কখনো বা পলিথিন যার আরেকটা নাম ছিল বিলাতি কাগজ, তা দিয়েও কোর্তার মতো করে শরীরে জড়িয়ে নিয়ে বৃষ্টির ভেতর পানিতে দাপিয়ে চলার মজাই ছিল আলাদা।

এরশাদ মোল্লা শুনতে পান রাজিয়া বেগম ফিসফাস স্বরে ছেলে-মেয়েদের বলছে, এই যা এখন তোরা। ঘুমুতে দে মানুষটাকে।

বিছানাটার ওপর থেকে চাপ কমে যাওয়ার বিচিত্র রকমের শব্দ হয় খাটের বিভিন্ন জোড়া আর সংযোগ স্থলে। এরশাদ মোল্লা আলতো চোখ মেলে দেখতে পান দরজাটা ওপাশ থেকে টেনে বন্ধ করে দেওয়া হলো। ভালোই হয়েছে। নিজে নিজেই কথা বলে ওঠেন তিনি। সেই সঙ্গে পাশ ফিরে জানালার দিকে মুখ করে শুয়ে চোখ মেলে তাকিয়ে থাকেন কাঁচের ওপার। বেশ ভালোই বৃষ্টির বেগ। মাইকে ঘোষণা শোনা যাচ্ছে পাহাড়ে বা তার আশপাশে ঘর তুলে থাকা মানুষদের অন্য কোথাও নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হচ্ছে। যার কেউ নেই এ শহরে সে কোথায় গিয়ে পাবে নিরাপদ আশ্রয়? সরকার তো ঘোষণা করিয়েই দায় সারে। কোথাও যাওয়ার যায়গা যাদের নেই তারা যাবে কোথায়? আর তারা পাহাড় ধ্বসে বা মাটি চাপা পড়ে মারা গেলে সংবাদপত্রে দেখা যাবে- তারা সতর্কবাণী উপেক্ষা করে বিপদগ্রস্ত হয়েছে।

বছর কয়েক আগে অফিসের একটা কাজে টাংকির পাহাড় বলে একটা জায়গায় গিয়েছিলেন এরশাদ মোল্লা। সেখানে কী একটা জরিপের কাজ নাকি করাবে তা নিয়েই আলাপ করছিল দুজন। যদিও এসব ব্যাপার তার দেখবার কথা না, তবু মোতালেব মুন্সির টানাটানিতে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। সেখানেই একটি ঘরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক কৌতূহলী নারীমুখে হঠাৎ নিজের নাম আর গ্রামের নাম শুনে চমকে উঠেছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে শব্দের উৎসের দিকে ফিরে তাকিয়েছিলেনও। কিন্তু কার মুখ থেকে শব্দটা এসেছিল তা ঠাহর করতে পারেননি। নারীটি হয়তো লজ্জা পেয়েছিল বা আবেগের বশে কথা বলে উঠলেও পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে চুপ হয়ে গিয়েছিল। তবে বিভিন্ন বয়সের নারীদের মাঝে কৌতূহলে ঝলমলে একটি মুখের দিকেই তার চোখ পড়েছিল। মনে হচ্ছিল খুব চেনা। কিন্তু স্মৃতির দেয়ালে সময়ের ধুলো তাকে বেশ অস্পষ্ট করে দিয়েছে। তখনই মোতালেব মুন্সি হাত ধরে টেনে পাহাড়ের ওপরকার দিকটাতে এগিয়ে যেতে যেতে বলছিলেন, এখানে পানি, চিকিৎসা, শিক্ষার সব ব্যবস্থাই আছে। তবু কেন তাদের জীবন যাত্রার মান অতটা নিচের দিকে যাচ্ছে দিনদিন? বেশিরভাগ মানুষই জমিদার। কিন্তু বাড়ি-ঘরের অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় বস্তিবাসী সবাই।

এরশাদ মোল্লার ইচ্ছে হচ্ছিল একটি সিগারেট ধরাতে। জানালা খুলে দিয়ে চোখে-মুখে বৃষ্টির ছাঁট উপলব্ধি করতে করতে আয়েশ করে সিগারেটের ধোঁয়া টানেন। কিন্তু সিগারেটের প্যাকেটটা যে কোথায় সেটা ভুলে গেছেন। রাজিয়া বেগমকে বললে, উলটো আরো বাইশ কথা শুনিয়ে দেবে। কোমর আর তলপেটের কাছটাতে কেমন ব্যথা ব্যথা করছে বলে তিনি আর উঠে বসবার সাহস পান না। হয়তো মাথা ঘুরতে আরম্ভ করবে। যেদিন তার যৌনাঙ্গ বীর্যে মাখামাখি হয়ে যায়, সেদিন বেশ কিছু সময় চোখে আর মাথায় একটা চাপ অনুভব করেন। হতে পারে এটা দুর্বলতা থেকেই হয়। ডাক্তার আবু নাসের বলেছিল দুধ ডিম খেতে পারলে ভালো হতো। আরো ভালো হতো নিয়ম করে যৌন সম্পর্ক চালিয়ে যেতে পারলে। তারও হয়তো বউ নিয়ে সমস্যা আছে। তাই হয়তো ব্যাপারটাকে নিজ থেকেই উড়িয়ে দিয়ে বলেছিল, আমাদের দেশে পুরুষ মানুষরা বুড়ো হয়ে গেলে তাদের শিশ্ন কেটে ফেলা উচিত। তাহলে তাদের বুড়ি বউগুলো নিশ্চিন্তে ঘুমুতে পারতো। ছেলে বা মেয়ের বাড়ি গিয়ে নাতি-নাতনীদের নিয়ে মজা করতে পারতো। নিজের সাধ্য না থাকলেও বুড়োটা যেন কোথাও দণ্ড উঁচিয়ে ধরতে না পারে সে ভাবনায় আর নানা ষড়যন্ত্রে কাটে তাদের সময়। এমন কি বুড়োটা জগতের সবচেয়ে খারাপ পুরুষ আর সে মরলেই তার হাড়ে বাতাস লাগতো কথাগুলো প্রচারেও বেশ কিছু সঙ্গী-সাথী পেয়ে যায়।

হঠাৎ করেই এরশাদ মোল্লার ভাবনায় উঁকি দিয়ে যায় সেবার দেখা নারীমুখটি। আর সঙ্গে সঙ্গেই মনে পড়ে যায়, ফরিদের বোন রাসুর কথা। এমন বৃষ্টির দিনগুলোতে তাদের বাড়িতে চারগুটি খেলতো দুটো খেজুরের বিচিকে চার ফালি করে নিয়ে। চারটি গুটির বাঁক খাওয়া পিঠ উঁচু অংশটি ওপর দিকে থাকলে চার, আর চারটে গুটি চিত হয়ে পড়লে হতো ষোল। আর তখনই লাগতো গুটি নিয়ে কাড়াকাড়ি, হুটোপুটি। অন্তত একটা গুটি মুঠিতে নিয়ে হাতে চুমু খেতে পারলেই চার। কত যে হুটোপুটি কাড়াকাড়ি ধাক্কাধাক্কি এই রাসুর সঙ্গে। আচ্ছা, রাসু কী করতে এসেছিল? নাকি সেখানেই স্বামী সন্তান নিয়ে বাস করছে। শোনা গিয়েছিল রাসুকে বিয়ে দিয়েছে শহরে চাকরি করে এমন একজনের সঙ্গে। কত বছর হবে তাদের দেখা নেই? আচ্ছা রাসুর চেহারা চিনতে তার এত দেরি হলো, কিন্তু দাড়ি গোঁফে আর বয়সের ভাঁজ পড়া চামড়ায় অনেক বদলে যাওয়া চেহারা কী করে চিনতে পেরেছিল সে? একবার সে অমন হুটোপুটি করার ছলে বেশ করে জাপটে ধরেছিল তাকে। উদোম শরীরে গাল মুখ ঘষছিল। বয়সে খানিকটা বড় জয়মালা বলে উঠেছিল, ব্যাডা মানষ্যের শইলে গাল মুখ লাগানি ভালা না।

রাসু বলে উঠেছিল, তুই জানি ছাগল দিয়া তর দুধ খাওয়াস, হেইডা কত্ত ভালা কাম। তর না অইছে বিয়া, না আছে জামাই!

এরশাদ মোল্লা সেদিন অতটাই বিস্মিত হয়েছিলেন, যা ভাবনায় এলে আজও রিরংসা তাকে কাতর করে তোলে। আর বৃষ্টির দিনগুলোতেই যেন এমন সব স্মৃতি আরো জীবন্ত হয়ে ওঠে। তখন নিজেকে আরো দুর্ভাগা মনে হয়। খোরশেদ ব্যাপারী আর নিজের মাঝে তুলনা করতেই নিজের অদৃষ্টকে শুয়োরের বাচ্চা বলে গালি দিতে ইচ্ছে হয় তার।



পেট খারাপের অজুহাতে পরদিনও অফিসে যায়নি এরশাদ মোল্লা। কিন্তু তৃতীয় দিন নিজেরই ইচ্ছে হচ্ছিল না ঘরে থাকতে। রাজিয়া বেগমের যেন সহ্য হচ্ছিল না তার বিশ্রামের আনন্দটুকু। বলছিল, অফিস থেকে ফোন এসেছে দুবার। পারলে ঘণ্টা খানেকের জন্য হলেও যেতে বলেছে!

এরশাদ মোল্লা জানালায় দুহাতের কনুইয়ে ভর দিয়ে সিগারেট টানছিলেন। তা দেখতে পেয়েই যেন আরো মাথা খারাপ হয়ে যায় রাজিয়া বেগমের। বলে ওঠে, মরতে চাইলে স্টেশনে চলে যেতে পার না? আমার চোখের সামনে একটু একটু করে মরার অত সখ কেন তোমার? সকাল সকাল ঘরটাকে একেবারে জাহান্নাম বানিয়ে ফেললা! বুড়ো হলে মানুষ সুবোধ হয়, আর তুমি হয়ে উঠছ বখাটে ছেলেগুলার মতো।

এরশাদ মোল্লার রাগ হলেও প্রকাশ করতে ইচ্ছে হয় না। তিনি জানালার বাইরে সিগারেটটা ফেলে দিয়ে গায়ের টিশার্ট মাথা গলিয়ে খুলে ফেলে ইস্ত্রি করা সার্ট বের করে গায়ে দিলেন। প্যান্টটা হুক থেকে নামিয়ে নিয়ে পরতে পরতে বললেন, আমার তো মনে হচ্ছে যার ঘরে তোমার মতো মানুষ থাকে, তাকে আর নতুন করে জাহান্নাম বানাতে হয় না।

-হ্যাঁ, আমি তো খারাপই। খারাপ বলেই তো এতটা বছর সামলে রাখলাম তোমার নুন আনতে পান্তা ফুরানো সংসার। সন্তান জন্ম দিলাম হালি হালি। কপাল ভালো তোমার সবগুলো বাঁচলো না। কই জুটলো তো না আমার চেয়ে ভালো কেউ! আমি বলেই তোমার মতো মানুষ সংসার করে গেলে।

এরশাদ মোল্লা মনটা আবার ফুরফুরে হয়ে যায় হঠাৎ করেই। রাজিয়া বেগম কথাটা মিথ্যে বলেনি মোটেও। সংসারটা তিনি করতে পেরেছেন তার গুণেই। বাচ্চাগুলোও এতটা পথ পাড়ি দিতে পেরেছে তার গুণেই। কিন্তু এমন চরম সত্যটা স্বীকার করবার মতো নির্ঝঞ্ঝাট পথ রাখেনি এই পাজি মহিলা। যৌবনে ভাটা পড়তে আরম্ভ করল আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শান্ত-শিষ্ট মানুষটা খ্যানখ্যানে আর অশিষ্ট হয়ে উঠতে লাগল। এখন শূন্য যৌবনের খা খা পোড়ো বাড়ি পাহারা দিতে দিতে মানুষটা আর মানুষ থাকতে পারছে না।

পরিপাটি হয়ে গলায় আর বগলে খানিকটা সুগন্ধি স্প্রে করে আয়নার দিকে তাকাতেই দেখতে পান কেমন সন্দেহ ভরা দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে রাজিয়া বেগম। এরশাদ মোল্লা এটাই চান। তিনি আজ যতক্ষণ বাইরে থাকবেন ততক্ষণ সন্দেহের তুষানলে দগ্ধ হতে থাকবে মহিলাটি।

বাড়ির বাইরে এসে গেটের সামনে দাঁড়াতেই দেখা যায় পানির পরিমাণ গত পরশু দিনের চেয়েও যেন বেশি। বেশ কটা নৌকো অথবা সাম্পান দেখা যাচ্ছে যাত্রী নিয়ে। সময়ে এমন দৃশ্যটাও সুন্দর হয়ে উঠতে পারতো যদি এর সঙ্গে যুক্ত হতো অভ্যাস আর অভ্যস্ত হয়ে ওঠা। ফ্রান্সের বা অন্য কোনো দেশের ভেনিস শহরটার মাঝখান দিয়ে এমন খালের মতো আছে। দুপাশে বাড়িঘরও আছে, কিন্তু দেখতে তো অতটা দীন-হীন মনে হয় না। হতে পারে দৃশ্যটা নতুন অথবা মানুষগুলো সেই চির পুরাতনের প্রতিনিধি বলে মনকে টানতে পারছে না অমন করে।

একটি দেশি কোষা নৌকো এগিয়ে আসছিল। তাতে জনা চারেক মানুষ একটি বাচ্চা মিলিয়ে। বয়স্কা আর মাঝ বয়সী দুটো নারী একজন চল্লিশ-পঞ্চাশের পুরুষ। এরশাদ মোল্লা লগি হাতে ধরা লোকটিরে চোখে চোখ রেখে বললেন, কদ্দুর যাইবা?

-বড় রাস্তা তক।

নৌকা ভিড়তেই তিনি উঠে পড়লেন। বসবার জায়গা নিয়ে খানিকটা দোনোমোনো করে বাচ্চাটির পাশেই বসে পড়লেন এরশাদ মোল্লা। আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে টিপ টিপ করে। সঙ্গে ছাতা আনতে ভুলে গেছেন। রাজিয়া বেগমও রেগে আছে বলে হয়তো কথাটা মনে করিয়ে দিতে ভুলে গেছে অথবা ইচ্ছে করে বলেনি। মধ্য বয়সী মহিলাটি ব্যাগ থেকে ছোট্ট একটি ছাতা বের করে খুলেই মাথার ওপর তুলে ধরে। সেই অবসরে মাড় বা এরারুট দিয়ে ইস্ত্রি করা সুতির শাড়ি আলগা হয়ে যায় বুকের কাছটাতে। স্পষ্ট চোখে পড়ে হৃষ্ট-পুষ্ট স্তনের অস্তিত্ব। আচ্ছা কত সাইজ হতে পারে? আটত্রিশ চল্লিশ? আরো বেশি মাপের স্তন হয় নাকি মেয়েদের? অবশ্য কখনো এসব কেনাকাটা করতে হয়নি বলে তার খুব একটা জানা নেই এ ব্যাপারে।

এরশাদ মোল্লা একবার খুক করে কাশলে মধ্যবয়সী মহিলার ঘাড় ঘুরে যায় এদিকে। চোখে চোখ পড়ে একবার। তারপর আবার সামনের দিকে দৃষ্টি ফেরাতেই এরশাদ মোল্লার দৃষ্টি ছোটে মহিলার বুকের দিকে। সেদিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে তার অস্বস্তি বাড়তে থাকে আবার। শরীরের খসখসে ভাবটা ফিরে আসে। তিনি আর তাকিয়ে থাকতে পারেন না। মহিলা যেন তার মনোযোগ টের পেয়েছিল প্রথম দৃষ্টিতেই। ছাতাটা আরেকটু উঁচিয়ে ধরেছে বলে ব্লাউজের ওপর দিয়ে ফুটে থাকা মসৃণ দুটো গোলক আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। সেদিকে একবার তাকিয়ে দৃষ্টি ফেরাতেই এরশাদ মোল্লা শুনতে পান- আমনে ত বিজি গেলেন। ছাতার নিচে ছলি আসেন। মাথা খান বাচিবো!

শরীর মন দুটোই খেপে উঠতে চাইছে বলে, মহিলার আহ্বান তার কাছে ভালো লাগলেও বলেন, না ঠিক আছে। মাঝে মধ্যে বৃষ্টির পানিতে ভিজতে হয়।

মহিলার কপালে দুটো ভাঁজ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এরশাদ মোল্লার আঁতলামি যে তার পছন্দ হয়নি তা গোপন রাখতে পারছে না। আর তার শাস্তি হিসেবেই হয়তো আঁচলটা চেপে বুক ঢেকে ফেলে এরশাদ মোল্লার দিকে পিঠ দিয়ে ঘুরে বসে মহিলাটি। ব্যাপারটা দেখে মনে মনে হাসেন এরশাদ মোল্লা। নৌকো রাস্তার কাছাকাছি চলে এসেছে। তলায় ঘষা লাগছে নিচের রাস্তা। লোকজন নেমে যেতেই নৌকোর ভর কমে যায়। আরেকটু সামনে এগিয়ে যেতেই এরশাদ মোল্লা জুতো জোড়া এক হাতে নিয়ে প্যান্টের প্রান্ত ভাঁজ করে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত তুলে ফেলেন। নানা বয়সের মানুষ নিশ্চয় তাদের জরুরি প্রয়োজনে বেরিয়েছে। যাদের নিম্নভাগের কাপড় শুকনো রয়েছে, তাদের নগ্ন পা দেখা যাচ্ছে। আরে যাদের পা আড়ালে আছে, তাদের পায়ের দিকের কাপড় অনেকখানি ভেজা। এরশাদ মোল্লা মেয়েদের পায়ের দিকে তাকিয়ে থাকেন সতর্ক দৃষ্টি নিয়ে। ইচ্ছে হয় এখানে দাঁড়িয়েই পার করে দেন পুরোটা দিন। কিন্তু তখনই ফোনটা বেজে ওঠে পকেটের ভেতর।

ফোন বের করে রিসিভ করে কানে ধরতেই শুনতে পান, নাজিম সাহেব বলছেন, মোল্লা কতটা পথে এলেন?

-এই তো সিটি কর্পোরেশনের সামনে।

-আচ্ছা আসুন।

ফোন পকেটে রেখে তিনি এগিয়ে যান একটি খালি রিকশার দিকে। বৃষ্টির পরিমাণ একটু একটু করে বাড়ছে। কিন্তু তার মোটেও খারাপ লাগছে না। বরং শরীরটা বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে বলেই হয়তো বৃষ্টির ফোঁটাগুলোর শীতল পরশ তার কাছে বেশ উপভোগ্য মনে হচ্ছে। আহা এ সময় প্রিয় কোনো নারী যদি থাকতো। লুবনা বদলি হয়ে চলে না গেলে হয়তো আজ তাকে পাশে পেতে পারতেন। বয়স্ক মানুষদের প্রতি বেজায় টান ছিল মহিলার। আস্তে আস্তে হয়তো সে কারণেই বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছিল তার প্রতি। ঘটনাটা অফিসে জানাজানি হয়ে পৌঁছে গিয়েছিল তার ঘরেও। হতে পারে কোনো ঈর্ষা-কাতর কলিগ জানিয়ে দিয়েছিল কৌশলে। এ নিয়ে তার স্বামী জামালুদ্দিন বেশ অশান্তি করেছিল কদিন। আচ্ছা লুবনা কি ভালো আছে? তার ওখানেও এমন বৃষ্টি হচ্ছে দিনরাত? হয়তো দু একটা বাচ্চা-কাচ্চাও হয়েছে এতদিনে। সত্যি বলতে ভয় পেতো না মহিলা।


আজ যে মিটিং ভুলেই গিয়েছিলেন এরশাদ মোল্লা। অফিসে ঢুকে কনফারেন্স রুমের দরজায় সবুজ লাইট জ্বলতে দেখেই মনে পড়ে কথাটি। কিন্তু পরনের কাপড় যে পুরোই ভিজে গেছে, এ অবস্থায় মিটিঙে যাওয়াটা কি ভালো দেখাবে? এমন সময় ছাতা কাত করে ঢুকল পিয়ালি ভদ্র। তাকে দেখেই হেসে বলল, কী দাদা, জলে সাঁতার দিয়েছিলেন নাকি?

পিয়ালি ভদ্র আজ জিনস আর টিশার্ট পরে এসেছে। এ অবস্থায় তাকে দেখলে নিজেকে বড্ড অসহায় মনে হয় এরশাদ মোল্লার। অন্তর্গত অবদমিত ইচ্ছেটা চট করে লাফিয়ে উঠে যায় মাথায়। তখন খুব রাগ হয় রাজিয়া বেগমের ওপর। কেন অতটা দ্রুত বুড়িয়ে গেল? কই কান্তিলাল বড়ুয়ার স্ত্রীর বয়সও তো পঞ্চান্ন। সব মিলিয়ে আটটি সন্তান। অথচ এখনও কেমন রোমান্টিক তাদের দুজনের সম্পর্ক। আর রাজিয়া বেগমই কিনা পঞ্চাশেই পচা কুমড়ো হয়ে গেল। আলতো স্পর্শেই যেন খসে পড়ে তার গায়ের চামড়া।

এরশাদ মোল্লা পিয়ালি ভদ্রের কোমরের কাছে এক চিলতে পেটের অংশের দিকে তাকিয়ে বললেন, সাঁতরেও তো কোনো ফল হচ্ছে না। পানি কি আর পানি আছে। কত কিছু মিশে আছে তার সঙ্গে। তাই সাঁতার আর গনগনে দুপুরে কোনো পার্থক্য বুঝি না এখন।

পিয়ালি ভদ্র বারান্দায় ছাতার পানি ঝরতে দিয়ে এলো মনে হয়। কাছাকাছি হতেই বলল, এভাবে মিটিঙে বসবেন কীভাবে? এঞ্জেলা গোমেজ আসছে আজ।

তাহলে তো আরো বিপদ। এঞ্জেলা পারলে তার সার্টের সবগুলো বোতামই খুলে রাখতো। ভাগ্যিস ভেতরে অন্তর্বাস থাকে বলে অতটা আহত হতে হয় না। ভাবতে ভাবতে এরশাদ মোল্লা খুবই অস্থির হয়ে ওঠেন। বলেন এতেই চলবে। শুকনো কাপড় পাবো কোথায়? তা ছাড়া মিটিঙের কথা মনেও ছিল না। আপনি যান, আমি আসছি ওয়াশরুম ঘুরে।

পুরো দেহে কেমন একটা ঢেউ তুলে কনফারেন্স রুমে ঢুকে গেল পিয়ালি ভদ্র।

এরশাদ মোল্লা ওয়াশরুমে তড়িঘড়ি ঢুকে পরে দরজার ছিটকিনি আটকে দিয়েই প্যান্টের জিপার আর হুক খুলে ফেলেন। অন্তর্বাস টেনে নিচের দিকে নামাতেই প্যান্টটা পড়ে যায় পায়ের কাছে। অত কিছু দেখার সময় নেই তার। শিশ্নের গোঁড়ার দিকে কেমন কিটকিট করতে আরম্ভ করেছে। স্বমেহন না করলে মিটিঙেই তার অন্তর্বাস খারাপ হয়ে যাবে।

একবার তো বিদ্যুৎহীন অবস্থায় মিটিঙে বসে ঘামছিল সবাই। এঞ্জেলা গোমেজ, পিয়ালি ভদ্র আরো বেশি উসখুস করতে করতে পারলে গায়ের কাপড় খুলে ফেলে এমন অবস্থা। গরমে আর প্রেশার বেড়ে গিয়ে এরশাদ মোল্লার অবস্থা আরো বেশি খারাপ হয়ে গিয়েছিল। ব্যাপারটা হয়তো বুঝতে পারে পিয়ালি ভদ্র। মিটিং শেষে পাশ দিয়ে যাবার সময় আস্তে করে বলেছিল, বৌদি কি একেবারেই ফিউজ?

এরশাদ মোল্লার চোখ দুটো ছলছল হয়ে উঠেছিল। তখন একটা কার্ড বের করে তার হাতে দিয়ে বলেছিল, জায়গাটা মমিন রোডে। মহিলা কম বয়সী। জরুরি দরকারে ফোন করে যেতে পারেন। রেট এক হাজার টাকা।

মনে মনে পিয়ালি ভদ্রকে অনেক ধন্যবাদ দিলেও এরশাদ মোল্লা কখনো যায় নি সেদিকে। কিন্তু আজ যে তার কী হলো। মান-ইজ্জত রক্ষা করাটাও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ব্যাপারটাকে রোগ মনে করে আবু নাসিরের কাছে গিয়েও আরো হেনস্থা হতে হয়েছে। আরে পুরুষ তো পুরুষই। শরীর বুড়ো হলে শিশ্ন আর মৈথুন বাসনা বুড়ো হয় কে বলল আপনাকে?

এরশাদ মোল্লার হাত বীর্যে মাখামাখি হয়ে গেলেও বেশ প্রশান্তির একটা ভাব চলে আসে পুরো দেহ মনে। হাত আর শিশ্ন ধুয়ে আস্তে ধীরে অন্তর্বাস আর প্যান্ট টেনে তোলেন ওপরে। ভেজা কাপড়েই পরিপাটি হয়ে বাইরে বের হয়ে এলে দেখতে পান কনফারেন্স রুমে তখনো সবুজ লাইট জ্বলছে। আর তখনই তিনি মনেমনে ঠিক করে ফেলেন মমিন রোডের সেই বাড়িটায় যাবেন। পকেট থেকে ওয়ালেট বের করে একবার দেখে নিয়ে ফের রেখে দিলেন কার্ডটা। মিটিং শেষে ফোন করা যাবে, ভেবে, কনফারেন্স রুমে ঢুকে আরো অবাক হয়ে যান তিনি। এমন একটি দিনেও লঙ স্কার্ট আর স্যান্ডো গেঞ্জি পরে এসেছে এঞ্জেলা গোমেজ। তাকে দেখে মনেমনে হাহাকার করে বলে উঠলেন এরশাদ মোল্লা, আহা যৌবন!

শরীর-মন শান্ত থাকায় এঞ্জেলা গোমেজের ভার-ভারতি বুক আর মসৃণ চামড়ার জেল্লা তেমন একটা কাহিল করতে পারে না এরশাদ মোল্লাকে। তা ছাড়া মমিন রোডের সেই মহিলাটির কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্তও তাকে বেশ কিছুটা স্বস্তি দিতে পেরেছে হয়তো।

মিটিং শেষে সাফল্যের শুভেচ্ছা হিসেবে হ্যান্ডশেক করবার সময় এরশাদ মোল্লার মনে হচ্ছিল সাধারণ সময়ের খানিকটা বেশিক্ষণ ধরেই যেন এঞ্জেলা গোমেজ ধরে রাখল তার হাতটা। এমন কি মৃদু চাপ দেবার সঙ্গে সঙ্গে মুখ ভরা ঝকঝকে হাসি দিয়ে ডান চোখটাও যেন টিপে দিল একবার।

মাথা ঝাঁকি দিয়ে এরশাদ মোল্লা এঞ্জেলা গোমেজের হাত ছেড়ে দিয়ে ভাবলেন সবই তার উত্তেজিত দেহমনের অস্থির প্রতিক্রিয়া। এঞ্জেলা গোমেজ আর পিয়ালি ভদ্র দুজনেই পোশাক আশাকের দিক দিয়ে খানিকটা পশ্চিমা ঘেঁষা হলেও মানুষ হিসেবে বাইরে বাইরে অনেক শিক্ষিত ও মার্জিত। দুজনের কারো স্বামী না থাকলেও অফিসের নানা রকম কানাঘুষায় এদের নাম কখনো উচ্চারিত হয়েছে এমনটা মনে করতে পারেন না তিনি। তাই খানিকটা লজ্জিত আর উত্তেজিত অবস্থায় বিক্ষিপ্ত পায়ে লাউঞ্জ পেরিয়ে নিজের অফিস রুমে ঢুকতে ঢুকতে ভাবছিলেন আরেকবার স্বমেহনের সুযোগটা নেবেন কিনা। আজ অফিসে এসেই কাজটা করে ফেলেছিলেন বলেই হয়তো কিছুটা রক্ষা পেয়েছেন। নয়তো হ্যান্ডশেকের সময় কী হতো বলা কঠিন। এবার বৃষ্টির দিনগুলো বেশ দীর্ঘ বলেই হয়তো দেহ মনে চাপ বাড়ছে। এ নিয়ে ঘরে বাইরে অশান্তিটা ক্রমশ বেড়েই চলেছে কদিন ধরে। গত বছর অবশ্য মাসে দু মাসে এক আধদিন রাজিয়া বেগমে উপগত হতে পারতেন তিনি। কিন্তু গেল জানুয়ারিতে একবার চেঁচামেচি করে ঠেলে তাকে বিছানা থেকে ফেলে দেবার পর আলাদা শুতে আরম্ভ করেছিল। অনুযোগ করেও ফল হয়নি। মনোভাব বুঝতে পারলেই যেন শিকারি কুকুরের মতো কান খাড়া হয়ে যায় তার। আর কারণে অকারণে মুখ ঝামটা দিয়ে একটি মেকি দূরত্ব তৈরি করে ফেলে সহজেই। সে সময় মেয়েদের কেউ ঘরে থাকলেও যেন মাকে আগলে রাখতে চেষ্টা করে। তিনি তাই ভেতরে ভেতরে বিক্ষত হন।

বেলা পাঁচটার আগেই অফিস প্রায় ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। এরশাদ মোল্লা ওয়ালেট থেকে কার্ডটা বের করে নিজের অফিসের টিএন্ডটি লাইন থেকে কল করতেই ওপাশে একটি কম বয়সী মেয়ের কণ্ঠ শোনা যায়। তিনি বলে উঠলেন, আচ্ছা এটা কি মমিন রোড? ... নাম্বার ফ্ল্যাট? জিনাত কি আছে?

কিছুক্ষণ নীরবতার পর অন্য একজন ভার-ভারতি কণ্ঠস্বরের মহিলা জানতে চাইল, কোথায় পেলেন এ নাম্বার আর ঠিকানা?

-পিয়ালি। পিয়ালি ভদ্র। আমার কলিগ দিয়েছিল অনেক আগে।

-আচ্ছা। কখন আসছেন?

-এখনই অফিস থেকে বের হবো।

-রাস্তা-ঘাটের যে অবস্থা। শেষ পর্যন্ত এনার্জি ধরে রাখতে পারবেন?

-বয়স্ক মানুষের বাই উঠলে সেটা সহজে দূর হয় না।

-তাই?

হিহি করে হেসে ওঠে মহিলা।

-হুম। আমি এখন অ্যাবাভ সিক্সটি!

-কেমন চান?

-লেস ফর্টি অর অ্যাবাভ নো কোশ্চেন।

-ওকে। ইউ আর ওয়েল কাম!

এরশাদ মোল্লা অফিস থেকে বেরিয়ে আকাশের দিকে তাকালেন। এখন বৃষ্টি না হলেও মনে হচ্ছে কিছুক্ষণের ভেতরই নেমে আসবে। একটি সিএনজি ড্রাইভারকে ইশারা করতেই সে জানাল যাবে না। এভাবে পরপর কয়েকটি না করতেই তিনি একটি রিকশার দিকে এগিয়ে যান। খানিকটা নুয়ে দেখে নিলেন নিচে মটর লাগানো আছে কিনা। হুম,আছে। সন্তুষ্ট মনে রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করেন, আচ্ছা মমিন রোডে যেতে কোথায় পানি পড়বে? রিকশা থেকে নামতে হবে নাকি?

-নামানামি আবার কীয়ের? যেমনে পারি মমিন রোড যাইতে পারলেই ত আপনের চলে!

কম বয়সী তাগড়া দেহের রিকশা চালক যুবকটি আত্মবিশ্বাসের ভঙ্গিতে বলে ওঠে।

-গুড বয়! চল।

বলে, রিকশায় চড়ে বসেন এরশাদ মোল্লা।

আকাশের দিকে আর একবার চোখ তুলে তাকিয়ে পকেট থেকে সেল ফোনটা বের করে সুইচ অফ করে ফের পকেটে রাখতেই চালকের আসনে বসে থাকা ছেলেটি বলে উঠল,আংকেল ফোন বন্ধ করি দিলেন এই খারাপ সময়ে?

-তার চেয়ে আরো বেশি খারাপ সময় আমার। বলে,হাহা করে হেসে উঠলেন এরশাদ মোল্লা। তারপর যুবকের পিঠে হাত ছুঁইয়ে বললেন, চালাও!

রিকশা চলতে আরম্ভ করলে এরশাদ মোল্লা একটি সিগারেট জ্বালিয়ে মুখ ভর্তি ধোঁয়া ছেড়ে একটি পা বাঁকিয়ে তুলে দেন আরেকটি হাঁটুর ওপর।

যুবকটি বলল, আংকেল হুডটা তুলি দেই!

-কোনো দরকার নাই।

-ম্যাঘ আইলে ভিজি যাইবেন তো!

-একদিন ভিজলে সমস্যা নাই। বলে,সিগারেটে কষে টান লাগান তিনি।

খানিকটা অবাক হয়ে যুবকটি তাকায় এরশাদ মোল্লার মুখের দিকে। তারপর কী মনে করে আপন মনে নিঃশব্দে হাসতে হাসতেই রিকশার ফ্রেমে এক পা তুলে দিয়ে মটরের গতি বাড়িয়ে দেয়।

(সমাপ্ত)

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:৩৪
১৯টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×