somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

মনপুরা সিনেমা নয়ঃ-

২৩ শে এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ৮:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মনপুরা সিনেমা নয়ঃ-

ইদানীং মনপুরা নামক সিনেমা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে সর্বত্র। ইচ্ছা থাকা সত্বেও আমি সময় করে সিনেনেমাটা দেখতে পারিনি। সত্যি কথা বলতে কী- আমি কস্ট করে সিনেমা দেখিনা। না দেখার কারন-যেসব সিনেমা আমি আগে দেখেছি তার বেশীর ভাগ সিনেমার সারমর্ম-"তারপর তাহারা সুখে শান্তিতে বসবাস করিতে লাগিল" টাইপের। এখন সিনেমা দেখার সময় হয়না। তাই নতুন কোন সিনেমা নিয়ে ব্যপক আলোচনা সমালোচনা শুনলে কাউকে জিজ্ঞাসা করে জেনে নেই-সিনামার সংক্ষিপ্ত বিশয়বস্তু। তারপর বাকীটুকু মনে মনে নিজের মত আন্দাজ করে নেই। আমি আজ মনপুরা সিনেমা নিয়ে কিছু লিখছিনা। আমি মনপুরা দ্বীপের পরিচিতি নিয়ে লিখছিঃ-

"যতদুর চোখ যায় ঐ দূর নীলিমায়
চোখ দুটি ভরে যায় সবুজের বন্যায়........."-
শিল্পীর গাওয়া এই গানের বাস্তবতা খুঁজে পেতে হলে আপনাকে যেতে হবে সবুজ দ্বীপ মনপুরায়।মনপুরা মুলত ভোলা জেলার একটি বিচ্ছিন্ন উপজেলার নাম।এযেনো দ্বীপের ভিতরে আর একটা দ্বীপ।ভোলা সদর থেকে ৮০ কিলোমিটার দক্ষিন পুর্ব দিকে বঙ্গোপ্সাগরের কোল ঘেঁষে মেঘনা নদীর মোহনায় মনপুরার অবস্থান।চারিদিকে জলরাশি দ্বারা বেষ্টিত প্রমত্তা মেঘনার উত্তাল ঢেউয়ে সর্বদা শিক্ত মনপুরার পলিমাটি।এই দ্বীপের ইতিহাস বহু প্রাচীন।প্রায় ৭০০ বছর পুর্বে এই মনপুরা দ্বীপ পর্তুগীজ জলদস্যুদের আস্তানা ছিল। মনপুরার প্রধান আকর্ষন হচ্ছে হাজার হাজার একর জমিতে ম্যানগ্রোভ বনায়ন।মনপুরার বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল যেমন চরতজাম্মুল, চরপাতিলা, চরজামশেদ, চরপিয়াল, চরনিজাম, লালচর, বালুয়ারচর, চরগোয়ালীয়া সহ প্রায় ১০ টি চরে বনবিভাগের সহায়তায় গড়ে উঠেছে নীরব সবুজ বিপ্লব।মাইলের পর মাইল বৃক্ষ্ররাজির বিশাল ক্যানভাস মনপুরাকে সাজিয়েছে সবুজের সমারোহে।

১৩০০ শতাব্দীতে মনপুরা দ্বীপের উতপত্তি। তবে সেখানে মানুষের বসবাস শুরু হয় ষোড়শ শতাব্ধীতে। দ্বীপটি বাকলা চন্দ্রদ্বীপের(বাখেরগঞ্জ-বরিশালের আদী নাম) জমিদারীর অন্তর্ভুক্ত ছিল।সেই সময় ইউরোপীয় পর্যটক মউনরিক, ডারথেমা লী ব্রাংক এবং সিজার ফেড্রিক এই দ্বীপ ভ্রমনে আসেন। এ সময় মিঃ মউনরিক এই দ্বীপকে উদ্ভিদবৈচিত্রপুর্ণ দ্বীপ হিসেবে চিনহিত করেন।তিনি এই দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, পশুসম্পদ, মতস্য সম্পদ দেখে অভিভুত হয়ে পরেন। স্থানীয়দের সেকথা জানালে-স্থানীয় বাসিন্দারা সবাইকে বলে বেড়ান মউনরিক সাহেবের "মন" পুরা হইছে অর্থাৎ মন ভরে গেছে দ্বীপের সৌন্দর্য্য দেখে...। পরবর্তীতে মিঃ মউনরিকের নামানুসারে দ্বীপের পুর্নাংগ নাম করন করা হয় মনপুরা।
প্রায় ৩৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের মনপুরা দ্বীপের লোক সংখ্যা প্রায় ৮ হাজার। পরিবারের সংখ্যা ১,৫৬০ টি। ৩ টি ইউনিয়নে গড়া ৩৮ টি গ্রামে ২ টি কলেজ, ২০ টি স্কুল মাদ্রাসা আছে।এখানে শিক্ষিতের হার তুলনা মুলক ভাবে অনেক ভালো-যা প্রায় ৪০%।সাইক্লোন সেন্টার আছে ৩০ টি। দ্বীপের আভ্যন্তরীন যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলেও দ্বীপের সাথে বাহিরের লোকের যাতায়ত ব্যবস্থা খুবই খারাপ।ঢাকা থেকে সরাসরি লঞ্চ যোগে মনপুরা যাওয়া যায়।ঢাকা সদর ঘাট থেকে হাতিয়া গামী লঞ্চ মনপুরার রাম্ নেওয়াজ ঘাটে যাত্রা বিরতি করে।এছারাও ঢাকা এবং বরিশাল থেকে ভোলা হয়ে তজুমদ্দিন ঘাটের সি ট্রাক যোগে মনপুরা যাওয়া যায়।অন্যদিকে চরফ্যাশন থেকে মনপুরার জনতা বাজার রুটেও দৈনিক দুইবার লঞ্চ যাতায়ত করে।মনপুরাতে মেঘনা নদীর বিশাল সাইজের পাঙ্গাস মাছ খাবারের অনেক সুব্যবস্থা থাকলেও থাকার জন্য তেমন কোন ভালো আবাসিক সুবিধা নেই। তবে মনপুরা প্রেস ক্লাব ওখানে মধ্যম মানের একটা হোটেল তৈরী করেছে-যেখানে নিরাপদে থাকা যায়।

শীত মৌসুমে হাজার হাজার অতিথি পাখির কলকাকলীতে মুখর থাকে মনপুরার চরাঞ্চল।মনপুরার দক্ষিন পুর্ব প্রান্ত ঘেঁষে প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ২১০ একর জমিতে গড় উঠেছে অনেকগুলো ফিশারিজ কারখানা। তারমধ্যে সরকারি মনপুরা ফিশারিজ লিঃ অন্যতম।সরকারি সহায়তায় অবকাঠামোগত উন্নতি করা হলে এই এলাকাটা দর্শনার্থীদের কাছে স্পেশাল ভিউ হিসেবে আকর্ষন করবে।মনপুরার বিভিন্ন বনাঞ্চলে চিত্রল হরিণ সহ অন্য কয়েক প্রজাতির হরিন অহরহ দেখা যায়।চোর শিকারীরা হরিন জবাই করে বিভিন্ন হোটেলে হরিণের মাংশ সরবরাহ করে। এছারাও বিভিন্ন প্রকার অতিথি পাখীদের মাংশ নিয়মিত পাওয়া যায়-যা ভ্রমন পিপাসুদের বাড়তি আকর্ষন যোগায়।এখানে বাথানে হাজার হাজার মহিষ দেখতে পাবেন।এখানে মহিষের ঘন দুধ, দৈ খুব জনপ্রিয়।নারিকেল, তরমুজ আর বাংগী উতপন্ন হয় প্রচুর পরিমান। মনপুরাতে একধরনে বিশাল সাইজের কুকুর আছে-যা দেখতে খুবই ভয়ংকর। অনেকটা সিংহের কেশরের মত লম্বা লম্বা লোমে আবৃত।যানাযায়-এই দ্বীপে যখন পর্তুগীজ জলদস্যুরা থাকতো-তারাই তাদের দেশ থেকে এই বিরল প্রজাতির কুকুর এখানে নিয়ে এসেছিল-যার বংশধরদের বিচরণ এখনো বিদ্যমান।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:৩০
৩০টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×